পুরুষত্ব শক্তি বাড়ানোর সেরা নুসখা। আল্লাহ তায়ালা দাউদ (আ) কে বলেছেন। তাঁর ৯০০ স্ত্রী ছিল।

 

পুরুষত্ব শক্তি বাড়ানোর সেরা নুসখা। আল্লাহ তায়ালা দাউদ (আ) কে বলেছেন। তাঁর ৯০০ স্ত্রী ছিল।



কেহ কেহ বলেন হযরত দাউদের ৯০০ স্ত্রী ছিল আর কেহ কেহ বলেন

হযরত সুলেমান (আ) এর ৯০০ স্ত্রী ছিল।

আজ  আলোচনা করব পুরুষত্ব শক্তি বৃদ্ধির উপায় কি? হযরত সুলাইমান বা হযরত দাউদ (আ) এর শক্তির উৎস কি? আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে কি খেতে বলেছেন? তাদের লাইফ স্টাইল কেমনি ছিল বিস্তারিত-

 

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন :

এবং স্মরণ কর, আমার শক্তিশালী বান্দা দাউদের কথা; সে ছিল অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। আমি নিয়োজিত করেছিলাম পর্বতমালাকে যেন এরা সকাল-সন্ধ্যায় তার সাথে আমার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে, এবং সমবেত বিহংগকুলকেও; সকলেই ছিল তার অনুগত। আমি তার রাজ্যকে সুদৃঢ় করেছিলাম এবং তাকে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও ফয়সালাকারী

 

ইব্‌ন আব্বাস (রা) ও মুজাহিদ (র) বলেন, আয়াতে উল্লেখিত শক্তি  অর্থ ইবাদত করার শক্তি। অর্থাৎ তিনি ছিলেন। ইবাদত ও অন্যান্য সৎকাজে অত্যন্ত শক্তিশালী। কাতাদা (র) বলেন, তাকে আল্লাহ ইবাদত করতে দিয়েছিলেন শক্তি এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে দিয়েছিলেন গভীর জ্ঞান। কাতাদা (র) আরও বলেন, আমাদের নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, দাউদ (আ) রাতের বেলা দাঁড়িয়ে ইবাদত করতেন এবং বছরের অর্ধেক সময় রোযা রাখতেন। বুখারী ও মুসলিমে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূল (সা) বলেছেন : আল্লাহর নিকট ঐ রূপ নামায সবচেয়ে প্রিয় যেরূপ নামায হযরত দাউদ পড়তেন এবং আল্লাহর নিকট ঐ রূপ রোযা সবচেয়ে পছন্দনীয় যেরূপ রোযা, হযরত দাউদ (আ) রাখতেন। তিনি রাতের প্রথম অর্ধেক ঘুমাতেন, তারপরে এক তৃতীয়াংশ নামাযে কাটাতেন এবং শেষে এক ষষ্ঠাংশ পুনরায় ঘুমিয়ে কাটাতেন। তিনি এক দিন রোযা রাখতেন এবং একদিন রোযা থাকতেন না। আর শত্রুর মুকাবিলা হলে কখনও ভয়ে পালাতেন না। 

 

হযরত দাউদ (আ) এর স্ত্রীর সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন রেওয়ায়েত আছে কোন কোন বননায় ৯০০ জন স্ত্রীর কথা উল্লেখ আছে, ওলামায়ে কেরাম বলেন হযরত দাউদ (আ) শারিরিক শক্তির জন্য আল্লাহর কাছে আরজ করলেন আল্লাহ তায়ালা হযরত দাউদ (আ) কে বেশী বেশী ডিম খাওয়ার পরামশ দেন।

 

তবে স্ত্রী বেশী হওয়াকে ইদানিং দোষের মনে করা হয়, তবে হযরত দাউদ (আ) এর লাইফ স্টাইল হযরত সুলাইমান (আ) এর লাইফ স্টাইল যদি আমরা ফলো করি, আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (দ) এর লাইফ স্টাইল যদি আমরা ফলো করে তাহলে ইনশা আল্লাহ আমাদের শারিরিক শক্তি বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে।

 

আফরার মওলা উমর (রা) থেকে বর্ণনা করেন, ইয়াহুদীরা রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর একাধিক সহধর্মিণী দেখে লোকজনকে বলল, তোমরা এ লোকটির প্রতি লক্ষ্য কর, সে আহারে পরিতৃপ্ত হয় না; আল্লাহর কসম সে নারী ছাড়া কিছু বুঝে না। সমাজে তাঁর একাধিক সহধর্মিণী থাকায় তারা তার প্রতি বিদ্বেষ প্ৰকাশ করে এবং তার প্রতি দোষারোপ করে। তাদের মন্তব্য হল, যদি ইনি নবী হতেন, তাহলে নারীদের প্রতি এতো লিন্সা থাকতো না। এ কুৎসা রটনায় সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে হুয়াই ইব্‌ন আখতাব। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে মিথ্যাবাদী প্ৰতিপন্ন করেন - আল্লাহ সুরা নিসার ৫৪ নং আয়াতে বলেন (তাহলে ইবরাহীমের বংশধরকেও তো আমি কিতাবও হিকমত প্রদান করেছিলাম এবং তাদেররকে বিশাল রাজ্য দান করেছিলাম। (৪ নিসা : ৫৪) { ইবরাহীমের বংশধর বলতে এখানে হযরত সুলায়মান (আ)-কে বুঝানো হয়েছে। তার ছিলেন এক হাজার স্ত্রী, তাদের মধ্যে সাতশ স্বাধীন এবং তিন শ বঁদী। আর হযরত দাউদ (আ)-এর ছিলেন একশ জন স্ত্রী, তাদের মধ্যে একজন ছিলেন হযরত সুলায়মান (আ)-এর মা-যিনি ইতিপূর্বে উরিয়ার স্ত্রী ছিলেন। পরে তাকে বিবাহ করেছিলেন। দেখা যাচ্ছে হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর স্ত্রী সংখ্যার তুলনায় তাদের সংখ্যা অনেকগুণ বেশী।

হযরত দাউদ ও সোলাইমান (আ) এর এবাদত ও লাইফ স্টাইল সম্পর্কে হুজুর (দ) বলেছেন, সবচেয়ে উত্তম রোযা হল দাউদ (আ)-এর রোযা। তিনি সত্তরটি সুরে যাবুর তিলাওয়াত করতেন। এগুলো তার নিজেরই উদ্ভাবিত স্বর। রাত্রে যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন নিজেও কাঁদতেন এবং তাতে অন্য সবকিছুও কাঁদতো। তার মধুর সূরে সকল দুশ্চিন্তা ও ক্লান্তি দূর হয়ে যেত। তুমি আরও শুনতে চাইলে আমি তাঁর পুত্র হযরত সুলায়মান (আ)-এর রোযা সম্পর্কে জানাতে পারি। কেননা, তিনি প্রতি মাসের প্রথম তিন দিন, মাঝের তিন দিন ও শেষের তিন দিন রোযা রাখতেন। এভাবে তার মাস শুরু হত রোযার মাধ্যমে। মধ্য-মাস অতিবাহিত হত রোযা রাখা অবস্থায় এবং মাস শেষ হত রোযা পালনের মাধ্যমে। তুমি যদি আরও শুনতে চাও তবে আমি তোমাকে মহিয়ষী কুমারী মাতা মরিয়ম (আ)-এর পুত্র হযরত ঈসা (আ)-এর রোযা সম্পর্কেও জানাতে পারি। তিনি সারা বছর ধরে রোযা রাখতেন, যবের ছাতু খেতেন, পশমী কাপড় পরতেন, যা পেতেন তাই খেতেন, যা পেতেন না, তা চাইতেন না। তার কোন পুত্র ছিল না যে, মারা যাবার আশংকা থাকবে কিংবা কোন ঘরবাড়ি ছিল না যে, নষ্ট হওয়ার আশংকা থাকবে। যেখানেই রাত হত সেখানেই নামাযে দাঁড়িয়ে যেতেন এবং ভোর পর্যন্ত নামাযে রত থাকতেন। তিনি একজন ভাল তীরন্দায ছিলেন। কোন শিকারকে লক্ষ্য করে তীর ছুড়লে কখনও তা ব্যর্থ হত না। বনী ইসরাঈলের কোন সমাবেশ অতিক্রম করার সময় তাদের অভিযোগ শুনতেন ও প্রয়োজন পূরণ করে দিতেন। যদি তুমি আগ্রহী হও তবে আমি তোমাকে হযরত ঈসা (আ)-এর মা মারিয়াম বিনতে ইমরানের রোযা সম্পর্কেও জানাতে পারি। কেননা তিনি একদিন রোযা রাখতেন এবং দুই দিন বাদ দিতেন। তুমি যদি জানতে চাও তবে আমি তোমাকে উম্মী নবী হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর রোযা সম্পর্কেও জানাতে পারি। তিনি প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখতেন এবং বলতেন, এটাই গোটা বছর রোযা রাখার শামিল। ইমাম আহমদ. আব্বাস (রা) থেকে হযরত দাউদ (আ)-এর রোযার বৃত্তান্ত মারফুরূপে বর্ণনা করেছেন।

 

হযরত দাউদ (আ)-কে আল্লাহ এমন দরাজ কণ্ঠ ও সূর মাধুর্য দান করেছিলেন, যা পৃথিবীর অন্য কাউকে দান করেননি। তিনি যখন তার প্রতি অবতীর্ণ যাবুর কিতাব সুর দিয়ে পাঠ করতেন তখন আকাশে উডউীয়মান বিহংগকুল সুরের মুর্ছনায় থমকে দাড়াত এবং দাউদের সুরের সাথে সুর মিলিয়ে আবৃত্তি করত ও তার সাথে তাসবীহ পাঠ করত। এভাবেই তিনি সকাল-সন্ধ্যায় যখন তাসবীহ পাঠ করতেন তখন পাহাড় পর্বত ও তার সাথে তাসবীহ পাঠে শরীক হত।

 

আওযাঈ বলেছেন, হযরত দাউদ (আ)-কে এমন সুমধুর কণ্ঠস্বর দান করা হয়েছিল। যেমনটি আর কাউকে দান করা হয়নি। তিনি যখন আল্লাহর কিতাব পাঠ করতেন তখন আকাশের পাখী ও বনের পশু তার চার পাশে জড়ো হয়ে যেত। এমনকি প্রচণ্ড ক্ষুধায় ও তীব্র পিপাসায় তারা সে স্থানে মারা যেত। কিন্তু নড়াচড়া করত না। শুধু এরাই নয়, নদীর পানির প্রবাহ পর্যন্ত থেমে যেত। ওহাব ইব্‌ন মুনাব্বিহ বলেছেন, দাউদ (আঃ)-এর কণ্ঠস্বর যে-ই শুনত লাফিয়ে উঠত এবং কণ্ঠের তালে তালে নাচতে শুরু করত। তিনি যাবুর এমন অভূতপূর্ব কণ্ঠে পাঠ করতেন যা কোন দিন কেউ শুনেনি। সে সুর শুনে জিন, ইনসান, পক্ষী ও জীব-জন্তু আপন -আপন স্থানে দাঁড়িয়ে যেত। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে তাদের কেউ কেউ মারাও যেত।

 

হযরত দাউদ (আ)-এর ইনতিকাল সম্পর্কে ইমাম আহমদ তাঁর মুসনাদ গ্রন্থে আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : দাউদ (আ) ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন। যখন তিনি বাইরে যেতেন তখন ঘরের দরজা বন্ধ করে যেতেন, যাতে তিনি ফিরে আসা পর্যন্ত অন্য কেউ তার ঘরে প্রবেশ করতে না পারে। এভাবে একদিন তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। এ সময় তার স্ত্রী দেখলেন যে, একজন পুরুষ লোক ঘরের মধ্যখানে দাড়িয়ে আছেন। তিনি প্রহরীকে জিজ্ঞেস করলেন : এ লোকটি কে? তালাবদ্ধ ঘরে কিভাবে প্রবেশ করল? কসম আল্লাহর! নবী দাউদ (আ)-এর কাছে আমরা লজ্জায় পড়ব! এমনি সময় হযরত দাউদ (আ) ফিরে এলেন এবং দেখলেন ঘরের মধ্যখানে একজন পুরুষ লোক দাঁড়িয়ে আছে। দাউদ (আ) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কে? লোকটি বলল, আমি সেইজন, যে কোন রাজা বাদশাহকে তোয়াক্কা করে না এবং কোন আড়ালই তাকে আটকাতে পারে না। দাউদ (আঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! তা হলে আপনি নিশ্চয়ই মালাকুল মওত? আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্যে আপনাকে স্বাগতম! এর অল্পক্ষণ পরেই তার রূহ কবয করা হল।

 

কারো কারো বর্ণনায় আছে যে, একদা হযরত দাউদ (আ) মিহরাব থেকে নীচে অবতরণ করছিলেন, এমন সময় মৃত্যুর ফিরিশতা তাঁর সম্মুখে এসে উপস্থিত হন। হযরত দাউদ (আঃ) তাকে বললেন, আমাকে নীচে নামতে বা উপরে উঠতে দিন! তখন ফিরিশতা বললেন, হে আল্লাহর নবী! আপনার জন্যে নির্ধারিত বছর, মাস, দিন ও রিযিক শেষ হয়ে গিয়েছে। এ কথা শুনেই দাউদ (আঃ) সেখানেই একটি সিঁড়ির উপরে সিজদায় লুটিয়ে পড়েন এবং সিজদারত অবস্থায়ই তাঁর রূহ কবয করা হয়।

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.