ওয়ারাফানা লাকা জিকরাক এর ওজিফা । ভাগ্য খুলে যাওয়ার আমল।

 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

ওয়ারাফানা লাকা জিকরাক এর ওজিফা । ভাগ্য খুলে যাওয়ার আমল।



 সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্য, তিনি নেক লোকদের বন্ধু, আমি সাক্ষি দিচ্ছি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদে বরহক নাই। তিনি এক তার কোন শরিক নাই।আর আমি এটাও সাক্ষি দিচ্ছি যে আমাদের নবী মুহাম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাও তার রাসুল। হে আল্লাহ প্রিয় নবীর উপর তার পরিবার পরিজন এবং সকল সাহাবায়ে কেরাম এর উপর রহমত সালামতি আর বরকত নাজিল করুন।

 

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা, ১২ রবিউল আউয়াল এবং পুরা রবিউল আউয়াল মাস ব্যপী ১টি আয়াতের ওজিফা আছে, যা আমি আপনাদেরকে বলব, আয়াতটি সুরা আলাম নাশরাহলাকা এর আয়াত। কিভাবে আপনি এই আয়াত পড়বেন এবং এই ওজিফার কি ফায়দা পুরা তফসিল আপনাকে বলব। সুরাটি কেমন মোবারক ও বরকতময় তাও আপনাকে বলব, সুতরাং ভিটিওটি শেষ পযন্ত দেখবেন স্কীপ করবেন না। অধিকাংশ লোক ভিডিও কেটে কেটে দেখে আর কোন না কোন গুরুত্বপূণ পয়েন্ট মিস করে ফেলে। যার ফলে তারা ওজিফার পুরাপুরি ফায়দা লাভ করেনা। আর কমেন্টে ওজিফার বিরুদ্ধে লিখে বা যিনি ওজিফা বলছেন তার বিরুদ্ধে বলেন। সুতরাং আপনি এমন করবেন না, আপনি শেষ পযন্ত ভিডিওটি মনযোগ দিয়ে দেখবেন।

প্রিয় বন্ধুরা সুরা আলাম নাশরাহ এটি ৩০ তম পারার ১টি সুরা। এই সুরার কোন আয়াতের ওজিফা যা আপনি ১২ রবিউল আউয়ালের আগে আগে করবেন, তা আপনাদেরকে বলব, ওজিফাটি ১২ রবিউল আউয়ালের আগে করতে না পারলে পরেও করতে পারবেন।

প্রথমে সুরাটির অনুবাদ শ্রবণ করুন

১) আমি কি আপনার বক্ষ প্রশস্ত করিনি

২) এবং আপনার উপর থেকে আপনার সে বোঝা নামিয়ে দিয়েছি

৩) যা আপনার পৃষ্ট ভেঙ্গে ছিলো

৪) এবং আমি আপনার জন্য আপনার স্মরণকে জিকিরকে সমুন্নত করেছি

৫) সুতরাং নিশ্চয় কস্টের পরে স্বস্তি রয়েছে

৬) নিশ্চয়ই কস্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে

৭) অতএব যখন আপনি আপনার নামাজ থেকে অবসর হবেন তখন দোয়ার মধ্যে পরিশ্রম করুন

৮)এবং আপন প্রতিপালনের প্রতি মনোনিবেশ করুন

প্রিয় বন্ধুরা এটা ছিল এই মোবারক সুরার সরল তরজুমা, যাতে তিনি তার প্রিয় মাহবুবের চর্চা, মাহবুবের মর্যাদা বৃদ্ধি, জিকিরকে বুলন্ধ করার কথা বলেছেন। আর আল্লাহ পাক হুজুর (দ) এর জন্য সহজতার এরাদা করে ফেলেছেন।

অনেক লা জাওয়াব ও পাওয়ারফুল এই ওজিফা যা ১২ রবিউল আউয়ালের আগে আপনাকে করতে হবে।এবং ১২ রবিউল আউয়ালের দিনেও অবশ্যই করবেন।কিংবা পরে করবেন।

চলুন জানা যাক কিভাবে এই ওজিফাটি করতে হবে। ওজিফার যে নিয়ম বলব তা মন দিয়ে শুনুন আর সে নিয়ম মোতাবেকই ওজিফাটি করবেন।

ওজিফা করার জন্য নিদৃষ্ট কোন সময় নাই, তবে ওজিফাটি করার আগে ভালোভাবে অযু করে নিবেন, তারপর নিজন বা একাকি ভাবে এক জায়গায় কিবলামুখি হয়ে বসে ওজিফাটি করবেন।কেননা ওজিফা করার সময় আপনি কারো সাথে কথা বলবেন না।আমার বোনেরাও এই ওজিফাটি করবেন এবং ভায়েরাও এই ওজিফাটি করবেন।যারা চান তাদের জীন্দেগী থেকে সব ধরনের দুঃখ পেরেশানি দুর হয়ে যাক তারাও এই ওজিফাটি অবশ্যই করবেন।

ওজিফার নিয়ম হল- আপনি সুরা আলাম নাশরাহ কে ১ বার এই নিয়মে পড়বেন

প্রথমে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়বেন

তারপর এই সুরাটি পড়া শুরু করবেন, যখন এই সুরার আয়াত নং ৪ এ আসবেন অর্থ্যাৎ (ওয়ারাফানা লাকা জিকরাক) এর মধ্যে পৌঁছবেন, আপনি এ আয়াত পড়ার পর ১০০ বার দরুদ শরীফ পাঠ করবেন। যে কোন দরুদ শরীফ পড়তে পারবেন।

১০০ বার দরুদ পড়ার পর আপনি সুরার বাকী আয়াত সমুহ পড়ে শেষ করবেন। আর এরপর আপনার মুশকিলের জন্য আপনার পেরেশানির জন্য আপনার হাজত আপনার মকসদের জন্য দোয়া করবেন, দরুদে পাকের পর যে আয়াত আসে (ইন্না মায়াল উসরে ইউসরা) নিশ্চয়ই প্রত্যেক কষ্টের পর স্বস্থি আছে

আর এই আয়াতটিকে আল্লাহ পাক ২ বার রিপিট করেছেন।

এই আয়াত পড়ার সময় আপনার যে কোন কষ্ট যে কোন দুঃখ থাকুক সে সব কষ্টকে আপনি চিন্তা করবেন, আর কামনা করবেন আল্লাহ পাক দরুদে পাকের বরকতে আপনার মশকিলগুলিকে সহজতা দান করবেন।

অনেক পাওয়ারফুল আমল, আমলটি আপনি ১২ রবিউল আউয়াল এর আগে করবেন, ১২ রবিউল আউয়ালের দিন করবেন বা ১২ রবিউল আউয়ালের পরেও করতে পারেন।  আল্লাহ তায়ালা আপনার সকল মশকিল আসান করে দিবেন এবং যা কিছু চাইবেন তাই দান করবেন।

হযরত সুফিয়ান সওরী (রহ) বলেন আমি একবার তাওয়াফ করছিলাম আর তাওয়াফের সময় দেখতে পেলাম এক ব্যক্তি তাওয়াফের সময় শুধু দরুদ শরীফ পড়ছিল, আমি তাকে এর কারন জিজ্ঞেস করলাম সে আমাকে আমার পরিচয় জানতে চাইল আমি যখন তাকে আমার পরিচয় দিলাম সে আমাকে তার দরুদ পাঠের কারন বয়ান করল, সে বলল আমি আর আমার পিতা হজ্জের জন্য আসছিলাম, রাস্তায় আমার পিতা অসুস্ত হয়ে গেল, আমার বাবার চেহেরা কালো হয়ে গেল এবং তিনি রাস্তায় ইন্তেকাল করলেন, আমি তার চেহেরা ঢেকে দিলাম একা এই লাশের কি করব তা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম, আর ঘুমে আমি স্বপ্নে দেখলাম একজন সুন্দর পুরুষ সাদা পোষাক পরিহিত আসল, যার শরীর থেকে এমন খুশবু বের হচ্ছিল যে খুশবু আমি জীবনে পাইনি, তিনি আমার পিতার চেহেরা থেকে কাপড় সরিয়ে আমার পিতার চেহেরার উপর হাত ফিরালেন ফলে আমার পিতার চেহেরা উজ্জল হয়ে গেল, সে সুন্দর লোকটি যখন চলে যাচ্ছিল আমি উনার চাদর ধরে ফেললাম, আমি জিজ্ঞেস করলাম আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি কে আমাকে বলে যান, আর এইসব কি? তখন সে নুরানি লোকটি বলল আমি মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ। তোমার পিতা যদিও গুনাহগার ছিল কিন্তু আমার উপর খুব বেশী দরুদ পড়ত, আর তার বেশী বেশী দরুদ পড়ার কারনে আমি তার পেরেশানি দুর করে দিলাম, সে লোকটি বলে আমি যখন ঘুম থেকে জাগ্রত হলাম দেখলাম আমার পিতার কালো চেহেরা সত্যি সত্যি উজ্জল হয়ে গেল, সে দিন এর পর থেকে আমি নবী করিম (দ) এর উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ করা শুরু করে দিলাম, তাই আমি তাওয়াফের মধ্যেও বেশী বেশী দরুদ পাঠ করছি।

প্রিয় বন্ধুরা এই মাস এমনিতেই হুজুর পাক (দ) এর বেলাদতের মাস সে জন্য এই মাসে খুব বেশী বেশী দরুদ শরীফ পাঠ করবেন, মুলত পুরা বছরই আমাদের বেশী বেশী দরুদ পড়া উচিত।

হুজুর পাক (দ) এর এরশাদ হল যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরুদ পাঠাবে আল্লাহর ১০ রহমত তার উপর নাজিল হবে। ১০টি দারাজাত তার বুলন্দ হবে। ১০টিগুনাহ তার মাফ করে দেয়া হবে।

প্রিয় ভায়েরা আপনি যতবার হুজুর (দ) এর উপর দরুদ পাঠ করবেন ততই আপনার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে, আপনার হাজত পুরণ হবে। আপনার দুঃখ পেরেশানি দুর হবে।

প্রিয় বন্ধুরা মুসলিম শরীফের হাদীস- রাসূলুল্লাহ্ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমার সুপারিশের পূর্বে কেউ জান্নাতে প্রবেশ করবে না কিন্তু যারা আমার ওপর সব সময় দরুদ শরীফ পাঠ করেছে, তারা আমার সুপারিশের পূর্বেই জান্নাতে চলে যাবে। তাদের জন্য আমার কিছুমাত্র সুপারিশের প্রয়োজন হবে না। (মুসলিম শরীফ)।

অপর এক হাদীসে আছে- নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যদি তুমি কোন কিছু ভুলে যাও তাহলে আমার উপর দরুন পাঠ কর ইনশা আল্লাহ সে ভুলে যাওয়া জিনিষ তোমার মনে পড়ে যাবে।

অভাব দুর করার জন্য সবচেয়ে আফযল অজিফা হল দরুদে পাক পাঠ করা। নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যে ব্যক্তি প্রতিদিন আমার উপর ৫০০ বার দরুদ পাঠ করবে তাঁর সকল অভাব অনটন দুর হয়ে যাবে।

অপর এক রেওয়ায়েতে আছে নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন যখনই তোমাদের কোন পেরেশানি আসে তখন তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ কর তাহলে আল্লাহ তাবারাকা ওয়াতায়ালা তোমাদের পেরেশানি দুর করে দিবেন। আর বেশী দরুদ এর সংখ্যার ব্যপারে ওলামায়ে কেরাম বলেন ৩০০ বার অথবা ৩১৩ বার। অথ্যাৎ কেহ দিনে ৩ শত বা ৩১৩ বার দরুদ পাঠ করে তাহলে সে অধিক দরুদ পাঠকারী হিসেবে গণ্য হবে।

 

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.