ঘুম ও অলসতা দুর করার উপায়। অলসতা থেকে বাঁচার আমল।

 

পরে আফসুস করা থেকে বাঁচার জন্য আজ থেকেই ৩টি আমলে গুরুত্ব দিন



যদি আপনার অলসতা বেশী হয়, বেশী ঘুম আসে, কোন কাজে মন বসাতে না পারেন, পড়ালেখায় মন বসাতে না পারেন,  তাহলে আপনার এই অভ্যাস আপনাকে দুনিয়াতেও সফল হতে দিবেনা, আখেরাতেও সফল হতে দিবেনা। এ ব্যপারে রসুলুল্লাহ (দ) এর ২টি হাদীস আছে যা প্রত্যেক মুসলমান নর নারীর জন্য খুবই জরুরী।

যদি আপনি দুনিয়া ও আখেরাতে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে চলতে চান, তাহলে আপনি কি আমল করবেন সেটা হাদীস শরীফে স্পষ্ট বর্নিত আছে।

সলফে সলেহিন এর যুগে যে সব লোক ফরয নামাজ জামায়াতের সাথে পড়তেন না তাদের ব্যপারে তাদের রায় ছিল, নামাজে অলসতাকারীর ঈমান দুরস্ত না। আজকে যে সব লোককে আপনি দুনিয়াদারিতে অনেক অভিজ্ঞকে পাবেন তাদের নামাজের দিকে তাকালে দেখবেন সে নামাজের ব্যপারে অলসতা করে।

মনে রাখবেন যদি কেহ নামাজ পড়ে সে আল্লাহর তৌফিকে পড়ে, আল্লাহর তৌফিক না হলে কিছুই হতে পারেনা, রাসুলে আকরাম (দ) সাহাবাদেরকে খুব বেশী নামাজের ব্যপারে তরবিয়ত দিতেন, ওমর (রা) যখন কারো সাথে মোলাকাত করতেন তিনি সালামের পর প্রথম কথা জিজ্ঞেস করতেন তোমার নামাজ কেমন? কিন্তু এখন কেহ কি কাউকে এই প্রশ্ন করে? করেনা।

(ইন্না আহাম্মা উমুরিকুম ইনদি আস সালাহ, ফামান হাফিজাহা ওয়া হাফাজা আলাইহা, ফাকাদ হাফিজা দিনা,) সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূণ কাজ হল নামাজ। যে নামাজের হেফাজত করল সে তার পুরা দিনের হেফাজত করল।

আমাদের অনেক লোক ফজরে উঠতে পারেনা ঘুমের জন্য আর আফসুস করে বলে ইস আজ এলাম লাগাতে ভুলে গেছি, অথচ সাহাবাদের যুগে রাসুলের যুগে কি এলাম ছিল? কিন্তু তাদের তাহাজ্জুদও মিস হতনা, কারন তাদের এলাম ছিল অন্তরে, ঈমানের নুর ছিল তাদের এলাম। মনের ভিতর হুশ ও চেতনা ছিল।

উদাহারন হিসেবে বলা যায়- একটি কলেজের ছেলে ডাক্তারকে বলল স্যার আমার খুব বেশী ঘুম হয়, যার কারনে পড়ালেখা করতে পারিনা, কোন কাজ করতে পারিনা, আমাকে এমন ঔষধ দিন যাতে আমার ঘুম কম হয়, ডাক্তার রোগির দিকে তাকিয়ে ১টি প্রেসক্রিপশন লিখে তার হাতে ধরিয়ে দিলেন, সে যখন ঔষধের দোকানে সে প্রেসক্রিপশন নিয়ে গেল, দোকানদার প্রেসক্রিপশন দেখে সে ছাত্রকে বলল তুমি কি জান এতে ডাক্তার কি ঔষধ লিখেছেন? ডাক্তার লিখেছেন অনুভুতি ও চেতনা জীবিত থাকলে ঘুম আসার কথা নয়, যার চেতনা অনুভুতি মারা গেছে তার ঘুমও বেশী আসে। তার কাছে কোন কিছুর পরওয়া নাই। সে জন্য উম্মতের চেতনা অনুভুতি জাগ্রত হওয়া দরকার।

যদি আমার নামাজ ঠিক না থাকে তাহলে আমার আর কি আছে?

বুখারীর হাদিস হযরত সামুরা বিন জুনদুব (রা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলে আকরাম (দ) এরশাদ করেন- আমি স্বপ্নে দেখলাম এক লোকের মাথায় ফেরেশতা পাথর মেরে মাথা থেতলে দিচ্ছে আমি প্রশ্ন করলাম এটা কে? জবাব মিলল (আল্লাজি এয়াখুজুল কুরআন ওয়া এয়ারফাদা ওয়া এয়ানামু আনিস সালাতিল মাকতুবা) এ লোক সে যে কুরআন পড়েছে কিন্তু ফরয নামাজের সময় ঘুমিয়ে থাকত।

আপনারা প্রায় সময় শুনেন, রাসুলুল্লাহ (দ) এরশাদ করেন - মুনাফিকের জন্য ফজর ও এশারের নামাজ কঠিন হয়, 

আর বাজ্জার এর হাদিস-  যে সব লোকের মাথা নামাজের সময় ভারি হয়ে যায়, সেটা তার মোনাফিক হওয়ার আলামত।

সে জন্য নামাজের পাবন্দি না করা পযন্ত আপনার জীবনে কখনো শান্তি আসবেনা। কোন মোয়ামেলায় কখনো শান্তি আসবেনা। আর যে সমাজে নামাজের গুরুত্ব আছে, সে সমাজের লোকগুলির মধ্যে আপনি শান্তি শৃংখলা দেখতে পাবেন। আর মনে রাখবেন তৌহিদের পর নামাজের মধ্যেই আপনি সবচেয়ে বেশী বরকত দেখতে পাবেন। সে জন্য হযরত সঈদ বিন আবদুল আজিজ (রহ) এর যদি কোন নামাজ ছুটে যেত তিনি কাঁদতে আরম্ভ করতেন। এমন ভাবে কাঁদতেন যেন তার ঘরে ডাকাত পড়েছে।

সে জন্য দুনিয়ার শান্তি, আখেরাতের শান্তি, দুনিয়ার বরকত লাভ, ঈমানের নুর বৃদ্ধির জন্য নামাজ কায়েমের ব্যপারে খুব বেশী গুরুত্ব দিতে হবে, বিশেষ করে আসরের নামাজকে বেশী যত্ন করতে হবে, কারন রাসুলে আকরাম (দ) এরশাদ করেন (ফাকাআন্নামা ওতিরা আহলুহু ওয়া মালু) যার আসরের নামাজ ছুটে গেল তার জীবনের সকল সম্পদ, তার অজিত সকল মাল ও দৌলত যেন ধ্বংস হয়ে গেল এবং তার খান্দানের সমস্ত লোক যেন মারা গেল।

সে জন্য অলসতা দুর করার জন্য নিজের হুশ ও চেতনাকে জাগ্রত করতে হবে, নামাজের পাবন্দিকে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে এবং সাথে সাথে নিজের সকল দুবলতা দুর করার জন্য আল্লাহর সাহায্য কামনা করতে হবে।  

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.