সুরা কাউসারের ফজিলত। সুরা কাউসারের ওজিফা। Surah kousar এর ১দিনের সহজ আমল

 সুরা কাউসারের ফজিলত। সুরা কাউসারের ওজিফা। Surah kousar এর ১দিনের সহজ আমল



নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আলা রাসুলিহিল কারিম আম্মা বাদ, ফা আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আসসালামু আলাইকুম! আজ যে কোরআনি ওজিফাটি নিয়ে আপনাদের খেদমতে হাজির হয়েছি তা হল পবিত্র কুরআনের সবচেয়ে ছোট সুরা সুরা কাউসারের ওজিফা।

ইনশা আল্লাহ এমন শক্তিশালী মুজররব ওজিফা যা শুধু আপনি ১ দিন করবেন এ ওজিফা করার পর আপনি যে হাজতের  কথা আল্লাহ তায়ালাকে বলবেন আল্লাহ তায়ালা সে হাজত সে প্রয়োজন পুরণ করে দিবেন। ইনশা আল্লাহ আপনি শুধু ১দিন এই ওজিফাটি করবেন। যেভাবে আপনাকে আমলটি করার জন্য বলা হচ্ছে  আপনি সে ভাবে অবশ্যই আমলটি করবেন।

এ ওজিফা থেকে যদি পুরাপুরী ফায়দা হাসিল করতে চান তাহলে শুরু থেকে শেষ পযন্ত প্রতিটি কথা খুব মনযোগ দিয়ে শুনবেন। যে কোন ওজিফা করার জন্য প্রথম শত হল পূন একিনের সাথে করা লাগবে, মনের মধ্যে সন্দেহ রেখে কিংবা পরীক্ষা করার নিয়তে করলে আপনি কোন ফল পাবেননা।

প্রথমে সুরা কাউসার সম্পর্কে ও হাউযে কাউসার সম্পর্কে হাদীস শরীফ ও তফসীর থেকে কিছু গুরুত্বপূণ তথ্য জেনে নিই

রাসূল (সাঃ)-এর পুত্র কাসেম এবং তার শেষ পুত্র ইব্রাহীম যখন মারা যান তখন কাফেররা রাসূল (সাঃ)-কে নির্বংশ বলে কটুক্তি করতে লাগলো। তখন তিনি তাদের কথায় অনেক মর্মাহত হলেন।

যারা রাসূল (সাঃ)-কে নিয়ে এই কুটুক্তি করতেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একজন হলেন আস ইবনে ওয়ায়েল। এই আস ইবনে ওয়ায়েলের সামনে যখন রাসূল (সাঃ)-এর বিষয়ে কিছু বলা হতো তখন সে বলতো আরে তোমরা তাকে নিয়ে চিন্তা করতেছো কেন তার কথা বাদ দেও কেননা সে তো লেজকাটা বা নির্বংশ।

সে যদি মারা যায় তাহলে তার নাম নেওয়ার মতো এই জমীনের বুকে আর কেউ থাকবে না। তাহলে অযথা তোমরা তাকে নিয়ে চিন্তিতো হইয়ো না।

এইভাবে যখন এই সব কথা বাড়তে থাকে তখন রাসূল (সাঃ)কষ্ট পান। তখন আল্লাহ রব্বুল আলামিন তার এই কষ্টকে দূর করার জন্য সূরা কাউসার নামে সূরাটি নাযিল করে দিয়ে তাকে সান্তনা দেন। কাউসার তথা অভুতপূর্ব কল্যাণের সুসংবাদ দেন।

এবং বলেন হে নবী আপনাকে যার নির্বংশ বলতেছে তারাই নির্বংশ হয়ে যাবে তাদের নাম নেওয়ার মতো কেউ বেঁচে থাকবে না। তাই আপনি বিস্মিত না হয়ে ধৈর্য ধারণ করুন।

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে আমাদের সামনে উপস্থিত ছিলেন। হঠাৎ তার মধ্যে তন্দ্রা অথবা এক প্রকার অচেতনতার ভাব দেখা দিল। অতঃপর তিনি হাসিমুখে মাথা উঠালেন। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ্ আপনার হাসির কারণ কি? তিনি বললেন, এই মুহূর্তে আমার নিকট একটি সূরা নাযিল হয়েছে। অতঃপর তিনি বিসমিল্লাহ সহ সূরা আল-কাউসার পাঠ করলেন এবং বললেন, তোমরা জান, কাউসার কি?

আমরা বললাম, আল্লাহ্ তা'আলা ও তার রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, এটা জান্নাতের একটি নহর। আমার রব আমাকে এটা দেবেন বলে ওয়াদা করেছেন। এতে অজস্র কল্যাণ আছে এবং এই হাউযে কেয়ামতের দিন আমার উম্মত পানি পান করতে যাবে। এর পানি পান করার পাত্ৰ সংখ্যা আকাশের তারকাসম হবে। তখন কিছু লোককে ফেরেশতাগণ হাউয থেকে হটিয়ে দিবে। আমি বলব, হে রব! সে তো আমার উম্মত। আল্লাহ তা'আলা বলবেন, আপনি জানেন না, আপনার পরে তারা নতুন মত ও পথ অবলম্বন করেছিল। [মুসলিম: ৪০০,

এই হাউযের পানি হবে দুধের চেয়েও শুভ্ৰ, বরফের চেয়েও ঠাণ্ডা, মধুর চেয়েও মিষ্টি, মিসকের চেয়েও অধিক সুস্ৰাণ সম্পন্ন। যা অনেক প্রশস্ত, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে সমান, তার কোণ সমূহের প্রত্যেক কোণ এক মাসের রাস্তা, তার পানির মূল উৎস হলো জান্নাত। জান্নাত থেকে  দুটি খালের মাধ্যমে সে পানি সরবরাহের কাজ সমাধা হবে আর সে খাল দুটির একটি স্বর্ণের অপরটি রৌপ্যের। যে তা থেকে একবার পান করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবেনা

তবে এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, কাউসার ও হাউয একই বস্তু নয়। হাউযের অবস্থান হাশরের মাঠে, যার পানি কাউসার থেকে সরবরাহ করা হবে। আর কাউসারের অবস্থান হলো জান্নাতে।


كَوثَر শব্দটির উৎপত্তি كَثرَة থেকে। এর বিভিন্ন অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। ইবনে কাসীর (রঃ) প্রভূত কল্যাণ অর্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। কারণ এই অর্থ নেওয়াতে এমন ব্যাপকতা রয়েছে, যাতে অন্যান্য অর্থ শামিল হয়ে যায়।

এতক্ষন আমরা হাদীসের আলোকে মহানবীর জবান থেকে শুনলাম সুরা কাউসার ও হাউযে কাউসারের গুনগান, এবার আসুন এই নামে যে সুরা তা হল সুরা কাউসার, এর ১টি ওজিফা যা বুযুর্গানে দ্বীন দ্বারা পরীক্ষিত তা জেনে নিই  

 

বুযুর্গানে দ্বীন কুরআনের বিভিন্ন সুরা ও আয়াতের এসব ওজিফা করে ফল পেয়েছেন তারপর আম জনতার জন্য তা প্রকাশ করে দিয়েছেন। অতএব আজকের সুরা কাউসারের ওজিফাটি যদি আপনি শুধু ১ দিন পূণ একিনের সাথে করেন চাই আপনার  মনের কোন আশা পুরণের নিয়তে হউক, কিংবা কোন মসিবত থেকে উদ্ধারের নিয়তে হউক কিংবা কোন দুষমনের হাত থেকে রক্ষার নিয়তে হউক, কিংবা হাশরের মাঠে হাউজে কাউসারের পানি নসিব হওয়ার নিয়তে হউক, যে কোন জায়েজ নিয়তেই হ্উননা কেন ইনশা আল্লাহ এই ওজিফার বরকতে আল্লাহ তায়ালা আপনার সে নিয়ত পুরণ করে দিবেন সে সমস্যা অবশ্যই সমাধান করে দিবেন।

এবার আসুন ওজিফাটি পড়ার নিয়ম শুনুন এই ওজিফা করতে হবে ফজরের নামাজের পর ১বার এবং একই দিন মাগরীব নামাজের পর ১বার অর্থ্যাৎ ১ দিনে ২ বার ওজিফাটি পড়তে হবে,

অজু সহকারে পাক পবিত্র অবস্থায় একটি জায়গায় কেবলামুখি হয়ে বসবেন তারপর ১১ বার দরুদ শরীফ পড়বেন এরপর ১৩৩ বার সুরা কাউসার পড়বেন, ১৩৩ থেকে বেশীও পড়বেন না কমও পড়বেন না, এরপর পুনরায় ১১ বার দরুদ শরীফ পড়ে তারপর আপনার সকল হাজত সকল দোয়া সকল মনের আশা আকাংখার কথা নিজ ভাষায় মুনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে পেশ করবেন। অথবা সিজদায় গিয়ে করবেন। ইনশা আল্লাহ যে নিয়তে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে এই ওজিফা করবেন সে নিয়ত আল্লাহ খুব দ্রুত পুরণ করে দিবেন।

بِسْمِ اللهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ

নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি। [সুরা কাউসার - ১০৮:১]

فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ

অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন। [সুরা কাউসার - ১০৮:২]

إِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْأَبْتَرُ

যে আপনার শত্রু, সেই তো লেজকাটা, নির্বংশ। [সুরা কাউসার - ১০৮:৩]

 

  

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.