ইসমে আজম এর দোয়া। নবী করিম (দ) কসম করে বলেছেন। যা চাইবেন তাই পাবেন

 

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

ইসমে আজম এর দোয়া। নবী করিম (দ) কসম করে বলেছেন। যা চাইবেন তাই পাবেন



তামাম তারিফ আল্লাহর জন্য, তিনি নেক লোকদের বন্ধু, আমি স্বাক্ষ্য দিচিছ আল্লাহ ছাড়া কেহ মাবুদে বরহক নাই, তিনি একক, তার কোন শরিক নাই, আর আমি এটাও স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আমাদের নবী মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল।এয়া আল্লাহ তাঁর উপর তার পরিবার ও সকল সাহাবায়ে কেরাম এর উপর রহমত সালামতি ও বরকত নাজিল ফরমাও

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা, ইসমে আজম এমন এক বরকতময় নাম যে নাম ধরে কোন দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়, যে নাম ধরে আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে আল্লাহ তায়ালা সব কিছু দান করেন, সব প্রয়োজন পুরণ করে দেন। এমনটি কসম করে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (দ) এরশাদ করেছেন

আজ আমরা সে ইসমে আজম কি, ইসমে আজম দিয়ে আল্লাহকে কিভাবে ডাকতে হবে, কোন সময় ডাকতে হবে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আজকের বিষয়টি প্রত্যেকের জন্য খুবই গুরুত্বপূণ ইসমে তাই নিজেও আজকে শুনবেন অন্যদেরকেও শেয়ার করে জানিয়ে সদকায়ে জারিয়ার সাওয়াব হাসিল করবেন এই আশা ব্যক্ত করছি।

মনে রাখবেন আল্লাহর ৯৯টি সিফতি নাম আছে, সব গুলি নামের আলাদা আলাদা বরকত আছে, তবে ইসমে আজমের বরকত সবচেয়ে বেশী,

এই গুনবাচক নাম ধরে আল্লাহকে ডাকার জন্য স্বয়ং আল্লাহ সুরা আরাফের ১৮০ নং আয়াতে এরশাদ করেন

وَلِلّهِ الأَسْمَاء الْحُسْنَى فَادْعُوهُ بِهَا

অর্থ্যাৎ- আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক।  [সুরা আরাফ - ৭:১৮০]

বুখারী শরীফের ২৭৩৬ নং হাদিস আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন,আল্লাহ তাআলার নিরানব্বই টি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এ নামগুলো মুখস্থ করবে, সে জান্নাতে যাবে।

প্রথমে ৯৯টি নাম আমার মুখে মুখে একবার বরকতের নিয়তে পড়ে নিন

 ১. এয়া আল্লাহু বা হে আল্লাহ 

২. আর রহমানু (পরম দয়ালু), 

৩. আর রাহিমু (সীমাহীন করুণাময়)

৪. আল মালিকু (সত্ত্বাধিকারী),

৫. আল কুদ্দুসু (মহাপবিত্র),

৬. আস সালামু (শান্তিদাতা),

৭. আল মুমিনু (নিরাপত্তাদাতা),

৮. আল মুহাইমিনু (রক্ষণাবেক্ষণকারী),

৯. আল আজিজু (মহাপরাক্রমশালী),

১০. আল জাব্বারু (মহাপ্রতাপশালী)

১১. আল মুতাকাব্বিরু (মহাগৌরবের অধিকারী)।

১২. আল খালিকু (সৃষ্টিকর্তা),

১৩. আল কারিমু (উদ্ভাবনকারী),

১৪. আল মুসাব্বিরু (আকৃতিদানকারী),

১৫. আল গাফফারু (অসীমক্ষমাশীল),

১৬. আল কাহ্হারু (মহাপরাক্রমশালী),

১৭. আল ওয়াহ্হাবু (মহান দাতা),

১৮. আর রাজ্জাকু (রিজিকদাতা),

১৯. আল ফাত্তাহু (মহাবিজয়দানকারী),

২০. আল আলিমু (মহাজ্ঞানী)

২১. আল ক্বাবিদু (হরণকারী),

২২. আল বাসিতু (সম্প্রসারণকারী)।

২৩. আল খাফিদু (অবনতকারী),

২৪. আর রাফিয়ু (উন্নতকারী),

২৫. আল মুয়িজু (মার্যাদাদানকারী),

২৬. আল মুজিল্লু (অপমানকারী),

২৭. আস সামিয়্যু (সর্বশ্রোতা),

২৮. আল বাসিরু (সর্বদ্রষ্টা)

২৯. আল হাসিবু (মহাবিচারক),

৩০. আল আদিলু (ন্যায়পরায়ণ)

৩১. আল লাতিফু (সুক্ষ্মদর্শী),

৩২. আল খাবিরু (মহা সংবাদ রক্ষক),

৩৩. আল হালিমু (মহা সহিঞ্চু),

৩৪. আল আজিমু (মহান),

৩৫. আল গাফুরু (ক্ষমাশীল),

৩৬. আশ শাকুরু (গুণগ্রাহী),

৩৭. আল আলিয়্যু (মহাউন্নত),

৩৮. আল কাবিরু (সর্বাপেক্ষা বড়), ৩৯. আল হাফিজু (মহারক্ষক),

৪০. আল মুকিতু (মহান শক্তিদাতা)।

৪১. আল হাসিবু (হিসাব গ্রহণকারী),

৪২. আল জালিলু (মহা মহিমাময়),

৪৩. আল কারিমু (মহা অনুগ্রহশীল),

৪৪. আর রাকিবু (মহাপর্যবেক্ষণকারী), ৪৫. আল মুজিবু (মহান কবুলকারী),

৪৬. আল ওয়াসিয়ু (মহাবিস্তারকারী),

৪৭. আল হাকিমু (মহাপ্রজ্ঞাময়),

৪৮. আল ওয়াদুদু (প্রেমময় বন্ধু),

৪৯. আল মাজিদু (মহাগৌরবান্বিত),

৫০. আল বায়িসু (পুনরুত্থানকারী)

৫১. আশ শাহিদু (সর্বদর্শী),

৫২. আল হাক্কু (মহাসত্য),

৫৩. আল ওয়াকিলু (মহান দায়িত্বশীল),

৫৪. আল ক্বাজিয়্যু (মহাশক্তি ধর),

৫৫. আল মাতিনু (চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী),

৫৬. আল ওয়ালিয়্যু (মহান অভিভাবক),

৫৭. আল হামিদু (মহাপ্রশংসিত)।

৫৮. আল মুহসিয়্যু (পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব গ্রহণকারী),

৫৯. আল মুবদিয়ু (সূচনাকারী),

৬০. আল মুঈদু (পুন:সৃষ্টি কারী)

৬১. আল হাইয়্যু (চিরঞ্জীব),

৬২. আল কাইয়ূমু (চিরস্থায়ী),

৬৩. আল মুহইয়্যু (জীবনদানকারী),

৬৪. আল মুমিতু (মৃত্যুদানকারী),

৬৫. আল ওয়াজিদু (ইচ্ছাপূরণকারী),

৬৬. আল মাজিদু (মহাগৌরবান্বিত),

৬৭. আল ওয়াহিদু (একক সত্ত্বা),

৬৮. আস সামাদু (অমুখাপেক্ষী),

৬৯. আল ক্বাদিরু (সর্বশক্তিমান),

৭০. আল মুক্তাদিরু (মহান কুদরতের অধিকারী)

৭১. আল মুকাদ্দিমু (অগ্রসরকারী),

৭২.আল মুয়াখখিরু (বিলম্বকারী),

৭৩. আল আউয়ালু (অনাদি),

৭৪. আল আখিরু (অনন্ত),

৭৫. আজ জাহিরু (প্রকাশ্য),

৭৬. আল বাতিনু (লুক্কায়িত)।

৭৭. আল ওয়ালিয়্যু (মহান অধিপতি),

৭৮. আল মুতাআলিয়ু (চিরউন্নত),

৭৯. আল বার্রু (কল্যাণদাতা),

৮০. আত তাউওয়াবু (মহান তওবা কবুলকারী)

৮১. আল মুন্তাকিমু (প্রতিশোধ গ্রহণকারী),

৮২. আল আফুউ (ক্ষমাকারী),  

৮৩. আর রাউফু (অতিশয় দয়ালু),

৮৪. মালিকুল মুলকি (সর্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী),

৮৫. জুল জালালি ওয়াল ইকরামি (গৌরব ও মহত্ত্বের অধিকারী),

৮৬. আল মুকসিতু (ন্যায়পরায়ণ),

৮৭. আল জামিয়ু (একত্রকারী),

৮৮. আল গানিয়্যু (ঐশ্বর্যের অধিকারী)। ৮৯. আল মুগনিয়ু (ঐশ্বর্যদানকারী),

৯০. আল মানিয়ু (প্রতিরোধকারী)

৯১. আদ দারু (অনিষ্টকারী),

৯২. আন নাফিয়ু (উপকারকারী),

৯৩. আন নূরু (জ্যোতি),

৯৪. আল হাদিয়ু (পথ প্রদর্শনকারী),

৯৫. আল বাদিয়ু (সূচনাকারী),

৯৬. আল বাকিয়ু (চিরবিরাজমান),

৯৭.আল ওয়ারিসু (স্বত্বাধিকারী),

৯৮. আর রাশিদু (সৎপথে পরিচালনাকারী),

৯৯. আস সাবূরু (মহাধৈর্যশীল)।

 

হাদীস শরীফে আছে

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল (দ) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি নামাজ আদায় করে এই বলে দোয়া করল, আল্লাহুম্মা লা-ইলাহা ইল্লা আংতাল মান্নান, বাদিয়ুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম। নবী (দ.) বলেন, এই ব্যক্তি ইসমে আজম দ্বারা দোয়া করেছে, যে নামে ডাকলে তিনি সাড়া দেন এবং যে নামে তার কাছে চাওয়া হলে তিনি দান করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৯৫)

  সবচেয়ে সুন্দর সুরা যা ফজরের ২ রাকাতে পড়া হয়, সুরা কাফেরুন ও সুরা এখলাস।

এই ২টি সুরার শব্দগুলি আল্লাহর কাছে এত বেশী প্রিয়! এই শব্দগুলি দ্বারা যদি কেহ দোয়া করে তা ইসমে আজম হয়ে যায়। যে দোয়াই করা হউক আল্লাহ সে দোয়াকে ফিরিয়ে দেন না।

রাসুলুল্লাহ (দ) এর সাহাবী বয়ান করেন-আমি রাসুলুল্লাহ (দ) এর সাথে মসজিদে প্রবেশ করলাম, এক ব্যক্তি নামাজ পড়ছিল, আর দোয়া করছিল,

(আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা, বি আন্নি আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুছ ছামাদ, আল্লাজি লাম এয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ, ওয়ালাম এয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ)

এই শব্দগুলির সাহায্যে তিনি দোয়া করলেন, আল্লাহর রাসুল (দ) ফরমালেন,

(ওয়াল্লাজি নাফসি বিয়াদি, লাকাদ ছাআলাহু বিসমিহিল আজম, আল্লাজি ইজা ছুঈলা বিহি আতা, ওয়া ইজা দুঈআ বিহি আজাব)

অর্থ্যাৎ সে জাতের কসম যার হাতে আমার প্রাণ, এই লোকটি ইসমে আজম এর সাহায্যে দোয়া করেছে, আর যে এই কলমাগুলির দিয়ে দোয়া করে যাই চায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে তা দিয়ে দেন। যে দোয়াই করে আল্লাহ তায়ালা তার সে দোয়া কবুল করেন।

 

সুতরাং মুলকথা আল্লাহ শব্দটি ইসমে আজম  তাছাড়া আরো ৪টি ইসমে আজম আছে যেমন

১) (ওয়া ইলাহুকুম ইলাহুন ওয়াহেদ, লা ইলাহা ইল্লা হুয়ার রাহমানুর রাহিম)

২) (আলিফ লাম মিম আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুম)

৩) (আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা, বি আন্নি আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুছ ছামাদ, আল্লাজি লাম এয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ, ওয়ালাম এয়া কুল্লাহু কুফুয়ান আহাদ)

৪) (আল্লাহুম্মা লা ইলাহা ইল্লা আনতাল মান্নান বাদিউস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ জাল জালালি ওয়াল ইকরাম )

এই বাক্য থেকে কোন ১টি বাক্য যদি উচ্চারন করেন, নবী করিম (দ) এরশাদ করেন আল্লাহ কখনো আপনার দোয়া ফিরিয়ে দিবেন না, এগুলি হল ইসমে আজম

(ইজা দুঈআ ফা আজাব, ওয়া ইজা ছুঈলা ফা আতা) যা চাইবেন তাই দিবেন, যে দোয়াই করবেন কবুল হবে।

 

 

হযরত বড় পীর আবদুল কাদের জিলানি (রহ) কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল ইসমে আজম কি? তিনি বললেন যখন আল্লাহ আল্লাহ বলবে তখন অন্তরে আল্লাহ ছাড়া যদি আর কোন কিছু না থাকে সে আল্লাহ শব্দই ইসমে আজম হয়ে যাবে।

সিবওয়ে একটা বই লিখেন যার নাম কিতাব, তার মধ্যে তিনি লিখেন আল্লাহ যেমন (লাম এয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ)তিনি কারো কাছ থেকে জন্ম নেননি কাউকে জন্ম দেননি, তেমনি আল্লাহ নামটিও কারো মুশতাক নয়। এমনটি আল্লাহ শব্দের কোন মসদরও নাই। আল্লাহ শব্দ হল ইসমে আজম। তার মধ্যে আল্লাহর ৯৯টি নামের বরকত একত্রে আছে। ৯৯ নামের যত ধরনের ফজিলত ও বরকত আছে এক আল্লাহ এর মধ্যে সবগুলি বরকত আছে, আল্লামা সিবওয়ে এর এই লিখার কারনে তার মাগফেরাত হয়ে গেছে।

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.