সুখবর! সফলতা লাভের আমল। সব সমস্যা সমাধানের দোয়া। সুরা যিলযাল এর ফজিলত ও আমল।
সুখবর! সফলতা লাভের
আমল। সব সমস্যা সমাধানের দোয়া। সুরা যিলযাল এর ফজিলত ও আমল।
আজকে ৪টি ছোট ছোট
সুরার ওজিফা বলব যে সুরাসমুহ আপনার জন্য যথেষ্ট হবে, যার
মধ্যে সবকিছুই আছে প্রতিটি সুরার
ব্যপারে হুজুর (দ) কি কি বলেছেন হাদিস শরীফ থেকে বিস্তারিত জানাব, তাই
আজকের ওজিফাটি হবে সবচেয়ে দামী, ৪টি সুরা একসাথে আমল করতে ৫
মিনিটের বেশী লাগবে না কিন্তু এর ফায়দা হবে অফুরান ১ম হাদিসটি হল সুনানে নাসাঈর ১৩৯৯ নং হাদিস – অত্যন্ত চমৎকার হাদিসটি খুব মনযোগ দিয়ে
শুনবেন আবদুল্লাহ ইবন আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত।
তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি নবী (দ) এর
খিদমতে উপস্থিত হয়ে বলেনঃ
ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আমাকে কুরআন পাঠ শিক্ষা দিন। তিনি বলেনঃ তুমি (প্রথমে) ’রা’ বিশিষ্ট তিনটি সূরা পাঠ করবে (যথা
সূরা ইউনুস, হূদ, ইউসুফ ইত্যাদি)। তখন সে ব্যক্তি বললঃ আমি বৃদ্ধ হয়েছি, আমার স্মরণশক্তি লোপ পেয়েছে এবং জিহ্বা ভারী হয়ে গেছে। তখন নবীজি বলেনঃ তবে হা-মিম সম্বলিত তিনটি সূরা তিলাওয়াত করবে।
সে ব্যক্তি পূর্বের
ন্যায় বলল। রাসূলুল্লাহ (দ) বলেনঃ তাহলে তুমি যে সমস্ত সূরার প্রথমে সাব্বাহা বা য়ুসাব্বিহু অনুরূপ শব্দ
আছে, সেই সূরাগুলি পাঠ করবে। তখনও ঐ
ব্যক্তি
পূর্বের ন্যায় উক্তি করে বলেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি সূরা শিক্ষা দিন
যা জামেআহ বা স্বয়ংসম্পূর্ণ।
(অর্থ্যাৎ সে ১টি সুরার
উপর আমল করলেই আমার জন্য যথেষ্ট হবে)। তখন নবীজি (দ) তাঁকে সূরা ইযা
যুলযিলাতিল আরদু শেষ পর্যন্ত শিক্ষা দেন। তখন সেই লোকটি বলেঃ আল্লাহর শপথ! যিনি
আপনাকে সত্য নবী হিসাবে প্রেরণ করেছেন; আমি তার অতিরিক্ত
কিছুই করব না। লোকটি চলে গেলে নবীজি (দ) ইরশাদ করেনঃ সে ব্যক্তিটি কামিয়াব হয়েছে।
নবীজি লোকটি সফল
হয়ে গেছে, লোকটি কামিয়াব হয়ে গেছে এ কথাটি দুইবার বললেন। তাহলে বুঝলাম সুরা যিলযাল কে সুরাতুল জামেয়া বলা হয় যে
সুরার মধ্যে সবকিছু একত্রে আছে এ সুরার আমল কিভাবে
করবেন কতবার পড়বেন সে ব্যপারে তিরমিজি শরীফের ২৬৯৫ নং হাদিসে বর্ণিত আছে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এক সাহাবীকে প্রশ্ন করলেনঃ
হে অমুক! তুমি কি
বিয়ে করেছ? তিনি বললেনঃ না, হে আল্লাহর রাসূল। আল্লাহর কসম! আমার কাছে বিয়ে করার মত মাল নেই। তিনি প্রশ্ন
করলেনঃ “তোমার কি সূরা কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ
মুখস্ত নেই"? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ আছে। তিনি বলেনঃ এটা
কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ।
তিনি আবারও প্রশ্ন
করলেনঃ তোমার কি সূরা ইযা জাআ নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহু মুখস্ত নেই? তিনি বলেন, হ্যাঁ আছে। তিনি বলেনঃ এটা কুরআনের
এক-চতুর্থাংশ।
তিনি আবার প্রশ্ন
করলেনঃ তোমার কি সূরা কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরূন জানা নেই? তিনি বলেন, হ্যাঁ আছে। তিনি বলেনঃ এটা কুরআনের
এক-চতুর্থাংশ।
তিনি আবার প্রশ্ন
করেনঃ তোমার কি সূরা ইযা যুলযিলাতিল আরযু মুখস্ত নেই? তিনি বলেন, হ্যাঁ আছে। তিনি বলেনঃ এটা কুরআনের
এক-চতুর্থাংশ। অতএব তুমি বিয়ে ’কর, বিয়ে কর।
এ হাদিস থেকে জানলাম
সুরা এখলাস কুরানের ৩ ভাগের ১ ভাগ, সুরা কাফেরুন,
সুরা নসর ও সুরা যিলযাল ৪ ভাগের ১ ভাগ আবার তিরমিজি শরীফের ২৮৯৩ নং হাদিসে আছে সুরা যিলযাল
কেহ ১ বার পড়লে অর্ধেক কুরান পড়ার সাওয়াব পাবে তাহলে আগের হাদীসে জেনেছি সুরা যিলযাল ৪ ভাগের ১ ভাগ আর ২য় হাদিসের জানলাম
সুরা যিলযাল হল ২ ভাগের ১ ভাগ তবে ২য় হাদিসটির
সনদ প্রথম হাদিস থেকে মজবুত তবে ১ম হাদিসে নবীজি সাহাবীকে কুরানের বিনিময়ে মহর
দিয়ে বিয়ে করার অনুমতি দিয়েছেন তবে এ যুগে কুরানের বিনিময়ে বিয়ে করা যাবে কিনা তা
মুফতি সাহবে থেকে ফতোয়া নিয়ে নিবেন এ সুরাটির অর্থের
দিকে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন আসলেই সুরাটি কতটা জামে বা পরিপূর্ণ সুরা কেন সুরা
যিলযালের উপর আমল করলে আর কিছুই লাগবে না আর যিলযালের মধ্যে কি আমলের শিক্ষা আছে? তা
জানতে হলে আগে সুরাটির অনুবাদ লক্ষ্য করুন
إِذَا زُلْزِلَتِ الْأَرْضُ زِلْزَالَهَا
যখন পৃথিবী তার কম্পনে
প্রকম্পিত হবে,
وَأَخْرَجَتِ الْأَرْضُ أَثْقَالَهَا
যখন সে তার বোঝা
বের করে দেবে।
وَقَالَ الْإِنسَانُ مَا لَهَا
এবং মানুষ বলবে, এর কি হল ?
يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا
সেদিন সে তার
বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে,
بِأَنَّ رَبَّكَ أَوْحَى لَهَا
কারণ, আপনার পালনকর্তা তাকে আদেশ করবেন।
يَوْمَئِذٍ يَصْدُرُ النَّاسُ أَشْتَاتًا لِّيُرَوْا أَعْمَالَهُمْ
সেদিন মানুষ
বিভিন্ন দলে প্রকাশ পাবে, যাতে তাদেরকে তাদের
কৃতকর্ম দেখানো হয়।
فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ
অতঃপর কেউ অণু
পরিমাণ সৎকর্ম করলে তা দেখতে পাবে
وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ
এবং কেউ অণু
পরিমাণ অসৎকর্ম করলে তাও দেখতে পাবে।
এ সুরা যিলযাল এর
মধ্যে কিয়ামতের বয়ান দেয়া হয়েছে আর এই সুরার শেষ ২টি আয়াত সবচেয়ে গুরুত্ব পূণ আমরা যদি এ ২টি আয়াতকে সঠিক ভাবে বুঝে আমল করতে পারি তাহলে
আমরা সফল হব কেহ অনু পরিমান খারাপ কাজ করলে তার প্রতিদানও সে পাবে আর কেহ অনু
পরিমাণ মন্দ কাজ করলে তার প্রতিদানও সে পাবে তাই কোন ছোট
সৎকাজকে ছোট মনে করে ত্যাগ করা উচিত নয়। কারণ এই ধরনের অনেক সৎকাজ মিলে আল্লাহর
কাছে একটি অনেক বড় সৎকাজ গণ্য হতে পারে। অনুরূপভাবে কোন ছোট ও নগণ্য অসৎকাজও না
করা উচিত; কারণ এই ধরনের অনেকগুলো ছোট গোনাহ
একত্র হয়ে একটি বিরাট গোনাহের স্তুপ জমে উঠতে পারে।
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো-তা এক টুকরা খেজুর দান করার বা একটি ভালো কথা
বলার বিনিময়েই হোক না কেন” [বুখারী: ৬৫৪০]
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেছেনঃ “কোন সৎকাজকেও
সামান্য ও নগণ্য মনে করো না, যদিও তা কোন পানি
পানেচ্ছু ব্যক্তির পাত্রে এক মগ পানি ঢেলে দেয়াই হয়
অথবা তোমার কোন
ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাত করাই হয়।” [মুসনাদে আহমাদ:
৫/৬৩]
রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরও বলেনঃ “সাবধান, ছোট গোনাহসমূহ থেকে নিজেকে রক্ষা করো।
কারণ সেগুলো সব মানুষের ওপর একত্র হয়ে তাকে ধ্বংস করে দেবে।” [মুসনাদে আহমাদ: ১/৪০২]
সুতরাং যাররা বা
অনু পরিমাণ ছোট নেক আমল অনু পরিমান ছোট গুনাহ থেকে যদি আপনি আমি বেঁচে থাকতে পারি তাহলে আপনি আমি সফলকাম হয়ে যাব, তাইতো
সাহাবী যখন বলেছেন আমি এই ১টি সুরার উপরই আমল করব তখন নবীজি দুইবার সে সাহাবীর ব্যপারে ঘোষনা দিয়েছেন
সে সফলকাম হয়ে গেছে।
অতএব আমাদেরকেও এই
সুরা যিলযাল এর ওজিফা সুরা যিলযাল এর শিক্ষা মোতাবেক জীবন গঠন করার বড় ছোট সব আমল
করার মাধ্যমে সফলতা লাভ করার তৌফিক দান করুন আমিন
আর সুরা যিলযাল ৪
বার পড়ে ১ খতম, সুরা কাফেরুন ৪ বার পড়ে ১ খতম,
সুরা নসর ৪ বার পড়ে ১ খতম কুরানের সাওয়াব আর সুরা এখলাস ৩ বার পড়ে ১ খতমের সাওয়াব হাসিল করার এ তৌফিক দান করুন আমিন। এ আমলটি
করতে ৫ মিনিট লাগবে আর ৫ মিনিটে আপনি ৪ খতম কুরান পাঠের সাওয়াব পাবেন
কোন মন্তব্য নেই