মায়ের একটি আমল এর কারনে আপনি ক্রোড়পতি বনে যাবেন, ধনী হওয়ার আমল

 

মায়ের একটি আমল এর কারনে আপনি ক্রোড়পতি বনে যাবেন,



একবার পরীক্ষা করে দেখুন একদিনের মধ্যে আমির হয়ে যাবেন ইনশা আল্লাহ- সে জন্য আপনাকে কি করতে হবে, মায়ের সাথে কি করতে হবে বিস্তারিত জানার জন্য আজকের প্রতিটি শব্দ খুব মনযোগ দিয়ে শুনবেন

আমি জানি না, কীভাবে বললে, কোন ভাষায় বললে সন্তানেরা মায়ের জন্য জান কোরবান করবে। মা ছাড়া সন্তানের কোনো গতি নেই। মা যেমনই হোক মায়ের দোয়া যারা পাবে জীবনে তাদের কোনো ভয় নেই। মানুষ তো মূল্যবান সম্পদ অনেক পয়সা খরচ করে অর্জন করে। আমরা সবাই যেন মায়ের সন্তুষ্টিকে মূল্যবান সম্পদ মনে করি এবং যেকোনো মূল্যে তা অর্জন করার চেষ্টা করি।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছেলেকে বাঁচানোর জন্য মায়ের মমতাকে জাগিয়ে দিয়েছিলেন। মৃত্যুর সময় এক সাহাবির মুখে কালিমা জারি হচ্ছিল না। তখন তিনি বললেন, এ ব্যক্তি হয়তো মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে তাই কালিমা জারি হচ্ছে না। ওর মাকে নিয়ে আস। মাকে বললেন, তুমি তোমার ছেলেকে মাফ করে দাও। মা বললেন, না আমাকে ও অনেক কষ্ট দিয়েছে, আমি ওকে মাফ করব না। নবীজি প্রশ্ন কলেন মাফ করবে না? সাহাবীদের বলল এক কাজ কর, লাকড়ি জোগাড় করে আগুন জ্বাল। এরপর ছেলেটাকে আগুনে ফেলে দাও। তখন মা বলে উঠল আল্লাহর ওয়াস্তে এটা করবেন না! এটা করবেন না! আমি মাফ করে দিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার সন্তান দুনিয়ার আগুনে জ্বলুক-এটা সইতে পারছ না, কিন্তু তোমার বদ দোয়ার কারণে সে যখন জাহান্নামের আগুনে জ্বলবে তখন সহ্য করবে কীভাবে? তো তিনি মায়ের মমতাকে জাগ্রত করে সন্তানকে রক্ষা করেছেন।

যারা হজ্ব ওমরা থেকে ফায়দা হাসিল করতে চান আপনার সাথে যে কয়জন নারীর সম্পর্ক আছে তাদের সাথে সদ্ব্যবহার করতে হবে। আপনার সাথে মায়ের সম্পর্ক আছে, বোনের সম্পর্ক আছে, মেয়ের সম্পর্ক আছে, স্ত্রীর সম্পর্ক আছে। তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করলে আপনি হজ্বের ফায়দা পাবেন, হজ্বের বরকত পাবেন।দেখুন, আল্লাহ তাআলাও আমাদেরকে যমযম দান করার জন্য হাজেরা আ.-এর মাতৃত্বকে অসীলা বানিয়েছেন। সাফা মারওয়ার সাঈও হযরত হাজেরার সে দৌড়াদৌড়ির স্মৃতিকেই লালন করে।

যখনই যমযমের একটা ঢোক পান করি তখনই আমার মনে হয় আমি যেন মাতৃত্বের দান গ্রহণ করছি। সাফা ও মারওয়ার যে সাঈ এটা তো আসলে এক মায়ের স্মৃতিমুলতঃ মায়ের প্রতি, বোনের প্রতি, স্ত্রীর প্রতি, কন্যার প্রতি এবং নারী সমাজের প্রতি সদয় হওয়া হজ্বের শিক্ষা।

একজন আলেম নিজের হজ্বে যাওয়ার ঘটনা বলতে গিয়ে বলেন- একবার আমি মদীনায় পৌঁছে ভিতরটা খুব অন্ধকার মনে হল। যিয়ারতে যাওয়ার সাহস হচ্ছিল না। সবাই গেলেন, কিন্তু আমি যেতে পারলাম না। মসজিদে নববীতে শুয়ে আছি, হঠাৎ শেষ রাত্রে মনে হল, আল্লাহ আমাকে ডাক দিয়েছেন, মিয়া! তোমার না মা আছে। তুমি এত চিন্তা করছ কেন? তোমার মায়ের থেকে দোয়া নাও। মায়ের থেকে দোয়া নিলেই আমি তোমার রাস্তা খুলে দিব। মনে হল, আমি এই সম্বোধনটা আমার আল্লাহর কাছ থেকে শুনতে পেলাম। আসমানের দিকে তাকিয়ে বললাম, আল্লাহ! তোমার শোকর, তুমি দিলের মধ্যে ঢেলে দিয়েছ। তোমার সম্বোধন আমি বুঝতে পেরেছি। তোমার শোকর। আমি তো কোনো সফরের মধ্যে মায়ের সাথে ফোনে কথা বলিনি, কিন্তু তুমি দিলে ঢেলে দিয়েছ তাই আমি মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলব। মায়ের কাছ থেকে দোয়া নিব। এরপর কিন্তু তুমি আর আমাকে না দিয়ে পারবে না। এরপর ফোন করে মায়ের সাথে কথা বললাম, আম্মা! আমার অবস্থা খুব খারাপ। আমি সাহস পাচ্ছি না আল্লাহর নবীর সামনে যেতে। আপনিও তো সালাম পেশ করার দায়িত্ব দিয়েছেন কিন্তু আমি তো যেতে সাহস পাচ্ছি না। আপনি আমার জন্য দোয়া করেন। আমি এখন রওনা দেব। মা বললেন, ‘আচ্ছা।একটিমাত্র শব্দ। আমার মনে হল, ঠাণ্ডা পানি পান করলে যেমন গলা-বুক শীতল করে পানিটা নেমে যায়, তেমনি আচ্ছা শব্দের শীতলতাও আমার প্রতিটি শিরায় উপশিরায় প্রবাহিত হচ্ছে। সমগ্র সত্তাকে শীতল ও স্নিগ্ধ করে দিল একটি শব্দ। আমি অনুভব করলাম, আচ্ছা শব্দের আলোটা আমার ভেতর প্রবেশ করছে আর আমার অন্ধকারগুলি ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে। আমার সর্বসত্ত্বা পূর্ণ আলোকিত হয়ে গেল মায়ের একটি আচ্ছাশব্দ দ্বারা। একজন প্রশিক্ষিত সৈনিক যেমন অস্ত্র হাতে পেলে নির্ভীক হয়ে যায় আমি তেমনি আচ্ছাশব্দের অস্ত্রটা পেয়ে নির্ভীক হয়ে গেলাম। আমি রওয়ানা দিলামএত তৃপ্তি! এত শা্ন্তি! গিয়ে যখন দাঁড়ালাম মনে হল, আমি যেন দুনিয়ার সবচেয়ে আপন জায়গায় এবং সবচে প্রিয় জায়গায় এসে পড়েছি। জীবনে এমন সুন্দর সালাম মনে হয় আর কখনো পেশ করার তাওফীক হয়নি। আমি আল্লাহকে বললাম, আল্লাহ! আমি মায়ের দোয়া নিয়ে এসেছি। এখন তুমি আমাকে খালি হাতে কীভাবে ফিরিয়ে দিবে! খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে চাইলে তো তুমি মায়ের কথাটা মনে করিয়ে দিতে না। তো আলহামদুলিল্লাহ, ঐ দুরুদ ও সালামের বরকত খুব অনুভব করেছি।

তখনই মনে হয়েছে যে, আমার সন্তানদেরকে এটা বোঝাতে হবে। দেখ, আল্লাহ কেমন ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। মায়ের দিকে মুহাব্বতের নযরে তাকালে তুমি মাকবুল হজ্বের সওয়াব পাবে। তোমরা মায়ের হয়ে যাও। মায়ের হয়ে গেলে আল্লাহর হয়ে যাবে। আর আল্লাহর হয়ে গেলে আল্লাহও তোমাদের হয়ে যাবেন। মাকে কখনো কষ্ট দিয়ো না।

যে মায়ের অবস্থা এমন যে, সন্তান অসুস্থ হলে তাঁর আর কোনো অসুস্থতা থাকে না, নিজের সকল অসুস্থতার কথা ভুলে যান সন্তানের চিন্তায়, সেই মাকে মানুষ কীভাবে কষ্ট দেয়! যাই হোক, তোমরা যদি বাঁচতে চাও তাহলে মায়ের বিষয়টা খেয়াল রাখার চেষ্টা কর। এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট রাস্তা। এই রাস্তায় আমাদের বড় বড় সৌভাগ্য আসতে পারে।

আবার এটা আমাদের বরবাদিরও কারণ হতে পারে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- هما جنتك أو نارك মা-বাবা হল তোমার জান্নাত কিংবা জাহান্নাম। অর্থাৎ মা-বাবার মর্যাদা রক্ষা করে কেউ জান্নাতে যাবে আবার মা-বাবার অমর্যাদা করে কেউ জাহান্নামে যাবে। আর আল্লাহ তাআলা তো মুশরিক মা-বাবার সঙ্গেও সদাচরণ করার আদেশ দিয়েছেন।

এই পৃথিবীতে তোমাকে নিয়ে ভাববার কেউ নেই। এমনকি বাবাও তোমাকে নিয়ে তেমন ভাবেন না যেমন ভাবেন তোমার মা। ঘরে ভালো কিছু রান্না হলে তুমি নেই তাই নিজেও খেতে পারেন না। এমন মাকে ভালবাসবে না, সম্মান করবে না তো কাকে করবে! মাকে ভালবাসলে, মাকে সম্মান করলে নিজেই লাভবান হবে। লেখাপড়া শিখতে মেধা লাগে, শ্রম লাগে, অনেক কিছু লাগে, কিন্তু মাকে ভালবাসতে, মাকে সম্মান করতে, মাকে খুশি করতে কিছুই লাগে না। তো বাবারা! মাকে ভালবাস, মাকে সম্মান কর, মাকে সন্তুষ্ট কর এবং মায়ের দোয়া হাসিল কর। তাহলে দেখবে দুনিয়া ও আখেরাতের কোথাও তুমি আটকাবে না। তোমার সন্তানরাও তোমাকে সম্মান দিবে আর তারা হবে মর্যাদার শীর্ষে।

মায়ের কারনে ১ দিনের মধ্যেই ক্রোড়পতি হওয়ার ঘটনাটি ঘটেছে মক্কা শরীফে। এক বুড়ি মায়ের ৪ ছেলে ছিল, একদিন মা তার ছোট ছেলেকে বলল ৫০০ রিয়াল ইলেকট্রিক বিল এসেছে, আর কাকতালিয়ভাবে ছেলের পকেটেও মাত্র ৫০০ রিয়াল ছিল। যেহেতু মাসের শেষ ছিল। মায়ের হাত থেকে বিলের কপি নিয়ে পকেটে নিয়ে গাড়ি নিয়ে বের হল, প্রথমে চিন্তা করল অন্য ভাইদেরকে বিলের কপি ধরিয়ে দিবেন, আবার গাড়ি চালাতে চালাতে চিন্তা করল, আমি যদি এই রোডেই এক্সিডেন্ট করে মারা যায় তাহলে এই ৫০০ রিয়ালও কোন কাজে আসবেনা, তাই মায়ের নির্দেশ শিরধার্য্য করে সে ৫০০ রিয়াল বিল দিয়ে দিল। পকেট সম্পূর্ণ খালি, তারপর সে চলে গেল মক্কায় মসজিদুল হারামে। তিনি নিয়মিত মসজিদে হারামে নামাজ পড়তেন, সে সুবাদে মক্কার বেশ কয়েকজন শায়খের সাথে তার পরিচয় ছিল, নামাজ শেষে সে যখন বের হচ্ছিল তখন একজন পরিচিত শায়খ তাকে ডেকে বলল, আমি শুনেছি তুমি খুব আর্থিক কষ্টে আছ, তোমার নাকি অনেক টাকা ঋণ হয়েছে, এটা বলে তার হাতে ১টি চেক দিয়ে দিল। তিনি গাড়িতে বসে সে পেকেট থেকে চেক বের করে দেখেন তা ছিল ৫০ হাজার রিয়ালের একটি চেক। সুবহানাল্লাহ

সে খুশিতে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে মায়ের কাছে গিয়ে বলেন মা আপনার কাছে কি আর কোন বিল আছে? যদি আর কোন কিছুর বিল বাকি থাকে আমাকে দেন আমি পরিশোধ করে দিব। সুবহানাল্লাহ।

এ ধরনের অনেক জিন্দা উদাহারণ আছে যা মানুষ যদি বুঝতে পারে তাহলে অনেকগুলি সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা যাদের মা জীবিত আছেন বাবা জিবীত আছে তাদেরকে মা বাবাকে খুশি করার মা বাবার ফরমাবরদারি করার তৌফিক দান করুক আমিন।  

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.