বরকতের আমল। সন্তান লাভের ওজিফা। দৃষ্টিশক্তির দোয়া। ঘরে সুখ শান্তির আমল

 

বরকতের আমল। সন্তান লাভের ওজিফা। দৃষ্টিশক্তির দোয়া। ঘরে সুখ শান্তির আমল



প্রিয় বন্ধুরা আজকে মক্কী হেজাজী সাহেব এর বয়ান থেকে কয়েকটি দোয়া ও ওজিফা শেয়ার করব

আপনারা জানেন মাওলানা মক্কী হেজাজী মক্কার মসজিদে হারামে বিগত ৪০ বছর যাবৎ কুরআন হাদিসের দরস দিয়ে আসছেন, তাতে অনেকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন আর তিনি তার জবাব দেন,

আজ সে সব প্রশ্ন উত্তর পব থেকে কয়েকটি বিষয় তুলে ধরার প্রয়াস পাব।

যেমন - মক্কা মদীনার কবুতরকে খাবার দিলে সন্তান জন্ম হয় এ ব্যপারে মক্কী সাহেব খোলাখুলি আলোচনা করেছেন সে বিষয়টি আলোচনা করব

যাদের চোখের সমস্যা তাদের জন্য ১টি কোরআনী দোয়া দিয়েছেন তাও আলোচনা করব

ঘরে সব সময় ঝগড়া বিবাদ অশান্তি লেগে থাকে তা দুর করার ১টি তসবিহ দিয়েছেন তাও আলোচনা করব।

সবশেষে জীবনের সবক্ষেত্রে বরকত লাভের ওজিফা আলোচনা করব

আজকের আলোচনাটি খুবই প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূণ হবে তাই শেষ পযন্ত প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।

বিশেষ করে যারা বাচ্চার জন্য বিভিন্ন তদবির করে তাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে ভুল ধরিয়ে দিয়েছেন যা শুধু বয়স্করা শুনতে পারবেন।

আসুন মোট ৪টি দোয়া আমল ও ওজিফা ধারাবাহিক জেনে নিই।

প্রথমত- চোখের সমস্যা দুর করার দোয়া

যাদের চোখের সমস্যা, দৃষ্টিশক্তি দিন দিন দুবল হয়ে যাচ্ছে, চোখে ব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পরে এ ধরনের যত সমস্যা আছে তার জন্য প্রথমত চিকিৎসা করাবেন পাশাপাশি একটি কোরআনী আমল আছে তা করবেন। তা হল   সুরা ক্বফ এর ২২নং আয়াতের শেষাংশ বেশ উপকারী।

আয়াতের অংশটি হচ্ছে-

فَكَشَفْنَا عَنْكَ غِطَاءَكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيْدٌ

উচ্চারণঃ ফা কাশাফনা আনকা গিত্বা আকা ফাবাসারুকাল ইয়াওমা হাদীদ।

অনুবাদঃ "আমি তোমার থেকে পর্দা সরিয়ে দিয়েছি, তাই আজ তোমার দৃষ্টি হয়েছে প্রখর।" (সূরা ক্বফ ২২)

কিভাবে এই আয়াত দিয়ে রুকইয়া করবেন?

প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ শেষ করার পর সূরা ফাতিহা এবং এই আয়াতটি ১১ বার পড়ুন, এরপর আঙ্গুলের মাথায় ফু দিয়ে চোখ মুছে নিন। এভাবে প্রতি নামাজের পরেই করুন। ইনশা আল্লাহ

 আপনার চোখের সকল সমস্যা আল্লাহ তায়ালা দুর করে দিবেন।

 

দ্বিতীয় ওজিফা- ঘরে ঝগড়া মিটিয়ে মিল মুহব্বতের ওজিফা

যদি ঘরে একে অপরের সাথে মনোমালিন্য হয়, ঝগড়া বিবাদ হয়,  সে লড়াই ঝগড়া দুর করে একে অপরের সাথে মিল মহব্বত পয়দা করার জন্য একটি মুজাররব ওজিফা হল

 (এয়া লাতিফু এয়া ওদুদ আল্লিফ বায়না কুলুবিনা) এই তসবিহটি বেশী বেশী পড়বেন সব সময় পড়বেন ইনশা আল্লাহ সব ঝগড়া বিবাদ দুরে হয়ে মিল মুহব্বত ভালবাসা ও সুখ শান্তিতে ঘর ভরে যাবে।

তৃতীয়ত বাচ্চা হওয়ার জন্য ওজিফা

এক লোক প্রশ্ন করেছেন- মক্কা মদীনার কবুতরকে খাবার ছিটানোর পর সেখান থেকে কিছু খাবার কুড়িয়ে নিয়ে সে খাবার খেলে সন্তান হয় এটা কি ঠিক?

এই প্রশ্নের জবাবে মক্কী হেজাজী ধিক্কার দিয়ে বলেন- কবুতরের দানা থেকে যদি সন্তান হয় তাহলে স্বামীর দরকার কি? সেখান থেকে একটা কবুতর ধরে নিয়ে গেলে আরো ভালো হবে।  ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন

মক্কী সাহেব রাগান্বিত হলে বলেন এমন প্রশ্নের জবাবে আমি আর কি বলতে পারি?

লা হাউলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।

আপনারা শুনে হয়রান হবেন, আমি আমার পাকিস্তানের কথা বলছি, আমি কোন ইউরোপ দেশের কথা বলছিনা, পাকিস্তানের এক ভন্ডপীর আছে, তার কাছে অনেকে আসে সন্তানের জন্য, আর সে পুরুষের পুরুষাঙ্গ গাছ দিয়ে তৈরী করে রেখেছে, কেহ বাচ্চা না হওয়ার অভিযোগ করলে তার কাছে সে কাঠের পুরুষাঙ্গ বিক্রী করে, নাউজুবিল্লাহ।

তেমনি ইন্ডিয়ার মধ্যে এক ল্যাংটা পীর তার কাছেও অনেকে যেত সন্তানের জন্য, সে তাদেরকে নিজের বাল ছিড়ে দিয়ে দেয়, তাকে একজন শাহ সাহেব প্রশ্ন করল আপনি নিজের নোংড়া বাল ছিড়ে দেন এর দ্বারা বাচ্চা পয়দা হবে? সে জবাব দেয়, ওরা আল্লাহকে ছেড়ে সন্তানের জন্য আমার কাছে আসে তাই আমার কাছে যা আছে আমি তাদেরকে তাই দিই,  যে লোক সন্তানের জন্য আল্লাহর কাছে না চেয়ে বান্দার কাছে চায় তার জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু আর হতে পারেনা।

অর্থ্যাৎ সে লেংটা ফকির যদিও বেশরা কাজ করছে কিন্তু সে কথাটা মূল্যবান বলেছে।

সুতরাং যারা সন্তানের জন্য কবুতরের উচ্ছিষ্ট তালাশ করে, লেংটা বাবার বাল তালাশ করে, লাঠি বাবার লাঠি তালাশ করে তাদের জন্য লানত ছাড়া আর কিছুই নাই।

 

মক্কী হেজাজী বলেন যদি কারো বাচ্চা না হয় তাহলে প্রথমে চিকিৎসা করাও টেস্ট করে দেখ সমস্যা কার স্ত্রীর নাকি স্বামীর? যথাযথ আইডেন্টিফাই করে তারপর চিকিৎসা করাও তার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাক। ১টি দোয়া বেশী বেশী পড়বেন তা হল- (রাব্বি লা তাজারনি ফারদান ওয়া আনতা খাইরুল ওয়ারিসিন) এই দোয়াটি বেশী বেশী পড়বেন।

প্রথমে চিকিৎসা করতে হবে, পাশাপাশি ওজিফা, সবব এখতেয়ার করতে হবে তারপর দোয়া ওজিফা কাজ হবে।

চতুথ ওজিফা হল- সারা জীবন বরকতের ওজিফা

যারা ডিপ্রেশনের রোগী তাদেরকে দেখবেন তারা রাতে জেগে থাকে সকাল বেলা ঘুমিয়ে পড়ে। ৮০% লোক এমন আছেন যাদের রাতে ঘুম হয়না তাদের ডিপ্রেশনের কারনে ঘুম হয়না।

আর রাত হল ঘুমানোর জন্য কিন্তু তারা রাতে জেগে থাকে দিনে ঘুমিয়ে থাকে। অথচ হুযুর (দ) দোয়া করেছেন সকালের কাজের জন্য (আল্লাহুম্মা বারিক লি উম্মতি ফি বুকুরিহা) হে আল্লাহ আমার উম্মতের সকালের কাজে বরকত দান কর। সে জন্য যারা সকালে জাগে আল্লাহ তাদের ধন দৌলত ও রিযিকে বরকত দান করেন।

পক্ষান্তরে যারা সকালে ঘুমিয়ে থাকে তাদের অভাব নেমে আসে।

ইবরাহিম বিন আদহাম (র) এর সাথে এক লোকের মোনাজেরা হল লোকটা বরকত বলতে কিছু আছে তা মানতে নারাজ।

ইবরাহিম বিন আদহাম (রহ) তাকে বুঝালেন- তাকে বললেন তুমি কি ছাগল আর কুকুর দেখেছ? সে বলল দেখেছি।

ইবরাহিম বললেন এবার বল কুকুর বেশী হয় নাকি ছাগল বেশী হয়? সে বলল ছাগল বেশী হয়।

তারপর তাকে বললেন ছাগল বাচ্চা বেশী দেয় নাকি কুকুর বেশী দেয়? সে বলল কুকুর বাচ্চা বেশী দেয়।

তারপর বললেন কুকুর বেশী জবেহ হয় নাকি ছাগল বেশী জবেহ হয়? সে বলল ছাগল।

এবার ইবরাহিম বিন আদহাম বললেন ছাগল বাচ্চাও কম দেয় জবেহও বেশী হয় কিন্তু তবুও ছাগল বেশী দেখা যায় এর কারন হল বরকত।

আর ছাগলতে বরকত কেন হল জান? যখন রাত হয় তখন রাতে কুকুর জেগে থাকে আর চিৎকার করে, আর ছাগল রাতে শুয়ে যায়।আর ভোর যখন হয় তখন রহমত নাজিল হয় তখন কুকুর শুয়ে যায় আর ছাগল জেগে যায়। তাই ছাগলে বরকত কুকুরে বরকত নাই।

হযরত ওসমান (রা) হতে বর্ণিত হুযুর (দ) এরশাদ করেন যে সকালে দেরী পযন্ত ঘুমায় তার রিযিকে বরকত ছিনিয়ে নেয়া হয়।

যারা রাতে জাগে আর সকালে ঘুমাতে থাকেেআল্লাহ তাদের রিযিকের বরকত উঠিয়ে নেন।

অপর হাদীসে আছে হযরত আয়শা (রা) হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (দ) এরশাদ করেন যে বান্দা রিযিকের তালাশে ভোরে কাজে বের হয় আল্লাহ তায়ালা তাকে সফলতা ও বরকত দান করেন।

 

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.