দোয়া কবুলের স্পেশাল ৬টি সময় বেশিরভাগ মানুষ জানেনা | বুলেট মিস হবে দোয়া কবুল মিস হবেনা
দোয়া কবুলের স্পেশাল ৬টি
সময় বেশিরভাগ মানুষ জানেনা | বুলেট
মিস হবে দোয়া কবুল মিস হবেনা
দোয়া কবুল হওয়ার এমন ৬টি
সময় আছে যে সময়ে দোয়া করলে সে দোয়া মিস হবেনা।
কারন সে ৬টি সময়ে আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য আসমানের সবগুলি দরজা খুলে
দেন। যারা বলেন দোয়া কবুল হয়না তাদের জন্য মুলত এটা অনেক বড় একটা সুখবর। আমরা যদি
এই 6টি সময় মনে রেখে তাতে দোয়া করি, আল্লাহর
কাছে কিছু চাই তাহলে আমাদের দোয়া আমাদের চাওয়া ইনশা আল্লাহ পুরণ হবে। প্রত্যেক নারী পুরুষের জন্য আজকের আলোচনাটি খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্র ছাত্রী, চাকরীজিবি, বেকার, ব্যবসায়ী, অসুস্থ, মসিবতগ্রস্থ, ঋণগ্রস্থ,
হতাশাগ্রস্থ সকলেই মনযোগ দিয়ে আলোচনাটি শুনবেন।
একটার চেয়ে একটা
গুরুত্বপূণ তাই কোন ধরনের অবহেলা না করে প্রতিটি বিষয় আয়ত্ব্ করে আমল করার চেষ্টা
করবেন ইনশা আল্লাহ এই রমজানের মধ্যেই আপনার সব চাওয়া পাওয়া পুরণ হবে আর সবচেয়ে
গুরুত্বপূণ ও দামী হল ৫ম নাম্বারটা
নাম্বার-১: জোহরের ওয়াক্ত শুরু হলে তখন থেকে আসরের আগ পযন্ত।
জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয় দুপুর ১২টার পর থেকে সে সময় আকাশের
সমস্ত দরজাসমুহ খুলে দেয়া হয় যেমন তিরমিজি শরীফের ৪৭৮ নং হাদিস
وَعَنْ
عَبدِ اللهِ بنِ السَّائِبِ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم
صلى الله عليه وسلم كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعاً بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ
قَبْلَ الظُّهْرِ، وَقَال: «إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ
السَّمَاءِ، فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ»
আব্দুল্লাহ ইবনে সায়েব
রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, সূর্য (পশ্চিম গগনে) ঢলে
যাবার পর, যোহরের ফরযের পূর্বে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম চার রাকআত সুন্নত নামায পড়তেন। আর বলতেন, “এটা
এমন সময়, যখন আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয়। তাই আমার
পছন্দ যে, সে সময়েই আমার সৎকর্ম ঊর্ধ্বে উঠুক।”
আবার আবু দাউদের ১২৭০ নং
হাদিসে আছে
নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, যুহরের ফরয নামাযের পূর্বে
এক সালামের সাথে যে ব্যাক্তি চার রাকাত নামায পড়বে এর বদৌলতে তাঁর জন্য আকাশের
দরজাসমূহ উন্মুক্ত হবে।
দোয়া কবুলের ২য় স্পেশাল
সময়টি হল- আযানের সময় থেকে শুরু হয়
নবী করিম (দ) এরশাদ করেন
إذا
نُودِيَ بالصَّلاةِ فُتِحَتْ أبوابُ السَّماءِ، واسْتُجيبَ الدُّعاءُ.
অর্থ্যাৎ যখন আযান দেয়া হয় তখন আসমানের দুয়ার সমুহ উম্মুক্ত
করা হয় এবং বান্দার দোয়া কবুল করা হয়।
সুতরাং আযানের পর থেকে জামায়াত শুরুর আগ পযন্ত যে দোয়াই
করবেন তা কবুল হবে।
৩য় স্পেশাল সময় হল- এক ওয়াক্ত নামাজের জামায়াত
পরার পর থেকে পরের ওয়াক্তের নামাজের জন্য বান্দা যখন অপেক্ষা করে তখন,
যেমন ইবনে মাজার ৮০১ নং হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মাগরিবের সালাত পড়লাম। তারপর
যার চলে যাওয়ার চলে গেলেন এবং যার থেকে যাওয়ার থেকে গেলেন। রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত দ্রুতবেগে এলেন যে, তাঁর
দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হতে লাগলো। তিনি তাঁর দু হাঁটুর উপর ভর করে বসে বলেনঃ
" أَبْشِرُوا هَذَا رَبُّكُمْ قَدْ فَتَحَ بَابًا مِنْ أَبْوَابِ
السَّمَاءِ يُبَاهِي بِكُمُ الْمَلاَئِكَةَ يَقُولُ انْظُرُوا إِلَى عِبَادِي قَدْ
قَضَوْا فَرِيضَةً وَهُمْ يَنْتَظِرُونَ أُخْرَى " .
তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো।
তোমাদের প্রতিপালক আসমানের একটি দরজা খুলে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাদের নিকট তোমাদের
সম্পর্কে গর্ব করে বলছেনঃ তোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখো, তারা এক
ফরয আদায়ের পর পরবর্তী ফরয আদায়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
৪থ স্পেশাল সময় হল- যদি
কেহ বলে
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا
وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً
(আল্লাহু আকবার কাবিরা
ওয়ালহামদুলিল্লাহি কাসিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা)
তখন আকাশের সব দরজা খুলে
দেয়া হয়, যেমন মুসলিম শরীফের ১২৩৫ নং হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)
থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। লোকদের মধ্য থেকে
একজন বলে উঠলঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ كَبِيرًا
وَالْحَمْدُ لِلَّهِ كَثِيرًا وَسُبْحَانَ اللَّهِ بُكْرَةً وَأَصِيلاً
(আল্লাহু আকবার কাবিরা
ওয়ালহামদুলিল্লাহি কাসিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা)
অতঃপর রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন কে এই বাক্যগুলো বলেছে? লোকদের
মধ্য থেকে একজন বলল, আমি বলেছি ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেন,
আমি আাশ্চর্যাম্বিত হলাম ঐ গুলোর জন্য আকাশের সব দরজা খুলে দেয়া
হয়েছে।
অতএব এই বাক্যটি কয়েকবার পড়ে আল্লাহর কাছে যা চাইবেন
যে দোয়া করবেন সে দোয়াই কবুল হবে।
৫ম স্পেশাল সময় এবং সবচেয়ে মূল্যবান সময় হল ভোর রাতের দোয়া
রাতের শেষ তৃতীয়াংশ যখন মানুষ সেহরী খেতে উঠে তখন,
সারা বছরও এই সুযোগ থাকে
বিশেষ করে রমজান মাসে প্রত্যেকে এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন,
ইবনে মাজার ১৩৬৭ নং হাদিস
উরাবাহ আল জুহানী
রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যখন রাতের অর্ধেক কিংবা এক-তৃতীয়াংশ অতিক্রান্ত হয়, তখন
আল্লাহ তা’আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন, এরপর বলতে থাকেন : “আমার বান্দা আমি ব্যতীত আর কারো
কাছে চাইবে না। কে আছে আমাকে ডাকবে? আমি তার ডাকে সাড়া দিব।
কে আছে আমার কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করবে? আমি তাকে ক্ষমা করে
দেব। কে আছে আমার কাছে যাচ্ঞা করবে? আমি তাকে তা দান করব।”
ফজর (সুবহে সাদিক) উদ্ভাসিত না হওয়া পর্যন্ত (এভাবেই চলতে থাকে)।
রমজানে আরো ১টি স্পেশাল
সময় হল মাগরীবের আগে ইফতারের সময়। এ সময় ইফতার সামনে নিয়ে যে দোয়াই করা হয় সে দোয়া
কবুল হয়। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রমজান ও গাইরে রমজানে এই স্পেশাল সময়গুলিতে দোয়া
করে আল্লাহর কাছ থেকে চেয়ে চেয়ে নিজেদের সকল চাহিদা পুরন করা, সকল অভাব দুর করা,
সকল প্রয়োজন পুরন করার তৌফিক দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই