মাগরিবের নামাজের পর দোয়া ও আমল। ১০০% পরীক্ষিত আমল, সকাল হওয়ার আগে সকল ইচ্ছা পুরণ হবে
বিছমিল্লাহির
রাহমানির রাহিম
মাগরিবের নামাজের পর দোয়া ও আমল
১০০% পরীক্ষিত আমল, সকাল হওয়ার আগে সকল ইচ্ছা পুরণ হবে
আসসালামু
আলাইকুম
প্রিয় সুধীবৃন্দ আপনি কি কোন সমস্যায় আছেন? আপনার অভাব কি দুর হচ্ছেনা? আপনি কি কোন পেরেশানিতে আছেন? আপনি কি কোন রকম ভয়ে আছেন? আপনি কি কোন ধরনের টেনশনে আছেন? আপনি কি কোন বিপদে আছেন তাহলে আজকের এই ভিডিওটি আপনার জন্য
আজকে
আমি কুরআন হাদিসের আলোক এমন কিছু আমল দুআ ও ওজিফা উপস্থাপন করব যে আমলগুলি মাগরিবের
নামাজের পর করতে হয়, যে আমলগুলি করার ফলে আল্লাহর রহমতে আপনার সকল বিপদ কেটে যাবে।
আপনি যদি কোন সমস্যায় থাকেন সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আপনার কোন টেনশন থাকলে টেনশন খতম
হয়ে যাবে। এ যুগে মানুষের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আর্থক সমস্যা, এই আমলগুলি করলে আপনার
আথিক সমস্যা রিজিকের সমস্যা ইনশা আল্লাহ স্থায়ী ভাবে সমাধান হয়ে যাবে।
প্রথমে
বলে রাখি আপনি যে কোন আমল করে তার ফল পাওয়ার জন্য আপনাকে সে আমলের উপর পূর্ণ আস্থা
রাখতে হবে। আপনার খাবার হালাল হতে হবে, আপনি যদি সুদখোর হন, মদখোর হন, পরের হক মেরে
খান, আপনি যদি কোন কবিরা গুনাহ করে থাকেন তাহলে কবিরা গুনাহসমুহ থেকে তওবা করে নিতে
হবে। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পাবন্দির সাথে আদায় করতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই আপনি আমল করার সাথে
সাথে তার রেজাল্ট নিজ চোখে দেখতে পাবেন।
এবার
আসুন আমরা মাগরিবের পর কি কি মাসনুন আমল আছে তা শিখে ফেলি।
প্রথম আমল- মাগরীবের নামাজের
পর এই দোয়াটি ৭ বার পড়লে দুনিয়া ও আখিরাতের
সব চিন্তা-ভাবনার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট হবেন।দোয়াটি হল-
হাসবিয়াল্লা-হু লা-ইলাহা ইল্লা-হু আ’লাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম। (যাদুল মাআদ) অর্থাৎ-
আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তারই উপর নির্ভর করছি, আর তিনি
হচ্ছেন মহান আরশের অধিপতি।
দ্বিতীয় আমল - যে ব্যক্তি মাগরিবের পর এই দোয়াটি ৩ বার পাঠ করবে
আল্লাহ তাআলা তাকে সর্বপ্রকার ক্ষতি থেকেই হিফাজত করেন। দোয়াটি হল -
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ
وَلاَ فِي السّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
বিছমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআ’ছমিহি শাইয়্যুন ফিল আরদ্বি
ওয়ালা ফিস্সামাই ওয়া হুয়াচ্ছামীয়ুল আলিম।(তিরমিযী, যাদুল মাআদ) অর্থাৎ আল্লাহর নামে (আমি এই
দিন বা রাত শুরু করছি)- যার নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কেউ কোন ক্ষতি করতে সক্ষম নয়।
তিনি সব শুনেন ও জানেন।
৩য় আমল - যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর এই দোয়াটি ৩ বার
পড়বে তার উপর সন্তুষ্ট হওয়া আল্লাহর উপর দায়ীত্ব হয়ে যায়। (তিরমিজি)কিয়ামতের দিন
আল্লাহ তাআলা তাকে সন্তুষ্ট করবেন।দোয়াটি হল -
رَضِيْتُ بِاللهِ رَبـاًّ، وَبِاْلإِسْلاَمِ دِيْنـًا، وَبِمُحَمَّدٍ
نَبِيـًّا
রাদ্বি-তু বিল্লা-হি রাব্বাও ওয়া বিল ইসলামি দ্বিনাও
ওয়া বি মুহাম্মাদিন নাবিইয়্যা। (তিরমিজি)। অর্থাৎ আমি সন্তুষ্ট আছি আল্লাহ্কে প্রতিপালক হিসাবে,
ইসলামকে দ্বীন হিসাবে ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লামকে নবী হিসাবে পেয়ে।
৪থ আমল - যে ব্যক্তি মাগরীবের নামাজের পর এ দোয়াটি ১বার পড়বে
সকালের আগে যদি সে মৃত্যু বরণ করে তাহলে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে। দোয়াটি
হল -
আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বি লা- ইলা-হা ইল্লা- আন্তা খালাক্বতানি
ওয়া আনা আ’বদুকা, ওয়া আনা আ’লা আ’হ্দিকা, ওয়া ওয়া’দিকা মাছত্বোয়াতাতু, আ’উযুবিকা মিন শাররি মা ছানা’তু, আবুউ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা, ওয়া আবুউ লাকা বিজাম্বি, ফাগফিরলী। ফা ইন্নাহু
লা ইয়াগফিরুজ্জুনুবা ইল্লাহ আন্তা।(যাদুল মাআদ)। অর্থাৎ হে আল্লাহ্ তুমি আমার প্রতিপালক।
তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমাকে সৃষ্টি করেছ এবং আমি তোমার বান্দা। আর আমি সাধ্যমত
তোমার অঙ্গিকার ও প্রতিশ্রুতির উপর কায়েম আছি। আমি মন্দ যা করেছি তা থেকে তোমার আশ্রয়
চাই। আমার উপর তোমার প্রদত্ত নেয়ামতের স্বীকৃতি দিচ্ছি। আর আমার গুনাহ্গুলো স্বীকার
করছি। অতএব আমাকে ক্ষমা কর। কারণ তুমি ছাড়া গুনাহ্ ক্ষমা করার আর কেউ নেই।
৫ম আমল - আবু দাউদ শরীফের ১৫৫৫ নং হাদিস
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন,
একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে আবূ উমামাহ
নামক এক আনসারী সাহাবীকে দেখতে পেয়ে তাকে বললেনঃ হে আবূ উমামাহ! কি ব্যাপার! তুমি নামাজের ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে বসে আছ কেন? তিনি
বললেন, এয়া রাসুলাল্লাহ সীমাহীন দুশ্চিন্তা ও ঋণের বোঝার কারণে মসজিদে অসময়ে বসে আছি!
তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এমন দোয়া শিখিয়ে দিবো না,
তুমি তা বললে আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দুর করবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে
দিবেন? তিনি বলেন, এয়া রাসুলাল্লাহ অবশ্যই আমাকে শিখিয়ে দিন, তখন হুজুর (দ) ফরমালেন
তুমি ফজরের নামাজের পর ও মাগরিবের নামাজের পর বলবে
আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযুবিকা
মিনাল হাম্মী, ওয়াল হুযনি, ওয়া আউযুবিকা মিনাল আজযি, ওয়াল কাছালি, ওয়া আউযুবিকা মিনাল
বুখলি, ওয়াল জুবনি, ওয়া আউযুবিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি, ওয়া ক্বাহরির রিজাল।”
অর্থ: হে আল্লাহ!
আমি তোমার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি থেকে, আরও আশ্রয় নিচ্ছি অক্ষমতা ও অলসতা
থেকে, আরও আশ্রয় নিচ্ছি কৃপণতা ও কাপুরুষতা থেকে আরো আশ্রয় নিচ্ছি ঋণের প্রবলতা ও মানুষের
চাপপ্রয়োগ থেকে।
৬ষ্ঠ আমল - যে ব্যক্তি মাগরিবের পর এই দোয়াটি ৩ বার পড়বে,
সে রাতে কোন বিষধর প্রানী তার ক্ষতি করতে পারবে না। -আহমাদ ২/২৯০, নং ৭৮৯৮
(আ‘ঊযু
বি কালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মা-তি মিন শাররি মা খালাক্ব)।
অর্থ: “আল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের ওসিলায় আমি তাঁর নিকট তাঁর
সৃষ্টির ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই।”
গুনাহ মাফ, দাস মুক্ত করার সাওয়াব লাভের জন্য ১০০ বার পড়বেন
(লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল
মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু, ওয়া হুয়া ‘আলা
কুল্লি শাই’ইন ক্বাদীর)
আবূ
দাউদ, নং ৫০৭৭; বুখারী, নং ৩২৯৩; ইবন মাজাহ, নং ৩৭৯৮; আহমাদ নং ৮৭১৯; মুসলিম, নং ২৬৯১
সকল বিপদ আপদ ও অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ৩ বার
সুরা এখলাস, ৩ বার সুরা ফালাক, ৩ বার সুরা নাস পড়বেন তিরমিযী, হাদীস ৩৫৭৫
১ বার
সুরা ওয়াকেয়া তেলাওয়াত করবেন
হজরত
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে
সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।
হজরত
ইবনে মাসউদ (রা.) তার মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সূরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। (বাইহাকি:
শুআবুল ঈমান-২৪৯৮)
দুনিয়া ও আখেরাতের প্রশান্তির জন্য ১ বার এই দোয়াটি পড়বেন
আবূ দাউদ, নং ৫০৭৪; ইবন মাজাহ্, নং ৩৮৭১
কোন মন্তব্য নেই