এসতেগফারের নতুন নিয়ম, আল্লাহর দেয়া শ্রেষ্ঠ ওজিফা
এসতেগফারের নতুন নিয়ম, আল্লাহর
দেয়া শ্রেষ্ঠ ওজিফা
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
সম্মানিত দশক শ্রোতা মন্ডলী
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি
ওয়াবারকাতুহু।
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় একটি ওজিফা
বলেছেন তা হল এসতেগফার, এই এসতেগফার এমন ওজিফা তা যদি এক জায়গায় রাখা হয় অপর দিকে দুনিয়ার
বাকী সব ওজিফা রাখা হয় তাহলে এসতেগফারের ওজন ভারি হবে।
এই এসতেগফার এর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখেরাতের সকল সমস্যা
সমাধান হয়, আথিক সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, মানসিক সমস্যা, শারিকিরিক সমস্যা, সামাজিক
সমস্যা, রাষ্ট্রিয় সমস্যা, সন্তান সন্ততির সমস্যা, সব সমস্যা সমাধানের ওয়াদা করেছেন
স্বয়ং মহান রাব্বুল আলামিন।
কিন্তু দুঃখ জনক হলেও সত্বেও বতমান যুগে মানুষ জানে না
কতবার এই এসতেগফার পড়তে হবে, কখন পড়তে হবে, কিভাবে পড়তে হবে, প্রতিদিন কতবার পড়তে হবে,
জীবনে মোট কতবার পড়তে হবে।
এই ব্যপারে খোলামেলা আলোচনা করেছেন মুফতি মাওলানা জরওয়ালি
(রহ)- উনি এসতেগফার পড়ার এমন চমৎকার চমৎকার নিয়ম বলেছেন এবং পরীক্ষিত পদ্ধতি জানিয়েছেন
যা ফলো করতে পারলে ইনশা আল্লাহ আর কোন সমস্যা বাকী থাকবে না। উনার বয়ান থেকে আজ আমি
আপনাদেরকে শুনাব কোন এসতেগফার পড়বেন, কখন এসতেগফার পড়বেন, কোন এসতেগফারটি কতবার করে
পড়বেন, কতদিনের মধ্যে পড়তে হবে ইত্যাদি বিস্তারিত।
আশা করি আজকের আলোচনাটি আপনার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে
তাই শেষ পযন্ত প্রতিটি লাইন খুব মনযোগ দিয়ে শুনার অনুরোধ রইল। প্রতিটি লাইন হিরার চেয়ে
দামি তাই টেনে টেনে শুনলে কিছুই বুজতে পারবেন না।
সুরা আনফালে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন- এসতেগফারের দ্বারা
আযাব দুর হয়ে যায়
সুরা হুদে আল্লাহ তায়ালা ফরমায়েছেন- এসতেগফারের দ্বারা
তোমার শক্তি বৃদ্ধি পাবে
সুরা নুহে আল্লাহ তায়ালা ফরমায়েছেন- এসতেগফারের দ্বারা
গুনাহ মাফ হবে, রহমতের বৃষ্টি বর্ষিত হবে, ধন দৌলত ও সন্তান দিয়ে আল্লাহ সাহায্য করবেন,
জান্নাত বা বাগ বাগিচা দান করবে, ঝর্ণাধারা জারি করে দিবেন। এরপর আল্লাহ বলেন তোমাদের
কি হয়েছে যে তোমরা এত বড় কথা বুঝতেছনা?
মুফতি সাহেব বলেন এ যুগে মানুষের গুনাহ যেহেতু বেশী তাই
এসতেগফারের পরিমাণও বাড়িয়ে দিতে হবে, প্রতিদিন কমপক্ষে ১২০০ বার এসতেগফার পড়বেন। এটা
পরীক্ষিত সংখ্যা। আর যদি আরো দ্রুত সমাধান চান তাহলে প্রতিদিন ১২ হাজার বার পড়বেন।
শুধু আসতাগফিরুল্লাহ বললেও যথেষ্ট হবে।
আতসাগফিরুল্লাহা রাব্বি বললেও হবে।
আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম বললেও হবে।
বুখারী বলছে- (আসতাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাই) এটাও পড়তে
পারেন।
অথবা (আসতাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল
কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাই)
অথবা (আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাই)
এই এসতেগফারটি যে ৩ বার পড়বে গুফিরা লাহু জুনুবুহু- তার
সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। যদিও তার গুনাহ সমুদ্রের ফেনার সমান হয়। যদিও তার
গুনাহ গাছের পাতার সম পরিমানও হয়। যদিও তার গুনাহ দুনিয়ার সকল দিন সমুহের সম পরিমাণও
হয়। যদিও তার গুনাহ দুনিয়ার জমিনের বালির দানার সমপরিমানও হয় আল্লাহ তায়ালা সব গুনাহ
মাফ করে দিবেন। যদি কেহ মাত্র ৩ বার পড়ে
(আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাই)
(আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাই)
(আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল
হাইয়্যুল কাইয়্যুম ওয়াতুবু ইলাই)
৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ১০ হাজার বার পড়বেন (আসতাগফিরুল্লাহা
রাব্বি মিন কুল্লি জানবিউ ওয়াতুবু ইলাই)
অথবা এটা পড়বেন
(আতগাফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল হাইয়্যুল কাইয়্যুম
ওয়াতুবু ইলাই)
৫-১০ দিনের মধ্যে ১০ হাজার বার
৩৩ দিনের মধ্যে ৭৫ হাজার বার
আর ৪০ দিনের মধ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার বার এসতেগফার পড়তে
হবে।
যদি ৪০ দিনের মধ্যে এই সংখ্যা পুরা করতে পারেন তারপর যে
দোয়া করবেন তা কবুল হবে, এমন কোন জায়েজ দোয়া নাই যা কবুল হবেনা। রিজিকের জন্য দোয়া
করবেন, ধন দৌলতের জন্য দোয়া করবেন, অভাব দুর করার দোয়া করবেন, সন্তান সন্ততির জন্য
দোয়া করবেন, ব্যবসা বানিজ্যে বরকতের দোয়া করবেন।
সংখ্যা পুরানোর জন্য সব সময় পড়বেন (আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জানবিউ ওয়াতুবু
ইলাই)
অথবা সায়্যেদুল এসতেগফারও পড়তে পারেন-
আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বী, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খালাক্বতানী,
ওয়া আনা ‘আবদুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া আ‘দিকা মাসতাত্বা‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিন শার্রি মা ছানা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ বিযাম্বী, ফাগফিরলী
ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আনতা।
অথবা শুধু এভাবে পড়বেন (আসতাগফিরুল্লাহা
রাব্বি-
আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বি-
আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বি)
এসতেগফার সকল আশা আরজু পুরণের জন্য সবশ্রেষ্ঠ ওজিফা। শুধু
জবানে পড়লেন কিন্তু দিল তা থেকে গাফেল থাকলে তাতে কাজ হবেনা, মুখে পড়তে হবে অন্তরে
গুনাহ মাফের প্রবল ইচ্ছা থাকতে হবে।
এসতেগফারের দ্বারা প্রথম ফায়দা হল সব ধরনের গুনাহ মাফ
হবে। সে জন্য খুব বেশী বেশী পড়তে হবে, প্রত্যেক নামাজের পর কমপক্ষে ১০০ বার এসতেগফার
করবেন।
দ্বিতীয় ফায়দা হল দুনিয়ার আবাদের জন্য যে বৃষ্টি আসে সে
বৃষ্টিও এসতেগফারের বরকতে হয়।
সন্তান লাভ হবে, মাল দৌলত বৃদ্ধি পাবে।ঝর্নাধারা প্রবাহিত
হয়ে যাবে।
আল্লাহ তায়ালা সুরা নুহে বলেন-
فَقُلْتُ اسْتَغْفِرُوا رَبَّكُمْ إِنَّهُ كَانَ غَفَّارًا
অতঃপর বলেছিঃ তোমরা
তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। [সুরা নূহ - ৭১:১০]
يُرْسِلِ السَّمَاء عَلَيْكُم مِّدْرَارًا
তিনি তোমাদের উপর
অজস্র বৃষ্টিধারা ছেড়ে দিবেন, [সুরা নূহ - ৭১:১১]
وَيُمْدِدْكُمْ بِأَمْوَالٍ وَبَنِينَ وَيَجْعَل لَّكُمْ جَنَّاتٍ وَيَجْعَل لَّكُمْ أَنْهَارًا
তোমাদের ধন-সম্পদ ও
সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিবেন, তোমাদের জন্যে উদ্যান স্থাপন করবেন এবং তোমাদের
জন্যে নদীনালা প্রবাহিত করবেন। [সুরা নূহ - ৭১:১২]
مَّا لَكُمْ لَا تَرْجُونَ لِلَّهِ وَقَارًا
তোমাদের কি হল যে,
তোমরা আল্লাহ তা'আলার শ্রেষ্টত্ব আশা করছ না। [সুরা নূহ - ৭১:১৩]
কোন মন্তব্য নেই