আল্লাহর রহমত লাভের দোয়া আমল ওজিফা

 

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম




তামাম তারিফ আল্লাহর জন্য, তিনি নেক লোকদের বন্ধু, আমি স্বাক্ষ্য দিচিছ আল্লাহ ছাড়া কেহ মাবুদে বরহক নাই, তিনি একক, তার কোন শরিক নাই, আর আমি এটাও স্বাক্ষ্য দিচ্ছি আমাদের নবী মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল।এয়া আল্লাহ তাঁর উপর তার পরিবার ও সকল সাহাবায়ে কেরাম এর উপর রহমত সালামতি ও বরকত নাজিল ফরমাও।

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় বন্ধুরা,যদি দুনিয়ার সব কিছুতে বরকত চান, হায়াতে বরকত চান, রিজিকে বরকত চান, কামাই রুজি রোজগারে বরকত চান, সব সময় আল্লাহর রহমতের ছায়ায় থাকতে চান, শুধু দুনিয়াতে নয় বরং আখেরাতেও যদি রহমত লাভ করতে চান তাহলে আজকের কোরআন হাদীসের এই ইনফরমেশন মুলক আমলগুলি ওজিফাগুলি আপনার জন্য।

আজকে যে সব আমল ও ওজিফার কথা বলব প্রতিটি আমল ও ওজিফা প্রতিদিন করতে হবে এই আমলগুলি করতে আপনার সারাদিনে ২৪ ঘন্টায় মাত্র আধা ঘন্টা সময় লাগবে কিন্তু এর বরকত এত বেশী, প্রতিদিন ১০ কোটি বরকত বললেও কম হবে, এত  বরকত দেখে আপনার সারাক্ষণ এই ওজিফাগুলি করার জন্য ইচ্ছে করবে।

প্রথম ওজিফা হল- কুরআন মজিদ তেলাওয়াত করা। এই আমলটি আপনার প্রতিদিনের রুটিন বানিয়ে নিতে হবে। অনেকে আছে চা পান না করা পযন্ত স্বস্থি লাগেনা, তেমনি কুরআন পাঠ না করলেও এমনই অস্বস্থিতে থাকতে হবে। মনে করবেন যেদিন কুরআন পড়েননি সে দিন আপনার জীবন থেকে নষ্ট হয়ে গেছে ।

যদি পড়তে না পারেন তাহলে শুনবেন, এখন পড়তে না পারলে মোবাইলের বরকতে শুনা অনেক সহজ।

কুরআন যে আমাদের জন্য রোগের শেফা ও রহমত তা আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সুরা বনি ইসরাইলের ৮২ নং আয়াতে এরশাদ করেন

وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاء وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ

আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।

আপনার শারিরিক রোগের চিকিৎসাও এই কুরআনে আছে, মানসিক রোগের চিকিৎসাও এই কুরআনে আছে, সামাজিক রোগের চিকিৎসাও এই কুরআনে আছে। তবে একিন শত।

শিকলে বাঁধা লোক নিয়ে আসা হল সাহাবাগন সুরা ফাতেহা পড়ে ফুঁক দিলেন এমন ভাবে সুস্থ হয়ে গেলেন যেন সে জীবনে কোনদিন মানসিক রোগী ছিলনা

সাপে কেঁটেছে যেন মরা লাশ হয়ে গেছে, সাহাবী সুরা ফাতেহা পড়ে ফুঁক দিয়েছে সাথে সাথে সুস্থ হয়ে গেছে।

তাই পূণ একিন নিয়ে, কুরআনের প্রতি ভালোবাসা রেখে, নিয়মিত যদি এই কুরআন পড়েন তাহলে শুধু রোগ থেকে শেফাই দিবেনা বরং আল্লাহর রহমতের হকদার বানিয়ে দিবে।

২য় আমল  - যা দ্বারা আল্লাহর রহমত হাছিল করা সহজ হবে তা হল আল্লাহর জিকির।

চলতে ফিরতে এই ছোট ছোট জিকির সমুহ করবেন, আল্লাহর কসম আপনার জীবনে এমন সুখ শান্তি ও মজা পাবেন কোন কিছুতে আপনার সে শান্তি সে মজা নসিব হবেনা।

চলতে ফিরতে বলুন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ, হাসবি আল্লাহু ওয়ানেমাল ওয়াকিল নেমাল মাওলা ওয়ানেমান নাসির, এয়া হাইয়্যু এয়া কাইয়্যুম বিরাহমাতিকা আসতাগিছ, আল্লাহ আল্লাহ রাব্বি লা শারিকালা।

এই তসবিহ গুলি আপনি পড়ে দেখুন,

দুনিয়ার বড় বড় মসিবতে ফেঁসে গেছেন? একবার এই তসবিহসমুহ পড়ে দেখুন।

আর নামাজের পরও জিকির করুন, হাদীসের ভাষায়, যখন কেহ নামাজের পর বসে বসে জিকির করে অগনিতে ফেরেশতা নাজিল হয, যারা সে জিকিরকারী বান্দার জন্য দোয়া করে, হে আল্লাহ একে ক্ষমা করে দাও, এর উপর রহমত নাজিল কর, এর তওবা কবুল করে নাও।

নামাজের পর জিকির সমুহ করতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগে।

 

আল্লাহর রহমত লাভের জন্য ৩য় আমল হল আসরের আগে ৪ রাকাত পড়া। যে ৪ রাকাত পড়বে তার জন্য মহানবী (দ) রহমত লাভের দোয়া করেছেন, তিরমিজি শরীফের ৪৩০ নং হাদিস, নবী করিম (দ) বলেছেন ( রাহিমাল্লাহু আমরাআন ছাল্লা কাবলাল আসরি আরবাআন) আল্লাহ সে ব্যক্তির উপর রহম করুন, যে ব্যক্তি আসরের পূর্বে চার রাকআত সুন্নত পড়ে।

 

৪থ আমল হল - নবী করিম (দ) এরশাদ করেন যে রাতে তাহাজ্জুদে উঠে এবং নিজের স্ত্রীকে উঠায় এবং তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে তারা উভয়েই আল্লাহর রহমতের হকদার হয়ে যায়।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ তাআলা সেই স্বামীর প্রতি রহম করেছেন, যে নিজে রাতে উঠে তাহাজ্জত পড়ে এবং তার স্ত্রীকে জাগায়। যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়। আল্লাহ তাআলা সেই স্ত্রীর প্রতি রহম করেছেন, যে নিজে রাতে উঠে তাহাজ্জত পড়ে এবং তার স্বামীকে জাগায়। যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তবে তার মুখমণ্ডলে পানির ছিটা দেয়। (আবু দাউদ ও নাসায়ি,

রাতে তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়ত করে শুয়েছেন, কিন্তু উঠতে পারেননি, আপনার নিয়তের কারনেই আল্লাহ আপনাকে তাহাজ্জুদের নেকি দিয়ে দিবেন। এই সবই আল্লাহর রহমত। তিনি তার আদরের বান্দাদেরকে রহমত দেয়ার জন্য নানান পথ নানান রাস্তা খোলা রেখেছেন।

 

৫ম আমল যার কারনে আল্লাহ তায়ালা বান্দার প্রতি রহম করেন - যে সব লোক বেচার সময়, কিনার সময়,দরাদরি করার সময়, দাম নির্ধারনের সময় নম্রতা অবলম্বন করে, সহজতা অবলম্বন করে।

মনে রাখবেন জিনিষ পত্রের দাম বৃদ্ধি হয়ে যাওয়া এটাও আমাদের জন্য একটা পরীক্ষা, আমরা মনে করি সিন্ডিকেট দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, আর শরীয়ত বলে (ইন্নাল্লাহা হুয়াল মুসায়্যির) দাম আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে।মুলত এটা হল একটা পরীক্ষা। আল্লাহই সব কিছু দিবেন। এই দ্রব্য সামগ্রীর যতই দাম বৃদ্ধ হউক সবকিছুকে বরকতময় করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।

রাসুলে করিম (দ) ফরমান যারা কারোবারে লেনদেনে সহজতা করে আল্লাহ তাদের উপর রহমত নাজিল করেন।

সন্তানকে মহব্বত করাও আল্লাহর রহমত লাভের কারন

সন্তানকে মহব্বত করা ৩ প্রকারের

১) তাকে দ্বিনদার বানাবেন, যে কবরে গিয়ে যদি হাত তুলে দোয়া করে আর সে দোয়া কিয়ামতের দিন পাহাড় হয়ে তোমার আমলনামায় দেখা যাবে।

২) তাকে মূর্খতা থেকে বাঁচান, এমন এলম দান করুন, যে এলম দ্বারা তোমার ঘরে, তোমার খান্দানে, দেশ ও জাতির মধ্যে নুর বিতরন করবে।

৩) সন্তান যদি হাসপাতালে থাকে মা বাবা কেমন ছটফট করে? এখন সে সন্তান যদি কিয়ামতের দিন জাহান্নামের রাস্তা ধরে তখন কেমন লাগবে?

দুনিয়াতে তার রেজাল্ট খারাপ হলে বরদাশত হয়না, আখেরাতে কিভাবে বরদাশত করবেন? কিয়ামতের দিন যদি সে জাহান্নামে চলে যায় কিভাবে সহ্য করবেন?

তাই সন্তানকে নেক বানান, তার ভিতর দ্বীনের মহব্বত তৈরী করে দিন। বরকতময় সন্তান তৈরী করুন। যার কারনে আপনি দুনিয়াতেও শান্তি পাবেন আখেরাতেও শান্তি পাবেন।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এতক্ষন যে সব আমল দ্বারা আল্লাহর রহমত লাভ করা যায় তা যে শুনলাম সে মোতাবেক আমল করার তৌফিক দান করুন, এবং এর ফয়েজ ও বরকত আমাকে ও আপনাদেরকে দান করুন আমিন।

 

 

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.