দরুদ শরীফের ফজিলত। দরুদ শরীফের ওজিফা ও আমল। Durood Sharif ar fazilat Amal

 

এ দরুদ শরীফ পড়লে আল্লাহর সাহায্য আসতে দেখেবেন, মুশকিল ও পেরেশানি থেকে নাজাত পাবেন, নসিব ও তকদির খুলে যাবে, আশা পুরণে আল্লাহর গায়েবী মদদ আসবে।



লাখো কোটি দরুদ ও সালাম হুজুর (দ) এর উপর এবং তার আহলে বায়তের উপর। প্রতিদিন আমাদের জীবনে অনেক সুযোগ আসে দরুদ শরীফ পড়ার, প্রথম সুযোগটি আসে নামাজের হালতে। যতক্ষন দরুদ শরীফ পড়া না হয় ততক্ষন নামাজ পূর্ণ হয়না।

তেমনি ভাবে নামাজে জানাযায়ও দরুদ শরীফ পড়া হয়।

তদ্রুপ ভাবে আযানের পরও যে দোয়া তাতে দরুদ শরীফ পড়া হয়। আল্লাহর প্রিয় হাবিব (দ) এরশাদ করেন যখন আযান শুন তখন তাই বল যা মুয়াজ্জিন বলেন। অর্থ্যাৎ আযানের জওয়াব দাও। তারপর আমার উপর দরুদ পাঠ কর।

অর্থ্যাৎ আযানের জবাব দেয়ার পর কি করা উচিত? নবী করিম (দ) এর উপর দরুদ প্রেরণ করা জরুরী।

কেননা আমার উপর দরুদ পাঠকারীর উপর আল্লাহ তায়ালা ১০ রহমত নাজিল করেন, এরপর আমার জন্য আল্লাহর কাছে অছিলা তালাশ কর। জান্নাতে একটি স্থান যা জান্নাতিদের মধ্যে থেকে শুধু একজনেরই হাছিল হবে। আর আমার আশা সে জান্নাতি আমিই হব।

অর্থ্যাৎ হুযুর (দ) এর জন্যই সে মকাম সে স্থান।

আর হুযুর (দ) আরো এরশাদ করেন - যে আমার জন্য অছিলা তালাশ করে, অর্থ্যাৎ দরুদ শরীফ ছাড়া (আতি মুহাম্মাদানিল অছিলাতা ওয়াল ফাদিলা) যে এই দোয়াটিও পড়বে তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে। অর্থ্যাৎ কেয়ামতের দিন আমি তার জন্য শাফায়াত করব।

নামাজ ছাড়া বিভিন্ন নির্ধারিত স্থান বাদে দিনের যখন সুযোগ হয় তখন আপনি দরুদ শরীফ পড়তে পারবেন। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় জুমার দিন দরুদ শরীফ পাঠের বিশেষ গুরুত্ব আছে। কেননা হুযুর (দ) এরশাদ করেন জুমার দিন আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর। যে লোক জুমার দিন আমার উপর দরুদ পাঠ করে তা আমার সামনে পেশ করা হয়।

তেমনি ভাবে দোয়ার আগে দোয়ার পর এবং যেখানে হুযুরের নাম মোবারক নেয়া হয় বা লিখা হয় কিংবা যে কোন ভাবে হুযুর (দ) এর জিকির আসে সেখানে দরুদ পাঠ করা।

তেমনি ভাবে মসজিদে প্রবেশ করার সময় দরুদ শরীফ পড়া, মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় দরুদ শরীফ পড়া। তারপর নামাজ থেকে ফারেগ হয়ে দরুদ শরীফ পড়া, তেমনি ভাবে সকল মজলিসে হুযুর (দ) এর উপর দরুদ পড়া উপকারী।

এছাড়া সকাল ও সন্ধ্যায়ও দরুদ পড়া উচিত। তাছাড়া এসব সময়ে দরুদ পড়া না গেলে দিন ও রাতের যখনই আপনার সুযোগ হবে দরুদ পড়া উচিত। চলতে ফিরতে কাজ কাম করা অবস্থায়, অজু থাকুন না থাকুন আপনি আল্লাহর রাসুল (দ) কে দরুদ ও সালাম প্রেরণ করতে পারেন।

বেশী বেশী দরুদ পাঠকারীরা কেয়ামতের ময়দানে নবী (দ) এর শাফায়াত অর্জন করবেন।

নবীজি ফরমান- যে ব্যক্তি সকাল সন্ধ্যায় ১০ বার আমার উপর দরুদ প্রেরণ করবে কেয়ামতের দিন সে আমার শাফায়াত পাবে।

তাই আর বেশী পড়তে না পারলেও কমপক্ষে সকালে ১০ বার সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ পড়ে নিবেন প্রতিদিন।

দরুদ শরীফ আব (দ) এর নৈকট্য লাভেরও মাধ্যম। হাদীসে পাকে আসছে, (কালা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামা আউলান্নাসি বি এয়াউমাল কিয়ামাতি আকসারুহুম আলাইয়্যা সালাতান) কেয়ামতের দিন আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী তারা হবে যে দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশী আমার উপর দরুদ প্রেরণকারী হবে।

অর্থ্যাৎ কেয়ামতের দিন আব (দ) এর নৈকট্যও দরুদ শরীফের কারনে হবে।

যদি মানুষ আর কোন দোয়া নাও করতে পারেন, দুঃখ মসিবত ও কষ্টের মধ্যে শুধু দরুদ শরীফ পড়তে থাকে তা তার জন্য যথেষ্ট হবে।

হযরত উবাই ইবনে কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদা আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি আপনার নামে অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করি; অতএব দরুদ পাঠের জন্য আমি কতটুকু সময় নির্দিষ্ট করব?

_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও। আমি বললাম, এক চতুর্থাংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও; আর যদি আরও বেশি কর, তবে তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, অর্ধেক সময়? আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম_ তবে দুই তৃতীয়াংশ সময়। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যতটুকু তুমি চাও আর যদি আরও বেশি কর, তবে তা তোমার জন্য ভালো হবে। আমি বললাম, আমি আপনার উপর দরুদ পাঠের জন্য আমার সমুদয় সময় নির্দিষ্ট করব। আঁ_ হযরত ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তবে তোমার যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তোমার দ্বীন দুনিয়ার সকল উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে আর তোমার সমস্ত গোনাহ্ মাফ হবে। (তিরমিযী)

 অনেক সময় মানুষ দুঃখ অভাব অনটন পেরেশানি বিপদে পতিত হয়ে দিশেহারা হয়ে যায় কি দোয়া পড়বে কি বলবে ভুলে যায়, অনেক বিপদ এমন আছে যাতে পতিত হয়ে মানুষ নিজের হুশ হারিয়ে ফেলে,  সে মুহুর্তে দরুদ শরীফের হাদিয়া সব ধরনের দুঃখ পেরেশানি বিপদ থেকে মুক্তির জন্য একমাত্র মাধ্যম হতে পারে।

হুযুর (দ) এর উপর দরুদ প্রেরণ করতে পারা আমাদের জন্য অনেক বড় সৌভাগ্যের বিষয়, মনে রাখবেন আল্লাহর হাবিব আমাদের দরুদ এর মুখাপেক্ষি নন, পূব হউক পশ্চিম হউক উত্তর বা দক্ষিন হউক দুনিয়ার কোনায় কোনায় হুজুরের জিকিরের আওয়াজ বুলন্দ হচ্ছে, দিন রাত আযান সমুহে নামাজ সমুহে যেখানে যেখানে তার নাম মোবারক নেয়া হয়।

কিন্তু যদি আমরা দরুদ শরীফ পড়তে পারি তার উপকারিতা আমরাই ভোগ করব। আমাদের নিজেদের জন্য রহমতের জরিয়া। সকল কষ্ট বিপদ মসিবত পেরেশানি থেকে মুক্তির রাস্তা। সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির একমাত্র মাধ্যম।

রাসুলুল্লাহ (দ) এরশাদ করেন যে লোক আমার উপর একবার দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তায়ালা তার উপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন, তার ১০টি গুনাহ মাফ করে দিবেন। এবং ১০টি মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.