আশুরার দিন ১৮টি দোয়া ও আমল। ১০ মুহররম আশুরার আমল

  بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু ওয়া মাগফিরাতুহ



প্রিয় বন্ধুরা আপনারা জানেন আগামী ২৭ ও ২৮ জুলাই মধ্যপ্রাচ্যে আশুরার রোজা আর ২৮, ২৯ তারিখ বাংলাদেশে আশুরার রোজা

আশুরার দিন আপনি কি কি আমল ও দোয়া করবেন, কোন আমল করলে আপনার কি ফায়দা হবে।  

কোন আমল করলে সারা বছর আপনার রিজিকে বরকত হবে, আপনার ধন সম্পদ টাকা পয়সা আয় রোজগারে বরকত হবে

কোন আমল করলে আপনার সারা বছর কল্যাণকর হবে, আপনার হায়াতে রবকত হবে, আপনার সকল কাজ সহজ হয়ে যাবে

আজকে সে রকম ৭টি দোয়া ও আমল এবং সেদিন থেকে যে ১১টি কাজ শুরু করতে হবে তা শেয়ার করব, আশা করি দেশ বিদেশের সকল ভাই ও বোনেরা 

আশুরার দিন থেকে আমলগুলি আরম্ভ করবেন, আর নিজ চোখে দেখে যাবেন আপনার বিপদ গুলি কিভাবে কেটে যায়

অভাব সমুহ কিভাবে দুর হতে থাকে, হায়াতে রিজিকে কিভাবে বরকত হতে থাকে, আশা করি আজকের আমলগুলি খুব খুব উপকারে আসবে

১) যখনই এবাদত করবেন তাড়াহুড়া করবেন না, বরং ঝামেলামুক্তভাবে একাগ্রচিত্তে এবাদত করবেন। যেমন

তিরমিজি শরীফের ২৬৫৪ নং হাদিস—নবী করিম (দ) এরশাদ করেন আল্লাহ তায়ালা বলেন “হে আদম সন্তান আমার এবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও,

আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দিব, আর যদি তা না কর, তবে তোমার হাত ব্যস্থতায় ভরে দেব, তোমার অভাব দুর করবনা।

২) নেয়ামতের শোকর করা—আশুরার দিন ২ রাকাত শোকরের নামাজ পড়বেন – আল্লাহ তায়ালা সুরা ইবরাহিম এর ৭ নং আয়াতে এরশাদ করেন 

وَإِذۡ تَأَذَّنَ رَبُّكُمۡ لَئِن شَكَرۡتُمۡ لَأَزِيدَنَّكُمۡۖ وَلَئِن كَفَرۡتُمۡ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٞ যদি তোমরা শোকর আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই বাড়িয়ে দিব

নামাজ শেষে ৩ বার পড়বেন (রদিতু বিল্লাহি রাব্বা, ওয়াবিল ইসলামি দ্বিনা, ওয়াবিমুহান্মাদিন নাবিয়্যা)

৩) ২ রাকাত তওবার নামাজ পড়বেন—তারপর কমপক্ষে ১০০ বার এসতেগফার পড়বেন (আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহ)

তাহলে সারা বছর আপনার ধন সম্পদ, সন্তান সন্তুতি, সব কিছুতে আল্লাহ তায়ালা সাহায্য করবেন। যেমন সুরা নুহে এরশাদ হয়েছে

﴿ فَقُلۡتُ ٱسۡتَغۡفِرُواْ رَبَّكُمۡ إِنَّهُۥ كَانَ غَفَّارٗا ١٠ يُرۡسِلِ ٱلسَّمَآءَ عَلَيۡكُم مِّدۡرَارٗا ١١ وَيُمۡدِدۡكُم بِأَمۡوَٰلٖ وَبَنِينَ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ جَنَّٰتٖ وَيَجۡعَل لَّكُمۡ أَنۡهَٰرٗا ١٢ ﴾ [نوح: ١٠، ١٢]

অর্থ্যাৎ আর বলেছি তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি পরাক্ষমশালি, (তার কাছে ক্ষমা চাইলে) তিনি তোমাদের উপর মুষলধারে বৃষ্টি দিবেন

ধন সম্পদ সন্তান সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন, বাগ বাগিচা (ফলমুল দিয়ে ভরিয়ে) দিবেন, আরো দিবেন নদী নালায় (পানি ও মাছ)।

৪) আত্মিয় স্বজন, আপনজন কারো সাথে মনোমালিন্য থাকলে তা দুর করা, প্রয়োজনে টেলিফোনে কথা বলে সহসাত মিটমাট করে ফেলা

যেমন বুখারী শরীফের ৫৯৮৫ নং হাদিস ্র مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ فِي رِزْقِهِ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُগ্ধ.

নবী করিম (দ) ইরশাদ করেন—যে কামনা করে তার রিজিক প্রশস্থ হউক এবং তার আয়ু দীর্ঘ হউক সে যেন তার আত্মিয়দের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। 

৫) বেশী বেশী দরুদ পড়া— তিরমিজি শরীফের ২৬৪৫ নং হাদিস নবী করিম (দ) ইরশাদ করেন

قَالَ ্র إِذًا تُكْفَى هَمَّكَ وَيُغْفَرُ لَكَ ذَنْبُكَ গ্ধ.. বেশী পরিমাণে দরুদ পড়ার ফলে সকল অভাব সকল প্রয়োজন পুরণ হবে, এবং সকল গুনাহ সমুহ আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দিবেন।

আর বেশীর সর্বনিন্ম পরিমাণ হল ৩১৩ বার, সুতরাং আশুরার দিন কমপক্ষে ৩১৩ বার দরুদ শরীফ পড়বেন

৬) বেশী বেশী দান সদকা করা— দান সদকার ফলে রিযিক প্রশস্থ হয় যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা সাবার ৩৯ নং আয়াতে বলেন

﴿ قُلۡ إِنَّ رَبِّي يَبۡسُطُ ٱلرِّزۡقَ لِمَن يَشَآءُ مِنۡ عِبَادِهِۦ وَيَقۡدِرُ لَهُۥۚ وَمَآ أَنفَقۡتُم مِّن شَيۡءٖ فَهُوَ يُخۡلِفُهُۥۖ وَهُوَ خَيۡرُ ٱلرَّٰزِقِينَ ٣٩ ﴾ [سبا: ٣٩]

‘বল, ‘নিশ্চয় আমার রব তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা রিযক প্রশস্ত করেন এবং সঙ্কুচিত করেন। আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় কর তিনি তার বিনিময় দেবেন এবং তিনিই উত্তম রিযকদাতা।’ {সূরা আস—সাবা’, আয়াত : ৩৯}

তাছাড়া আশুরার দিন থেকে আরো ১১টি কাজকে নিজের জন্য আবশ্যক করে নিবেন তাহলে সবক্ষেত্রে বরকত নিজ চোখে দেখতে পাবেন

১) নিজেও ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন এবং ঘরের সকলকে নামাজের হকুম দিবেন (সুরা ত্বহা ১৩২) 

২) যত বার ঘরে প্রবেশ করবেন বিসমিল্লাহ বলে সালাম দিয়ে ঢুকবেন এবং ঢুকার পর ১ বার সুরা ইখলাস পড়বেন ;(হাদীস)

৩) যে কোন কাজ সকাল সকাল আরম্ভ করবেন (হাদিস) ৪) যতটুকু আছে ততটুকুতে সন্তুষ্ট থাকবেন (হাদিস)

৫) নিজের অভাব অনটনের কথা দুঃখ বিপদতের কথা মানুষকে বলার আগে দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহকে বলবেন

৬) ঘরে দুর্বল শিশু, বৃদধ, অসুস্থ, অসহায় যারা আছে তাদের প্রতি সদাচরন করবেন (বুখারী ২৮৯৬)

৭) লোভহীন অন্তরে যে কোন কিছু নিবেন, অর্জন করবেন তাহলে বরকত হবে ( বুখারী ১৩৮৭)

৮) ঘরে কুকুর, মুর্তি, ছবি এসব থাকলে তা ঘর থেকে বের করে দিবেন ৯) প্রতিদিন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়বেন

১০) ফজরের নামাজের পর নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করবেন ১১) নিয়মিত মাগরিবের নামাজের পর সুরা ওয়াকেয়া তেলাওয়াত করবেন।

প্রিয় বন্ধুরা আমি আশুরার রোজা সহ মোট ৭টি আমল এর কথা বলেছি এবং আরো ১১টি আমলকে নিত্য দিনের সঙ্গী করার জন্য বলেছি

প্রতিটি আমল ও পরামর্শ কোরআন হাদিস থেকেই তুলে ধরা হয়েছে, অতএব আশুরার দিন থেকে এসব অভ্যাস গড়ে তুলুন

আপনার জীবনে বর্তমানে শত সমস্যা আছে যদি উক্ত আমলগুলি করেন আগামী আশুরা আসার আগেই আল্লাহর ফযলে সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে

আপনি আপনার জীবনে কোন অভাব, বিপদ, দুঃখ পেরেশানি খুজে পাবেন না। এটা আমি গেরান্টি দিয়ে বলতে পারি।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই আমলগুলি করার তৌফিক দান করুন আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.