৯৯% লোক জানেনা। মেহমানের সাথে আমলটির ফজিলত। আতিথেয়তার ইসলামীক নিয়ম| All ...
-মেহমানের ফজিলত
যে আমলটি করলে ঘরে কোন বিপদ আসবেনা
কখনো বেবরকতি হবেনা
নবজাতের মত হবেন, জান্নাতের সব দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে
পারবেন
ঘটনা- এক ঘরে স্বামী
স্ত্রী ঝগড়া শুরু হল, স্বামী স্ত্রীকে খুব বকা ঝকা করল, কিছুক্ষন পর স্বামীর এক
পরম আত্মিয় মেহমান হয়ে ঘরে আসল, সে তার আত্মিয়কে মেহমান খানায় বসাল এখন যখন
স্ত্রীকে গিয়ে বলল মেহমান এসেছে স্ত্রী বলল তোমার জন্যও খানা নাই তোমার মেহমানের
জন্যও আমি খাবার তৈরী করতে পারবনা।
এখন স্বামী বেচানারা বড়ই
মসিবতে কি করবে? সে দৌড়ে গেল পাশের বাড়ীতে এক প্রতিবেশীর কাছে তাকে গিয়ে বলল আমার
ঘরে মেহমান এসেছে আমার স্ত্রীও অসুস্থ আপনি যদি পারেন এ বেলার খাবারটা মেহমানের জন্য
তৈরী করে দেন।
সে প্রতিবেশী স্বানন্দে
মেহমানের জন্য খানা তৈরী করতে রাজি হয়ে গেল, এদিকে স্বামী ঘরে এসে দেখে স্ত্রী জার
কাতার কান্না করছে, স্বামী প্রশ্ন করল কি ব্যপার কাঁদছ কেন? স্ত্রী জবাব দিল আমার
আর আপনার ঝগড়া মেহমানের সাথেতো আমাদের কোন ঝগড়া নাই আর মেহমান হল আল্লাহর রহমত আমি
দেখলাম এক ধবধবে সাদা নুরানি লোক আমার ড্রাম থেকে আটা নিয়ে যাচ্ছে আমি তাকে প্রশ্ন
করলাম আপনি কে? সে বলল আমি হলাম ফেরেশতা তোমার ঘরে মেহমানের জন্য ৪০ দিন আগে রিজিক
দেয়া হয়েছে আজ তা পাশের প্রতিবেশীর ঘরে নিয়ে যাচ্ছি।
১।
৪০ দিনের রিজিক- মেহমান আসার ৪০ দিন আগে
মেজবানের ঘরে মেহমানের রিজিক এসে যায়, অর্থ্যাৎ ৪০ দিন পর আপনার ঘরে যে মেহমান
আসবে সে এক বেলা খাবে কিন্তু তার বরকতে আপনি ৪০ দিন আগে রিজিক পাবেন।
২। মসিবত নিয়ে যায়- মেহমান যখন বিদায় নেয় তখন আপনার ঘর থেকে সব ধরনের
বলা মসিবত দুর হয়ে যায়।
হাদীসের ঘটনা- এক মহিলা
হুজুর (দ) এর কাছে এসে অভিযোগ করল এয়া রাসুলাল্লাহ (দ) আমার স্বামী বেশী ঘরে
মেহমান আনেন আমি মেহমানদের জন্য খানা তৈরী করতে করতে ক্লান্ত। যখনমহিলা অভিযোগ করে
চলে গেল হুজুর (দ) তার স্বামীকে ডাকালোন আর বললেন আমি আমি তোমার ঘরে মেহমান হব, সে
গিয়ে তার স্ত্রীকেবলল স্ত্রী হুজুর (দ) আসবেন শুনে খুব খুশী হল আর অত্যন্ত
আন্তরিকতার সাথে খোশ অন্তরে খাবার তৈরী করল আর মেহমানদারী করল, হুযুর (দ) খাবার
গ্রহণ করে যখন যাচ্ছেন তখন বললেন তোমার স্ত্রীকে বলবে আমি যখন তোমার ঘর থেকে চলে
যাব সে যেন আমার চলে যাওয়াটা দেখে, তারা স্বামী স্ত্রী হুজুরের চলে যাওয়া দেখল আর
তারা দেখতে পেল হুজুর (দ) এর পিছে পিছে তাদের ঘর থেকে নানা ধরনের বিপদ বলা মসিবত
দুঃখ পেরেশানি সাপ বিচ্চু কষ্টদায়ক প্রাণ বের হয়ে গেল। এই আশ্চয্য দৃশ্য দেখে সে
মহিলা বেহুশ হয়ে গেল যখন হুশ ফিরে আসল সে আবার হুজুরের কাছে গেলে হুজুর (দ) বললেন
যখন ঘরে কোন মেহমান আসে কেহ তার মেহমানদারী করেিআর সে মেহমান যখন চলে যায় তখন তার
সাথে সাথে আল্লাহ তায়ালা সব ধরনের বলা মসিবত কষ্টদায়ক প্রাণীকে দুর করে দেন এবং
ঘরবাসীকে নিরাপত্তা দান করেন।
৩। নবজাতকের মত- হুযুর (দ) এরশাদ করেন যে কারো এমন মেহমানদারী করল যার ফলে মেহমান
একদম অন্তর থেকে খুশি হয়ে গেল, সে মেজবান মেহমানদারী করার কারনে গুনাহ থেকে এমন
পাক ও সাফ হয়ে যায় যেন এখনই মায়ের পেট থেকে জন্ম গ্রহণ করেছে
৪। হযরত আলীর কান্না মেহমান আসেনা- একদিন হযরত আলী (রা) মসজিদের নববীতে বসে বসে
কান্না করছেন তখন এক সাহাবী প্রশ্ন করল হে আলী তুমি কাঁদছ কেন? তখন হযরত আলী (রা)
জবাব দিলেন আমি এই জন্য কাঁদছি গত এক সপ্তাহ যাবৎ আমার ঘরে কোন মেহমান আসেনি আমি
ভাবছি আল্লাহ হয়ত আমার উপর নারাজ হয়ে গেছেন। কেননা আল্লাহ যার উপর নারাজ হয়ে যান
তার ঘরে মেহমান আসা বন্ধ করে দেন।
আমাদের ভাবনা হল মেহমান
যত কম আসে ততই মঙ্গল।
স্ত্রীর আত্মিয় বনাম স্বামীর আত্মিয়- আমাদের মা বোনেরা মেহমানের ফজিলত জানে না তাই
তারা মেহমানের ব্যপারে পার্থ্যক্য করে ফেলে অনেক মহিলা এমন যদি তার বাপের বাড়ী
থেকে আসে তখন সব কিছু করতে রাজি কিন্তু যখন স্বামীর বাড়ী তেকে কেহ আসে তখন নানা
বাহানা করে মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা বেড়ে যায়।
ঘটনা- এক মহিলা তার মা আসলে অনেক যত্ন সহকারে রান্না বান্না করে কিন্তু
স্বামীর মা আসলে রান্না বান্না করতে চায় না, একদিন স্বামী স্ত্রীকে বলল আজ মা
আসবে, স্ত্রী মনে করল স্বামীর মা আসবে তাই সে বলল তুমি দোকান থেকে খাবার কিনে
আনিও, স্বামী বউ এর কথা মত দোকান থেকে
খাবার নিয়ে আসল এদিকে কিছুক্ষন পর দেখা গেল মহিলার মা এসে হাজির, মহিলা প্রশ্ন করল
মা তুমি আসবে আমাকে বলনি কেন? সে বলল আমি জামাইকে ফোন করে বলেছি, তখন মহিলা
স্বামীকে বলল আপনি আমাকে আমার মা আসবে বলেননি কেন? স্বামী জবাব দিল আমিতো বললাম মা
আসবে, আর তুমিইতো বললে দোকান থেকে খাবার কিনে আনতে। স্ত্রী বলল আমার মা বাবা আসবে
বলতে আমি ঘরে খানা রেডি করতাম। তখন স্বামী বলল যদি আমার মা বাবা হোটেলের খাবার
খেতে পারে তাহলে তোমার মা বাবা পারবেনা কেন? এই হল ঘরসমুহের অবস্থা।
৫। মেহমান
দেখলে খুশি মনে রেসপন্স করা- হাদীস- হুযুর (দ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে, যাকাত আদায় করে আর হজ্ব
ফরয হলে হজ্ব করে আর যখনই মেহমান আসে তাকে খুশি মনে মেহমানদারী করে কেয়ামতের দিন
সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে চায় সে দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।
সে জন্য যখনই মেহমান আসবে
প্রশান্ত মনে হাসি মুখে মেহমানদারী করা জান্নাতে যাওয়ার সহজ একটি আমল।
কোন মন্তব্য নেই