দোয়ার হাত নামানোর আগেই কবুল, যা চাইবেন তাই হবে। মৃত্যুর সময় হেসে হেসে কলমা পড়ে মৃত্যু,
দোয়ার হাত নামানোর আগেই কবুল, যা চাইবেন তাই হবে। মৃত্যুর সময় হেসে হেসে কলমা পড়ে মৃত্যু,
বিসমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
সম্মানিত
দশক শ্রোতামন্ডলী আজ আমি এমন একটি আমলের কথা বলব যে আমল এর দ্বারা আপনার সকল হাজত পুরণ
হবে, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আপনাকে এমন মাহবুব বানিয়ে নিবেন আপনি আল্লাহর দরবারে হাত
উঠাবেন হাত নামানোর আগেই আপনার সব দোয়া কবুল হবে। আর যখনই মৃত্যু আসবে তখন ঈমানের সাথে
কলমা পড়তে পড়তে হাসতে হাসতে মৃত্যু বরণ করতে পারবেন।
এই
আমলটির দ্বারা আপনার দুনিয়াও সুন্দর হয়ে যাবে আখেরাতও সুন্দর হয়ে যাবে। তাই প্রত্যেক
নর নারীর উচিত খুব গুরুত্বের সাথে আমলটি শিখে নেয়া এবং যথাযথ কাজে লাগানো।
মনে
রাখবেন রাব্বুল আলামিন যখন কাউকে পছন্দ করেন তখন তাকে ৩টি নেয়ামত দান করেন। প্রথমত
আল্লাহ তাকে নিজের প্রিয়জন বানিয়ে নেন দ্বিতীয়ত তার দোয়াকে ফিরিয়ে দেন না। ইমাম বুখারী
বলেন প্রত্যেক মুমিনের এই অবস্থায় থাকা উচিত যে যখন সে দোয়া করে তখন তার দোয়াকে তার
রব যেন ফিরিয়ে না দেয়।
মুমিনের
মধ্যে এমন অনেক লোক আছে যাদের চুল এলোমেলো, ধন দৌলত নাই, গরীবী হালত, যাদেরকে মানুষ
অপছন্দ করেন, যাদেরকে দেখলে মানুষ দরজা বন্ধ করে দেয় যাতে সে ঘরে প্রবেশ করতে না পারে,
কিন্তু এ ধরনের মুমিন যখন কসম খায় আল্লাহ তার সে কসমকে পুরা করে দেন।
একবার
মদীনায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিল অনাবৃষ্টি দেখা দিল, মদীনার বড় বড় খান্দানের লোকেরা গন্যমান্য
লোকেরা মাঠে চলে আসল সকলে মিলে দোয়া করা আরম্ভ করল (আল্লাহুম্মা আগিছনা, আল্লাহুম্মা
আগিছনা) কিন্তু কোন বৃষ্টির নাম গন্ধও নাই। তখন মদীনার এক জুতা মেরামত কারী মুচি, যাকে
মানুষ খুবই নগন্য মনে করে। যখন দেখল মদীনার সকল লোক বৃষ্টির জন্য প্রাথনা করছে কিন্তু
বৃষ্টি হচ্ছেনা, তখন সে মুচি তার দোকান বন্ধ করে অজু করলেন খুব ভালো ভাবে অজু করলেন
(তাওয়াদ্দাআ ফা আহছানা ওদুআ ফাছাল্লা রাকাআতাইন) আর ২ রাকাত নামাজ আদায় করলেন। তারপর
তার ২টি দুর্বল হাত আসমানের দিকে উঠালেন, এর আগে অসংখ্য গন্য মান্য মদীনার লোক হাত
তুলেছেন কিন্তু ১ ফোটা বৃষ্টিও আসলনা। কিন্তু যখন এই মুচি যিনি আল্লাহর কাছে প্রিয়,
তিনি যখন হাত তুলে কসম দিয়ে দোয়া করলেন (এয়া রাব্বি ইন্নি উকছিমু আলাইক) হে আমার রব
আমি কসম করে বলছি মদীনার মুমিনদের জন্য বৃষ্টির খুবই প্রয়োজন।
মুহাম্মদ
বিন মুনকাদির লিখেন সে মুচির হাত নিচে নামানোর আগেই আল্লাহ তায়ালা মদীনায় বৃষ্টি বষন
শুরু করে দিলেন। সে জন্য আল্লাহ যার উপর রাজি হয়ে যান তার দোয়া কবুল করতে দেরি করেন
না। আল্লাহ এই মুচির উপর কেন রাজি হয়েছেন? কারন মুচি দুনিয়া বিমুখ সে চাইলে দোয়ার মাধ্যমে
ধন দৌলতের মালিক হতে পারত কিন্তু সে ধন দৌলত চায়নি হালাল রুজি চেয়েছে, আল্লাহ রিজিক
যেমন রেখেছে তাতে সন্তুষ্ট থেকেছে। ধনী হওয়ার লোভ, মান সম্মানের লোভ, দুনিয়ার লোভ তাকে
সিরাতাল মুস্তাকিম থেকে নাড়াতে পারেনি।
আর
৩য় বড় আলামত হল যা প্রত্যেক ঈমানদারের বড় আশাও হয়, তা হল আল্লাহ তায়ালা যে মুমিনের
উপর রাজি হয়ে যান সন্তুষ্ট হয়ে যান তার খাতেমা বিল খায়ের করেন। সে মৃত্যুর সময় হাসতে
হাসতে কলমা পড়তে পড়তে ইন্তেকাল করতে পারে।
নবী
করিম (দ) এরশাদ করেন - হে আমার সাহাবীরা আল্লাহ তায়ালা যার উপর রাজি হয়ে যান তাকে ব্যবহার
করেন, সাহাবাগণ প্রশ্ন করেন এয়া রাসুলাল্লাহ আল্লাহ কিভাবে ব্যবহার করেন? তখন নবী করিম
(দ) জবাব দিলেন (ইউয়াফিকুহু লি আমালিন ছালেহ)
আল্লাহ তাকে শেষ সময়ে নেকির তৌফিক দিয়ে দেন।
তার
সাথে আরো ২টি কাজ হয় আর তা হল তার পাড়া প্রতিবেশীরা আত্মিয় স্বজনেরা তার নেক আমল দেখে
তার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান।
২য়
কাজ হল আল্লাহ তায়ালা সে নেক আমলের উপরই তার ইন্তেকাল করান, অর্থ্যাৎ সে নেক আমল করতে
করতেই সে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে যান।
হযরত
আবু জুরা রাজি (রহ) যার কাছে ৭ লাখ হাদিস মুখস্থ ছিল, তাঁর যখন সাখারাত শুরু হল সেখানে
উনার ৩ জন সাগরেদ উপস্থিত ছিলেন উনারা আবু জুরাকে কলমার তলকিন কিভাবে দিবে চিন্তা করতে
করতে তারা ১টি হাদিস পড়া আরম্ভ করলেন আর হাদীসটি পড়ার সময় তারা এমন ভাব করছিলেন যে
তারা হাদিসটি পড়তে পারছেন না, তখন আবু জুরা রাজি (রহ) তাদের হাদীসে আটকে যেতে দেখে
তিনিই সে সাখারাতের মুহুর্তে হাদিসটি সহিহ ভাবে পড়া আরম্ভ করলেন হাদীসটি হল (আন মুয়াজ
ইবনে জাবাল (রা) কাল কালা ন্নাবিয়্যু ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মান কানা আখিরু
কালামিহি লা ইলাহা ইল্লাল্লা) অর্থ্যাৎ যার শেষ কলমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ হবে সে জান্নাতে
যাবে এই হাদীস পড়তে পড়তে তিনি মুচকি হেসে ইন্তেকাল করে গেলেন । তিনি শেষ কলমা লা ইলাহা
ইল্লাল্লা বলে দিয়েছেন আর তার পুরস্কার হল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে হযরত আবু জুরা নিজ
চোখে জান্নাত দেখেছেন তাই খুশিতে হেসে দিয়েছেন। আর আল্লাহর মেহমান হয়ে গেলেন।
কোন মন্তব্য নেই