সম্পদ বৃদ্ধির বরকত লাভের আমল।

 


আজকের আলোচনায় আমি ৫টি এমন নববী আমল বা সুন্নতের কথা বলল যে আমলগুলি প্রতিদিন সকালে করলে আপনার জীবন বরকতময় হবে, সুন্দর হবে এবং টেনশনমুক্ত হবে। আপনার নাম ধনীদের লিষ্টে এসে যাবে এতই সম্পদ হবে লোক রহস্য জানতে আপনার
কাছে মিনতি করবে

এই আমলগুলি অতি সহজ কিন্তু এর ফজিলত না জানার কারনে অধিকাংশ ভাই বোন এটাকে গুরুত্ব দেয়না, কিন্তু কোন কষ্ট ছাড়া এই ছোট ছোট ৫টি আমল যদি আপনি করতে পারেন তাহলে ইনশা আল্লাহ আপনার সকল অভাব অনটন দারিদ্রতা আথিক সমস্যা চাকরীর সমস্যা রুজি রোজগারের সমস্যা টাকা পয়সার সমস্যা আল্লাহ তায়ালা এমন ভাবে দুর করে দিবেন আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

চলুন আর দেরী না করে এমন মূল্যবান ৫টি আমল ঝটফট জেনে ফেলি।

১) দাওয়ামে তাহারাত- সব সময় অজু সহকারে থাকা হাদীসে মোবারাকা শুনুন- কিছু সাহাবী নবী (আঃ) এর কাছে দারিদ্রতার অভিযোগ করল। নবী
(আঃ) তাদেরকে ফরমালেন তোমরা অজু সহকারে থাকার চেষ্টা কর (ইউআচ্ছা আলাইকার রিযিক) আল্লাহ তোমার রিযিককে ফরাগত করে দিবে। এটি খুবই সহজ একটি আমল যখনই অজু ভঙ্গ হয় অজু করে নিবেন।

আলহামদুলিল্লাহ যে সব লোকের সব সময় অজু সহকারে থাকার অভ্যাস আছে তাদের গোটা জীবনই অজু সহকারে কাটে। মনে রাখবেন অজু রিযিকে যেমন বরকত দানের মাধ্যম তেমনি এ অজু দ্বারা শয়তান থেকেও বেঁচে থাকা যায়, নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন অজু হল মুমিনের হাতিয়ার।

 
আপনি যদি সব সময় অজুর সাথে থাকার চেষ্টা করেন এই একটি আমলের ফলে দেখবেন আপনার প্রতি শয়তানের ওয়াসওয়াসা কমে যাবে, শয়তানের আক্রমন থেকে আপনি বেঁচে থাকতে পারবেন। অপর একটি বরকত হয় (কামা তাঈশুন তামুতুন) তোমরা যে অবস্থায় জীবন যাপন করবে সে অবস্থাতেই তোমাদের মৃত্যু আসবে, আর যে সারা জীবন অজু সহকারে থাকার চেষ্টা করে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে নিজের রহমত দ্বারা অজুর সাথে মৃত্যুর তৌফিক দান করবনে।

আমাদের প্রিয় নবীও সদা সর্বদা অজু সহকারে পাক পবিত্র অবস্থায় থাকা পছন্দ করতেন,  একদিন হুযুর (দঃ) হাজত সাড়ার পর সাথে সাথেই মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নিলেন, সাহাবায়ে কেরাম প্রশ্ন করল এয়া রাসুলাল্লাহ কিছুদুরে কুয়া রয়েছে আপনি সে
কুয়াতে গিয়ে পানি দ্বারা অজু করতে পারতেন এখানে তায়াম্মুম করার কারন কি? তখন হুযুর (দঃ) এরশাদ করলেন আমি কুয়া পর্যন্ত পৌঁছে অজু করব আর
পথিমধ্যেই যদি আমার মৃত্যু এসে যায়, তাই আমি তায়াম্মুম করে নিলাম যাতে পবিত্র অবস্থায় আমার মৃত্যু আসে। এটা মুলত প্রিয় নবীজি আমাদেরকে সদা অজু
সহকারে থাকার জন্য শিক্ষা দিলেন।

এছাড়া অজু সহকারো থাকার আরো অনেক উপকারীতা রযেছে যেমন-

#মহিলারা অজু সহকারে রান্না করলে খাবারে বরকত হয়
#যে সব মহিলা সন্তানকে অজু সহকারে দুধ পান করান তাদের সন্তান নেককার পিতা
মাতার বাধ্য ও মেধাবী হন
#অজুর দ্বারা শারিরিক ফায়দাও আছে, যারা সব সময় অজু সহকারে থাকার চেষ্টা করেন তাদের চর্ম রোগ, ব্লাডপ্রেসার, রোগ হয় না #যারা সদা অজু সহকারে থাকেন তাদের চেহেরা সবসময় উজ্জল থাকে।
#তাছাড়া অজু দ্বারা মানসিক রোগও দুর হয় যেমন রাগ একটি মানসিক রোগ যদি কারো বেশী বেশী রাগ আসে তাদের উচিত বেশী বেশী অজু করা। রাগ দমনের জন্য আমাদের প্রিয় নবীর শিক্ষা হল দাড়ানো থাকলে বসে যাও, বসা থাকলে শুয়ে
যাও তাতেও যদি রাগ না কমে তাহলে অজু করে নাও।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সদা অজু সহকারে থাকার তৌপিক দান করুন।
প্রিয় ভাই ও বন্ধুরা আমরা সকলেই চাই আমাদের জীবনটা সুন্দর হউক, বরকত ময় হউক, চিন্তামুক্ত হউক। আর এর জন্য আমরা কত কষ্টইনা করি কিন্তু আমরা জানিনা সকালের সে সব আমলের কথা যে সব আমল করলে আমাদের সারা দিন বরকতময় হবে, সকল কাজ সফলতার সাথে হবে। নিঃসন্দেহে আমাদের জীবনে বরকত দানকারী একমাত্র আল্লাহ, আর আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকত লাভ করার জন্য আমাদের ‍দিনের শুরুটা হতে হবে আল্লাহর পছন্দনীয় আমল দিয়ে প্রিয় নবীর সুন্নত দিয়ে। আর দিন শুরু করার জন্য আমাদের প্রিয় নবীর সুন্নত তরিকা হল ঘুম থেকে উঠার সাথে সাথে দুই হাত দিয়ে   চোখ মলবেন, যাতে নিদ্রার ভাব চোখ থেকে দুর হয়ে যায়। এটা আমাদের প্রিয় নবীর সুন্নত তরিকা ছিল। আর চোখ কিভাবে মলবেন? যেভাবে বাচ্চারা মলে সেভাবে মলবেন। হাতের আঙ্গুলের সামনের অগ্রভাগ দিয়ে মলবেন না কারন রাতে ঘুমের মধ্যে হতে পারে আপনার হাত নাপাক জায়গায় লেগেছে, আর সে হাত যদি সকালে উঠে আপনি নিজের চোখ মলার কাজে ব্যবহার করেন তাহলে সে নাপাক বা জিবানু চোখে প্রবেশ করবে, যা ক্ষতির কারন হবে। সে জন্য যেভাবে ছোট বাচ্চারা হাতের পিঠের দিক দিয়ে চোখ মলে সেভাবে চোখ মলতে হবে। এর দ্বারা চোখের এক্সেসাইজ হয়ে যায় এবং এর দ্বারা মানুষকে ফ্রেস হতে সাহায্য করে। এরপর ২য় আমল হল- সকালে বিছানা থেকে উঠার আগে ১টি দোয়া পড়বেন (আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহ এয়ানা, বাদা মা আমাতেনা ওয়া ইলাইহিন নুশুর) অর্থ্যাৎ সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদেরকে ঘুমের পর বা মৃত্যুর পর পুনরায় জাগ্রত বা জিন্দা করেছেন আর তার দিকেই আমাদের ফিরে যেতে হবে। দেখুন এই দোয়াতে ঘুম থেকে উঠতেই আমাদের মৃত্যুর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হচ্ছে। আল্লাহর শোকর এ কারনে যে মৃত্যুর মত ঘুম থেকে আবার জাগতে পেরেছি কিন্তু একদিন আমাদেরকে অবশ্যই মৃত্যু বরণ করতে হবে, আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে। এই কথা একজন মুমিনের জন্য খুবই গুরুত্বপূণ যে দুনিয়া থেকে আখেরাতের গুরুত্ব অনেক বেশী।  এই দুনিয়া হল ক্ষনস্থায়ী পক্ষান্তরে আখেরাত হল আমাদের আসল ঠিকানা। কিন্তু শয়তান আমাদেরকে এই হাকিকতকে ভুলিয়ে রাখে। এই শয়তান প্রতিদিন সকালে উঠেই এই দুনিয়াকে অনেক বড় করে শো করে। ফলে সকালে উঠে কোন না কোন টেনশন আমাদেরকে চেপে ধরে। কোন না কোন চিন্তা, কোন না কোন মসিবত সামনে এসে হাজির হয়, আর সব চিন্তা শুধু দুনিয়াদারি নিয়ে। কিন্তু নবী (দ) দোয়াতে যে তালিম দিয়েছেন তা হল দুনিয়া থেকে বেশী গুরুত্বপূণ আখেরাত। আর যে লোকের চিন্তা আখেরাত নিয়ে হয় তার দুনিয়ার সমস্যা কোন সমস্যাই নয়। আর সে দুনিয়াতে প্রকৃত তাকওয়ার সাথে জীবন যাপন করার চেষ্টা করে।   ৩য় সুন্নত- বুখারীর রেওয়ায়েত যখন তোমাদের কেহ নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয় তাহলে সে যেন ৩ বার তার নাক ঝেড়ে সাফ করে , কেননা শয়তান নাকের ভিতর রাত যাপন করে, আর এতে প্রকাশ পায় বিছানা থেকে উঠার পর যখন অজু করবে, আর ফজরের নামাজের জন্য যখন অজু করে তাতে শুধু নাকে পানি নয় বরং নাকে পানি দেয়ার সাথে সাথে বাকায়দা তা ঝাড়া উচিত। সাধারণত মানুষ যখন রাতে ঘুমায় ঘুমের মধ্যে সারা রাত ব্যাপী নানান ধরনের জীবানু ময়লা নাকের ছিদ্রে গিয়ে আটকে যায়, আর নাক পরিস্কার করা ব্যতীত অনেক লম্বা সময় অতিবাহিত হয় সে জন্য সকালে উঠেই খুব বেশী ভালো করে নাক সাফ করা উচিত। হুজুর (দ) বলেছেন শয়তান নাকের ছিদ্রে রাত যাপন করে এর আসল হাকিকত আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন, যেহেতু আমরা গায়েব এর উপর ঈমান এসেছি, তাই রাসুলুল্লাহ (দ) যা বলেছেন সে মোতাবেক আমল করলেই আমাদের জন্য কল্যান ও বরকতময় হবে। তাছাড়া হুজুর (দ) সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজের দাঁত ও মুখ মিসওয়াক দিয়ে খুব বেশী পরিস্কার করতেন, কেননা সারারাত বেকটেরিয়া মুখের মধ্যে কাজ করে, যদি মানুষ ভালোভাবে দাঁত পরিস্কার না করে তাতে মুখের সব বেকটেরিয়া যে কোন খাবারের সাথে আপনার শরীরে প্রবেশ করে যা নানা ধরনের রোগ ব্যধীর কারন হবে। সুতরাং ঘুম থেকে উঠে এই ৫টি জিনিষ অবশ্যই করবেন (১) চোখের বেয়াম- অথ্যাৎ চোখ মলে মরে উঠা (২) দোয়া পড়ে উঠা (৩) নাক পরিস্কার করা (৪) মুখ পরিস্কার করা (৫) অজু করা এবং সারাদিন অজুসহকারে থাকা।
তাহলে আপনার রিজিক বৃদ্ধি পাবে।  রাত দিন ২৪ ঘন্টা শরীর মন সুস্থ থাকবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.