হযরত সাআদ (রা)
প্রশ্ন করেন- এয়া রাসুলাল্লাহ উদউল্লাহা আন আকুনা মুসতাজাবুদ দাওয়াত হে আল্লহর রাসুল
দোয়া করুন আমি যেন মুসতাজাবুদ দাওয়াত হতে পারি। অর্থ্যাৎ আমার সব দোয়া যেন কবুল হয়।
তখন হুজুর (দ) দোয়ার পরিবর্তে দাওয়া বলে দিলেন। দোয়া করলে সে নিজে উপকৃত হত কিন্তু
দাওয়া বলার ফলে দুনিয়ার সকলেই এটা এপ্লাই করে উপকৃত হতে পারবে।
হুজুর (দ) ফরমালেন
তোমার খাদ্যকে হালাল করে নাও যেটাই দোয়া করবে সেটাই কবুল হয়ে যাবে। রিযিক হালাল হলে
মুখ থেকে বের হওয়া দোয়া কখনো আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না।
সে জন্য হযরত
সৈয়্যেদুনা ওমর (রা) বলতেন যতক্ষন মানুষ হারাম থেকে না বাঁচে ততক্ষন তার কোন তসবীহও
কবুল হবেনা কোন দোয়াও কবুল হবেনা।
এক সাহাবী আরজ
করেন হে আল্লাহর রাসুল আমার মনে ২টি তামান্না আছে তা কিভাবে পুরণ হবে? আমার প্রথম তামান্না
হল দুনিয়ার মধ্যে আমিই সবচেয়ে বড় এবাদতগুজার বান্দা হয়ে যাই। হুজুর (দ) ফরমারেন অবশ্যই
তোমার সে তামান্না পুরণ হওয়া সম্ভব। (ইত্তাকিল মাহারিম তাকুন আবুদান্নাস) হারাম জিনিষ
থেকে বেঁচে যাও তোমার চাইতে বড় কোন এবাদত গুজার আর কেহ হতে পারবেনা। এখানে হুজুর (দ)
বলেননি যে রাত দিন সিজদায় পড়ে থাক, বরং বলেছেন হারাম থেকে বেঁচে থাক।
সাহাবী এবার ২য়
তামান্নার কথা বললেন - হে আল্লাহর রাসুল আমার ২য় তামান্না হল আমি দুনিয়ার সবচেয়ে বড়
ধনী সম্পদশালী হব, হুজুর (দ) ফরমালেন হ্যাঁ তাও সম্ভব- তোমাকে তোমার রব যা দান করেছেন
তাতে রাজি হয়ে যাও, সন্তুষ্ট থাক, আর সদা শোকরিয়া আদায়ার্থে আলহামদুলিল্লাহ বল তাহলে
তোমার চেয়ে বড় আমির আর কেহ হবেনা।
আর ইমাম আহমদ
বিন হাম্বল বয়ান করতেন- সৎচরিত্রের সংজ্ঞা হল হালাল খাওয়া, হারাম থেকে বাঁচা, ঘরের
লোকদের জন্য খরচের ব্যপারে কৃপণতা না করা, এটাই হল আখলাক।
রাসুলে আকরাম (দ) এইজন্যই ফরমায়েছেন-
أربعٌ إذا كُنَّ فيك فلا عليك ما فاتك من الدُّنيا حفظُ أمانةٍ وصدقُ حديثٍ وحسنُ خُلقٍ وعِفَّةٌ في طُعمةٍ
৪টি জিনিষ যদি তোমাদের হাছিল হয়ে যায় তারপর যদি সারা দুনিয়া বরবাদও হয়ে যায় তাহলে তোমার পেরেশান হওয়ার প্রয়োজন নাই। সে ৪টি জিনিষ কি তা পরে বলব প্রথমে শুনুন হযরত আলী (রা) কি বরতেন-
হযরত আলী (রা) বলতেন (আল আমানাহ মিফতাহুর রিজিক) কেহ যদি রিযিকের চাবি হাসিল করতে চায় সে যেন আমানতদার হয়ে যায় তাহলে আল্লাহ তায়ালা তার হাতকে রিযিকের চাবিতে ভরে দিবেন।
সে জন্য সফলে সালিহিন বলতেন যে দুনিয়াতে উড়তে চাই তার ২টি পাখা দরকার, আর সে দুটি পাখা কি? (সিদকুল হাদিস) সত্য বলা, ওয়া হিফজু আমানা (আমানতের হেফাজত করা) এই ২টি পাখা যার থাকবে সে মানুষ হয়েও দুনিয়াতে পাখির মত উড়তে পারবে। তার সম্মান বরকত রিযিক হায়াত সব ক্ষেত্রে সে সবার উপরে থাকবে।
নবী করিম (দ) সে জন্য বলেন যার ৪টি জিনিষ হাসিল হবে তার আর কোন অভাব পেরেশানি থাকবে না।
১) সিদকুল হাদিস- কথা সত্য বলতে হবে
২) ওয়া হিফজু আমানা- আমানতের হেফাজত করতে হবে
৩) ওয়া হুসনু খুলুকি- সৎ চরিত্রবান হতে হবে
৪) ওয়া ইফফাতু ফি তোয়ামাহ- হালাল খেতে হবে
এই ৪টি জিনিষ যার হাসিল হবে পুরা দুনিয়ার সকল খায়র ও বরকত আল্লাহ তায়ালা তা দুই হাতে এনে দেবেন
This DUA Will Increase LOVE Between Husband & Wife
আপনারা সকলে জানেন এই চ্যানেলে আমরা রুহানি ও শারিরিক দোয়া আমল ওজিফার সিলসিলা শুরু করেছি আর এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমি আমার সকল বিবাহিত দর্শকদের জন্য চমৎকার গিফট পেশ করতে যাচ্ছি
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো থাকুক কিংবা খারাপ থাকুক উভয় অবস্থাতেই কুরআন ও হাদীসের ২টি দোয়া নিয়মিত পড়া উচিত।
প্রথমে ১টি হাদীসের দোয়া পেশ করব, তারপর ১টি কুরআনের দোয়া পেশ করব।
আর সবশেষে কুরআনের ২টি আয়াতের ওজিফা পাঠ করব আয়াতগুলি মনযোগ দিয়ে ৭দিন শুনবেন ইনশা আল্লাহ আপনার দাম্পত্য কলহ দুর হয়ে যাবে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মহব্বত সৃষ্টি হবে।
আপনারা জানেন জীবন সঙ্গী যদি ভালো হয় যে কোন মানুষ সুখী হয়, কিন্তু জীবন সঙ্গী যদি খারাপ হয়, অসৎ চরিত্রের হয়, বদ মেজাজী হয়, বদ রাগী হয়, বেপরোয়া হয়, তখন বাড়ী গাড়ী টাকা কড়ি এসব যতই থাকুন পরিবার বা দাম্পত্য জীবনে সুখ থাকে না, সব কিছু থাকার পরেও যেন সে পরিবারে সুখ নাই। তাই জীবন সঙ্গী ভালো হওয়াটা জীবনের সুখের জন্য খুবই জরুরী। তাই আল্লাহর প্রিয় হাবিব (দ) দুষ্ট প্রতিবেশী ও দুষ্ট জীবন সঙ্গী থেকে পানাহ চেয়েছেন।
দোয়াটি স্বামী বা স্ত্রী উভয়েই আমল করতে পারবেন। সব সময় পড়বেন, প্রত্যেক নামাজের পর অন্তত ১ বার করে পড়বেন, স্ত্রী যদি স্বামীর কারনে পেরেশানিতে থাকেন তাহলে স্ত্রী দোয়াটি পড়বেন। আর স্বামী যদি স্ত্রীর আচরনে পেরেশানিতে থাকে তাহলে স্বামী এই দোয়াটি বেশী বেশী পড়বেন। তাহলে আল্লাহ তায়ালা আপনার সে পেরেশানি দুর করে দিবেন
“হে আল্লাহ! আমি দুষ্ট প্রতিবেশী থেকে আশ্রয় চাই। আর এমন সঙ্গী থেকে পানাহ চাই যে আমাকে বৃদ্ধ হওয়ার আগেই বৃদ্ধ করে দিবে।
জীবন সঙ্গীর অসৎ চরিত্র, অসদাচরন, বা তার পক্ষ থেকে দুঃখ কষ্ট ভোগ করার ফলে মানুষ টেনশন ও পেরেশানিতে থাকে আর সে টেনশন পেরেশানির কারনে অসুস্থ হয়ে যায়, সাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়, অকালে শারিরিক ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে, এবং অকালেই বৃদ্ধ হয়ে যায়। আর হুজুর (দ) এসব পরিস্থিতি থেকে মুক্তির দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন।
আর ২য় দোয়াটি হল সুরা ফোরকানের ৭৪ নং আয়াত এ দোয়াটি বিশেষ করে প্রত্যেক স্বামী স্ত্রী বেশী বেশী পড়বেন তাহলে স্ত্রী ও সন্তান নেক হবেন চোখের শীতলতাকারী হবেন।
হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। [সুরা ফুরকান - ২৫:৭৪]
এবার ২টি আয়াত পাঠ করব এই দুটি আয়াত ৭ দিন শুনবেন বা পড়তে পারলে পড়বেন।
আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু যমীনের বুকে রয়েছে, তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করতে পারতে না। কিন্তু আল্লাহ তাদের মনে প্রীতি সঞ্চার করেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি পরাক্রমশালী, সুকৌশলী। [সুরা আনফাল - ৮:৬৩]
যারা তোমাদের শত্রু আল্লাহ তাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সম্ভবতঃ বন্ধুত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহ সবই করতে পারেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। [সুরা মুমতাহিনা - ৬০:৭]
কোন মন্তব্য নেই