বড় বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া আমল। হযরত জিবরাইল নিজেই বলে দিয়েছেন

 বড় মসিবত থেকে বাঁচার তরিকা, হযরত জিবরাইল নিজেই বলে দিয়েছেন

হযরত সাঈদ বিন মুসায়্যিব (রহ) এরশাদ করেন হাকিম লোকমান (রহ) তার ছেলেকে নসিহত করেন, যখনই কোন মসিবত আসে তা তোমার জন্য কল্যাণ মনে করবে। এই মসিবতে তোমার জন্য কোন না কোন কল্যাণ নিহিত আছে বলে মনে করবে।

ছেলে বাবাকে বললেন- পিতাজি আমি আপনার কথাটি শুনলাম এবং বুঝলাম কিন্তু এর উপর আমার বিশ্বাস এখনো পরিপূণ হয়নি। অর্থ্যাৎ মসিবতে কল্যাণ কিভাবে থাকে? এই কথার উপর তাহকিক করার জন্য এবং এই কথার উপর পূর্ণ একিন অর্জনের জন্য দুই বাপ বেটা এক লম্বা সফরে রওয়ানা হয়ে যায়।

দিন রাত সফর করতে করতে পথে এক জঙ্গলে প্রবেশ করে। খুব গরম ছিল, সব খাবার দাবার রাস্তায় শেষ হয়ে যায়, পানির তৃষ্ণায় খচ্চরও ক্লান্ত হয়ে গেল। খচ্চর যখন পিপাসায় হাফাতে লাগল। বাপ বেটা খচ্চর থেকে নেমে পায়ে হেটে চলা আরম্ভ করল।

হঠাৎ অনেক দুরে ধোয়া ও ছায়া দৃষ্টিগোছর হচ্ছিল। হযরত হাকিম লোকমান ধারনা করল হয়ত সেখানে কোন আবাদি বা লোকজন আছে। তাই তারা সেদিকে রওয়ানা দিল, কিন্তু কিছুদুর যাওয়ার পর ছেলেটির পায়ে ১টি হাড্ডি ঢুকে গেল ফলে ব্যথায় সে জমিনে বেহুশ হয়ে পড়ে গেল। হাকিম লোকমান কবিরাজি পদ্ধতিতে তার পায়ের চিকিৎসা করলেন, হাড্ডি বের করে নিলেন এবং সে কিছুটা আরাম অনুভব করল। আর পিতাকে প্রশ্ন করল আব্বাজান আপনিতো বলেছেন সকল মসিবতে কোন না কোন কল্যান আছে, এখন আমরা এমন এক বিরান জঙ্গলে এসে পৌঁছেছি যেখানে আমাদের খাবার পানিও খতম হয়ে গেছে, আমার পাও আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে গেছেযে হাটতে পারছিনা, এ অবস্থায় এখাবে ক্ষুধায় আমাদের হয়ত মৃত্যু হয়ে যাবে, এখন বলুন এই মসিবতে আমাদের জন্য কি কল্যাণ লুকায়িত আছে?

তখন হাকিম লোকমান বললেন বেটা এই মসিবতে অবশ্যই কোন না কোন কল্যাণ আছে, হতে পারে এই ছোট মসিবতে গ্রেফতার করে আমাদেরকে আল্লাহ তায়ালা কোন বড় মসিবত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।

প্রিয় দর্শক শ্রোতা- হযরত লোকমান হাকিম যখন এই কথা বলছিল তখন দুরে যে ধোয়া দেখা যাচ্ছিল তা হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল। এবং সেদিক থেকে সাদা রং এর কাপড় পরিধান করে ঘোড়ায় চড়ে এক লোককে আসতে দেখা গেল। যিনি খুব দ্রুত এদের দিকে আসছিল। যখন সে একদম নিকটে আসল হঠাৎ দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল।

এরপর এক গায়েবী আওয়াজ আসল- আমি জিবরাইল আমাকে কেবল আম্বিয়াগন এবং ফেরেশতারা দেখতে পারেন, আমাকে হকুম দেয়া হয়েছে যে আমি অমুক শহরকে জমিনে ধসিয়ে দিই। এবং আমি দেখলাম আপনারা বাপ বেটা ঐ শহরের দিকে যাচ্ছেন তাই আমি আল্লাহর হকুমে আপনার ছেলেকে আহত করে দিয়েছি, যাতে আপনারা সে শহরে প্রবেশ করতে না পারেন। আর এই ছোট মসিবত দিয়ে আল্লাহ তায়ালা আপনাদেরকে বড় মসিবত থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছেন।

মুহতারাম- অতঃপর হযরত জিবরােইল (আ) তাঁর নুরানি হাত দ্বারা সে ছেলের ভাঙ্গা পায়ে মাসেহ করে দিলেন ফলে তার পা বিলকুল ঠিক হয়ে গেল। এবং তাদের খাবার ও পানির বরতনে মাসেহ করার ফলে তা খাবার ও পানিতে ভরে গেল, দুই বাপবেটাকে সাওয়ারী সহ জিবরাইল ফেরেশতা মুহুর্তের মধ্যে তাঁদের ঘরে পৌঁছিয়ে দিলেন।

হে আমার ভাই ও বোনেরা মনে রাখবেন যখনই কোন মসিবতে আমরা পতিত হই এই মসিবত নিশ্চয়ই কোন বড় মসিবত থেকে আমাদেরকে বাঁচানোর জন্য আসে। আর এই মসিবতে আমাদের জন্য কোন না কোন কল্যাণ লুকায়িত থাকে। কেননা কিছু মসিবত আসেই এই জন্য যে আমাদেরকে কোন বড় মসিবত থেকে রক্ষা করে। যেহেতু যে বড় মসিবত আমাদের থেকে দুর হয়ে গেছে তা আমরা দেখিনা তাই যে ছোট মসিবত আমরা দেখি সেটিকে আমরা অনেক বড় মনে করি।

ফলে আমরা সাথে সাথে শেকায়েত করা আরম্ভ করি আমি কোন পাপ করেছি যে আমার উপর এত বড় মসিবত আপতিত হল? মনে রাখবেন যদি আমরা সবর করি তাহলে তার ফলে আমরা ২টি উপকারিতা লাভ করতে পারি।

(১) আল্লাহ জাল্লা শানুহু আমাদেরকে ঐ বড় মসিবত থেকে বাঁচিয়ে ফেলে। আর সবরের বরকতে ছোট মসিবতটিও দুর হয়ে যায়। যেমন হযরত জিবরাইল হাত মাসেহ করলেন আর সাথে সাথে ছেলেটির পাও ঠিক হয়ে গেল, বরতনও খাবারে ভরে গেল, সাওয়ারী সহ বাপবেটা সহি সালামত ঘরে পৌঁছে গেল। আর সে শহরের বড় আযাবের হাত থেকেও আল্লাহ তাদের বাঁচালেন।

কারন হযরত লোকমান সন্তানকে সবরের তলকিন দিচ্ছিলেন যে বেটা এই মসিবতের মধ্যেও তোমার জন্য কোন কল্যান আছে। কোন উপকারিতা নিশ্চয়ই আছে।

হুজুর (দ) এরশাদ করেন- তোমরা অসুস্থতায় অভিযোগ করিওনা এবং মসিবতগ্রস্থ হলে তা গোপন রাখ, যদি মসিবতে ধৈর্য্য ধারন কর তাহলে সে মসিবত দুর হয়ে যাবে।আর যে বড় মসিবতকে দুর করার জন্য ছোট মসিবতটি এসেছে তাও দুর হয়ে যাবে।

অপর এক রেওয়ায়েতে আছে বান্দার প্রতি যখন আল্লাহ কোন ছোট মসিবত দেন আর সে ছোট মসিবতে যখন বান্দা ধৈর্য্য ধারন না করে শেকওয়া শেকায়েত করতে থাকেন তখন তাকে আল্লাহ বড় মসিবতে গ্রেফতার করে নেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যে কোন মসিবতে ধৈর্য্য ধারন করা এবং মসিবতে পড়লেই তা জনে জনে প্রচার করা, শেকায়েত করা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। ছোট বড় সব মসিবত থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।

 

শপিং বা কেনাকাটায় না ঠকার দোয়া

সম্মানিত সুধীবৃন্দ বাজার করা কেটাকাটা করার সময় না ঠকার জন্য এমনকি যারা অনলাইন থেকে শপিং করেন তারাও সব ধরনের প্রতারণা ধোকা থেকে বাঁচার জন্য ১টি দোয়া পড়বেন-



অনেকে কেটাকাটা করতে গিয়ে ঠকে যায়, কিংবা ধোকায় লিপ্ত হয়, এখন যদি মানুষ যেখানে ভালো মানের জিনিষ আছে এবং মান সম্মত জিনিষ পাওয়া যায় আর দামও রিজেনেবল হয় সেখানে সহজে পৌঁছতে পারে তাহলে সে ধোকা থেকেও বাঁচতে পারে এবং তার সময়ও বেঁচে যায়।

সে জন্য মানুষ যখন দোয়া করে আল্লাহর সাহায্য চায় তখন আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার সঠিক জায়গায় যাওয়ার তৌফিক দিয়ে দেন। কিছু কিনতে চাইলে আল্লাহ হঠাৎ এমন অভিজ্ঞ লোকের সাথে আপনাকে মিলিয়ে দেন যে আপনাকে সঠিক তথ্য দিয়ে দিবেন যাতে আপনি ধোকা থেকে বেঁচে যান।

আল্লাহ তায়ালা সব বিষয়ে সবজ্ঞাতা তাই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আপনি যতই চালাক হউননা কেন আল্লাহর সাহায্য না থাকলে আপনি ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে যাবেন।

সে জন্য যখনই আপনি শপিং এ বের হবেন কিংবা বাজার করতে যাবেন তার জন্য এই দোয়াটি পড়ে নিবেন। যদি ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আপনি যে কারে করে শপিং এ যাবেন সে কারে লিখে লাগিয়ে রাখুন। কিংবা আপনার ওয়ালেটে রেখে দিন। যখন আপনি বাজার বা শপিং এ যাবেন তখন এই দোয়াটি পড়ে বাজারে প্রবেশ করবেন।

হাদীস শরীফে সবচেয়ে উত্তম স্থান বলা হয়েছে মসজিদকে আর সবচেয়ে খারাপ জায়গা বলা হয়ে হয়েছে বাজারকে। আজকাল অসংখ্য লোক মোবাইল বা লেপটপ খুলে অনলাইনে কেনাকাটা করে তারা শপিং এর নিয়তে যখন কোন ওয়েব সাইটে ঢুকে তখনও এই দোয়া পড়তে পারবেন। যাতে ধোকা থেকে বেঁচে যেতে পারেন।  বাজারের মধ্যে থাকা সব ধরনের ক্ষতি ধোকা থেকে বাঁচার জন্য আপনি দোয়া করুন - হে আল্লাহ এই বাজারে যেখানে আমার জন্য কল্যাণ আছে আমাকে সেখানে নিয়ে যাও। এই বাজারের ক্ষতি এবং এই বাজারে যত ক্ষতিকারক বস্তু আছে তার ক্ষতি থেকে আমাকে রক্ষা কর।

বাজারে শুধু জিনিষ ২ নম্বর হয় তা নয় বরং এমন লোকও থাকে যে আপনার পকেট কেটে নিয়ে যাবে, আপনার মাল ছিনতাই করবে এসব ক্ষতি থেকেও এই দোয়ার বরকতে আপনি রক্ষা পাবেন।

দোয়াটি হল- (বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকা, খায়রা হাজিহিস সুক, ওয়া খায়রা মা ফিহা, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফিহা, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উচিবা ফিহা, এয়ামিনান ফাজিরাতান, আউ সাফকাতান খাছিরাতান।

অর্থ্যাৎ- আল্লাহর নামে( প্রবেশ করছি) হে আল্লাহ আমি এই বাজারে এবং এই বাজারে যা কিছু আছে তার কল্যাণ কামনা করছি, আর এই বাজারের ক্ষতি আর এই বাজারে যত ক্ষতিকারন জিনিষ আছে তা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ আমি এই বাজারের গুনাহ ওয়ালা কসম এবং যে কোন প্রকার ক্ষতির সম্মুখিন হওয়া থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই।

দেখুন বাজারের মধ্যে যা কল্যাণকর দোয়াতে আল্লাহর কাছে তা কামনা করছেন সে কল্যাণ কি? যেমন ধরুন আপনি ১টি সেম্পু কিনবেন এখন এই সেম্পুর মধ্যে হাজার ধরনের ফ্লেবার এখন আপনি জানেন না কোন সেম্পুটা আপনার জন্য উপকারী হবে, এখন আপনি এমন একটি সেম্পু নিয়ে আসলেন যাতে আপনার চুল ঝড়া শুরু হয়ে গেল। এরকম অনেক সময় হয়। সে জন্য ভেরাইটি যখন বেশী হয় তখন মানুষের জন্য সঠিক বস্তুটি চয়েচ করা কঠিন হয়ে যায় তাই এই দোয়া পড়ে নিলে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সঠিক প্রোডাক্টটি চয়েচ করতেও সাহায্য করবেন। তাই যে কোন কিছু কিনার আগে বাজারে যাওয়ার আগে কিংবা অনলাইন শপিং করার আগে এই দোয়াটি পড়ে নিবেন। 


#দোয়া #দুআ #ওজিফা #dua #wazifa #allbangla #islamictips   

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.