রজবের ৩টি খাস আমল, রিজিক বৃদ্ধি, গায়েবী খাজান ধন দৌলত লাভের ওজিফা
রজবের ৩টি খাস আমল, রিজিক বৃদ্ধি, গায়েবী খাজান ধন দৌলত লাভের ওজিফা
আজ ধন দৌলত রিজিক হায়াত তথা জীবনের সকল ক্ষেত্রে বরকত আনয়নের এমন ৩টি আমল ও ওজিফা বলব রজব মাস ব্যাপী এই ওজিফা চালিয়ে যান গোটা জীবন আপনার জীবনে এই ওজিফা ও সুরার বরকতে ভরে যাবে, অভাব দুর হবে, কঠিন বিপদ দুর হবে, রোগ থেকে মুক্তি মিলবে, সবচেয়ে মজার ওজিফা
হল ৩য় টি যেটি করলে আল্লাহর গায়েবি খাজানার চাবির মালিক হয়ে যাবেন। আসুন সবগুলি ওজিফা শিখে নিই।
প্রথম ওজিফাটি হল সুরা এয়াসিনের ওজিফা
যে সুরাটি আল্লাহ তায়ালা হযরত আদম (আ) এর সৃষ্টির ১ হাজার বছর আগেই তেলাওয়াত করেছেন। যখন ফেরেশতারা শুনল তারা বলল তারা কতেইনা সৌভাগ্যবান যাদের উপর এই সুরা নাজিল করা হবে। কত সৌভাগ্যবান হবে সে বুক যাতে এটি মুখস্থ থাকবে। আর কতই সৌভাগ্যবান হবেন সে লোক যারা এটি তেলাওয়াত করবে, পুরা রজব মাসে ফজরের নামাজের পর ১ বার সুরা এয়াসিন
পড়বেন,
এই সুরা পড়লে ১০ খতম কুরআনের সাওয়াব পাবেন, জান্নাতে ৮টি দরজা খুলে যাবে, কঠিন
কাজ সহজ হবে,
হযরত আলী
(রাঃ) হইতে
বর্ণিত, মহানবী
(সাঃ) এরশাদ করেন,
সুরাটি
তেলাওয়াত কর কেননা, এতে
রয়েছে দশটি নিয়ামত।
যেমন-
#
এই সূরা পাঠ
করলে ক্ষুধা ধূরীভূত
হয়। আল্লাহ রিযিকের ব্যবস্থা করে দেন।
#
এই সূরা পাঠ
করিলে পিপাসা দূর
হয়। আল্লাহ পিপাসায় পানির ব্যবস্থা করে দেন
#
যার পরিধেয় বস্র
নেই, তার
বস্রের ব্যবস্থা হয়।
#
বিবাহ হইতে যার
বিলম্ব হয়, তার
বিবাহের ব্যবস্থা হয়।
#
ভয় এবং বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি
পাঠ করলে ভয়
এবং বিপদ হইতে
রক্ষা পাবে।
#
কোন ব্যক্তি কারাগারে আটকা
পড়লে অতি শীঘ্রই
মুক্তি পাবে।
#
মুসাফির ব্যক্তি পাঠ
করলে সফরে বন্ধু
মিলে যায়।
#
কোন কিছু হারিয়ে
গেলে ঐ জিনিস
ফিরে পাওয়া যায়।
#
মুমূষ লোকের পাশে
পাঠ করলে উক্ত
ব্যক্তির মৃত্যু কষ্ট
লাঘব হয়।
#
রোগান্তর ব্যক্তি পাঠ
করলে উক্ত ব্যক্তি
আরোগ্য লাভ হয়।
সুতরাং প্রতিদিন ফজরের পর ১ বার সুরা এয়াসিন পড়বেন
২য় ওজিফা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর ওজিফা
হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহু
বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুসা আলাইহিস সালাম একবার
আল্লাহর কাছে আরজ করেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে এমন
একটি দোয়া শিখিয়ে দিন, যার মাধ্যমে আমি আপনার
জিকির/স্মরণ করবো এবং আপনার কাছে প্রার্থনা করবো। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন- হে
মুসা! তুমি বল- لَا إِلَهَ إِلَّا الله ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। হজরত মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, হে আল্লাহ! আপনার সকল বান্দাই তো এই জিকির করে। আল্লাহ
রাব্বুল আলামিন বললেন, তুমি বল- لَا إِلَهَ إِلَّا الله ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’।
হজরত
মুসা আলাইহিস সালাম বললেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি ছাড়া কোনো
ইলাহ নেই।’ কিন্তু আমি চাইছি আমাকে
বিশেষ একটি দোয়া শিখিয়ে দেবেন; যা কেবল আমার জন্য হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বললেন, হে মুসা! আমি ছাড়া সাত
আসমান, সাত জমিন ও তার মাঝে যা রয়েছে সবকিছু যদি
এক পাল্লায় থাকে আর لَا إِلَهَ إِلَّا الله ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অপর পাল্লায় থাকে তাহলে لَا إِلَهَ إِلَّا الله ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’-এর পাল্লা ভারি হবে।'
(মুসতাদরাকে
হাকেম)
মানুষের শরীরে ১২টি অঙ্গ আছে যা গুনাহ করে। ২ হাত, ২ পা, ২ চোখ, ২ কান, দেমাগ, জিহ্বা, দিল ও লজ্জাস্থান। এই ১২টি অঙ্গ আছে যা গুনাহ করে।
আর আমরা যদি কলমা তৈয়্যবকে দেখি (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এখানে ১২টি হরফ হয়। আর ১২টি অঙ্গ আছে যা দ্বারা গুনাহ হয়। সুতরাং যে বান্দা (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এর ওয়াজিফা বা জিকির বেশী বেশী করবে। আল্লাহ ১২ অঙ্গ দ্বারা কৃত সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিবেন।
কোন কোন ওলামা বলেন বছরে ১২টি মাস হয়, আর যে বান্দা বেশী বেশী লা ইলা ইল্লাল্লাহর
জিকির করে আল্লাহ তায়ালা এই ১২ হরফের বরকতে ১২ মাসের কৃত সকল গুনাহ মাফ করে দেন।
কিছু ওলামা লিখেছেন জাহান্নামের
৭টি দরজা, আর সম্পূর্ণ
কলমাতেও ৭টি শব্দ আছে যেমন লা ইলাহা ইল্লা ল্লাহ এতে ৪টি শব্দ, আর মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ এতে ৩টি শব্দ।সুতরাং যে বান্দা লা ইলাল্লাহ
ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর
রাসুলুল্লাহ পড়বে আল্লাহ তার বদৌলতে তার জন্য ৭টি জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দিবেন।
এই কলমায় ২টি অংশ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এতে তৌহিদের পয়গাম আছে আর মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ
তে রেসালতের
পয়গাম আছে।
অতএব হাটতে বসতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
পড়বেন তাহলে আপনার জন্য দুনিয়া আখেরাতের
সফলতার দুয়ার খুলে যাবে।
তৃতিয় ওজিফাটি খুবই দামি আর তা হল নামাজের ওজিফা
আপনারা হয়ত জানেন দুনিয়াতে
একটি মাস্টার কি আছে, যা ইউরোপ আমিরিকার উন্নত দেশসমুহে পুলিশ
প্রসাসনের কাছে থাকে, সে চাবিটি খুবই আযব চাবি। যে তালাতে লাগানো
হয় সে তালাই খুলে যায়।
যেরুপ দুনিয়ার মানুষ যে
কোন তালা খোলার জন্য মাস্টার কি বানিয়ে রেখেছে, তেমনি আল্লাহর খাজানা
খোলারও একটি মাস্টার কি আছে তা হল নামাজ। আজকাল সব জায়গায় এটিএম মেশিন থেকে মানুষ
কাড ঢুকিয়ে পাসওয়ার্ড টাইপ করে যখন তখন টাকা বের করে নেয়, নামাজের উদাহারণও ঠিক একই।
নামাজ হল আল্লাহর খাজানা থেকে নেয়ামত হাছিল করার একটি মাস্টার কি।
যখনই প্রায়োজন হবে, হাজত হবে ২ রাকাত নামাজ
পড়ে আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ তায়ালা খাজানার দরজা খুলে দিবেন।
অনেক সময় মা বাবা হজ্বে
যাওয়ার সময় সন্তানদেরকে ঘরের সব চাবি বুঝিয়ে দেয়, কোথায় কি পাবে কিভাবে
খুলবে সব বুঝিয়ে দেয়, যখন তারা সব বুঝে নেয় তখন মা বাবার মনে
শান্তনা আসে যে এখন তারা সব বুঝে নিয়েছে আর কোন কিছু তাদের অভাব হবে না।
তেমনি আমাদের দয়াল নবীও
দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার আগে উম্মতের জন্য চিন্তায় ছিলেন আর সে চিন্তামুক্তির জন্য
তিনি উম্মতকে আল্লাহর রহমত ও নেয়ামত হাসিলের চাবি বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন
যেহেতু এই নামাজ আল্লাহর
কাছ থেকে নেয়ামত হাসিল করার চাবি তাই হুযুর (দঃ) দুনিয়া থেকে ইন্তেকাল করার আগে এটাই চেয়েছেন
যেন হুজুরের উম্মত এই নামাজ শিখে নেয় আর সে নামাজ দ্বারাই আল্লাহর খাজানার দরজা
খুলতে পারে,
তাই হুযুর (দ) ফরমান (ছাল্লু কামা রায়াইতুমুনি উছাল্লি) তোমরা নামাজ পড় যেমনটি
আমাকে নামাজ পড়তে দেখ।
আমার নামাজের মত যদি তোমরা
উম্মতেরা নামাজ পড় তাহলে তোমরা এই নামাজ পড়ে আল্লাহ কাছে যা চাইবে আল্লাহ তাই দান
করবেন। সাহাবায়ে কেরামের এটাই অভ্যাস ছিল যে কোন
সমস্যা হলেই ২ রাকাত নফল পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন আর আল্লাহ তায়ালা সে সমস্যা
সমাধান করে দিতেন।
যখন থেকেই আমরা নামাজ পড়া
ভুলে গেছি তখন থেকেই আমাদের সমস্যা সমাধানও হয়না। অথচ আল্লাহ তায়ালা নিজেই এরশাদ
করেন (ওয়াসতাঈনু
বিসসবরে ওয়াসসালাত)
তোমরা সবর ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।
এই রজব মাস নামাজ ফরয
হওয়ার মাস তাই প্রতি রাতে যদি সম্ভব হয় ঘুম থেকে উঠে তাহাজ্জুদের নিয়তে ১২ রাকাত
নামাজ পড়বেন আর দোয়া করবেন দেখবেন রজব মাস শেষ না হতেই আপনার সকল সমস্যা শেষ হয়ে
গেছে।
কোন মন্তব্য নেই