নবী (দ) কসম করে এ আমল বলেন। ধন সম্পদ বৃদ্ধির আমল।
নবী (দ) কসম করে এ আমল বলেন। ধন সম্পদ বৃদ্ধির
ওজিফা।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, সম্মানিত দশক
মন্ডলী আজ আমি এমন কিছু আমল ওজিফার কথা বলব যে সব আমল স্বয়ং মহানবী (দ) শিক্ষা দিয়েছেন
এবং কসম করে বলেছেন যদি কেহ এই আমলগুলি করে তার ধন সম্পদ বৃদ্ধি পেতে থাকবে, কোন রোগ
নিকটেও আসতে পারবেনা, জীবনের সব গুনাহ মাফ হবে, হাশর হবে নবী করিম (দ) এর সাথে।কবর
ঠান্ডা হবে, হাশরের মাঠে ছায়া হবে, সব ধরনের ফিতনা থেকে রক্ষা পাবে,
এত পাওয়ারফুল আমলগুলি জানার জন্য শেষ পযন্ত
ভিডিওটি দেখার অনুরোধ রইল। অর্ধেক দেখে এই ওজিফাটি বুঝা শেষ নয় তাই প্রতিটি লাইন খুব
মনযোগ দিয়ে শুনার অনুরোধ রইল।
শুধু মহিলাদের বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয় জানার
জন্য Muslim gilr media নামক আমাদের নতুন চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব
করে রাখুন, এই চ্যানেলে নারীদের সকল ইসলামীক বিষয়গুলি তুলে ধরা হয়।
এবার আসুন মুল আলোচনা শুরু করা যাক-
আনফিকু মিম্মা রাজাকনাকুম, মিন কাবল আন এয়াতিয়া
এয়াউম, লা বাই ফিহি ওয়ালা খুল্লা ওয়ালা শাফাআ।
আল্লাহর দেয়া সম্পদ আল্লাহর দ্বীনের জন্য
খরচ করা, এত বড় কাজ যে- আল্লাহর রাসুল (দ) কসম করে বলেছেন- আমি কসম করে বলছি; যে সদকা
করে তার সম্পদ কখনো কম হয়না।তার সম্পদ বাড়তে থাকে।
গোটা দুনিয়ার সত্যবাদিতাকে যদি একত্র করা
হয়, যেখানে সে সত্যবাদিতা শেষ হবে সেখান থেকে মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের
সত্যবাদিতার শুরু।
সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করলে মানুষের শারিরিক
অসুস্থতা দুর হয়, (دَاوُوا مَرضاكُمْ بِالصَّدقةِ) দাব্বু মারদাকুম
বিস সাদকা- রোগ থেকে মুক্তি চান তাহলে সদকা করুন। শুধু শারিরিক অসুস্থতা নয় কলবের রোগও
দুর হবে।
এক সাহাবী এসে বলে এয়া রাসুলাল্লাহ (দ) আমার
অন্তর খুবই কঠোর। হুজুর বললেন أطعِمِ المِسكينَ وامسَحْ رأسَ اليتيمِ (আত ঈমিল
মিসকিন, ওয়ামছাহ রাছাল এয়াতিম) মিসকিনদেরকে খাবার দাও আর এতিমদের মাথায় হাত ফিরাও,
অর্থ্যাৎ এতিমদের লালন পালনের দায়িত্ব গ্রহণ কর।
অনেক লোক আছে যারা কুকুর লালন পালন করে, অনেকে
বিড়াল লালন পারন করে, অনেকে পাক পাখালি লালন পালন করে, তাদের উচিত কোন এতিম বাচ্চা
লালন পালন করা। তাদের পড়া লেখার ব্যবস্থা করুন, তাদেরকে ভালো করে গড়ে তুলুন।
হুজুর (দ)
বলেন (আনা ওয়া কাফেলুল এয়াতিম কাহাতাইন ফিল জান্নাহ) আমি এবং এতিম কে লালন পালন কারী
জান্নাতে এমন ভাবে থাকব যেমন আমার এই দুই আঙ্গুল পাশাপাশি আছে।
যে সব বাচ্চা বালেগ হয়ে যায় তাদের এতিমি শেষ
হয়ে যায়। দেখুন এটা কত বড় কাজ এর দ্বারা আপনার শারিরিক রোগও দুর হবে, আপনার কলবের রোগও
দুর হয়ে যাবে, বরং সামাজিক রোগও দুর হয়ে যাবে।
নাসাঈ শরীফের ২৫২৫ নং হাদিস
আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন
যে, একবার এক ব্যক্তি (বনী ইসরাঈল-এর এক ব্যক্তি) শপথ করল যে, আমি অবশ্যই কিছু সাদাকা
করব এবং সাদাকা নিয়ে বের হয়ে সেগুলো এক চোরের হাতে দিয়ে দিল। প্রত্যুষেই লোকজন বলাবলি
করতে লাগল যে, একজন চোরকে সাদাকা দেওয়া হয়েছে। সাদাক দাতা বলল, ইয়া আল্লাহ্! তোমার
শোকর যে, আমি একজন চোরকে সাদাকা দিতে পেরেছি। আমি অবশ্যই আবারো সাদাকা করব এবং সাদাকা
নিয়ে বের হয়ে সেগুলো এক ব্যভিচারিণীর হাতে দিয়ে দিল। প্রত্যুষেই লোকজন বলাবলি করতে
লাগল যে, গত রাত্রে একজন ব্যভিচারিণীকে সাদাকা দেওয়া হয়েছে। সাদাকা দাতা বলল যে,
ইয়া আল্লাহ! তোমার শোকর যে, একজন ব্যভিচারিণীকে সাদাকা দিতে পেরেছি। আমি অবশ্যই আবারো
সাদাকা করব এবং সাদাকা নিয়ে বের হয়ে সেগুলো এক স্বচ্ছল ব্যক্তির হাতে দিয়ে দিল।
প্রত্যুষেই লোকজন বলাবলি করতে লাগল যে, একজন স্বচ্ছল ব্যক্তিকে সাদাকা দেওয়া হয়েছে।
সাদাকা দাতা বলল, ইয়া আল্লাহ! তোমার শোকর যে,আমি একজন চোর, একজন ব্যভিচারিণী এবং একজন স্বচ্ছল ব্যক্তিকে
সাদাকা দিতে পেরেছি। তাকে স্বপ্নে দেখানো হল যে, তোমার সাদাকা কবুল করে নেওয়া হয়েছে।
ব্যভিচারিণী! সে হয়ত প্রাপ্ত সাদাকা দ্বারা ব্যভিচার থেকে বেঁচে থাকবে, চোর সে হয়ত
প্রাপ্ত সাদাকা দ্বারা চৌর্যবৃত্তি হতে নিবৃত্ত থাকবে, আর স্বচ্ছল ব্যক্তি! সে হয়ত
উপদেশ গ্ৰহণ করবে এবং আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত সম্পত্তি থেকে দান করবে।
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় নিয়ত যদি ঠিক থাকে
তাহলে তার ফলাফলও ঠিক হয়ে যায়। এবং সদকার দ্বারা সামাজিক পরিবেশও সুন্দর হয়ে যায়। মানুষ
চুরি যেনা ও কৃপনাতা থেকে ফিরে আসে। তাহলে সদকার দ্বারা সমাজের ৩টি বড় বড় গুনাহ বড়
বড় অপরাধ দুর হয়ে যায়।
এত বড় এত দামী এই সদকা কিন্তু আমরা সদকা করে
সে মূল্যবান সদকাকে নষ্ট করে ফেলি, যেমন আপনি মসজিদে ১টি পাখা দান করলেন আর মনে মনে
ভাবছেন মসজিদ কমিটি মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিন সকলে আমাকে সেল্যুট করবে, এমন ভাবা এমন
কামনা করা অনেক বড় ভুল- আল্লাহ সুরা বাকারার ২৬৪ নং আয়াতে বলেন
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ لاَ تُبْطِلُواْ صَدَقَاتِكُم بِالْمَنِّ
وَالأذَى كَالَّذِي يُنفِقُ مَالَهُ رِئَاء النَّاسِ
হে ঈমানদারগণ!
তোমরা অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে এবং কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান খয়রাত বরবাদ করো না সে ব্যক্তির মত যে নিজের ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে [সুরা বাকারা - ২:২৬৪]
সদকা শুধু সামাজিক রোগ, মানসিক রোগ, শারিরিক রোগ দুর করেনা সব ধরনের
ফিতনাকেও দুর করে দেয়।
যেমন বুখারি ৫০০ নং হাদিস
হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা উমর (রাঃ) এর কাছে
বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেন, ফিতনা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছ? হুযাইফা (রাঃ) বললেন, যেমনি
তিনি বলেছিলেন হুবহু তেমনই আমি মনে রেখেছি। উমর (রাঃ) বললেন, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী স্মরণ রাখার ব্যপারে তুমি খুব দৃঢ়তার
পরিচয় দিচ্ছ। আমি বললাম, (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন)
মানুষ নিজের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পাড়া-প্রতিবেশীদের ব্যাপারে
যে ফেতনায় পতিত হয় নামাজ, সিয়াম, সাদাকা, (ন্যায়ের) আদেশ ও (অন্যায়ের) নিষেধ তা
দূরীভূত করে দেয়।
তাহলে সদকার আরো একটি বড় উপকারিতা হল সদকার দ্বারা মানুষ ফিতনা থেকেও
বাঁচতে পারে,
তাছাড়া নবী করিম (দ) ঘোষণা করে ( মা নাকাসা সাদাকাতুন মিন মাল) সদকা
করলে মাল ও দৌলত কম হয়না। বরং বাড়তে থাকে।
যদি মাল ও দৌলত বৃদ্ধি পায় তার মহব্বতে যদি খারাপ মৃত্যু হয়? তার
জন্যও সমাধান আছে - আল্লাহর নবী বলেন (আস সাদাকা তুদফিউ গাদাবার রাব্বি, ওয়া
তাদফাউ মিতাতাস সু) সদকার দ্বারা আল্লাহর রাগ ঠান্ডা হয়, আর আল্লাহ তাকে খারাপ
মৃত্যু থেকেও বাঁচিয়ে ফেলেন।
আবার যাদের অনেক গুনাহ আছে তাদেরও জন্যও সুখবর - আল্লাহর নবী বলেন
(আস সাদাকাতু তুদফিউল খাতিয়া, কামা ইউদফিউ মাউন নার) সদকা দ্বারা গুনাহ এমন ভাবে
দুর হয়ে যায় যেভাবে পানি দ্বারা আগুন দুর হয়ে যায়।
আবার সদকার উপকারিতা কবরেও আছে- (ইন্নাস সাদাকাতা লা তুতফিউ আন
আহলিহা হাররাল কুবুর) কবরকে কেহ যদি ঠান্ডা করতে চান তাহলে সদকা কর।
আবার কিয়ামতের দিন ছায়াও হবে সদকার কারনে- (ইন্নামা এয়াসতাজিল্লুল
মুমিন এয়াউমাল কিয়ামাতি সাদাকাতিন) সদকা কিয়মতের দিন সদকা কারীর উপর ছায়া দান
করবে। তাছাড়া যে ৭ প্রকার লোক আরশের ছায়া পাবে তাদের মধ্যে এক শ্রেণীর লোক যারা
সদকা করত।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সদকার মাধ্যমে অভাব দুর করা, দারিদ্রতা দুর
করা, ধন দৌলত বৃদ্ধি করা, সামাজিক পারিবারিক ফিতনা দুর করা, চুরি যেনা ও কৃপনা দুর
করা, কবরে হাশরে নবীর সাথে থাকা, আরশের ছায়া গ্রহণ করা, কবরকে ঠান্ডা করার তৌফিক
দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই