কঠিন সমস্যা সমাধান, দুঃখ কষ্ট, দুশ্চিন্তা, ঋণ, অভাব দুর করার দোয়া ও কোরানী ওজিফা
আরশ থেকে বড় বড় ফয়সালা করানোর ওজিফা।
কঠিন সমস্যা সমাধান, দুঃখ কষ্ট, দুশ্চিন্তা, ঋণ, অভাব দুর করার
দোয়া ও কোরানী ওজিফা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, সম্মানিত দশক শ্রোতা মন্ডলী আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। আজ আমি পবিত্র কুরআনের এমন একটি ওজিফা আপনাদের সাথে শেয়ার করব যারা দীঘদিন যাবৎ কঠিন বিপদে আছেন, যারা অভাব অনটন দুর করার জন্য অনেক চেস্টা করছেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা, যারা অনেক মানসিক টেনশনে আছেন ঋণ নিয়ে, কিছুতেই ঋণের টেনশন দুর হচ্ছেনা তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূণ এই ওজিফা।
পৃথিবীর
ইতিহাসে অসংখ্য লোক এই ওজিফা করে হাতে হাতে ফল পেয়েছেন।
সুতরাং
আপনিও যদি কোন কঠিন বিপদে থাকেন, কিংবা ঋণগ্রস্থ হয়ে থাকেন, অথবা কোন অভাব অনটনে
থাকেন আপনার জন্য আজকের ওজিফা খুবই মূল্যবান হবে।
এ
ওজিফার মধ্যে ৩টি দোয়া শামিল আছে তাই শেষ পযন্ত শুনে লিখে নিবেন আর পড়ার নিয়মটা
ঠিক রাখবেন।
প্রথম দোয়ার আমল হল-
তিরমিজি
ও মেশকাত শরীফের হাদীস
হজরত
সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, হাদিসে রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
'যুননুন
(মাছ ওয়ালা) ইউনুস আলাইহিস সালাম মাছের পেটে দোয়া করেছিলেন-
لَا إِلَـٰهَ إِلَّا
أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي
كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
'লা
ইলাহা ইল্লা আংতা, সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জ্বালিমিন।'
অর্থাৎ 'তুমি ব্যতীত সত্য কোনো উপাস্য নেই;
তুমি পুতঃপবিত্র, নিশ্চয় আমি গোনাহগারদের দলভুক্ত। যখনই কোনো মুসলিমের (দোয়া
ইউনুস) মাধ্যমে দোয়া করে, আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তার দোয়া কবুল করে থাকেন।'
(তিরমিজি, মিশকাত)
সুতরাং
যত বড় বিপদই হউক প্রথমে দোয়া ইউনুস পাঠ করুন যতবার ইচ্ছা পড়ুন তবে যত বার পড়বেন
অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মন দিল উজার করে পড়বেন ১০ বার হউক ১০০ বার হউক ১০০০ বার
অর্থের দিকে খেয়াল করে পড়বেন তারপর নিজের বিপদের কথা আল্লাহকে বলে সে বিপদ থেকে
উদ্ধারের জন্য দোয়া করবেন। আর অবশ্যই আগে পরে ১ বার করে দরুদ শরীফ পড়বেন।
২য় আমল হল
প্রিয়নবি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভিন্ন দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-আপদ, দুঃশ্চিন্তা ও
পেরেশানীতে আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে এ দোয়া পড়ার জন্য তাঁর উম্মতদেরকে
উৎসাহিত করেছেন। আর তা হলো-
উচ্চারণ
: হাসবুনাল্লাহু ওয়া নে'মাল ওয়াকিল; অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম
কর্মবিধায়ক;
হজরত
ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এ দোয়াটি পড়ে নমরূদের অগ্নিকুণ্ডলি থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
যেহেতু বিপদ-আপদ-মুসিবতে আল্লাহর শেখানো শব্দমালা দ্বারাই তাঁর কাছে সাহায্য কামনা
করা উত্তম।
আপনিও
এ ধরনের কঠিন মুহুর্তে কঠিন বিপদে কুরআনের এই আয়াতের ওজিফাটি পড়তে থাকুন।
পড়ার
নিয়ম হল- প্রতিদিন ৫০০ বার পড়বেন এশারের নামাজের পর ঘুমানোর সময় পড়া বেশী উত্তম,
যদি তখন পড়তে না পারেন তাহলে যে সময় পড়া সম্ভব সে সময় পড়ে আপনি সমস্যা সমাধানের
জন্য দোয়া করবেন। যদি ব্যস্ততার কারনে ৫০০ বার পড়া সম্ভব না হয তাহলে কমপক্ষে ১০০
বার অবশ্যই পড়বেন। আর যদি কেহ খুব বেশী পেরেশানিতে লিপ্ত থাকে তার জন্য কোন সংখ্যা
নির্ধারিত নাই বরং সে চলতেফিরতে হাটতে বসতে শুধু এই জিকিরই করবে।
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন শুনলেন যে, মুশরিকরা তাঁর ওপর আক্রমণ করবে
তখন তিনি এ খবর পাওয়া মাত্রই ‘হামরাউল
আসাদ’ নামক স্থানে
(হাসবুনাল্লাহু ওয়া নে'মাল ওয়াকিল; এ দোয়াটি পড়েন। (বুখারি)
৩য় দোয়াটি হল ঋণের বিপদ
নবী
করিম (দ) খুব বেশী ঋণ থেকে মুক্তির দোয়া করতেন
(সাহাবাদের
মধ্য থেকে) একজন জিজ্ঞাসা করলো- (হে আল্লাহর রাসুল)! আপনি ঋণ থেকে এত বেশি বেশি
পানাহ (মুক্তি) চান কেন?
তিনি
জানালেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে, যখন কথা বলে (তখন) মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা
খেলাফ করে।’ (বুখারি)
ঋণগ্রস্ত
ওইসব ব্যক্তির জন্য আরও বিপদ যারা ঋণ রেখে মারা যায়। কারণ মৃত্যুর পর ঋণগ্রস্ত
ব্যক্তির সম্পদের মালিকানা আর মৃতব্যক্তির থাকে না। কিন্তু ঋণের দায় থেকে যায়।
সে
জন্য মুমিন মুসলমানের উচিত ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধ করে ফেলার চেষ্টা করা এবং তার
জন্য নবীর শিখানো দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রাথনা করা।
হাদিসে
এসেছে, একবার হজরত আলী রাদিআল্লাহু আনহুর কাছে এক ব্যক্তি তার ঋণ পরিশোধের জন্য
কিছু সাহায্য চায়। এ সময় আলী রাদিআল্লাহু আনহু তাকে বলেন, আমি কি তোমাকে কয়েকটি
শব্দ শিক্ষা দেব, যা আমাকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা দিয়েছেন?
যদি তুমি এটা পাঠ করো, তাহলে আল্লাহই তোমার ঋণমুক্তির ব্যাপারে দায়িত্ব নেবেন, যদি
তোমার ঋণ পর্বতসমানও হয়।এরপর হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহু ওই ব্যক্তিকে এ দোয়াটি
শিক্ষা দিলেন
اللَّهُمَّ اكْفِنِي
بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ، وَأَغْنِنِي
بِفَضْلِكِ عَمَّنْ
سِوَاكَ
বাংলা
উচ্চারণ :
আল্লা-হুম্মাকফিনী বিহালা-লিকা ‘আন
হারা-মিকা ওয়া আগনিনী বিফাদ্বলিকা ‘আম্মান সিওয়া-ক।
বাংলা
অর্থ:‘হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট
কর। আর তোমাকে ছাড়া আমাকে কারো মুখাপেক্ষী করো না এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে
স্বচ্ছলতা দান কর। তিরমিজি শরীফ, হাদিস নং ৩৫৬৩।
কোন মন্তব্য নেই