মহানবী (দ) কসম করে বলেন- যা চাইবেন তাই পাবেন, ১০০% সব দোয়া কবুল হবে

 

মহানবী (দ) কসম করে বলেন- যা চাইবেন তাই পাবেন,

১০০% সব দোয়া কবুল হবে



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, সম্মানিত দশক শ্রোতা মন্ডলী আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ, আজ আমি কুরআন ও হাদীস থেকে এমন কিছু দোয়া জিকির আমল একত্র করে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি যে সব দোয়া আমল করলে আপনি দুনিয়া ও আখেরাতের সবকিছু হাছিল করতে পারবেন, ঈমান আমল বৃদ্ধি পাবে, রিজিক বৃদ্ধি পাবে, ধন সম্পদ পাবে, এবং  খোদাই অফুরন্ত নেয়ামত প্রাপ্ত হবেন। কিছু নিয়ম নীতি আছে যা ফলো করলে মহানবী হযরত মুহামদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কসম করে বলেছেন আপনার সব আশা পুরণ হবে, আপনার সব চাহিদা পুরণ হবে, আপনি যে দোয়া করবেন ১০০% সে দোয়া কবুল হবে। সবচেয়ে বড় পাওয়া হল আল্লাহর প্রিয় হাবিবের সাথে হাশর হবে।

আজকের দোয়াগুলি ও নিয়মগুলি প্রত্যেকের জন্য খুবই জরুরী তাই শেষ পযন্ত প্রতিটি দোয়া ও দোয়ার নিয়ম অবশ্যই শিখবেন আর আমল করবেন। ইনশা আল্লাহ অতি দ্রুত আপনার সকল অভাব অনটন দুর হয়ে যাবে। আপনার সকল আশা সকল চাওয়া সকল চাহিদা আল্লাহ তায়ালা দ্রুত পুরণ করে দিবেন।

দোয়াগুলি করার আগে কয়েকটি নীতিমালা মেনে তারপর দোয়া করতে হবে নিয়ম নীতিগুলি হল

১) বুখারীর শরীফের ১০৮৭ নং হাদিস, নবী করিম (দ) বলেছেন- যে ব্যক্তি গভীর রাতে রাত ১২টার পর ঘুম থেকে উঠে বলবেন

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ‏. الْحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللَّهِ، وَلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ، وَلاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ‏.

(লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শায়্যিন কাদির, আলহামদুলিল্লাহি ওয়া সুবহানাল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ) এটা পড়ে যে দোয়াই করা সে দোয়া কবুল হবে।

২) মুসলিম শরীফের ১৬৫৯ নং হাদিস

আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাতের অর্ধেক অথবা দু তৃতীয়াংশ অতিক্রম হলে মহান ও বারাকাতময় আল্লাহ দুনিয়ার আসমানে নিজের শান মোতাবেক অবতরণ করে বলতে থাকেনঃ

هَلْ مِنْ سَائِلٍ يُعْطَى هَلْ مِنْ دَاعٍ يُسْتَجَابُ لَهُ هَلْ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَنْفَجِرَ الصُّبْحُ .

কোন প্রার্থনাকারী আছে কি যাকে দেয়া হবে? কোন আহবানকারী আছে কি যার আহবানে সাড়া দেয়া হবে? কোন ক্ষমা প্রার্থনাকারী আছে কি, যাকে ক্ষমা করা হবে? আল্লাহ তাআলা ভোর প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত এরূপ বলতে থাকেন।

তাহলে আপনি রাত ১২ টার পর থেকে ফজরের আযান পর্যন্ত সময়টাকে দোয়ার জন্য নির্ধারন করবেন।

৩) আবু দাউদ এর ৫২৪ নং হাদিস

আবদুল্লাহ্ ইবনু আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! মুআযযিনরা তো আমাদের উপর ফযীলত প্রাপ্ত হচ্ছে। আমরা কিভাবে তাদের সমান ছওয়াব পাব? তিনি বলেনঃ মুআযযিনরা যেরূপ বলে-তুমিও তদ্রুপ বলবে। অতঃপর যখন আযান শেয করবে, তখন আল্লাহর নিকট যা চাইবে তাই পাবে।

তাহলে আপনি যা চান তাই যদি পেতে চান, আপনার সকল দোয়া যেন কবুল হয় সেটা যদি চান তাহলে আযানের জবাব দিবেন, মুয়াজ্জিন যা যা বলে আপনিও তা তা বলবেন তারপর আযানের পর আযানের দোয়া পড়বেন এরপর আপনি নিজের সকল চাহিদার কথা আল্লাহকে বলবেন নিশ্চয়ই আপনার চাহিদা পুরণ হবে।

৪) অজু করে কিবলামুখি হয়ে ৪টি বাক্য থেকে কোন ১টি বাক্য জরুরী ভিত্তিতে উচচারণ করুন,

১ম বাক্য হল (ওয়া ইলাহুকুম ইলাহুন ওয়াহেদ, লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রাহিম)

২য় বাক্য হল (আলিফ লাম মিম আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম)

৩য় বাক্য হল (আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বি আন্নি উশহিদুকা আন্নাকা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদুল্লাজি লাম এয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম এয়া কুল্লাহু ‍কুফুয়ান আহাদ)

৪থ বাক্য হল (আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নান বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ জাল জালালি ওয়াল ইকরাম )

এই ৪টি বাক্য থেকে কোন ১টি বাক্য যদি উচ্চারন করেন, নবী করিম (দ) এরশাদ করেন আল্লাহ কখনো আপনার দোয়া ফিরিয়ে দিবেন না, এগুলি হল ইসমে আজম

(ইজা দুঈআ ফা আজাব, ওয়া ইজা ছুঈলা ফা আতা) যা চাইবেন তাই দিবেন, যে দোয়াই করবেন কবুল হবে।

এর পর দরুদ পড়বেন, তারপর খুব একিনের সাথে দোয়া করুন, এমন একিন করবেন যে অসম্ভব জিনিষটি আমার জন্য আপনার জন্য  প্রযোজ্য কিন্তু অসম্ভব জিনিষ আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য নয়, আল্লাহর কাছে অসম্ভব বলতে কিছু নাই।

যেখানে দুনিয়ার সকল ডাক্তার বলে দিয়েছেন আপনি আর বাঁচবেন না সেখানেও যদি আপনি একিনের সাথে এই ইসমে আজম দিয়ে দোয়া করেন তাহলে আল্লাহর জন্য অসম্ভব নয় আপনার পুনরায় সুস্থ করে দেয়া।

 

৫)নবী করিম (দ) কসম করে বলেন এই দোয়ার পর যা চাইবেন আল্লাহ তাই দিবে, প্রত্যেক নামাজের পর দোয়াটি ১ বার পড়বেন তারপর আপনার মনের কথা আল্লাহকে বলবেন।

দোয়াটি হল ইসমে আজমের দোয়া

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ الْمَنَّانُ بَدِيعُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ يَا حَىُّ يَا قَيُّومُ إِنِّي أَسْأَلُكَ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বি আন্না লাকাল হামদা লা ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নানু বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি এয়া

জাল জালালি ওয়াল ইকরাম এয়া হইয়্যু এয়া কাইয়্যুম ইন্নি আছআলুকা

 

সুত্র: সুনানে নাসায়ীর ১৩০৩ ইবনে মাজাহ এর ৩৮৫৮ নং হাদিস

 

৬) আল্লাহর ২টি নাম মোবারক ধরে ডেকে যে দোয়া করবেন সে দোয়া কবুল হবে

রাসুলুল্লাহ (দ) শুধু বলেছেন সুরা বাকারা, সুরা আল ইমরান ও সুরা তাহাতে আল্লাহর ২টি নাম আছে যা হল ইসমে আজম, আর সাহাবী হযরত আবু উমামা গবেষনা করে বের করলেন এই ৩টি সুরাতে আল্লাহর ২টি নাম মোবারক কমন আর তা হল (আল হাইয়্যুল আল কাইয়্যুম) যার অথ হল চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী

 

এই ২টি হল আল্লাহর নাম মোবারক যা এই ৩টি সুরাতেই আছে, সুতরাং কেহ যদি আল্লাহ তায়ালা এই ২টি নাম ধরে ডাকেন এভাবে বলবেন এয়া হাইয়্যু এয়া কাইয়্যুম বিরাহমাতিকা আসতাগিছু (৩ বার) তারপর আপনার সকল আরজি পেশ করবেন, আপনার মনের সকল আকুতি আল্লাহর বারেগাহে জানাবেন, আল্লাহ তায়ালা আপনার সকল দোয়া কবুল করবেন সকল ফরিয়াদ কবুল করবেন।  

 

এবার আসুন গভীর রাতে ও আযানের পর কি দোয়া করবেন তা জানা যাক,

প্রথম দোয়াটি হল ইবনে হিব্বানের ১৯৭০, মসনদে আহমদের ৪৩৪০, নাসাঈ শরীফের ৮৬৯ নং হাদিস

-اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ إِيمَانًا لاَ يَرْتَدُّ وَنَعِيمًا لاَ يَنْفَدُ وَمُرَافَقَةَ النَّبِيِّ -صلى الله عليه وسلم-فِي أَعْلَى جَنَّةِ الْخُلْدِ

হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এমন ঈমানের প্রার্থনা করছি, যে ঈমান হবে দৃঢ় ও মজবুত, যা নড়বড়ে হবে না, চাই এমন নেয়ামত যা ফুরিয়ে যাবে না। এবং চিরস্থায়ী সুউচ্চ জান্নাতে প্রিয় নবী মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে থাকার তাওফীক আমাকে দিও।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ইমানান লা এয়ারতাদ্দাদ,

হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এমন ঈমানের প্রার্থনা করছি, যে ঈমান হবে দৃঢ় ও মজবুত, যা নড়বড়ে হবে না,

ওয়া নাঈমান লা এয়ানফাদ

না, চাই এমন নেয়ামত যা ফুরিয়ে যাবে না।

ওয়া মুরাফাকাতা নাবিয়্যি ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওযাসালাম ফি আলা জান্নাতিল খুলদ।

এবং চিরস্থায়ী সুউচ্চ জান্নাতে প্রিয় নবী মুহম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে থাকার তাওফীক আমাকে দিও।

অতএব সারাংশা হল গভীর রাতে, বা শেষ রাতে, দোয়া করবেন, আযানের জবাব দিয়ে আযানের পর দোয়া করবেন, দোয়ার আগে ইসমে আজম এর বাক্য গুলি পড়বেন দোয়ার আগে ও পরে দরুদ পড়বেন তারপর আল্লাহর কাছে যে দোয়া করবেন আল্লাহ তায়ালা সে দোয়া অবশ্যই কবুল করবেন।

আল্লাহ তায়ালা আপনার ও আমর সকল নেক দোয়া কবুল করুন আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.