বিশাল খাজানার সু সংবাদ কিয়ামুল লাইল কিভাবে করবেন কোন সুরা দিয়ে পড়বেন?

 

রমজানে আয়াত গুলি পড়ে শুয়ে যান।

বিশাল খাজানার সু সংবাদ । কিয়ামুল লাইল কিভাবে করবেন কোন সুরা দিয়ে পড়বেন?

 


রমজান মাস চলছে এই মাসের শেষ দশক আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই রাতে যদি আমরা হাদীসে বর্ণিত আমলগুলি যথাযথ পালন করতে পারি, বিশেষ করে যারা কিয়ামুল লাইল পালন করেন তারা যদি এই আয়াত ও সুরাগুলি দিয়ে কিয়ামুল লাইল পালন করেন তাহলে তাদের ভাগ্য খুলে যাবে, আজ তেমন্ই একটি কুরআনি আমল হাদিস শরীফের আলোকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব, বেশ কয়েকটি হাদীস শুনলে পুরা আমলটি বুঝতে আপনার সহজ হবে তাই অবশ্যই শেষ পযন্ত প্রত্যেকটি হাদিস মনযোগ দিয়ে শুনবেন,

 

প্রথম হাদিসটি লক্ষ্য করুন

আবু দাউদ শরীফের ১৩৯৮ নং হাদিস

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ مَنْ قَامَ بِعَشْرِ آيَاتٍ لَمْ يُكْتَبْ مِنَ الْغَافِلِينَ وَمَنْ قَامَ بِمِائَةِ آيَةٍ كُتِبَ مِنَ الْقَانِتِينَ وَمَنْ قَامَ بِأَلْفِ آيَةٍ كُتِبَ مِنَ الْمُقَنْطَرِينَ "

আমর ইবনুল আস (রাঃ) এর পুত্র আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতের নামাযে দণ্ডায়মান হয়ে দশ আয়াত পরিমাণ পাঠ করবে, সে গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হবে না। আর যে ব্যক্তি রাতে একশত আয়াত তিলাওয়াত করবে, তার নাম অনুগত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং যে ব্যক্তি এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করবে, তাকে অশেষ ছওয়াব প্রাপ্তদের মধ্যে তালিকাভুক্ত করা হবে।

 

মিশকাত শরীফের ২১৮৬ নং হাদিস

হাসান বাসরী (রহঃ) মুরসালরূপে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে (কুরআনের) একশটি আয়াত পড়বে, ওই রাতে কুরআন তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপন করবে না। আর যে ব্যক্তি রাতে দুশত আয়াত পড়বে, তার জন্য এক রাতের ইবাদাতের সাওয়াব লিখা হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে পাঁচশ হতে এক হাজার আয়াত পর্যন্ত পড়বে ভোরে উঠে সে এক কিনত্বার সাওয়াব পাবে। তারা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! এক কিনত্বার কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দিলেন, বারো হাজার দীনার সমান ওজন।

 

সুনানে দারেমীর ৩৫০০ নং হাদিসে কিনত্বার এর পরিমাণ সম্পর্কে বলা হয়েছে এটি পুরো দুনিয়ার সম্পদ ও তার সমতুল্য হবেনা।

 

অর্থ্যাৎ যে রাতে ১০০০ আয়াত পড়বে তার যে সাওয়াব অর্জিত হবে তা দুনিয়ার সমস্ত ধন সম্পদ থেকেও পরিমাণে বেশী হবে।

 

একশত আয়াত কোন রাতে তিলাওয়াত করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবে না, এর অর্থ হলো আল্লাহ তাআলা তাকে রাতে কুরআন না পড়ার অভিযোগ অথবা কম পড়ার অভিযোগে কোন শাস্তি দিবেন না এবং কুরআনের হক আদায় না করা সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করবেন না। অর্থাৎ- একশত আয়াত তিলাওয়াত করলে রাতকালীন তার ওপর কুরআন তিলাওয়াতের হক আদায় হয়ে যাবে।

 

কেউ কেউ বলেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো কিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ প্রদান করা। আল্লামা মুনযিরী এবং হায়সামী যথাক্রমে আত্ তারগীব এবং মাজমাউয্ যাওয়ায়িদ গ্রন্থে এ হাদীস কিয়ামুল লায়ল অধ্যায়ে এনে তার প্রমাণ দিয়েছেন।

 

দুশত আয়াত পাঠ করলে তাকে রাতের ইবাদাতকারী হিসেবে লেখা হবে, এর অর্থ রাতে কিয়ামুল লায়ল, কুরআন তিলাওয়াত সহ যাবতীয় নৈশ ইবাদাতকারী হিসেবে লেখা হবে। সকালে সে এর সাওয়াব পাবে এক কিনত্বার পরিমাণ।

 

অতএব যারা রমজানে কিয়ামুল লাইল করেন তাদের উচিত এতে কমপক্ষে ২০০ আয়াত তেলাওয়াত করা। আর বেশীতে ১০০০ আয়াত তেলাওয়াত করা।

 

আবার ১০০০ আয়াতের ব্যপারে সহজ থেকে সহজ ২টি পন্থা তাও হাদীসে পাওয়া যায় ১টি পন্থা হল

মিশকাত শরীফের ২১৮৪ নং হাদিস

وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا يَسْتَطِيعُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ أَلْفَ آيَةٍ فِي كُلِّ يَوْمٍ؟» قَالُوا: وَمَنْ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقْرَأَ أَلْفَ آيَةٍ فِي كل يَوْم؟ قَالَ: أَمَا يَسْتَطِيعُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَقْرَأَ: (أَلْهَاكُمُ التكاثر)

আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বললেন, তোমাদের কেউ কি দৈনিক (কুরআনের) এক হাজার আয়াত করে পড়তে পারে? সাহাবীগণ বললেন, কে আছে দৈনিক (কুরআনের) এক হাজার আয়াত করে পড়তে পারে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তখন বললেন, তাহলে তোমাদের কেউ কি প্রত্যহ সূরা আল হা-কুমুত্ তাকা-সুর পড়তে পারে না?

 

অর্থ্যাৎ প্রত্যেকে প্রতিদিন ১০০০ আয়াত তেলাওয়াত করতে পারবেনা তবে কেহ যদি সুরা তাকাসুর পাঠ করে তাহলে সে ১০০০ আয়াত পড়ার সমান সাওয়াব হাসিল করতে পারবে।

অপর হাদীসে আছে সুরা এখলাছ কুরআনের এক তৃতীয়াংশ সুতরাং ৩ বার সুরা এখলাছ পড়লে ১ খতম কুরআন তেলাওয়াতের ছাওয়াব পাবেন।

 

সুতরাং কিয়ামুল লায়লে যদি ১ম রাকাতে সুরা ফাতেহার সাথে সুরা তাকাসুর পড়ে ১০০০ আয়াত এর হক আদায় হবে, ২য় রাকাতে ৩ বার সুরা এখলাছ পড়লে পুরা কুরআন পড়ার সাওয়াব পাওয়া যাবে।

 

২য় পন্থা হল-সুনানে দারেমির ৩৪৬৩ নং হাদিস

খালিদ ইবনু মাদান হতে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ঘুমের পূর্বে মুসাব্বিহাত (যে সকল সূরা শুরু সাব্বাহা বা ইউসাব্বিহু দিয়ে) পাঠ করতেন এবং তিনি বলতেন: এগুলোর মধ্যে এমন একটি আয়াত রয়েছে, যা এক হাজার আয়াতের সমান।

 

সাব্বাহা ইউসাব্বিহু আছে কুরআনের ৬টি সুরাতে যেমন

 

কুরআনের ৫৭ নং সুরা সুরা হাদীদ, আয়াত সংখ্যা ২৯

৫৯ নং সুরা সুরা হাশর, আয়াত সংখ্যা ২৪

৬১ নং সুরা সুরা আস সফ আয়াত সংখ্যা ১৪

৬২ নং সুরা সুরাহ জুমুআ,  আয়াত সংখ্যা ১১

৬৪ নং সুরা সুরা তাগাবুন আয়াত সংখ্যা ১৮

এবং ৮৭ নং সুরা সুরা আলা।আয়াত সংখ্যা ১৯

 

অতএব এই ৬টি সুরা যাতে মাত্র ১১৫টি আয়াত আছে তা যদি পাঠ করেন তাতে  আপনার ১০০০ আয়াত পাঠের অফুরন্ত সাওয়াব আপনি হাসিল করতে পারবেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কিয়ামুল লাইলে এই সুরা গুলির দ্বারা কিয়ামুল লাইল করার তৌফিক দান করুন আমিন।

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.