ইসলামের সবচেয়ে মজবুত আমল কী?

 

ইসলামের সবচেয়ে মজবুত আমল কী?



পরিবারে সারাজীবন সুখ ও শান্তির জন্য দুটি সহজ কাজ করতে হবে। সেই দুটি সহজ কাজ কী? মা-বাবা, স্ত্রী, পুত্র, কন্যা নিয়ে জীবন কিভাবে কাটাবেন? আমাদের নবী (সা.) তার জীবনের নমুনা দিয়েছেন, সে নমুনা কি আমরা অনুসরণ করি? আজ আমি সংক্ষেপে আপনাদের সামনে তা উপস্থাপন করব।

এই কয়েকটি কাজ করলেই আপনার জীবনের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, সব পেরেশানী দূর হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। তাই, শেষ পর্যন্ত আলোচনাটি শুনুন, যদি উপকারে না আসে, তবে কমেন্টে জানাবেন।

স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন:

আল্লাহ তায়ালা সবার প্রথমে যে বন্ধন সৃষ্টি করেছেন, সেটি হল স্বামী-স্ত্রী বন্ধন। আল্লাহ তায়ালা যদি চাইতেন, তবে আদম (আ) ও হাওয়া (আ) দুজনকে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করতে পারতেন, কিন্তু আল্লাহ আদম (আ) কে সৃষ্টি করেছেন মাটি দিয়ে, আর হাওয়া (আ) কে সৃষ্টি করেছেন আদম (আ) এর বাম পাজরের হাড় দিয়ে।

আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে যত পুরুষ সৃষ্টি করেছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর আকৃতি দিয়েছেন ইউসুফ (আ) কে। আবার সমস্ত আম্বিয়াদের সৌন্দর্য একত্রে আমাদের নবী (সা.) কে দিয়েছেন। নারীদের মধ্যে পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর সুরতে সৃষ্টি করেছেন হযরত হাওয়া (আ) কে। সুবহানাল্লাহ!

বিয়ের সম্পর্ক:

মানুষ ১০০% পারফেক্ট হয় না। তাই, বিয়ের বন্ধনে যখন কবুল করবেন, তখন মনে মনে নিয়ত করবেন, "আমি এই নারীকে বিয়ে করছি তার সকল অপূর্ণতার সাথে, তার সকল পূর্ণতার সাথে।"

আল্লাহ তায়ালাও কিয়ামতের দিন ১০০% চাইবেন না, বরং যদি দোষ ৪৯% এবং গুণ ৫১% হয়, তবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করতে দেবেন। সুতরাং, আমাদের কোনো বিষয়ে ১০০% খোঁজ করা উচিত নয়।

ঘরোয়া শান্তি:

স্বামী যদি স্ত্রীর দোষ খোঁজে, স্ত্রী যদি স্বামীর দোষ খোঁজে, মা-বাবা যদি সন্তানের দোষ খোঁজে, সন্তান যদি মা-বাবার দোষ খোঁজে, ভাই যদি বোনের দোষ খোঁজে, এবং বোন যদি ভাইয়ের দোষ খোঁজে, তবে সে সংসারে কিয়ামত পর্যন্ত সুখ-শান্তি আসবে না। আমরা যে কোনো কিছু কবুল করব, তা ত্রুটি সহ পরিপূর্ণ।

আল্লাহর জন্য ভালোবাসা:

আমাদের নবী একদিন সাহাবীদের প্রশ্ন করেছিলেন, “তোমরা আমাকে বল, ইসলামে সবচেয়ে মজবুত আমল কী?” সাহাবীরা উত্তর দিলেন নামাজ, রোজা, জিহাদ, হজ, জাকাত—তবে নবী (সা.) বললেন না। অবশেষে নবী (সা.) বললেন, ইসলামে সবচেয়ে মজবুত আমল হল আল্লাহর জন্য একে অপরকে ভালোবাসা।

এছাড়া, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বলবেন: "কোথায় তারা, যারা আমার মহিমার কারণে একে অপরকে ভালোবাসত? আজ আমি তাদের আমার ছায়ায় স্থান দেব, যেদিন আমার ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না।" (সহিহ মুসলিম: ২৫৬৬)

পরিবারে শান্তির জন্য দুটি কাজ:

১) একে অপরের দোষ তালাশ করা থেকে বেঁচে থাকুন, গুণগুলি দেখুন এবং দোষগুলি এড়িয়ে চলুন। ২) মুখ থেকে যেন বিষ বের না হয়, বরং মহব্বতের ফুল বের করুন। একে অপরকে অপমান করবেন না, অপদস্থ করবেন না। যদি এমনটা না হয়, তাহলে আপনার সম্পর্ক শক্তিশালী হবে।

জিন্দেগী আখলাক দ্বারা আবাদ হয়:

চেহারা বা সৌন্দর্য দিয়ে জীবন আবাদ হয় না, জীবন আখলাক দ্বারা আবাদ হয়। নিকাহ শব্দের অর্থ হল স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু বর্তমানে অনেক সময় দেখা যায়, স্ত্রী স্বামীর মোবাইল চেক করে, স্বামী স্ত্রীর মোবাইল চেক করে—এটা পুরোপুরি ভুল। নিকাহ মানে ছাউনি তৈরি করা, যেখানে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে বিশ্বাস করবে, এবং তাদের সন্তানের নিরাপত্তার ব্যবস্থা হবে।

সন্তানদের সাথে সম্পর্ক:

সন্তানদের সারাক্ষণ লেকচার দেয়ার পরিবর্তে, তাদের মধ্যে যে অপূর্ণতা আছে, সেটিকে কবুল করে, তাদের বুকের সাথে লাগিয়ে রাখুন। দেখবেন, আপনার সন্তানের জীবন বদলে যাবে।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.