বিসমিল্লাহর ফজিলত ও আমল, যে কোন বিপদে বিসমিল্লাহর ওজিফা
বিসমিল্লাহর
ফজিলত ও আমল, যে কোন বিপদে বিসমিল্লাহর ওজিফা
এক বেদুইন
সাহাবী বলেন, আমি হুনাইন যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর
সাথে ভীড়ের মধ্যে (দাঁড়িয়ে) ছিলাম। আমার পায়ে মোটা তলা বিশিষ্ট জুতা ছিল। (অসাবধানতাবশত)
আমার জুতা দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পা মাড়িয়ে ফেলি।
তখন নবী করিম (দ) বলে উঠলেন বিসমিল্লাহ,
এবং তিনি তাঁর হাতের চাবুক দিয়ে আমাকে হাল্কাভাবে আঘাত
করলেন এখানে লক্ষ্যনীয় যে নবী করিম (দ) ব্যথা
পাওয়ার সাথে সাথে বলে উঠলেন বিসমিল্লাহ
কারন যদি
মানুষ কোন ব্যাথা পায় তখন আল্লাহর নাম নেয় সে ব্যাথা দ্রুত দুর হয়ে যায়, আর যদি কেহ
কোন ব্যথা দুঘটনা হলে বলে এটা শয়তান করেছে তখন শয়তান ফুলে ফেলে একটি রুমের মত বড় হয়ে
যায়
যেমন আরেক
হাদিস আছে রাসুলুল্লাহ (দ) আলী (রা) কে বলেন যখন মানুষ রাগের মধ্যে এসে বলে শয়তান এটা
করেছে তখন শয়তান বড়ই খুশি হয়ে যায়, সে সময় বলা উচিত আউজুবিল্লাহ হিমিনাশ শাইতানির রাজিম,
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
এ ব্যপারে
সুনাদে আবু দাউনের ৪৯৮২ নং হাদিস
আবুল মালীহ
(রহঃ) হতে এক ব্যক্তির সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জন্তুযানে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর পিছনে বসা ছিলাম। হঠাৎ হুজুরের সাওয়ারী হোঁচট খেলে আমি বললাম, শয়তান
ধ্বংস হয়েছে। তিনি বললেন, একথা বলো না যে, শয়তান ধ্বংস হয়েছে। কেননা তুমি একথা বললে
সে অহংকারে ঘরের মতো বড় আকৃতির হয়ে যাবে এবং শয়তান বলবে, আমার ক্ষমতায় হয়েছে। সে জন্য
বলো, বিসমিল্লাহ বা আল্লাহর নামে। যখন তুমি
বিসমিল্লাহ ’আল্লাহর নামে’ বলবে তখন শয়তান হ্রাসপ্রাপ্ত হয়ে মাছির মত হয়ে যাবে
এখন আপনার
ইচ্ছা আপনি তাকে শক্তিশালি বানিয়ে দিন, আর আপনার ইচ্ছা আপনি তাকে দুর্বল করে দিন।
সে বেদুইনটি
বলেন, আমার পায়ের জুতাতে হুজুর (দ) ব্যথা পাওয়ায়,
আমি রাতভর নিজেকে ধিক্কার দিতে থাকলাম, সারা রাত ঘুমাতে পারলাম না, (আর মনে মনে) বলতে
লাগলাম, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ব্যথা দিলাম! আমি রাতটা
যে কিভাবে (কি কষ্টে) কাটালাম তা আল্লাহই ভাল জানেন।
সকালবেলা
এক ব্যক্তি এসে বললো, অমুক কোথায়? তোমাকে রাসুলুল্লাহ ডাকছেন; আমি তখন (মনে মনে) বললাম,
আল্লাহর কসম, নিশ্চয়ই আমার গতকালের সেই ব্যাপারটাই হবে। ভয়ে ভয়ে আমি চলতে লাগলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন: ’কাল তুমি
তোমার জুতা দিয়ে আমার পা মাড়িয়ে দিয়েছিলে, আর এভাবে তুমি আমাকে ব্যথা দিয়েছিলে। ফলে
আমি তোমাকে চাবুক দিয়ে (অসাবধানতাবশত) আঘাত করেছিলাম। সে কারণে এ আশিটি উট (তোমাকে
দিলাম)। এগুলো নিয়ে যাও।
দেখুন
আমাদের নবী কত বড় দানশীল ছিলেন, যে লোক ব্যথা দিয়েছে তাকে অসাবধানতা বশত চাবুক দিয়ে
আঘাত করার জন্য ৮০ টি উট দিয়ে দিলেন। আর আমরা হলে কি করতম? আল্লাহ আমাদেরকেও এই হাদীস
থেকে শিক্ষা গ্রহণের তৌপিক দান করুন, যে কোন বিপদে দুঃখে, মসিবতে শয়তানকে গালি না দিয়ে
আউজুবিল্লাহ বিসমিল্লাহ পড়ব, আর কেউ অনিচ্ছাকৃত কষ্ট দিলে তাকে মাফ করে দিব, আর কেউ
আমাদের কাছ থেকে কষ্ট পেলে তাকে হাদিয়া দিয়ে তুহফা দিয়ে হলেও রাজি করব তার কাছে ক্ষমা
চেয়ে নিব।
কোন মন্তব্য নেই