বড় বড় রোগ থেকে মুক্তির দোয়া আমল ওজিফা। রোগ থেকে মুক্তির আমল।

 

বড় বড় রোগ থেকে মুক্তির দোয়া আমল ওজিফা রোগ থেকে মুক্তির আমল

খতরনাক থেকে খতরনাক বিমারি/রোগ

থেকে নাজাতের/মুক্তির দোয়া আমল ওজিফা



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, সম্মানিত দর্শক শ্রোতা মন্ডলী আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ, আজকে এমন কয়েকটি কোরআন হাদীসের সুরা দোয়া এবং নববী ওজিফা আপনাদের সামনে শেয়ার করব, যেসব আমল করলে আপনার খতরনাক থেকে খতরনাক বিমারি ইনশা আল্লাহ দুর হয়ে যাবে। মনযোগ দিয়ে প্রতিটি দোয়া ও আমল দেখুন প্রয়োজনে নোট করে রাখুন, যদি হায়াতের বাজেট থাকে তাহলে অবশ্যই খুব দ্রুত এর ফলাফল আপনি নিজ চোখে দেখতে পাবেন,

যদি এই আমলগুলি করার পর আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দেন তখন আমার ভিডিওর নিচে ১টা কমেন্ট লিখে জানাবেন। ওজিফাগুলি সবগুলিই অত্যন্ত গুরুত্বপূণ তাই সবগুলি আমল করতে পারেন অথবা শুধু ১টিও আমল করতে পারবেন।

 

প্রথম ওজিফা: পবিত্র কুরআনের ১টি আয়াতের অংশ যারা (লাইছা লাহা মিন দুনিল্লাহি কাশেফা) এটি সুরা নজম এর ৫৮ নং আয়াত ৫৩ নং সুরার ৫৮ নং আয়াত

لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللَّهِ كَاشِفَةٌ

আল্লাহ ব্যতীত কেউ একে প্রকাশ করতে সক্ষম নয়। [সুরা নাজম - ৫৩:৫৮]

আল্লামা মক্কি হেজাজী বলেন আমি অনেককে এই ওজিফা দিয়েছি, যাকেই দিয়েছি সে যত বড় রোগেই আক্রান্ত হউক আল্লাহর ফজলে শেফা লাভ করেছেন।

যারা বড় বড় রোগে আক্রান্ত তারা সবসময় এই আয়াতটি পড়তে থাকবেন। তবে নাপাকির হালতে পড়বেন না।

দ্বিতীয় ওজিফা: বৃষ্টি যখন শুরু হয় সাথে সাথে নয় বরং কিছুক্ষণ বৃষ্টি হয়ে গেলে তারপর পরিস্কার বৃষ্টির পানি নিবেন, আর সে পানিতে ৩ বার দরুদ শরীফ ৭০ বার সুরা ফাতেহা, ৭০ বার সুরা এখলাস, ৭০ বার সুরা ফালাক, ৭০ বার সুরা নাস পড়ে ফুক দিবেন, তারপর সে পানি ৭ দিন পযন্ত রোগীকে খাওয়াবেন।

সুরা আল-ফাতিহা সব রোগের মহৌষধ। এ সুরার আমলের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। সুরা ফাতিহার আমলের অন্যতম বৈশিষ্ট্যগুলো হলো-


> হজরত জাফর সাদেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, সুরা ফাতিহা ৪০ বার পাঠ করে পানির ওপর দম করে কোনো জ্বরে আক্রন্ত লোকের মুখমণ্ডলে ছিঁটিয়ে দিলে, এ সুরার বরকতে আল্লাহ তাআলা জ্বর দূর করে দেন।

> ফজরের সুন্নত ও ফরজ নামাজের মধ্যবর্তী সময়ে ৪১ বার সুরা ফাতেহা পড়ে চোখে ফুঁ দিলে চোখের ব্যাথা দূর হয়।


> শেষ রাতে সুরা ফাতিহা ৪১ বার পড়লে আল্লাহ তাআলা বান্দার রিজিক বাড়িয়ে দেন।

> ৪০ দিন নিয়মিত সুরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে পান করালে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির অসুস্থতা দূর করে দেন। কেউ কেউ সুরাটি গোলাপ, জাফরান এবং কস্তুরি দিয়ে চিনির রেকাবিতে লিখে তা পানি দ্বারা ধুয়ে ৪০ দিন পান করালেও রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।


> দাঁতের ব্যথা, পেটের ব্যথা, মাথা ব্যথার জন্যে ৭ বার এ সুরা পাঠ করে দম করলেই আল্লাহ তাআলা এসব ব্যথা দূর করে দেন।

 

সুরা ফাতিহার প্রমাণিত আমল

সুরা ফাতিহার আমল প্রমাণিত। যে কোনো রোগে এ সুরার আমল কার্যকরী। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-
> হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, (একবার) সাহাবাদের একটি দল (পানির জন্য) এক পানির কুপওয়ালার কাছে গেলেন। তাদের (সে সময় কুপওয়ালাদের) একজনকে বিচ্ছু অথবা সাপে দংশন করেছিল।


কুপওয়ালাদের এক ব্যক্তি এসে বলল, আপনাদের মধ্যে কোনো মন্ত্র জানা লোক আছে কি? এ পানির ধারে বিচ্ছু বা সাপে দংশন করা একজন লোক আছে।
সাহাবাদের মধ্য থেকে একজন (হজরত আবু সাঈদ খুদরি) গেলেন এবং কয়েকটি ভেড়ার বিনিময়ে তার উপর সুরা ফাতিহা পড়ে ফুঁ (দম করলেন) দেন। এতে সে (সাপ কিংবা বিচ্ছুর দংশনে আক্রান্ত ব্যক্তি) ভাল হয়ে গেল এবং তিনি ভেড়াগুলো নিয়ে সঙ্গীদের কাছে আসলেন।
তারা (সাহাবারা) এটা অপছন্দ করল এবং বলতে লাগল, আপনি কি আল্লাহর কিতাবের বিনিময় গ্রহণ করলেন?
অবশেষে তারা মদিনায় পৌঁছে বিশ্বনবিকে বললেন,
হে আল্লাহর রাসুল! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিনি আল্লাহর কিতাবের বিনিময় গ্রহণ করেছেন।
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা যেসব জিনিসের বিনিময় গ্রহণ করে থাক, তার মধ্যে আল্লাহর কিতাব অধিকতর উপযোগী।
(বুখারি)

> অন্য বর্ণনায় আছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা ঠিক করেছ। ছাগলের একটি ভাগ আমার জন্য রাখ।' (বুখারি ও মুসলিম)

 

তৃতীয় ওজিফা: কুরআন তেলাওয়াত করা, আপনার যত রোগ আছে দুর হয়ে যাবে, কারন আল্লাহ তায়ালা এই কুরআনকে শেফা হিসেবে নাজিল করেছেন

ওয়া নুনাযযিলু মিনাল কুরআনি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতুল লিল-মুমিনিন।

 

কুরআনে এমন কিছু আয়াত আছে যেগুলো অনেক রোগ-ব্যাধির জন্য শিফাস্বরূপ। দুনিয়ায় অনেক রোগের শিফা ওষুধে হয় না। আল্লাহর রহমতে কোনো বান্দা যদি তাঁর বিধান পালনের সঙ্গে রোগমুক্তিতে কুরআনি আমল করেন তবে সে ব্যক্তি অনেক কঠিন রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থতা লাভ করবেন। কুরআনের এ আমলগুলো তুলে ধরা হলো-   


সুরা তাওবার ১৪ নং আয়াত ৭ বার

উচ্চারণ : ওয়া ইয়াশফি সুদুরা ক্বাওমিম মুমিনিন।

সুরা ইউনুছের ৫৭নং আয়াত ৭ বার
উচ্চারণ : ওয়া শিফাউল লিমা ফিস সুদুরি ওয়া হুদাও ওয়া রাহমাতুল লিল-মুমিনিন।

সুরা নহলের ৬৯ নং আয়াত ৭ বার
উচ্চারণ : ইয়াখরুঝু মিম বুতুনিহা শারাবুম মুখতালিফুন আলওয়ানুহু ফিহি শিফাউ লিন-নাস।

সুরা শুআরার ৮০নং আয়াত ৭ বার

উচ্চারণ : ওয়া ইজা মারিদতু ফাহুয়া ইয়াশফিনি।

সুরা বনি ইসরাইলের ৮২নং আয়াত ৭ বার
উচ্চারণ : ওয়া নুনাযযিলু মিনাল কুরআনি মা হুয়া শিফাউও ওয়া রাহমাতুল লিল-মুমিনিন।

সুরা ফুসসিলাতের ৪৪নং আয়াত ৭ বার
উচ্চারণ : কুল হুয়া লিল্লাজিনা আমানু হুদাও ওয়া শিফা।
 
সুতরাং সুরা ফাতিহা এবং উল্লেখিত আয়াতগুলো পাঠ করে কোনো একটি পানিভর্তি পাত্রে দম করে সে পানি পান করলে আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে শিফা দান করবেন।


তবে, হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী অসুস্থতার পূর্বে সুস্থতাকে মর্যাদা দেয়া আবশ্যক এবং সুস্বাস্থ্য আল্লাহ তাআলার নিয়ামত। সবার জন্যই এ নিয়ামাতের মূল্যায়ন করা উচিত।

অসুস্থ হয়ে গেলে এ অসুস্থতা নিজের কারণে এসেছে বলে বিশ্বাস করা এবং সুস্থ হয়ে উঠলে এ সুস্থতা আল্লাহ তাআলার দান বলে বিশ্বাস করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর হুকুম-আহকাম পালনের পাশাপাশি কুরআনি আমল করলে যাবতীয় রোগ-ব্যাধি থেকে শিফা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.