ঘরে ও জীবনে অফুরন্ত বরকত লাভের ৭টি সহজ দোয়া ও আমল

ঘরে ও জীবনে অফুরন্ত বরকত লাভের ৭টি সহজ দোয়া ও আমল

 


রজব মাস আসলেই আমাদের প্রিয় নবী বেশী বেশী বরকতের দোয়া করতেন, যা আমরা প্রায় সকলেই কম আর বেশী জানি, আমলও করি, আজ আমি প্রিয় নবীর সে প্রসিদ্ধ দোয়াটি ছাড়াও হাদীস শরীফের আলোকে আরো ৭টি বরকতের দোয়া ও আমল উপস্থাপন করব, যে সব দোয়া ও আমল করলে আপনার ঘরে, আপনার জীবনে আল্লাহ তায়ালা অফুরন্ত বরকত নাজিল করবেন। আশা করি এই সহজ সহজ আমল গুলির ফলে আপনার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনি বরকত লাভ করবেন, তাই প্রত্যেকের উচিত এই সহজ আমল গুলি শিখে রাখা।

 

১। মুসলিম শরীফের ১৬৯৫ নং হাদিস

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন তার মসজিদের (ফরয) সালাত সমাধা করে, তখন সে যেন তার ঘরের জন্য তার সালাতের একটি অংশ নির্দিষ্ট করে। কেননা, তার সালাতের কারণে আল্লাহ তার ঘরে বরকত দান করবেন।

 

২। ঘরে বরকতের ২য় আমল হল সকালে খাবারের আগে পরে অজু করা

যেমন সুনানে ইবনে মাজার ৩২৬০ নং হাদিস

আনাস ইবনে মালেক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি চায় যে, তার ঘরে বরকত আসুক, সে যেন সকালের আহার গ্রহণের সময় উযু করে এবং আহার শেষেও উযু করে।

 

৩। বরকত লাভের ৩য় আমল হল খাবারের সময় পাত্রের মাঝখান থেকে না খাওয়া বরং একপাশ থেকে খাওয়া

যেমন সুনানে আবু দাউদের ৩৭৭২ নং হাদিস

ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ খাওয়ার সময় যেন পাত্রের মাঝখান থেকে না খায়, বরং সে যেন তার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে। কেননা পাত্রের মাঝখানে বরকত নাযিল হয়

 

৪। বরকত লাভের ৪থ আমল হল খাবার সময় আঙ্গুল ও বাসন চেটে খাওয়া

যেমন মুসলিম শরীফের ২০৩৩ নং হাদিস

জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতেই বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খাবার পর) আঙ্গুলগুলি ও বাসন চেটে খাওয়ার আদেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, ‘‘ওর কোনটিতে বরকত আছে তা তোমরা জান না।’’

 

৫। বরকত লাভের ৫ম আমল হল ঘরের সকলে একসাথে খাওয়া যেমন

ইবনে মাজার ৩২৮৭ নং হাদিস উমার বিন খাত্ত্বাব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা এক সাথে খাও এবং পৃথক পৃথক খেয়ো না। যেহেতু জামাআতের সাথে (খাবারে) বরকত আছে।

 

৬। বরকত লাভের ৬ষ্ঠ আমল হল আত্মিয়তার সম্পক হেফাজত করা

যেমন মুসনাদে আহমদের ১২১৩ নং হাদিস

আলী (রাঃ) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি চায় যে তার আয়ু দীর্ঘ হোক, জীবিকা প্রশস্ত হোক এবং অপমৃত্যু থেকে রক্ষা পাক, সে যেন আল্লাহকে ভয় করে ও রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তা সংরক্ষণ করে।

 

৭। বিয়ে অনুষ্ঠানে ১টি দোয়া আছে যাতে বরকতের দোয়া করা হয় সে দোয়াটির ফলে নব দম্পতির বৈবাহিক জীবনে বরকত নাজিল হয় যেমন

সুনানে ইবনে মাজার ১৯০৬ নং হাদিস

আকীল ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বনু জুশম গোত্রের এক মহিলাকে বিবাহ করলে লোকেরা (মুবারকবাদ দিয়ে) বললো, সুখী হও এবং অধিক সন্তান হোক। তিনি বলেন, তোমরা এরূপ বলো না, বরং যেরূপ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তদ্রূপ বলোঃ اللّٰهُمَّ بَارِكْ لَهُمْ وَبَارِكْ عَلَيْهِمْ

‘‘হে আল্লাহ্! তাদেরকে বরকত দান করুন এবং তাদের উপর বরকত নাযিল করুন।’’

আবার আবু দাউদ শরীফের ২১৩০ নং হাদীসে দোয়াটি এভাবে আছে

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিবাহ উপলক্ষে কাউকে মুবারকবাদ জানিয়ে বলতেন:

بَارَكَ اللَّهُ لَكَ, وَبَارَكَ عَلَيْكَ, وَجَمَعَ بَيْنَكُمَا فِي خَيْرٍ

আল্লাহ তোমাদের বরকত দান করুন, তোমাদের উপর বরকত নাযিল করুন এবং কল্যাণের সাথে তোমাদের একত্র করুন

 

মহানবী (দ) রজব ও শাবান মাস আসলে বরকতের জন্য যে দোয়াটি করতেন সেটি হল

আর তাহলো-

اَللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِىْ رَجَبَ وَ شَعْبَانَ وَ بَلِّغْنَا رَمَضَانَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা বারাকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা ওয়া বাল্লিগনা রামাদান।

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদেরকে রমজান মাস পর্যন্ত (হায়াত দিন) পৌঁছে দিন।



আল্লাহ পাক আমাদেরকে এই সহজ আমলগুলির মাধ্যমে বরকত লাভ করার তৌফিক দান করুন আমিন।



  

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.