মেরাজের ৭টি অমূল্য দোয়া ও আমল। শবে মেরাজের আমল।
মেরাজের ৭টি অমূল্য দোয়া ও আমল
মেরাজের
ঘটনার পরতে পরতে এমন ৭টি দোয়া আমল হিরা মনি মুক্তার মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে
আজকে
আমি সে সব আমলগুলিকে আপনাদের সাথে কোরআন ও হাদীস শরীফের আলোকে তুলে ধরার চেষ্টা
করব, প্রতিটি দোয়া ও আমল কোরআন হাদিসের
রেফারেন্স সহ তুলে ধরব, সুতরাং প্রতিটি আমলআমাদের জন্য খুবই
মূল্যবান হবে,
১ম
আমলটি হযরত ইবরাহিম (আ) ৭ম আসমানে দিয়েছেন, নবী করিম
(দ) মেরাজ রাতে যখন ১ম আসমানে গেলেন সেখানে হযরত আদম (আ) এর সাথে সাক্ষাৎ হয় হযরত আদম (আ) এর ডানে কিছু রুহ যারা জান্নাতি ছিল বামে কিছু রুহ ছিল জাহান্নামীর।
فَإِذَا نَظَرَ عَنْ يَمِينِهِ ضَحِكَ
وَإِذَا نَظَرَ قِبَلَ شِمَالِهِ بَكَى
ফলে
আদম (আ) যখন ডান দিকে তাকান হাসেন আর যখন বাম দিকে তাকান কাঁদেন। (বুখারী ৩৪৯)
২য়
আসমানে হযরত ইয়াহিয়া ও ইসা (আ) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়
৩য়
আসমানে হযরত ইউসুফ (আ) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়
৪থ
আসমানে হযরত ইদরিস (আ) ৫ম আসমানে হযরত হারুন (আ)এর সাথে
৬ষ্ঠ
আসমানে হযরত মুসা (আ) এর সাথে এবং
৭ম
আসমানে হযরত ইবরাহিম (আ) এর সাথে সাক্ষাৎ হয়। নবীজি এরশাদ করেন ইবরাহিম (আ) বায়তুল
মামুরে ঠেস দিয়ে উপবিষ্ট অবস্থায়। বায়তুল মা‘মুর সেই
স্থান, যেখানে প্রত্যহ এমন সত্তর হাজার ফেরেশতা ইবাদত করেন,
যাদের পালা আর কখনও আসে না।
৭ম
আসমানে হযরত ইবরাহিম (আ) উম্মতে
মুহাম্মাদির জন্য ১টি বড় তসবিহ উপহার দেন যেমন তিরমিজি শরীফের ৩৪৬২ নং হাদিসের
বণনা ইবনু মাসউদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ
(দ) বলেছেনঃ মি’রাজের রাতে আমি ইবরাহীম
(আঃ)-এর সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি বললেনঃ হে মুহাম্মাদ" আপনার উম্মাতকে আমার
সালাম পৌছিয়ে দিন জান্নাতের
যমীন অতীব সুগন্ধি সমৃদ্ধ এবং
সেখানকার পানি অত্যন্ত সুস্বাদু। তা একটি সমতল ভূমি এবং তার গাছপালা হল “সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদু লিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু
আকবার"।
তাহলে
এ হাদিসে জানতে পারলাম হযরত ইবরাহিম (আ) আমাদের জন্য প্রিয় নবীর মারফতে এই বার্তা
পাঠিয়েছেন যে যদি আমরা এই তসবিহ বেশী বেশী পাট করি তাহলে জান্নাতে আমাদের জন্য
বেশী বেশী গাছ রোপিত হবে।
سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
“সুবহানাল্লাহ ওয়ালহামদু লিল্লাহ ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু
আকবার"।
মেরাজ
রাতে নবীজি জান্নাতের দরজায় একটি বাণী লেখা দেখলেন যেমন ইবনে মাজার ২৪৩১ নং হাদিস
" الصَّدَقَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَالْقَرْضُ بِثَمَانِيَةَ عَشَرَ .
দান-খয়রাতে
দশ গুণ সওয়াব এবং করযে আঠারো গুণ! আমি বললামঃ হে জিবরীল! করয দান-খয়রাতের চেয়ে
উত্তম হওয়ার কারণ কি? তিনি বলেন, ভিক্ষুক নিজের কাছে (সম্পদ) থাকতেও ভিক্ষা চায়, কিন্তু
কর্যদার প্রয়োজনের তাগিদেই কর্য চায়। এখান থেকে অসহায়কে ঋণ দেয়ার আমলের গুরুত্ব
জানতে পারলামএরপর মেরাজে আল্লাহ তায়ালা
৩টি উপহার দিলেনপাঁচ ওয়াক্ত সালাত। সূরাহ আল-বাকারার শেষ দু’
আয়াত এবং শিরক মুক্ত উম্মতের মারাত্মক গুনাহ তাওবার মাধ্যমে ক্ষমার
সুসংবাদ[ (মুসলিম ১৭৩)
এখানে
আমরা ৫ ওয়াক্ত নামাজের আমল এর সাথে ২টি অতি মূল্যবান আয়াত পেলাম আল্লাহ আরশে
আজিমে ডেকে নিয়ে উপহার দিয়েছেন, তাই সুরা বাকারার শেষ
২টি আয়াত আমাদের জন্য অনেক বড় নেয়ামত, এটি সব সময় পড়তে হবে,
এটির মাধ্যমে দোয়া করতে হবে এ ঘটনায় আরো ১টি আমল লুকিয়ে আছে তা হল
যদি কোন মেহমানকে দাওয়াত দেন সে মেহমান যাওয়ার সময় কিছু উপহার দেয়া আল্লাহর সুন্নত
যেমন আল্লাহ দিয়েছেন।
সে
মেহমান যাওয়ার সময় কিছু উপহার দেয়া আল্লাহর সুন্নত যেমন আল্লাহ দিয়েছেন। মিরাজের
আরো ১টি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল হিজামাহ করা। নবী করিম (দ) যে দল ফেরেশতাদের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন তারাই
নবীজিকে বলছিলেন
مُرْ أُمَّتَكَ بِالْحِجَامَةِ
“আপনার উম্মাতকে রক্তক্ষরণের (হিজামার) নির্দেশ দিন”।
(তিরমিজি ২০৫২)
হিজামা
নবী সাহাবীরা করাতেন এর দ্বারা শরীর সুস্থ থাকে। যেমন বুখারীর ৫৬৯৭ নং হাদিসের
বণনা
إِنَّ فِيهِ شِفَاءً.
“ নিশ্চয় হিজামাতে আছে নিরাময়।
মেরাজ
ঘটনা বয়ান করলে আবু জেহেল ও মুনাফিকরা তা অযৌক্তিক বলে ঘৃণাভরেপ্রত্যাখান করল, কিন্তু আবু বকর (রা) ও ঈমানদারগন নবীর এসব দাবীকে বিনা দলিলেমেনে নিল। আর
এ কারনেই আবু বকর (রা) আল্লাহর পক্ষ থেকে ছিদ্দিক উপাধি পেলেনআজো অনেক লোক নবীর
শান মান শুনলে আবু জেহেল ও মুনাফিকদের মত প্রত্যাখান করেআমাদেরকে এসব মুনাফিকি ও
আবু জেহেল মার্কা চরিত্র পরিহার করতে হবে, আবু বকরের মতনবীর
প্রতি অন্ধ বিশ্বাস করতে হবে। এটাই ঈমানদারী, এটার নামই ইসলাম।
কোন মন্তব্য নেই