১৫টি মহা পুরস্কার। এসতেগফার এর ফজিলত। কুরআন হাদীসের আলোকে আসতাগফিরুল্লাহ পড়ার উপকারিতা Astagfirullah

 রাতে শোবার আগে ১ বার আসতাগফিরূল্লাহ পড়ার সত্যিকার মুযেজা ১৫টি শ্রেষ্ঠ পুরস্কার


আসতাগফিরুল্লাহ পড়ার ফজিলত। আসতাগফিরুল্লাহর উপকারিতা। আসতাগফিরুল্লাহর দোয়া।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা । আশা করি আপনারা ভালো আছেন। আমার দোয়া হল আল্লাহ তায়ালা যেন আপনাদেরকে সুস্থ ও সবল রাখেন। প্রিয় বন্ধুরা আজকের আলোচনায় আমি জানাব যে এসতেগফারের ফজিলত কি। এসতেগফারের আমলে কি কি উপকারিতা অর্জিত হয়। আর এই সবকিছু আমি কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে বর্ননা করব।
কোন কিসসা কাহিনি বলবনা, বরং আমাদের প্রভুর কুরআন ও রাসুলুল্লাহ (দঃ) এর হাদীসের আলোকে আলোচনা হবে। খাটি অন্তরে ১ বার এসতেগফার বললে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে যে দুনিয়া আখেরাতের সবশ্রেষ্ঠ ১৫টি পুরস্কারের ঘোষনা রয়েছে তা আজ বর্ণনা করব। আমার বিশ্বাস আপনাদের কাছে আমাদের কথা ভালো লাগবে।
‘তাওবা’ অর্থ হচ্ছে তৎক্ষণাৎ গুনাহ ছেড়ে দেয়া, গুনাহের জন্য মনে মনে লজ্জিত হওয়া, ভবিষ্যতে আর না করার দৃঢ় সঙ্কল্প করা এবং মানুষের বা আল্লাহর কোনো হক থাকলে তা আদায় করে দেয়া।
‘ইস্তেগফার’ অর্থ হচ্ছে ক্ষমা চাওয়া। আমরা এভাবে বলতে পারি আস্তাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ। এর অর্থ হচ্ছে, আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। ইস্তেগফার হচ্ছে তাওবার দিকে যাওয়ার পথ।
আমরা যদি খাঁটি দিলে তাওবা করে বেশি বেশি ইস্তেগফার করতে থাকি তাহলে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের ১৫টি পুরস্কার দান করবেন। যা আমরা কুরআন ও হাদীসে জানতে পারি।
মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা নূহের ১০-১২ নং আয়াতে ছয়টি পুরস্কারের ঘোষণা করেছেন।
১. সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন : এর ফলে পাপের কারণে যে আজাব ও গজব অবধারিত হয়ে গিয়েছিল তা আল্লাহ তায়ালা দূর করে দেবেন। যেমন হজরত ইউনুছ আ:-এর জাতি যখন আজাব প্রত্যক্ষ করেছিল তখন তাওবা-ইস্তেগফার শুরু করে দিয়েছিল, ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিয়েছিলেন এবং তাদের ওপর থেকে ভয়ানক আজাব সরিয়ে দিয়েছিলেন।

২. রহমতের প্রবল বৃষ্টি বর্ষণ করবেন : এর ফলে করোনার কারণে আমরা যে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছি তা আল্লাহ তায়ালা দূর করে দেবেন। ইস্তেগফারের কারণে রহমতের বৃষ্টি বর্ষণের অনেক ঘটনা কিতাবে রয়েছে, যা ভিডিওর কলেবর বৃদ্ধি পাবে বিধায় তা এখানে উল্লেখ করলাম না।

৩. ধন-সম্পদের মাধ্যমে সাহায্য করবেন : বর্তমানে ভাইরাসের কারণে আয়ের সব উৎস প্রায় বন্ধ। অপর দিকে দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে অর্থ-সম্পদ ব্যয় হচ্ছে। যার ফলে অভাবের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠছে। এখন যদি আমরা ইস্তেগফার করতে শুরু করি তাহলে এ আশঙ্কা কমে যাবে।

৪. সুসন্তানের মাধ্যমে সাহায্য করবেন : বিয়ের পর সন্তান লাভের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করি। কেউ যায় মাজারে, কেউবা পড়ে ভণ্ডের খপ্পরে। কেউ ঈমান হারায় আবার কেউ অর্থ খোয়ায়, কিন্তু সন্তান পায় না। অথচ আল্লাহ তায়ালা ইস্তেগফারের বিনিময়ে এমন সুসন্তানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, যারা মা-বাবার উপকারে আসবে। তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করবে।

৫. বাগ-বগিচা দান করবেন : অর্থাৎ ফল-ফ্রুট, শাক-সবজি, তরি-তরকারি এবং ফসলাদিতে অনেক প্রাচুর্য দান করবেন। ফলে খাদ্যের কোনো অভাব হবে না।

৬. নদী-নালা প্রবাহিত করবেন : বর্তমানে নদী-নালার বহমানতা একেবারেই কমে গেছে। বহু নদী শুকিয়ে খেলার মাঠে পরিণত হয়েছে। সাধারণ জেলেরা দূর-দূরান্ত ঘুরে বহু কষ্টে মাছ ধরলেও গ্রামের ছেলেদের জন্য এখন মাছ ধরা স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। তাই ইস্তেগফার করতে থাকলে আমাদের পানি এবং মাছ কোনোটারই সঙ্কট থাকবে না।

পবিত্র কুরআনের সূরা হুদের তিন নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইস্তেগফারের আরো দুটি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
৭. সুখময় জীবন দান করবেন : বর্তমানে বহু তরুণ-তরুণী এবং বহু দম্পতি অশান্তির আগুনে জ্বলছে। সুখের সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরেও ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ কুরআন সুখময় জীবনের পথনির্দেশনা দিচ্ছে।
৮. সম্মানিতদের সম্মান বৃদ্ধি করবেন : বর্তমানে অনেক জ্ঞানী-গুণী, শিক্ষিত এবং সম্মানি লোক আছেন যারা সমাজে কাংক্ষিত মর্যাদা পান না। তারও কারণ এ ইস্তেগফার।

ইস্তেগফারের আরো একটি পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা সূরা হুদের ৫২ নং আয়াতে।
৯. আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে দেবেন : বর্তমানে আমরা সব ক্ষেত্রে দুর্বল। আমরা যদি বেশি বেশি ইস্তেগফার করি, তাহলে তিনি আমাদের শারীরিক শক্তি, সামাজিক শক্তি, অর্থনৈতিক শক্তি, সামরিক শক্তি এবং রাষ্ট্রীয় শক্তির সাথে গায়েবি শক্তি যুক্ত করে দেবেন।

আর সূরা আনফালের ৩৩ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে আরো একটি পুরস্কার।
১০. আজাব-গজব দেবেন না : আমরা যদি বেশি বেশি ইস্তেগফার করতে থাকি, তাহলে তিনি আজাব-গজব দূর করে দেবেন।

সুনানে আবু দাউদের ১৫১৮, সুনানে ইবনে মাজাহের ৩৮১৯ এবং মুসনাদে আহমদের ২২৩৪ নং হাদিসের মধ্যে আরো তিনটি পুরস্কারের কথা বর্ণিত হয়েছে। যথা
১১. সব প্রকার আপদ-বিপদ ও সঙ্কট দূর করে দেবেন।
১২. সব দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন।
১৩. অকল্পনীয়ভাবে রিজিক দান করবেন।

১৪. মুস্তাজাবুদ দাওয়াত হয়ে যাবেন। অর্থাৎ, ইস্তেগফার পাঠকারী এমন হয়ে যাবেন, যখন তিনি কোনো দোয়া করবেন আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করবেন।

১৫. মৃত্যুর পর তাকে জান্নাত দান করবেন।
এই এসতেগফার কখন পাঠ করবেন?
মিশকাত শরীফের ৯৬১ নং হাদীসে দেখতে পায় রাসুল (দঃ) প্রতি ফরয নামাজের সালাম ফিরিয়ে ৩ বার িএসতেগফা পাঠ করতেন। আমরাও পাঠ করব।
তাছাড়া যে কোন সমস্যা, পেরেশানি, দুঃখ, অভাব, অনটনে এসতেগফার পড়তে পারি। এবং বিশেষ করে সারাদিন যে সব গুনাহ হয়ে যায় তার থেকে ক্ষমার নিয়তে তওবা করে এসতেগফার পড়াকে প্রত্যেকে আমশ্যক করে নিতে পারি।

তাই আসুন আমরা বেশি বেশি ইস্তেগফার করি, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং সব বিপদ-আপদ থকে বেঁচে, আল্লাহর দেয়া পুরস্কার লাভ করতে চেষ্টা করি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের তাওফিক দান করুন, আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.