বিপদ থেকে মুক্তির দোয়া আমল। সকল সমস্যা সমাধানের দোয়া আমল। আটকে থাকা কাজ সহজে হওয়ার আমল

 

মুশকিল, মসিবত, দুঃখ, বিপদ,সমস্যা সমাধানের এবং

আটকে থাকা কাজ সহজে হয়ে যাওয়ার

দোয়া, আয়াত, ওজিফা ও আমলসমুহ




বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

সম্মানিত দর্শক শ্রোতা মন্ডলী, আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু, আজকে আমি কুরআন ও হাদীসের আলোকে এমন কিছু দোয়া আমল ও ওজিফা বর্ননা করব, যে সব দোয়া আমল ও ওজিফা করলে আপনার

দুনিয়ার সকল মসিবত ও বিপদ দুর হবে

সকল আটকে থাকা কাজ সহজে হয়ে যাবে

আয়াত পড়ার সাথে সাথে ফেরেশতারা আপনার কাজে সাহায্য করতে নেমে আসবে

আল্লাহর ১টি নাম এর জিকির করার সাথে সাথে কাজ সমাধান হয়ে যাবে

নবী করিম (দ) যে কোন মুশকিলে কোন দোয়া পড়তেন?

আল্লাহর ১টি নাম মোবারক ৪১১ বার পড়লে সকল মুশকিল থেকে নাজাত পাবেন

সব সমস্যার সমাধানের ওজিফাসমুহ জানতে হলে ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত মনযোগ দিয়ে দেখার অনুরোধ রইল, ওজিফা গুলি করার পর ফায়দা হলে কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন।

 

১) দুনিয়ার সকল মসিবত ও বিপদ দুর করার আমল

রাসুলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন-(আলা উখবিরুকুম বিশাই, ইজা নাজালা বিরাজুলিন মিনকুম কারদুন আও বালাউন মিন আমরিদ্দুনিয়া, দাআ বিহি ফাফুররিজা আনহু)

হে আমার সাহাবাগন আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু বলবনা? যখন তোমাদের কারো উপর কোন মসিবত চলে আসে কিংবা কেহ কোন বিপদের সম্মুখিন হও, যদি এই কলমা পড়া আরম্ভ করে দেয়, আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত তার বলা মসিবতকে দুর করে দিবেন।

আর সে দোয়া কোনটি জান? দোয়াটি হল দোয়ায়ে জিন্নুন। হযরত ইউনুস (আ) এর দোয়া।দোয়াটির ব্যপারে আল্লাহ তায়ালা সুরা আম্বিয়ার ৮৭ নং আয়াতে এরশাদ করেন

وَذَا النُّونِ إِذ ذَّهَبَ مُغَاضِبًا فَظَنَّ أَن لَّن نَّقْدِرَ عَلَيْهِ فَنَادَى فِي الظُّلُمَاتِ أَن لَّا إِلَهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

এবং মাছওয়ালার কথা স্মরণ করুন তিনি ক্রুদ্ধ হয়ে চলে গিয়েছিলেন, অতঃপর মনে করেছিলেন যে, আমি তাঁকে ধৃত করতে পারব না। অতঃপর তিনি অন্ধকারের মধ্যে আহবান করলেনঃ তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ আমি গুনাহগার। [সুরা আম্বিয়া - ২১:৮৭]

৩টি অন্ধকারে হযরত ইউনুস (আ) গ্রেফতার হয়েছেন রাতের অন্ধকার, সমুদ্রের তলদেশের অন্ধকার এবং মাছের পেটের অন্ধকার, এমন মসিবতে তিনি দোয়া করেছেন ( লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন)

যে কোন মসিবতে মানুষ যদি এই কলমাটি পড়ে- নবী করিম (দ) এরশাদ করেন

لَمْ يَدْعُ بِهَا رَجُلٌ مُسْلِمٌ فِي شَيْءٍ قَطُّ إِلاَّ اسْتَجَابَ اللَّهُ لَهُ "

কোন মুসলিম যখনই এই দুআ করে, আল্লাহ্ অবশ্যই তার দুআ কবুল করে থাকেন। (তিরমিজি ৩৫০৫)

 

দোয়া ইউনুস পড়ার নিয়ম:

যখন কোন বিপদে পড়বেন ২ রাকাত নামাজ পড়বেন তারপর কয়েকবার দরুদ শরীফ পড়বেন এরপর খুব মনযোগ সহকারে অর্থের দিকে খেয়াল করে নিজেকে অপরাধী মনে করে গুনাহগার মনে করে বিনয়ের সাথে ১০০ বার দোয়া ইউনুস পাঠ করবেন তারপর নিজের মসিবত বিপদ দুর করার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবেন, ইনশা আল্লাহ আপনার মসিবত দুর হয়ে যাবে।

এবং যতদিন মসিবত দুর হবেনা ততদিন হাটতে বসেত চলতে ফিরতে দোয়া ইউনুস পড়তে থাকবেন।

 

২)যাদের কাজ আটকে আছে তাদের জন্য আমল

আল্লাহর ১টি গুণবাচক নাম হল আল আজিজু এর অথ হল পরাক্রমশালী ও সর্বোপরী বিজয়ী। আল্লাহর এই নামটি পবিত্র কুরআনে ৯২ বার এসেছে। আজিজ সে জাতকে বলে যিনি শত্রুদেরকে কাবু করার ব্যপারে খুবই কঠোর।

এই নামের অনেক উপকারিতা আছে, যেমন যদি কেহ চায় তার কোন কাজ যেন বিগড়ে না যায়, নষ্ট হয়ে না যায়, কোন কাজ যেন আটকে না যায়, অনেক লোক আছে যাদের কাজ হতে হতেও হয়না, একদম শেষ মুহুর্তে গিয়ে বিগড়ে যায়, তারা প্রতিদিন ৪১১ বার (এয়া আজিজু, এয়া আজিজু) পড়বেন আর আগে ও পরে ১০০ বার করে ২০০ বার দরুদ শরীফ পড়বেন। দরুদ সংক্ষিপ্ত ভাবেও পড়তে পারেন (ছাল্লাল্লাহু আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলিহি ওয়াছাল্লাম) । এই আমল ধারাবাহিক ভাবে ৯২ দিন পর্যন্ত করবেন তাহলে আপনার আর কোন কোন আটকে যাবেনা বিগড়ে যাবেনা।

 

৩) বিপদে আল্লাহ ফেরেশতা দিয়ে গায়েবী সাহায্য করবেন

যে কোন লোক যখন কোন মসিবত কিংবা পেরেশানিতে লিপ্ত হয় তখন সে যদি এ আয়াত পাঠ করে আল্লাহ তায়ালা তাকে সাথে সাথে সাহায্য করেন

মানুষ অনেক সময় বে ছাহারা হয়ে যায়এমন এমন সমস্যায় ফেসে যায় না পারে কাউকে বলতে না পারে সইতেকিংবা এমন স্থানে বিপদে আটকে যায় দুর দুর পর্যন্ত সেখানে কারো সাহায্য সহযোগীতা পাওয়ার কোন সুযোগই বাকী থাকে না,


প্রথমে ১টি বাস্তব ঘটনা শুনুন তাহলে বিষয়টি বুঝতে সহজ হবে

 

এক গ্রামে এক পরহেযগার আলেম বাস করতেন। তিনি প্রত্যেক কাজে আল্লাহর প্রতি ভরসা করতেন। তার কাছে কেউ দোআ চাইলে তিনি সুন্নাতী পন্থায় দোআ করতেন। আর তাহল তিনি ছালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন আর বেশী বেশী কোরানের সে আয়াতটি পড়তেন  পরহেযগার আলেমের এক প্রতিবেশী ছিল। সেও দ্বীন-ইসলামের বিধান পালন করত।  একদিন পুলিশ এসে লোকটির একমাত্র ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। তখন লোকটি বুযুর্গ পরহেযগার ব্যক্তির নিকট উপস্থিত হয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বললআমার ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছেআমি আপনাকে অনুরোধ করছিআপনি থানায় গিয়ে সুপারিশ করুন। যাতে আমার ছেলেকে মারধর না করা হয়রিমান্ডে না নেওয়া হয় । একথা শুনে ঐ লোক ওযূ করে ছালাত আদায় করে দোয়া করতে লাগলেন। কারণ তিনি জানতেন পুলিশকে সুপারিশ করে কোন কাজ হবে না।

 

এদিকে লোকটি তা দেখে কাঁদতে লাগল এবং বললআমি আসলাম তাকে সুপারিশের অনুরোধ করতেআর তিনি ছালাত আদায় করতে শুরু করলেনযখন বুযুর্গ ছালাত ও দোয়া শেষ করলেন তখন লোকটি বললআমি আমার ছেলের ব্যাপারে সুপারিশের জন্য এসেছিলাম আর আপনি সুপারিশ না করে জায়নামাজে বসে আছেন? তিনি উত্তরে বললেনআমি তোমার জন্য সুপারিশই তো করছিলাম। আমি তোমার সন্তানের মুক্তির জন্য আল্লাহর নিকট দোআ করেছি। আর এটাই সবচেয়ে বড় সুপারিশ। তিনি যাকে মুক্ত করবেনতাকে কেউ আটক রাখতে পারবে না।

 

এ বুযুর্গ মুছাল্লা থেকে উঠে না দাঁড়াতেই এক মহিলা এ লোকটিকে ডাকতে এসে বললভাই! তোমার বরকত হোকতোমার কল্যাণ হোক! তোমার ছেলেকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে। সে বাড়ীতে ফিরে এসেছে। একথা শোনা মাত্রই ঐ লোক বাড়ী
ফিরে গেল
। লোকটি বুঝতে পারল বিপদ মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।

 

যেমন আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (ছাঃ)-এর নিকট যখন কোন কাজ কঠিন হয়ে যেততখন তিনি ছালাতে দাঁড়িয়ে যেতেন, দোয়া করতেন (আবূদাউদ হা/১৩১৯ছহীহুল জামে হা/৪৭০৩)

 

 

অতএব যে কোন বিপদে আমাদের  ধৈর্য্য ও আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখতে হবে, এবং ২ রাকাত নামাজ পড়ে এ দোয়া বেশী বেশী পড়তে হবে  তবে আমরা সুরা আল এমরানের ১৭৩ নং আয়াতের অংশের সাথে সুরা আনফালের ৪০ নং আয়াতের অংশ জোড়া লাগালে এর অর্থ আরো চমৎকার হয় যেমন-

সুরা এমরানের আয়াতাংশ হল হাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল

সুরা আনফালের আয়াতাংশ নেমাল মাওলা ওয়ানেমান নাসির

حَسْبُنَا اللّهُ وَنِعْمَ
الْوَكِيلُ نِعْمَ الْمَوْلَى وَنِعْمَ النَّصِيرُ

অথ্যাৎ আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্টকতই না চমৎকার কামিয়াবীদানকারী। আল্লাহ কতইনা চমৎকার সাহায্যকারী

এ আয়াত হযরত ইবরাহিম পড়েছিলেন তাই আল্লাহ গায়েবী সাহায্য নাজিল করে অগ্নিকুন্ড থেকে রক্ষা করেছেন, আমাদের নবী পড়েছেন তাই বদর যুদ্ধে ফেরেশতা পাঠিয়ে মুসলমানদের সাহায্য করেছেন।

 

৪) যে কোন কঠিন কাজ সহজ করার জন্য নবী করিম (দ) এর আরো ১টি নববী দোয়া রয়েছে যেটি সহি ইবনে হিব্বানের ২৪২৭ নং হাদিসে আছে, দোয়াটি হল

«اللَّهُمَّ لاَ سَهْلَ إِلاَّ مَا جَعَلْتَهُ سَهْلاً، وَأَنْتَ تَجْعَلُ الْحَزْنَ إِذَا شِئْتَ سَهْلاً».

(আল্লা-হুম্মা লা সাহ্‌লা ইল্লা মা জাআলতাহু সাহ্‌লান, ওয়া আনতা তাজ্আলুল হাযনা ইযা শিতা সাহ্‌লান)।

 হে আল্লাহ! আপনি যা সহজ করেছেন তা ছাড়া কোনো কিছুই সহজ নয়। আর যখন আপনি ইচ্ছা করেন তখন কঠিনকেও সহজ করে দেন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.