লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহর ফজিলত Dua wazifa । অভাব, রোগ মুক্...

লা হাউলা ওয়ালা কুয়্যাতার আযব ফজিলত ওজিফা

আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কারো কোন উপায় শক্তি নেই



সম্মানিত  দর্শক শ্রোতা বৃন্দ আজ আমি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহর ফজিলত, পড়ার নিয়ম, কখন কখন পড়বেন, কিভাবে আল্লাহর গুপ্তধন হাছিল করবেন, কিভাবে সকল অশুভ দুর করবেন, সকল দুঃখ, বিপদ থেকে নাজাত পাবেন, কিভাবে জান্নাতের রাস্তা সহজ করবেন, কিভাবে সব দোয়া কবুল করাবেন, সব নামাজ কবুল করাবেন, কিভাবে ৭০টি বড় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাবেন, ৯৯টি রোগ থেকে মুক্তি পাবেন ১০টি হাদীস শরীফ আপনাদের সামনে তুলে ধরব, আলোচনাটি যদিও একটু দীঘ হবে কিন্তু আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনার সময়টা অপচয় হবেনা বরং আপনি ফায়দামন্দ হবেন ইনশা আল্লাহ। 

 

১।৭০টি কষ্ট দুর এবং দারিদ্রতা দুর হবে লা হাওয়ালা ওয়ালা কুয়্যাতার জিকির দ্বারা যেমন হযরত ইবনে আব্বাস (রা) বলেন নবী করিম (দ) এরশাদ করেন যাকে দুঃখ ও চিন্তা ঘিরে নেয় তার উচিত লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ বেশী বেশী পড়ে।

 তিরমিযী ৩৬০১, সহীহ আত্ তারগীব ১৫৮০ নং হাদীস মাকহূল (রহঃ) আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-’’ বেশি বেশি করে পড়তে। কেননা বাক্যটি জান্নাতের ভাণ্ডারসমূহের গুপ্তধনসমুহের একটি গুপ্তধন

মাকহূল (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি পড়বে ‘‘লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি ওয়ালা- মানজাআ মিনাল্ল-হি ইল্লা- ইলায়হি’’- আল্লাহ তার সত্তরটি কষ্ট দূর করে দিবেন, যার সর্বনিম্ন হলো দারিদ্র্যতা

 #এক হাদীসে আছে লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ জান্নাতের দরজাসমুহ তেকে একটি দরজা

#অপর এক হাদীসে আছে লা হাওয়ালা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পাঠ করলে প্রতিবার পাঠ করার সাথে সাথে একজন করে ফেরেশতা নাজিল হয় আর এই ফেরেশতা আল্লাহর হকুমে রোগসমুহকে দুরে করে দেন।

#হুজুর (দ) এরশাদ করেন যে ১০ বার বিসমিল্লাহি ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহি”ল আলিয়্যিল আজিম পড়বে আল্লাহ তাকে গুনাহ থেকে এমন ভাবে পুত পবিত্র করে দেন যেন আজই মায়ের পেট থেকে জন্মলাভ করেছে।

#হযরত আবু মুসা হতে বর্ণিত তিনি বলেন যে (লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ) প্রতিদিন ১০০ বার পাঠ করবে সে কখনো কারো মুহতাজ হবেনা মুখাপেক্ষি হবেনা।

 ২। লা হাউলা ওয়ালা কুয়্যাতা জান্নাতের ভান্ডার বা গুপ্তধন যেমন-

বুখারী শরীফের ৪২০২ নং হাদীস- নবী করিম () এরশাদ করেন জান্নাতের ভান্ডার সমুহের মধ্যে একটি ভান্ডার হললা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ

সুনানে ইবনে মাজার ৩৮২৬ নং হাদীস- হাযিম ইবনে হারমালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি আমাকে বলেনঃ হে হাযিম! তুমি অধিক সংখ্যায় ‘‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’’ বাক্যটি পড়ো। কেননা তা হলো জান্নাতের গুপ্তধন

৩। আযানের জবাব লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পড়া এবং জান্নাতের সুসংবাদ যেমন-

মুসলিম ৩৮৫, আবূ দাঊদ ৫২৭, সহীহ আল জামি৭১৪ এর হাদীস যার সার সংক্ষেপ যে আযানের জবাব দিবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে আর আযানের জবাবে হাইয়্যা আলাস সালাহ , হাইয্যা আলাল ফালাহ শুনে লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা পড়ার নির্দেশ রয়েছে।

৪। যারা কুরআন মুখস্থ করার সুযোগ পায়নি তাদের জন্য লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ যেমন আবু দাউদ এর ৮৩২ নং হাদীস

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দরবারে হাজির হয়ে আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কুরআনের কোন অংশ শিখে নিতে সক্ষম নই। তাই আপনি আমাকে এমন কিছু শিখিয়ে দিন যা আমার জন্য যথেষ্ট হবে। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি এই (দু) পড়ে নিবেঃ

سُبْحَانَ اللهِ وَالْحَمْدُ لِلّهِ وَلَا إِلهَ اِلَّا اللّهُ اللّهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ

‘‘আল্লাহ তাআলা পবিত্র। সব প্রশংসা তাঁর। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত আর কোন মাবূদ নেই। আল্লাহ অতি বড় মহান। গুনাহ হতে বেঁচে থাকার শক্তি ইবাদাত করার তাওফীক্ব আল্লাহরই কাছে’’

৫। নামাজের সালাম ফিরানোর পর লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহর জিকির

যেমন মুসলিম শরীফের ৫৯৪ নং হাদীস আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সালাতের সালাম ফিরানোর পর উচ্চকণ্ঠে বলতেন,

‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়াআলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়ালা- নাবুদু ইল্লা- ঈয়্যাহু, লাহুন্ নিমাতু, ওয়ালাহুল ফাযলু, ওয়ালাহুস্ সানা-উল হাসানু, লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু মুখলিসীনা লাহুদ্দীন, ওয়ালাও কারিহাল কা-ফিরূন’’

৬। রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে কিংবা কেহ যদি ভয় পেয়ে ঘুম ভেঙ্গে যায় তখন লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতার দোয়া পড়া যেমন

বুখারী শরীফের ১১৫৪ নং হাদীস

উবাদাহ্ ইবনুস সামিত (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে লোক রাত্রে ঘুম থেকে জেগে দু পাঠ করবেঃ

‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহূ লা- শারীকা লাহূ, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়াহুওয়াআলা- কুল্লি শাইয়্যিন ক্বদীর, ওয়া সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদু লিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্ল-হু আকবার, ওয়ালা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-’’

(অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্যিকার কোন মাবূদ নেই, তিনি এক তাঁর কোন শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, প্রশংসা মাত্রই তাঁর এবং তিনি সকল বিষয়ে ক্ষমতাশীল। আল্লাহ তাআলা পবিত্র, সকল প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই, আল্লাহ সবচেয়ে বড়, আল্লাহর অনুগ্রহ ব্যতীত গুনাহ হতে বাঁচার সৎকার্য করার ক্ষমতা কারো নেই।)

তারপর বলবে, ‘‘রব্বিগ্ ফিরলী’’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর) অথবা বললেন, পুনরায় দু পাঠ করবে। তার দু কবূল করা হবে। তারপর যদি উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে, তার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) কবূল করা হবে। (বুখারী)[1]

 ৭। ৯৯টি রোগের ঔষধ লা হাওয়ালা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ যেমন-

মেশকাত শরীফের ২৩২০ নং হাদীস আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘লা- হাওলা ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-’’ হলো নিরানব্বইটি রোগের ঔষধ, তন্মধ্যে ছোটটি হলো চিন্তা।[1]

৮। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় লা হাওয়ালা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পড়া যেমন-

আবূ দাঊদ ৫০৯৫ তিরমিযী ৩৪২৬, ইবনু হিব্বান ৮২২ নং হাদীস আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি ঘর হতে বের হবার সময় যখন বলে, ‘‘বিসমিল্লা-হি তাওয়াক্কাল্তুআলাল্ল-হি, লা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হি’’ (অর্থাৎ- আল্লাহর নামে বের হলাম, আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম, আল্লাহ ছাড়া কোন উপায় নেই, ক্ষমতা নেই)- তখন তাকে বলা হয়, পথ পেলে, উপায়-উপকরণ পেলে এবং নিরাপদ থাকলে। সুতরাং শয়তান তার কাছ হতে দূর হয়ে যায় এবং অন্য এক শয়তান এই শয়তানকে বলে, যে ব্যক্তিকে পথ দেখানো হয়েছে, উপায়-উপকরণ দেয়া হয়েছে এবং রক্ষা করা হয়েছে- তাকে তুমি কি করতে পারবে?

৯। বায়তুল্লাহর তাওফাফে লা হাওয়ালা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পড়া যেমন-

ইবনু মাজাহ ২৯৫৭ নং হাদিস আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)] হতে হাদীসটিও বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বায়তুল্লাহ সাতবার তাওয়াফ করে এবং ‘‘সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াল হামদুলিল্লা-হি ওয়ালা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হু ওয়াল্ল-হু আকবার, ওয়ালা- হাওলা ওয়ালা- ক্যুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-’’ (অর্থাৎ- আল্লাহ পবিত্র, সকল প্রশংসা আল্লাহরই, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন উপাস্য নেই, আল্লাহ মহান, আল্লাহ ছাড়া কারো উপায় বা শক্তি নেই।) দুআটি পড়া ব্যতীত আর কোন কথা না বলে তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়, তার (‘আমলনামায়) দশটি নেকী লিপিবদ্ধ করা হয় এবং তার দশটি মর্যাদাও বৃদ্ধি করা হয়

১০। অশুভ কিছু দেখলে লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ পড়া যেমন

বায়হাকি আবু দাউদ শরীফের ৩৯১৯ নং হাদীস এর মফহুম হল ইসলামে শুভ অশুভ বলতে কিছু নাই তবে কেহ যদি কিছু অশুভ মনে করে তাহলে আল্লাহ রাসুল () বলেন সে যেন পড়ে

اللَّهُمَّ لَا يَأْتِي بِالْحَسَنَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا يَدْفَعُ السَّيِّئَاتِ إِلَّا أَنْتَ، وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِكَ

‘‘হে আল্লাহ! আপনিই তো কল্যাণদাতা এবং আপনিই তো অকল্যাণ দূরকারী। আপনি ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই, শক্তিও নেই।’’[

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.