টাকা পয়সা রুজি রোজগারে বরকতের দোয়া। বরকত লাভের আমল

 

সারা বছর বরকত লাভের আমল



১টি বাস্তব মজার ঘটনা দিয়ে আজকের আমলটি তুলে ধরার চেষ্টা করব, এক সুন্দরী নারী যখন পবিত্র কুরআন ডাস্টবিনে ফেলে দিল তারপর কি মুজেজা ঘটল, জানতে পারবেন সাথে সাথে এমন বরকতের আমল শেয়ার করব যা আপনার ভাগ্য বদলে দিবে আশা করি প্রত্যেকের জন্য আজকের আমলটি খুবই উপকারে আসবে

ঘটনাটি হল-

এক নওজোয়ান ইঞ্জিনিয়ারি পাশ করে ইউরোপের এক দেশে চলে গেল, সেখানে যখন চাকরীর জন্য এপ্লাই করল তখন সে একটি ভালো চাকরি পেয়ে গেল যেখানে তার চাকরী হল সে কোম্পানিতে এক খ্রিষ্টান মেয়েও চাকরী করত, মেয়েটি হুর পরির মত সুন্দরী ছিল কাজের সুবাধে সে মেয়েটির সাথে তার প্রায় সময় কথাবার্তা হত, ফলে ছেলেটি সে মেয়েটির প্রতি আসক্ত হয়ে গেল, সে মেয়েকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে গেল, সে যখন মেয়েটির বাবা মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেল, তারা সে প্রস্তাব নাকচ করে দিল, কিন্তু সে মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য যে কোন শর্তে রাজি হওয়ার ঘোষনা দিল

তখন মেয়ের বাবা মামা বলল আমাদের মেয়েকে বিয়ে করতে হলে তোমাকে খ্রিষ্টান হতে হবে, মুসলিম বন্ধুদের ছাড়তে হবে, এদেশে সব সময় থাকতে হবে, দেশের সাথে কোন যোগাযোগ রাখা যাবেনা, প্রতি সপ্তাহে আমার মেয়ের সাথে চার্চে যেতে হবে সে ছেলেটি মেয়েটিকে পাওয়ার জন্য এমন অন্ধ হয়ে গেল যে সে সব শর্তে রাজি হয়ে তাকে বিয়ে করল সে এখন আর মুসলমান নাই সব কিছু ছেড়ে দিয়েছে, তবে তার কাছে তার বইসমুহের মধ্যে পবিত্র কুরআন ছিল যা সে প্রতিদিন পড়ত নামাজ পড়তনা, আর কোন নেক কাজও করত না, কিন্তু সে যেহেতু নিয়মিত কুরআন পড়ত অথ তফসিরসহ, সে অভ্যাসমত সে কুরআন পড়তে থাকে, আর কুরআনের সাথে তার একটা মহব্বতও ছিল

বিয়ের কয়েকমাস পর সে মেয়েটি বুঝতে পারল সে কুরআন পড়ে তখন সে মেয়েটি ছেলেটির অনুপস্থিতিতে কুরআনের কপিগুলি নিয়ে ডাস্টবিনে ফেলে আসল, ছেলেটি ঘরে এসে যখন তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় আল্লাহর কালামকে তার খ্রিষ্টান স্ত্রী ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে দেখেছে সে আর সহ্য করতে পারেনি, সে স্ত্রীকে ডিভোস দেয়ার সিদ্ধান্ত নিল এবং নিজে তওবা করে পুনরায় মুসলমান হয়ে গেল ছেলেটি যদিও কিছু সময়ের জন্য শয়তানের ধোকায় পড়ে পথহারা হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কুরআনের প্রতি ভালবাসার কারনে আল্লাহ তাকে পুনরায় হেদায়েতের রাস্তা দেখিয়েছেন

আজকাল আমাদের রিজিকে বরকত নাই, ওয়াক্তে বরকত নাই, স্মরণশক্তিতে বরকত নাই, ইজ্জত সম্মানে বরকত নাই, এই বে-বরকতির আসল কারন হল কুরআন মজিদ অনুযায়ী জীবন যাপন না করার কারনে আজকাল যে সব ঘরে নিয়মিত খবরের কাগজ পড়া হয় সে সব মুসলমান ঘরে নিয়মিত কুরান পাঠকারী কেহ নাই

এটা কতই আযব কথা যে বরকতের খাজানা আমাদের কাছেই আছে, কিন্তু আমরা তাবিজের জন্য আমেলদের পিছে পিছে দৌঁড়াই এটা চিন্তার বিষয় কুরআনে মজিদ আল্লাহ তায়ালা পাঠিয়েছেনই এই জন্য যে আমরা যাতে এর দ্বারা আমাদের জিন্দেগীকে বরকতময় বানাতে পারি

কুরআনে মজিদের প্রতি মহব্বতের সবচেয়ে ছোট ফজিলত হল এর দ্বারা মানুষের ঈমান হেফাজতে থাকে কুরআনের প্রতি মহব্বতের কারনে আল্লাহ ইঞ্জিনিয়ার ছেলেটির ঈমানকে হেফাজত করে দিয়েছেন এই কুরআন দুনিয়াতে এসেছেই জন্য যে তা মানুষকে ঈমানের নুর বিতরন করবে মানুষের জীবনকে সুন্দর করবে বরকতময় করবে

তাই প্রত্যেক মুসলমান মাত্রেরই উচিত এই কুরআনের সাথে সম্পর্ক জুড়ে রাখা, নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করা, কুরআন শিক্ষা করা সন্তানদেরও কুরআনের শিক্সায় শিক্ষিত করা তাহলে জীবনে মরনে হাশরে কোন কিছুই বরকতশুণ্য হবেনামানসিক শান্তি খুঁজে পাবেন।

আল্লাহ তায়ালা সুরা রাদ এর ২৮ নং আয়াতে এরশাদ করেন

 اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ تَطۡمَئِنُّ قُلُوۡبُهُمۡ بِذِکۡرِ اللّٰهِ ؕ اَلَا بِذِکۡرِ اللّٰهِ تَطۡمَئِنُّ الۡقُلُوۡبُ

 যারা ঈমান আনে এবং আল্লাহর স্মরণে যাদের অন্তর প্রশান্ত হয়; জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়

# সবচেয়ে আফযল জিকির হল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ

#তারপর কুরআন তেলাওয়াতও হল জিকির

অযু করে যে কোন জিকির আজকার করা উত্তম, এখন কেহ যদি অজু ছাড়া জিকির করতে চায়, হাটতে বসতে জিকির করে তাও জায়েজ

যদি কারো উপর গোসল ফরয হয় তাহলে সে

)কোরআন জুজদান ব্যতীত ধরতে পারবেনা

) কোরআনকে কুরআন তেলাওয়াত এর নিয়তে পড়তে পারবেনা

যা পারবে

)কুলি করে দরুদ পড়তে পারবে

) জিকির করতে পারবে

) দোয়া করতে পারবে

) কোরআন এর যে সব দোয়া আছে তা দোয়ার নিয়তে করতে পারবে

)নাতে রসুল পড়তে পারবে

অনেকে গোসল ফরয অবস্থায় ঘুমাতে পারবে কিনা জানেত চায়, মনে রাখবেন হাদীস শরীফে আছে যে ঘরে নাপাক লোক, কুকুর ছবি থাকে সে ঘরে আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেনা সেজন্য নাপাক হালতে বেশীক্ষণ থাকা উচিত নয় তবে এটা গুনাহও নয় কারন এক সাহাবী প্রশ্ন করলেন এয়া রাসুলাল্লাহ আমি কি নাপাক অবস্থায় ঘুমাতে পারব? প্রিয় নবী বললেন অজু করে ঘুমিয়ে যাও সুতরাং কেহ যদি নাপাক অবস্থায় ঘুমাতে চায় তাহলে সে অজু করে ঘুমাতে পারবে, তবে সে ক্ষেত্রে আপনার ঘরে রহমতের ফেরেশতা আসবে না 

জীবনে সুখ শান্তির জন্য বরকতের জন্য বেশী বেশী দোয়া করবেন, আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন নিশ্চয়ই আল্লাহ বান্দার দোয়া শুনেন

আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতে এরশাদ করেন

 وَ اِذَا سَاَلَکَ عِبَادِیۡ عَنِّیۡ فَاِنِّیۡ قَرِیۡبٌ ؕ اُجِیۡبُ دَعۡوَۃَ الدَّاعِ اِذَا دَعَانِ

যখন আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে তোমার নিকট জিজ্ঞেস করে, আমি তো (তাদের) নিকটেই, আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার আহবানে সাড়া দেই

 

আবু দাউদ শরীফের ১৪৮৮ নং হাদিস

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ 

" إِنَّ رَبَّكُمْ تَبَارَكَ وَتَعَالَى حَيِيٌّ كَرِيمٌ يَسْتَحْيِي مِنْ عَبْدِهِ إِذَا رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَيْهِ أَنْ يَرُدَّهُمَا صِفْرًا "

নিশ্চয় তোমাদের রব চিরঞ্জীব ও মহান দাতা। বান্দাহ দু হাত তুলে তাঁর নিকট চাইলে তিনি খালি হাত ফেরত দিতে লজ্জবোধ করেন

দোয়া করলে ৩টির যে কোন ১টি হবে

আদাবুল মুফরাদের ৬০৬ নং হাদিস বান্দা যখন দোয়া করে তখন তার দোয়ার প্রতিদান ৩টির যে কোন ১টি হয়

১) সে যা দোয়া করেছে হুবহু তাই পাবে

২) সে যা দোয়া করেছে তা পাবেনা তবে তা আখেরাতের জন্য জমা করে রাখা হবে

৩) সে যা দোয়া করেছে তা পাবেনা তবে তার দোয়ার বরকতে দুনিয়ার কোন মসিবত দুঃখ দুর করে দিবেন।

যাদের দোয়া কবুল হয়না তারা হাশরের মাঠে যখন নিজের আমলনামা দেখবে তখন প্রশ্ন করবেন হে আল্লাহ আমার আমলনামায় এমন কিছু আমল দেখতে পাচ্ছি যা আমি করিনি, তখন বলা হবে তা হল সে সব দোয়া যা তুমি দুনিয়াতে করেছিলে কিন্তু দুনিয়াতে তা কবুল হয়নি। তখন সে আফসুস করে বললে কাশ দুনিয়ায় যদি আমার একটি দোয়াও কবুল না হত কতইনা ভালো হত।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.