১টি আমল করলে রাতারাতি রাজা বাদশার মত সন্মান ধন সম্পদ হবে

 

১টি আমল করলে রাতারাতি রাজা বাদশার মত সন্মান ধন সম্পদ হবে



কুরবানির মাসে যে আমলটি করার সুযোগ আছে  এর বরকতে বাদশাহি নসিব হবে ইনশা আল্লাহ আমলটি খুবই সহজ তাই মনযোগ দিয়ে শুনে শিখে রাখুন আপনার নসিবও জেগে উঠবে ইনশা আল্লাহ

আবদুল্লাহ ইবনে মসউদ (রা) ফরমান- তিনি বলেন লানতি হল সে সব লোক যারা পশু সমুহকে লড়াই করায়, পৃথিবীতে এমন এমন দেশ আছে যেখানে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয় নিরীহ পশুর মধ্যে লড়াই লাগানোর জন্য, এর মাধ্যমে পশু পাখিকে কষ্ট দেয়া হয় অনেক জায়গায় কবুতর উড়ানোর প্রতিযোগিতা হয়, আর বড় পুরস্কার সে লাভ করে যার কবুতর সকলের পরে আসে কবুতর বাজেরা কবুতরকে বসতে দেয়না,  অথচ শরীয়তে ইসলামীতে এসব কাজ হারাম হারাম।

পশুসমুহকে লড়াই করানো, পাখিসমুহকে কষ্ট দেয়া হারাম, অথচ আমাদের দেশে মুরগের লড়াই হয়, গরুর লড়াই হয় এসব লড়াইতে অনেক সময় গরুর শিং ভেঙ্গে যায়, এত বেশী রক্ত ঝড়ে তা নরম দিলের লোকেরা দেখতে পারেনা কিন্তু যারা এসব অনুষ্ঠানে থাকে তারা পশু সমুহের এমন কষ্ট দেখে তালি বাজাতে থাকে অথচ আমরা নিজেদেরকে রহমতুলিল আলামিনের উম্মত দাবী করি আমার দয়াল নবী তো আমাদেরকে এসব শিক্ষা দিতে আসেন নি। আমাদেরকে নবীজি দয়া ভালোবাসা শিক্ষা দিয়েছেন আল্লাহর সকল সৃস্টির প্রতি দয়া করা শিখিয়েছেন- এমনকি আমার নবী (দ) পশু পাখি থেকে তাদের বাচ্চাসমুহকে পৃথক করতে নিষেধ করেছেন।  হযরত আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত একটি পাখি নবী করিম (দ) এর কাছে এসে প্রিয় নবীজির কাঁধে বসে গেল, পাখিটির কথা শুনে মাহবুবের চোখে পানি চলে আসল, সাথে সাথে নবীজি দাঁড়ালেন সাহাবীদের জিজ্ঞেস করলেন এই পাখিটির বাচ্চা কে ধরে এনেছে? এক সাহাবী দাঁড়ালেন আর বললেন এয়া রাসুলাল্লাহ আমি হুজুর বললেন জলদি বাচ্চাগুলি তাদের মায়ের কাছে ফিরিয়ে দাও, নাহয় এই নিরীহ পাখি কিয়ামতের দিন তোমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে, এটাই হল নবীজির শিক্ষা, পশু পাখির প্রতি দয়া করা।

সুলতান মাহমুদ গজনবীর পিতার নাম ছিল সাবুকতিগিন তিনি একজন তুর্কি দাস ছিলেন তিনি ভালো শিকারিও ছিলেন তিনি তার মালিককে বলত আপনি আমাকে সপ্তাহে একদিন ছুটি দিবেন যেন আমি শিকার করতে পারি মনে রাখবেন প্রয়োজনের ক্ষেত্রে শিকার করা জায়েজ, তবে সৌখিন ভাবে শিকার করা জায়েজ নাই অথচ এমন অনেক লোক আছেন যারা সখের বসে পশু পাখি শিকার করে, নিশানা পাক্কা করার জন্য শিকার করে রাসুলে পাক (দ) এমন লোকদের উপর লানত করেছেন। যারা পাখিকে বেঁধে রেখে তার উপর নিশানা লাগায় সাবুকতিগিন বলেন আমি সখের বসে শিকার করতাম না প্রয়োজনে শিকার করতাম

আমি শিকার করে যা নিয়ে আসতাম আমার ঘরের লোকেরা পুরা সপ্তাহ তাই খেয়ে বেঁচে থাকত। সাবুকতিগিন বলেন একদিন আমি শিকারে গিয়ে জঙ্গলে কোন শিকার পাচ্ছিলাম না, সকাল থেকে নিয়ে আসর পর্যন্ত অনেক খুঁজলাম কিন্তু কোন প্রাণীই শিকার করতে পারলামনা। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে দেখে  অন্ধকারে কোন হিংস্র জানোয়ার আমার উপর হামলা করতে পারে ভেবে আমি ভয় পেয়ে গেলাম, ভয়ের কারনে বারবার ডানে বামে দেখতে লাগলাম এমন সময় একটি হরিনের বাচ্চা দেখতে পেলাম, আর আমি সে বাচ্চাটিকেই ধরে আমার ঘোড়ার নিয়ে বসলাম  আর দ্রুত ঘোড়া দৌড়াতে লাগলাম যাতে মাগরিবের আগে আগে আমি জঙ্গল থেকে বের হয়ে শহরে পৌঁছতে পারি সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে দেখে অত্যন্ত তৃষ্ণা সত্বেও নিজেও পানি পান করলাম না আমার ঘোড়াকেও পানি পান করালাম না অনেক ক্লান্ত ও তৃষ্ণার্থ অবস্থায় মাগরিবের আগে আগেই জঙ্গল থেকে বের হয়ে শহরে পৌঁছে গেলাম এক স্থানে বসে নিজেও পানি পান করলাম আমার ঘোড়াকেও পানি পান করাতে লাগলাম এমন সময় দেখলাম আমি যে হরিনের বাচ্চা ধরে এনেছি সেটার মা দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে এসে হাজির অথচ আমি ঘোড়াতে করে দেড় ঘন্টা অত্যন্ত দ্রুততার সাথে জঙ্গল থেকে বের হয়ে এসেছি, আর সে হরিনিটিও আমাদের পিছে পিছে দেড় ঘন্টা যাবৎ দৌঁড়িয়েছে, তাই হরিনিটির শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত চলছিল, আমি চিন্তা করলাম আজ যেহেতু শিকার কম এই হরিনিটিকেও পাকড়াও করে নিব, কিন্তু আমার ভিতর থেকে আওয়াজ আসল এক মা তার সন্তানকে নিতে এসেছে, আমার বিবেক আমাকে একাজ করতে বাঁধা দিতে লাগল কারন আমি সে হরিনিটির দিকে যখন দেখলাম তার তাকানোটা ছিল প্রশ্নবোধক যেন বলছে আমার বাচ্চাটিকে ছেড়ে দাও

আমি সে হরিনির বাচ্চাটিকে ছেড়ে দিলাম, বাচ্চাটি যখন তার মায়ের কাছে গেল মা বাচ্চাটিকে আদর করে জিহ্বা দিয়ে চাটতে লাগলো, তারপর তারা জঙ্গলের দিকে যেতে যেতে বারবার আমার দিকে তাকাতে লাগল তার পর আসমানের দিকে তাকাতে লাগল সাবুকতিগিন বলেন আমার জীবনে এতটা প্রশান্তি কখনো লাগেনি যতটা প্রশান্তি হরিনের বাচ্চাটি ছেড়ে দিয়ে অনুভব করেছি, তিনি আরো বলেন আমি ঘরে গিয়ে এশারের নামাজ পড়ে অজু অবস্থায় ঘুমিয়ে গেলাম, আর আমার নসিব জেগে উঠল সেদিনই ঘুমের মধ্যে মদিনা ওয়ালা মাহবুবের দিদার নসিব হয়ে গেল রাসুলে কারিম (দ) আমার স্বপ্নে আসল, আমার অন্ধকার ঘর আলোকিত হয়ে গেল, ফুলের সৌরভ যেন আমার ঘরের কোনায় কোনায় ছড়িয়ে গেল, দয়াল নবী আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলছেন হে সাবুকতিগিন যদি তোমাকে বাদশা বানানো হয় তাহলে প্রজাদের প্রতিও কি এমনতর দয়া প্রদর্শন করবে যেমন দয়া আজ তুমি একটি জঙ্গলের হরিনের সাথে করেছো? একথা শুনে আমি কেঁদে দিলাম আর বললাম এয়া রাসুলাল্লাহ আমিতো সামান্য গোলাম হওয়ারও যোগ্যতা রাখিনা, বাদশা কিভাবে হব?

ফরমালেন তোমার আজকের আমলটি আল্লাহর খুব পছন্দ হয়েছে তাই আরশের মালিক তোমাকে বাদশা বানানোর ফয়সালা করেছেন। সাবুকতিগিন বলেন একটি জঙ্গলের হরিনের প্রতি দয়া করেছি  আর রব করিম আমাকে বাদশাহি দান করে দিয়েছেন। কুরবানির মাসে প্রত্যেকের ঘরে পশু আসবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত এই পশু গুলির প্রতি দয়া করা সেগুলির প্রতি নির্দয় আচরন না করা সেগুলিকে না খোঁচানো, সেগুলির উপর বাচ্চাদেরকে না বসানো, কোরবানির পশু গুলির মধ্যে লড়াই লাগানো থেকে বেঁচে থাকতে হবে, এটা হারাম কাজ। পশু গুলিকে সময় মত খাবার দিতে হবে ক্ষুধার্থ পিপাসার্থ রাখা যাবেনা। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে প্রত্যেক প্রাণীর প্রতি দয়া করার তৌফিক দান করুন আমিন

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.