সুখরব! মুহররম মাস থেকে শুরু করুন সব সমস্যা সমাধানের ২০টি দোয়া ও আমল
সুখরব! মুহররম মাস থেকে শুরু করুন
ইসমে আজম থেকে শক্তিশালী আমল; টেনশন, অভাব, বেকারত্ব, পেরেশানি, অশান্তি, রোগ, দুঃখ,
বিপদ সহ সব সমস্যা সমাধানের ২০টি দোয়া ও আমল
১৪৪৫ হিজরী আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছে, নতুন বছর শুরু হয়েছে, আজ সারা বছর কোন কোন দোয়া ও আমল করবেন কোন আমল করলে সকল অভাব,
টেনশন, বিপদ, পেরেশানি, দারিদ্রতা, অশান্তি দুর হবে, রোজি রোজগারে বরকত আসবে, বেকারত্ব দুর হয়ে যাবে, চাকরিতে প্রমোশন হবে, ব্যবসায় উন্নতি হবে, রিজিক ধন সম্পদ দ্রুত বৃদ্ধি হবে, সব ধরনের রোগ শোক থেকে মুক্তি মিলবে, এমনকি ক্যান্সার সহ বড় বড় রোগ থেকেও মুক্তির আমল আজকে শিখতে পারবেন, আপনার জীবন কিভাবে সুখী সুন্দর বরকতময় হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব,
প্রতিটি দোয়া ও আমল হিরা মনি মুক্তার চেয়েও দামী তাই অবহেলা না করে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই শুনবেন, মুহররম মাস থেকেই আমলগুলি শুরু করে দিবেন। পুরা আলোচনাটি শুনার পর আপনার যদি আজকের আমল ও দোয়া গুলি ভালো না লাগে তাহলে আমার চ্যানেলটি আন সাবস্ক্রাইব করে দিয়েন আর কমেন্টে নেগেটিভ মন্তব্য ছেড়ে দিয়েন যদি আমলগুলি জানার পর করার পর আপনার ভালো লাগে উপকার হয়, তাহলে প্রিয়জনের কাছে আমলগুলি শেয়ার করবেন, তাহলে সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব পাবেন। আর আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন নতুন বছর নিরাপত্তা, সন্মান ও বরকতময় করেন- আসুন কোরআন ও হাদীস শরীফ থেকে ২০টি দোয়া ও আমল শিখে রাখি
১ম আমল শোকরগুজার বান্দা হওয়া, তাহলে সব ধরনের আযাব গজব বিপদ থেকে আল্লাহ তায়ালা মুক্তি দিবেন, নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন, ধন দৌলত বাড়িয়ে দিবেন-
একদিন হযরত মুসা
(আঃ) কোথাও যাচ্ছিলেন পথে এক লোকের সাথে দেখা সে লোক বলল হযরত আপনি এবার যখন আল্লাহর সাথে কালাম করবেন তখন আমার একটা বিষয় আল্লাহর কাছে জেনে নিবেন, সেটি হল আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত বেশী সম্পদ দিয়েছেন তা এখন আমার পক্ষে সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এখন একটু জেনে আসবেন আমি কিভাবে সম্পদের এই জোয়ার থামাব?
এরপর অন্য একজন লোকের সাথে হযরত মুসা (আঃ) এর দেখা যে মরুভুমিতে বালির স্তুপ বানিয়ে তার ভিতর বসে আছে, হযরত মুসাকে দেখে সে বলল হে মুসা আপনি আল্লাহর কাছে আমার একটি কথা জানবেন, তা হল আল্লাহ তায়ালা আমাকে আর কতদিন এমন গরীবি হালতে রাখবেন?
পরে যখন হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সাথে কালাম করছিলেন প্রথমে সে ধনী লোকের কথাটি আল্লাহর কাছে বললেন এরপর গরীব লোকটির কথাটিও আল্লাহর কাছে বললেন, আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসা (আঃ) কে সব কিছু বুঝিয়ে দিলেন।
হযরত মুসা (আঃ) যখন ফিরে আসলেন তখন ধনী লোকটির সাথে দেখা হল, তাকে বলল আমি তোমার বিষয়টি আল্লাহর কাছে পেশ করেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন তুমি আল্লাহর যে নেয়ামত পাও সে নেয়ামতের শোকর আদায় কর তাই আল্লাহ তার নেয়ামত বাড়িয়ে দেন, এখন থেকে তুমি নেয়ামতের শোকর ছেড়ে দাও আল্লাহও তোমাকে নেয়ামত দেয়া বন্ধ করে দিবেন।
তখন ধনী বলল হে মুসা আপনি এটা কি বলেন?
আমি এক সময় কিছুই ছিলাম না তবুও আল্লাহর শোকর করতাম এখন অনেক কিছু আছে এখনও আমি শোকর করি, আল্লাহ যদি আমার সব কিছু আবার ছিনিয়ে নেন তবুও আমি আল্লাহর শোকর আদায় করা ছাড়তে পারব না।
এরপর যখন মুসা
(আঃ) এর সাথে সে গরীব লোকটির দেখা হল তাকে হযরত মুসা
(আঃ) বললেন আপনার বিষয়টি আমি আল্লাহর সমিপে পেশ করেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আপনি যেন আল্লাহর শোকর করেন তাহলে আল্লাহ আপনার প্রতি নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন, তখন গরীব লোকটি অত্যন্ত বিরক্ত প্রকাশ করে বলল হে মুসা আল্লাহ আমাকে কিই বা দিয়েছে যে আমি শোকর আদায় করব?
কি নিয়ে আমি শোকরগুজার হব?
আমার এক টুকরা কাপড় পযন্ত নাই তাই বালির স্তুপ বানিয়ে তার ভিতর বসে আছি,
এ কথা বলার দেরী হঠাৎ এক বাতাসের ঝটকা এসে সে লোকের পাশ থেকে সব বালি উড়িয়ে নিয়ে গেল।
সুতরাং যা আছে তাতেই যদি আমরা আল্লাহর শোকর গুজার হই তাহলে আল্লাহ অবশ্যই আমাদের শান্তিদান করবেন, নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন। আর যা আছে তাতে যদি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করি তাহলে আল্লাহ যে টুকু আছে সেটাও ছিনিয়ে নিবেন।
যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ১৪৭ নং আয়াতে এরশাদ করেন
مَّا يَفْعَلُ اللّهُ
بِعَذَابِكُمْ إِن شَكَرْتُمْ وَآمَنتُمْ وَكَانَ
اللّهُ شَاكِرًا عَلِيمًا
তোমাদের আযাব দিয়ে আল্লাহ কি করবেন যদি তোমরা শোকর কর এবং ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক!
আর আল্লাহ হচ্ছেন সমুচিত মূল্যদানকারী সর্বজ্ঞ।
সুরা ইবরাহিমের ৭ নং আয়াতে এরশাদ
করেন
وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن
شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
যখন
তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা
স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে
নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। [সুরা ইবরাহীম - ১৪:৭]
২য় আমল: সারা বছর সব ধরনের মারাত্মক রোগ শোক থেকে বাঁচার জন্য হাদীস শরীফের দোয়াটি
খুবই কার্যকরী
অনেক সময় আমরা
কোন বিপদগ্রস্থ, মসিবত গ্রস্থ, রোগাক্রান্ত, লোককে দেখে শিউড়ে উঠি এবং বলি আল্লাহ এই
রোগ আমার দুষমনকেও যেন না দেয়, কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রিয়
নবী এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন যে দোয়াটি পড়লে আপনি মৃত্যুর আগ পযন্ত এমন বিপদে,
এমন রোগে পতিত হবেন না গেরান্টি। দোয়াটি হলঃ
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ – وَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا
উচ্চারণ : আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মানিবতালাকা বিহি; ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাছিরিম মিম্মান খালাকা তাফদিলা।’
অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেছেন; তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তিনি তার মাখলুক থেকে মাখলুকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’ তখন তাকে এ মুসিবত কখনো স্পর্শ করবে না।’ (তিরমিজি) (শুয়েবুল ইমান ৪৪৪২)
৩য় আমল: এবার আসুন এমন একটি আমল সম্পর্কে জানি যা দ্বারা আমাদের অসংখ্য উপকার হবে সাথে
সাথে নানা ধরনের দুরারোগ্য ব্যধী থেকেও আমরা বেঁচে যাব এমনকি কেন্সার পর্যন্ত সুস্থ
হয়ে যাবে যেমন
বিশ্বনবীর (দঃ) ফরমান “রাতের তাহাজ্জুদ পড়া শুরু কর, এটি আগেকার নেক লোকদের আমল, এটি গুনাহসমুহকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয় বরং মানুষের মাঝে এমন শক্তি আসে যার ফলে গুনাহ থেকে মানুষ বেঁচে যায়। (ওয়া মাতরাদাতুন লিদ্দাঈ আনিল জাসাদ) এর দ্বারা মানুষের শরীরের রোগ ব্যধীসমুহ আল্লাহ দুর করে দেন। এখানে কোন রোগ তা নির্ধারন করা হয়নি সুতরাং তা ছোট বড় যে কোন রোগ হতে পারে, তাই এ হাদীস দ্বারা নববী প্রেসক্রিপশন দ্বারা অনেকে বড় বড় রোগের চিকিৎসা করে ফল পেয়েছেন, বর্তমান যে সব দুরারোগ্য ব্যধী যার কোন চিকিৎসা নাই এমন রোগের জন্যও অবশ্যই এ তাহাজ্জুদের আমল অত্যন্ত ফলপ্রসু হবে।
৪থ আমল: চিন্তা ও পেরেশানির সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো—‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউযু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউযু বিকা মিন দ্বালা‘য়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।
আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) চিন্তাযুক্ত অবস্থায় এই দোয়া পড়তেন। (বুখারি, হাদিস : ২৮৯৩)
চিন্তা পেরেশানির
জন্য আরেকটি আমল হল যা
তিরমিজি শরীফের ২৪৫৭ নং হাদিসে
আছে প্রিয় নবী হযরত উবাই বিন কাব (রা) কে চিন্তা পেরেশানি থেকে মুক্তির জন্য বেশী
বেশী দরুদ শরীফ পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন, আপনারও যখন কোন দুশ্চিন্তা ভর করবে তখন দরুদ শরীফের পরিমান বাড়িয়ে দিবেন। হাটতে বসতে দরুদ শরীফ পাঠ করবেন। ইনশা আল্লাহ আপনার দুশ্চিন্তা দুর হয়ে যাবে।
৫ম আমল: ২ সেকেন্ডে ১৫০ কোটি নেকি লাভ করার দোয়াটি বেশী বেশী করবেন, মহানবী (দঃ) এরশাদ করেন
(আল্লাহুম্মাগফির লিল মুমিনিন ওয়াল মুমিনাত) হে
আল্লাহ তুমি সারা বিশ্বের সকল মুসলমান পুরুষ সকল মুসলমান নারীকে ক্ষমা করে দাও। কেহ
যদি এ দোয়াটি পড়ে (কানা লাহু বিকুল্লি মুমিনিন ওয়া মুমিনাতিন হাসানাহ)
সারা পৃথিবীতে যতগুলি মুমিন নারী ও পুরুষ আছে তত সংখ্যা পরিমান আল্লাহ
তাঁকে ছাওয়াব দান করেন। এবার হিসাব
করুন সারা বিশ্বে ১৫০ কোটি মুসলমান আছে আপনার ২ সেকেন্ডের এই দোয়াতে আছে মুসলমানের
কল্যান কামনা আর বিনিময়ে আপনি অর্জন করতে পারছেন ১৫০ কোটি সাওয়াব। সুবহানাল্লাহ।
৬ষ্ঠ আমল: প্রতিদিন
কোটি কোটি ফেরেশতার দোয়া নেয়ার আরো ১টি সহজ পদ্ধতি নামাজের সালাম ফিরানের পর সে স্থানে
বসে যে সব মসনুন জিকির আছে তা চালিয়ে যাবেন, ৩ বার আসতাগফিরুল্লাহ
পড়বেন, আয়াতুল কুরসি পড়বেন ১ বার, তসবীহে
ফাতিমি, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ
৩৩ বার, আল্লাহুআকবার ৩৪ বার, এ ধরনের যত মসনুন দোয়া ও জিকির আছে তা চালিয়ে যাবেন,
বেশী বেশী দরুদ শরীফ পড়বেন এতে কি ফায়দা হবে জানেন? সহিহ বুখারীর রেওয়ায়েত, (ওয়ালমালাইকাতু
ইউছাল্লুনা আলা আহাদিকুম মা দামা ফি মাজলিসিহিল ল্লাজি ছাল্লা ফি) যে বান্দা নিজের নামাজের জায়গায় বসে জিকির করে আল্লাহর নুরানী ফেরেশতা তার
জন্য দোয়া করে। তারা ৩টি দোয়া করেন
(আল্লাহুম্মাগফিরলাহ) হে
আল্লাহ একে ক্ষমা করে দাও
(আল্লাহুম্মারহাম)
হে আল্লাহ একে রহমত দান কর
(আল্লাহুম্মাতুবা আলাইহ)
হে আল্লাহ এর তওবাকে কবুল কর
আমরা মানুষকে
বলে বেড়ায় অনুরোধ করি আমার জন্য দোয়া করুন, অথচ আপনি যদি নামাজ
শেষে নামাজের জায়গায় বসে কয়েক মিনিট জিকির করেন তাহলে আপনার জন্য লক্ষ কোটি ফেরেশতা
দোয়া করবেন।
৭ম আমল: অপর
মুসলমানের জন্য দোয়া করবেন, তাহলে সে
দোয়া আপনার হকে দ্রুত কবুল হবে, যেমন
মুসলিম শরীফের ২৭৩২ নং হাদিসের বণনা নবী করিম (দ) বলেন
কোন মুসলিম যখন তার ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে দোআ করে তখন ফেরেশতা বলে, আমীন আর তোমার জন্যও তদ্রুপ হোক। এখন
আপনি যদি দোয়া করেন হে আল্লাহ আমার অমুক ভায়ের অভাব দুর করে দাও তখন ফেরেশতা আমিন
বলে আপনার অভাব দুর করে দেয়ার জন্য সুপারিশ করবে এবং ফেরেশতাদের সুপারিশ দ্রুত
কবুল হয়।
৮ম আমল: ঘরে
অসহায় শিশু, নারী, বৃদ্ধ, অসুস্থ
কেহ যদি থাকে তাদেরকে অবহেলা করবেন না কারন আল্লাহ তাদের উসিলায় আপনার রুজি
রোজগারে বরকত দান করনে, যেমন হাদিস শরীফে আছে একদিন এক সাহাবী এসে আরজ করল এয়া রাসুলাল্লাহ আমি আয় রোজগার করি আমার ভাই করে না, তাঁর সকল খরচা আমাকেই বহন করতে হয়, তখন নবী করিম (দঃ) এমন এক জবাব দিলেন যা সারা দুনিয়াবাসীর জন্য
অনেক বড় শিক্ষা, হুযুর ফরমান হতে পারে আল্লাহ তোমাকে রিজিক তোমার ঐ ভায়ের কারনে দিচ্ছেন যে কামাতে পারছে না। সুতরাং
আপনি কামাই করতে পারলে আপনার অধিনে যদি এমন কেহ
থাকে যারা কামাই করতে পারছেনা তাদেরকে অবহেলা করবেন না, কারন
আল্লাহ আপনাকে তাদের কারনেই রিজিক দিচ্ছেন।
৯ম আমল: সিলা
রেহমি করা ১টি
হাদীসে
মোবারকে
নবী (আঃ) এরশাদ করেন সিলা রেহমীর তথা ভাই বোনের মধুর সম্পর্কের ফলে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে ৩টি নেয়ামত ৩টি পুরস্কার দান করেন। প্রথম পুরস্কার আল্লাহ তায়ালা বান্দার হায়াত বৃদ্ধি করে দেন, ২য় পুরস্কার আল্লাহ তায়ালা এ বান্দার রিযিক কোষাদা করে দেন, খোলা রিযিক দান করেন, সিলা রেহমী কারীদের কখনো রিযিক সংকোচিত করে দেন না। তাদেরকে খোলা রিযিক দুনিয়ায় আল্লাহ তায়ালা দান করেন। তৃতীয় পুরস্কার সিলা রেহমীকারীকে আল্লাহ তায়ালা খারাপ মৃত্যু থেকে হেফাজত করেন।
তাহলে আপনার ধন দৌলতেও বরকত হয়ে গেল, হায়াতেও বরকত হয়ে গেল, মৃত্যুতেও কলমা নসিব হয়ে গেল, এবার বলুন একজন বান্দা এ ছাড়া জীবনে আর কি চায়? আমাদের অধিকাংশ পেরেশানী হয়ত স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট, কিংবা রুজি রোজগার সংক্রান্ত, কিংবা ধর্মীয় আমল সংক্রান্ত, দেখুন এ বড় বড় সমস্যা ৩টি সমাধান একটি মাত্র আমলে তা হল সিলা রেহেমীর ভিতর।
১০ম আমল: লোভহীন
ভাবে সম্পদ অর্জন করা: হাকীম বিন হিযাম রা. বলেন: -আমি নবীজি সা.-এর কাছে ‘সুওয়াল’ করলাম, তিনি আমাকে দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি দিলেন। আবার চাইলাম, তিনি দিলেন। তারপর বললেন: -হাকীম! এই সম্পদ হলো সুমিষ্ট সজীব বস্তু! যে এটাকে (নির্লোভ ) উদারচিত্তে গ্রহণ করবে, তাতে বরকত দেয়া হবে। আর যদি কেউ সম্পদকে লোভী হয়ে, পীড়াপীড়ি করে অর্জন করে: তার অবস্থা হবে, এমন ব্যক্তির মতো যে, খেয়েই চলছে,কিন্তু তৃপ্তি আসছে না (মুত্তাফাক) সুতরাং যাই অর্জন করুন, চাকরী করুন, ব্যবসা করুন তাতে লোভের বশবর্তী
হয়ে কোন কিছু করবেন না তবেই বরকত হবে। অনেকে লোভে
পরে অনেক সম্পদ অর্জন করে; পরে এমন ভাবে ফেঁসে যায় জেল
খানায় থাকতে হয় নতুবা বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে পালিয়ে থাকতে হয়, জীবন
থেকে বরকত চলে যায়।
১১তম আমল: ভোরে ভোরে কাজ
শুরু করা। ব্যবসা-বাণিজ্য,
সফর-ভ্রমণ, ইলমতলব
ইত্যাদি । প্রিয় নবীজি সা. বলেছেন:
-ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার উম্মতের সকালের মাঝে বরকত
দান করুন! (মুসনাদে আহমাদ)। যারা ফজরের সময়টা ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেন তাদের
হায়াতে রিজিকে ব্যবসা বানিজ্যে বরকত চলে যায়। সে জন্য রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যাবেন
আর সকালে ভোরে উঠবেন। কারন সকালের কাজের জন্য দয়াল নবী বরকতের দোয়া করেছেন।
১২ তম আমল: ঘরে প্রবেশের সময় সালাম দেয়া: নবী করিম (দ) হযরত আনাস (রা) কে বলেন বৎস (আনাস)! তুমি যখন ঘরে প্রবেশ করবে, সালাম দিবে। এটা তোমার ও তোমার পরিবারের জন্যে বরকত নিয়ে আসবে (তিরমিযী)। যতবার ঘরে প্রবেশ করবেন অবশ্যই বিসমিল্লাহ বলে ঘর বাসীকে সালাম
দিয়ে প্রবেশ করবেন।
১৩ তম আমল: দান সদকা করার ফলে আল্লাহ
রিজিকে বরকত দান করেন রিজিক বাড়িয়ে দেন যেমন সুরা সাবার ৩৯ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা
এরশাদ করেন
قُلْ إِنَّ رَبِّي يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاء مِنْ
عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ لَهُ وَمَا أَنفَقْتُم مِّن شَيْءٍ فَهُوَ يُخْلِفُهُ وَهُوَ
خَيْرُ الرَّازِقِينَ
বলুন, আমার
পালনকর্তা তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন এবং সীমিত পরিমাণে
দেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, তিনি তার বিনিময় দেন। তিনি উত্তম রিযিক দাতা।
১৪ তম আমল:
নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করা আল্লাহ তায়ালা কুরআনকে বরকতময় কিতাব বলেছেন, যে ঘরে
নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত হয় সে ঘরের বরকত কেউ আটকাতে পারবেনা। প্রতিদিন অন্তত ১ পারা
কোরআন পড়ার চেষ্টা করবেন। একদম অপারগ হলে ১ পৃষ্ঠা হলেও পড়বেন তাও সম্ভব না হলে ৩
বার সুরা ইখলাস পড়বেন।
১৫ তম আমল:
নিজেও নামাজ পড়া ঘরের সকলকে নামাজের নির্দেশ দেয়া এর ফলে আল্লাহ তায়ালা রিজিক
দেয়ার ওয়াদা করেছেন যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা ত্বাহার ১৩২ নং আয়াতে এরশাদ করেন
وَأْمُرْ
أَهْلَكَ بِالصَّلَاةِ وَاصْطَبِرْ عَلَيْهَا لَا نَسْأَلُكَ رِزْقًا نَّحْنُ
نَرْزُقُكَ وَالْعَاقِبَةُ لِلتَّقْوَى
আপনি আপনার
পরিবারের লোকদেরকে নামাযের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে
কোন রিযিক চাই না। আমি আপনাকে রিযিক দেই এবং আল্লাহ ভীরুতার পরিণাম শুভ।
১৬ তম আমল: সর্বদা ইস্তেগফার পড়বেন। যে ব্যক্ত নিয়মিত ইস্তেফগার
পড়বে, সব ধরনের সমস্যা-সংকট
থেকে আল্লাহ তাকে মুক্তি দেবেন (আবু দাউদ)।
১৭ তম আমল: বিয়েতে আল্লাহ
বরকত রেখেছেন, সচ্ছলতা রেখেছেন, সে জন্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ধান্দায় বুড়া হয়ে যাবেন না বরং বিয়ে করে ফেলুন তাহলে
আল্লাহ সচ্ছলতা দিবেন যেমন সুরা নুরের ৩২ নং আয়াতে এরশাদ হচ্ছে
وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ
وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء
يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
তোমাদের
মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং
তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও।
তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে
সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
১৮)
আল্লাহকে ভয় করা (১৯) সদা সবদা আল্লাহর উপর ভরসা রাখা (২০) বরকতের জন্য আল্লাহর
কাছে দোয়া করা দোয়ার মধ্যে ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করবেন তাহলে দোয়া দ্রুত কবুল হয় আর
ইসমে আজম হল (ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুম, এয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম) এই ইসম ধরে
ধরে আল্লাকে ডাকবেন আর ফরিয়াদ করবেন, ইনশা আল্লাহ আল্লাহ আপনার সকল ফরিয়াদ শুনবেন,
আপনার সকল মনের আশা পুরণ করে দিবেন।
সংক্ষেপে: (১) নেয়ামতের শোকর করলে আল্লাহ নেয়ামত আরো বাড়িয়ে দিবেন
(২) তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে ক্যান্সার সহ সব ধরনের
বড় বড় রোগ থেকে শেফা দিবেন (৩) বেশী বেশী
দরুদ পড়লে দুশ্চিন্তা দুর হবে (৪) ৫ ওয়াক্ত
নামাজের পর নামাজের জায়গায় বসে জিকির আযকার করলে কোটি কোটি ফেরেশতা আপনার জন্য দোয়া
করবে (৫) অপর মুসলমান ভায়ের সমস্যা সমাধানের
জন্য দোয়া করলে ফেরেশতারা আপনার সমস্যা সমাধানের জন্য দোয়া করবেন (৬) ঘরে অসহায় শিশু বৃদ্ধ উপাজন অক্ষম লোকদেরকে ভরন পোষন
দিলে আল্লাহ রুজি রোজগারে বরকত দিবেন (৭) ভাই বোনের সাথে সুসম্পর্ক রাখলে হায়াতে রিজিকে বরকত দিবেন আর মৃত্যুর সময় কলমা
নসিব হবে(৮) ভোরে ভোরে কাজ শুরু করলে কাজে
বরকত হবে (৯) দান সদকা করলে, নামাজ পড়লে এবং ঘরের সকলকে নামাজের হকুম দিলে, রিজিক
বাড়িয়ে দিবেন (১০) সর্বদা ইস্তগফার পড়লে
সব ধরনের সমস্যা সংকট থেকে আল্লাহ মুক্তি দান করবেন।
কোন মন্তব্য নেই