১ মিনিটে সব দোয়া কবুল হবে, দোয়া কবুল হওয়ার আমল
মহানবীর (দ) শিক্ষা- মুনাজাতের গোপন টিপস
১ মিনিটে সব দোয়া কবুল হবে
আমাদের প্রাণের চেয়ে প্রিয় নবী দোয়া কবুল হওয়ার একটি গোপন টিপস
আমাদেরকে জানিয়েছেন, যেটি ফলো করলে আমাদের যে কোন দোয়া ১ মিনিটের মধ্যে কবুল হবে,
যাদের দোয়া কবুল হয়না, তারা এই টিপসটি এপ্লাই করতে পারবেন,
আমাদের দয়াল নবী বনি ইসরাইলের একটি অসাধারণ ঘটনার মাধ্যমে আমাদেরকে এই শিক্ষা দিয়ে
গেছেন, কিন্তু আমরা অনেকেই তা জানিনা, তাই দোয়া করেই যাই দোয়া কবুল হয়না, আর
প্রচার করে বেড়াই যে আমার দোয়া কবুল হয়না।
আজ সে অসাধারণ ঘটনার মাধ্যমে সে নববী টিপসটি আপনাদের জানাব, আশা
করি শেষ পযন্ত সম্পূণ ঘটনাটি শুনবেন এবং দোয়া কবুল করানোর নববী গোপন টিপস জেনে তা
কাজে লাগাবেন।
বুখারী শরীফের ২২৭২ ও মুসলিম এর ২৭৪৩ নং হাদিসে ঘটনা এভাবে
বর্ণিত হয়েছে
আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের পূর্বে (বনী ইসরাঈলের
যুগে) তিন ব্যক্তি একদা সফরে বের হল। চলতে চলতে রাত এসে গেল। সুতরাং তারা রাত
কাটানোর জন্য একটি পর্বত-গুহায় প্রবেশ করল। অল্পক্ষণ পরেই একটা বড় পাথর উপর থেকে
গড়িয়ে নীচে এসে গুহার মুখ বন্ধ করে দিল। এ দেখে তারা বলল যে, এহেন বিপদ থেকে
বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে এই যে, তোমরা তোমাদের নেক আমলসমূহকে অসীলা বানিয়ে
আল্লাহর কাছে দু’আ কর।’ সুতরাং তারা স্ব স্ব আমলের অসীলায় (আল্লাহর কাছে) দু’আ করতে লাগল।
তাদের মধ্যে একজন বলল, হে আল্লাহ! তুমি জান যে, আমার
অত্যন্ত বৃদ্ধ পিতা-মাতা ছিল এবং (এও জান যে,) আমি সন্ধ্যা বেলায় সবার আগে তাদেরকে
দুধ পান করাতাম। তাদের পূর্বে স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে ও কৃতদাস-দাসী কাউকে পান করাতাম
না। একদিন আমি গাছের খোঁজে দূরে চলে গেলাম এবং বাড়ী ফিরে দেখতে পেলাম যে পিতা-মাতা
ঘুমিয়ে গেছে। আমি সন্ধ্যার দুধ দহন করে তাদের কাছে উপস্থিত হয়ে দেখলাম, তারা
ঘুমিয়ে আছে। আমি তাদেরকে জাগানো পছন্দ করলাম না এবং এও পছন্দ করলাম না যে, তাদের
পূর্বে সন্তান-সন্ততি এবং কৃতদাস-দাসীকে দুধ পান করাই। তাই আমি দুধের বাটি নিয়ে
তাদের ঘুম থেকে জাগার অপেক্ষায় তাদের শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকলাম। অথচ শিশুরা ক্ষুধার
তাড়নায় আমার পায়ের কাছে চেঁচামেচি করছিল। এভাবে ফজর উদয় হয়ে গেল এবং তারা জেগে
উঠল। তারপর তারা নৈশদুধ পান করল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টি
বিধানের জন্য করে থাকি, তাহলে পাথরের কারণে আমরা যে গুহায় বন্দী হয়ে আছি এ থেকে
তুমি আমাদেরকে উদ্ধার কর। এই দু’আর ফলস্বরূপ পাথর একটু সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা বের
হতে সক্ষম ছিল না।
দ্বিতীয়-জন দু’আ করল, হে
আল্লাহ! আমার একটি চাচাতো বোন ছিল। সে আমার নিকট সকল মানুষের চেয়ে প্রিয়তমা ছিল। একবার
আমি তার সঙ্গে যৌন মিলন করার ইচ্ছা করলাম। কিন্তু সে অস্বীকার করল। পরিশেষে সে যখন
এক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ল, তখন সে আমার কাছে এল। আমি তাকে এই শর্তে ১২০ দিনার
(স্বর্ণমুদ্রা) দিলাম, যেন সে আমার সঙ্গে যৌন-মিলন করে। সুতরাং সে (অভাবের তাড়নায়)
রাজী হয়ে গেল। অতঃপর যখন আমি তাকে আয়ত্তে পেলাম। তখন সে বলল, তুমি আল্লাহকে ভয় কর
এবং অবৈধভাবে (বিনা বিবাহে) আমার সতীত্ব নষ্ট করো না। সুতরাং আমি তার কাছ থেকে
দূরে সরে গেলাম; যদিও সে আমার একান্ত প্রিয়তমা ছিল এবং যে স্বর্ণমুদ্রা আমি তাকে
দিয়েছিলাম তাও পরিত্যাগ করলাম। হে আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ তোমার সন্তুষ্টির জন্য
করে থাকি, তাহলে তুমি আমাদের উপর পতিত মুসীবতকে দূরীভূত কর।’’ সুতরাং পাথর আরো কিছুটা সরে গেল। কিন্তু তাতে তারা
বের হতে সক্ষম ছিল না।
তৃতীয়জন দু’আ করল, হে আল্লাহ! আমি কিছু লোককে মজুর রেখেছিলাম।
(কাজ সুসম্পন্ন হলে) আমি তাদের সকলকে মজুরী দিয়ে দিলাম। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন
মজুরী না নিয়ে চলে গেল। আমি তার মজুরীর টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করলাম। (কিছুদিন পর)
তা থেকে প্রচুর অর্থ জমে গেল। কিছুকাল পর একদিন সে এসে বলল, হে আল্লাহর বান্দা!
তুমি আমার মজুরী দিয়ে দাও। আমি বললাম, এসব উঁট, গাভী, ছাগল এবং গোলাম (আদি) যা
তুমি দেখছ তা সবই তোমার মজুরীর ফল। সে বলল, হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার সঙ্গে
উপহাস করবে না। আমি বললাম, আমি তোমার সঙ্গে উপহাস করিনি (সত্য ঘটনাই বর্ণনা করছি)।
সুতরাং আমার কথা শুনে সে তার সমস্ত মাল নিয়ে চলে গেল এবং কিছুই ছেড়ে গেল না। হে
আল্লাহ! যদি আমি এ কাজ একমাত্র তোমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য করে থাকি, তাহলে যে
বিপদে আমরা পড়েছি তা তুমি দূরীভূত কর। এর ফলে পাথর সম্পূর্ণ সরে গেল এবং সকলেই
(গুহা থেকে) বের হয়ে চলতে লাগল।
অতএব প্রিয় বন্ধুরা বনি ইসরাইলের ৩ বন্ধুর দোয়া করার
স্টাইল আমরা জানলাম, তারা নিজ নিজ আমলকে উছিলা করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন আর
আল্লাহ তায়ালা তাদের সে দোয়া কবুল করেছেন ফলে তারা গুহার ভিতর থেকে মুক্ত হতে
পরেছে, বিপদ থেকে মুক্তি লাভ করেছে। এখন আপনিও এমন কিছু আমল করতে হবে যে আমল হবে
শুধুমাত্র আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিয়তে, তাতে কোন ধরনের রিয়া বা লোক দেখানোর নিয়ত
থাকবেনা, আপনার ঝুলিতে যদি এমন ধরনের আমল থাকে আপনি দোয়া করার সময় সে আমল এর উছিয়া দিয়ে দোয়া করলে
আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই আপনার দোয়া কবুল করবেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে খালেছ
আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বেশী বেশী নেক আমল করার তৌফিক দান করুন যাতে সে সব নেক
আমলের উছিলা দিয়ে দোয়া করতে পারি।
দোয়া কবুল হওয়ার জন্য আরো মনে রাখবেন, দোয়া করার আগে
প্রথমে আল্লাহর প্রসংশা করবেন, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ এসব শব্দ দিয়েও
প্রসংশা করা যায়। নতুবা মুনাজাতের শুরুতে আল্লাহর প্রসংশার নিয়তে ১ বার সুরা
ফাতেহা পড়ে নিবেন। কয়েক বার দরুদ শরীফ পড়বেন। অত্যন্ত কাকুতি মিনতির সাথে দোয়া
করবেন, পূর্ণ আস্থার সাথে দোয়া করবেন। ইনশা আল্লাহ আপনার দোয়া কবুল হবে।
কোন মন্তব্য নেই