রমজানের সর্বশ্রেষ্ঠ কোরআনী ওজিফা সব সমস্যা সমাধানের বেস্ট ওজিফা
রমজানের সর্বশ্রেষ্ঠ কোরআনী ওজিফা সব সমস্যা সমাধানের বেস্ট ওজিফা
বিসমিল্লা হির
রাহমানির রাহিম
প্রিয় বন্ধুরা
আজ রমজানের যে ওজিফাটি দিব এ ওজিফাটির ব্যপারে আল্লাহ বলেন যে এই ওজিফাটি ধারন করতে
পারবে কোন ষড়যন্ত্রকারী তার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা
তার সব আমল
আমি কবুল কবর
তার জন্য আসমান
ও জমিনের বরকতের সব দরজা খুলে দিব
তার জীবনের
সব পেরেশানি আমি দুর করে দিব
তাকে গায়েব
থেকে রিজিক দান করব
তার সকল কাজ
সহজ করে দিব
এবং তার সকল
গুনাহ ক্ষমা করে দিব
প্রতিটি কথা
কুরআন ও হাদীসের রেফারেন্স সহ বননা করব, ওজিফাটি বুঝার জন্য
অবশ্যই আমাদের সাথে শেষ পযন্ত থাকবেন
হযরত আবু যরকে
নবীজি একটি উপদেশ দিলেন তখন হযরত আবু যর (রা) বললেন নবীজির এই কথাটি আমার ঘরের দেওয়ালে লিখে রাখা দরকার যাতে সবসময় সে কথাটির দিকে নজর পরে। কথাটি
হল
তিরমিজির ১৯৮৭
নং হাদিস
عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم " اتَّقِ اللَّهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ
الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ "
আবূ যার
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ তুমি যেখানেই
থাক আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর, মন্দ
কাজের পরপরই ভাল কাজ কর, তাতে মন্দ দূরীভূত হয়ে যাবে এবং
মানুষের সাথে উত্তম আচরণ কর।
যদি আমরা যেখানেই
থাকি সেখানেই এই চিন্তা করি যে অন্য কেহ না দেখলেও না জানলেও আল্লাহ তায়ালা আমাকে দেখছেন।
তবে আমাদের
জন্য গুনাহ থেকে বাঁচা সহজ হবে এবং তাকওয়া অর্জন হবে
আমার আল্লাহ
আমাকে দেখছেন এই আকিদা যে ধারন করবে সে গুনাহ থেকে বেঁচে যাবে যেমন হযরত ইউসুফ (আ) কে যখন জুলেখা গুনাহের দিকে ডাকল তখন হযরত ইউসুফ
(আ) জবাব দিয়েছেন আমার আল্লাহ আমাকে দেখছেন।
হযরত জুনায়েদ
বোগদাদি যখন তার মামা হযরত সিররি সকতি (রহ) এর কাছে গেলেন – সিররি সকতি ছিল জুনায়েদ বোগদাদির মামা, বললেন মামা আমাকে
ওজিফা দিন ছবক দিন, তখন সিররি সকতি বললেন তুমি এখনো ছোট ছবক পালন
করতে পারবেনা, তবে আমি তোমাকে ১টি ওজিফা দিচ্ছি তা সব সময় বলতে
থাক, তা হল আল্লাহ আমাকে দেখছেন, আল্লাহ
আমাকে দেখছেন, হযরত জুনায়েদ বোগদাদি ফরমান আমার জীবনের প্রথম
যে ছবক আমাকে আমার মামা সিররি সকতি দিয়েছেন সে ছবকই আমার জীবনে কাজ করে গেছে। তাকওয়া
লাভের জন্য এই একটি ছবকই যথেষ্ট। আল্লাহ
আমাকে দেখছেন
মানুষ রোজা
রাখে একমাত্র আল্লাহর জন্য, কারন সে যদি আল্লাহর
জন্য রোজা না রাখত তাহলে সে চুরি করে করে ঘরে খেয়ে নিতে পারত, যেহেতু সে মুখে তালা লাগিয়ে দিয়েছে সেহেতু সে বিশ্বাস করে আল্লাহ আমাকে দেখছেন,
এই শিক্ষা যদি রোজাতে ধারন করতে পারি তা সারা জীবনও আমাদেরকে ধারন করতে
হবে কারন আল্লাহ শুধু রমজানে দেখেন তা নয় বরং তিনি সারা বছর দিনে রাতে আলোতে অন্ধকারে
সব জায়গায় দেখেন। এই
আকিদা যদি পাকা হয়ে যায় তাহলে বান্দা আর গুনাহ করবেনা, লুকিয়ে লুকিয়ে পাপ করবেনা,
এটাই রোজার
শিক্ষা সুরা বাকারায় আল্লাহ ঘোষনা করেন লায়াল্লাকুত তাত্তাকুন- যাতে তোমরা পরহেযগার হতে পার মুত্তাকি হতে পার।
আর যে
পরহেযগার হতে পারবে তার জন্য কি কি পুরস্কার আছে পবিত্র কুরআন থেকে একনজরে দেখে
নিন
১) তাকওয়া অবলম্বনকারীকে কেহ ক্ষতি করতে পারবেনা
আল্লাহ তায়ালা সুরা ইমরানের ১২০ নং আয়াতে এরশাদ করেন
وَإِن تَصْبِرُواْ وَتَتَّقُواْ لاَ
يَضُرُّكُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا
যদি
তোমরা ধৈর্য্যধারণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, তবে যারা
তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে সে চক্রান্ত তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। [সুরা
ইমরান - ৩:১২০]
২) মুত্তাকির আমল আল্লাহ কবুল করেন
যদি আমরা তাকওয়াবান হই পরহেযগার হই তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমলসমুহ কবুল করবেন যেমন সুরা মায়েদার ২৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللّهُ مِنَ
الْمُتَّقِينَ
আল্লাহ
মুত্তাকিদের আমলসমুহ কবুল করেন। [সুরা
মায়েদা - ৫:২৭]
৩) মুত্তাকির জন্য আল্লাহ আসমানের জমিনের বরকতের দরজা খুলে দিবে
যদি রমজানের রোজার মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করতে পারি তাহলে আসমান জমিনের রিজিকের বরকতের সব দরজা আল্লাহ তায়ালা খুলে দিবেন সুরা আরাফের ৭৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى
آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ
আর
যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন করত, তবে আমি
তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। কিন্তু তারা মিথ্যা
প্রতিপন্ন করেছে। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকড়াও করেছি তাদের কৃতকর্মের বদলাতে। [সুরা
আরাফ - ৭:৯৬]
৪) মুত্তাকির সকল পেরেশানি দুর হয়ে যাবে
যদি আমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারি এই রোজার মাধ্যমে তাহলে আমাদের যত পেরেশানি আছে সব পেরেশানি দুর করে দিবেন মহান আল্লাহ সুরা তালাকের ২য় আয়াতে বলেন
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ
مَخْرَجًا
আর যে
আল্লাহকে ভয় করে,
আল্লাহ তার জন্যে সকল পেরেশানি থেকে নিস্কৃতির পথ করে
দেবেন। [সুরা তালাক - ৬৫:২]
৫) মুত্তাকি ব্যক্তির জন্য আল্লাহ গায়েব থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দিবেন
যারা
তাকওয়া অজন করতে পারবেন তাদের জন্য আল্লাহ গায়েব থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে
দিবেন যেমন সুরা তালাকের ৩ নং আয়াতে
আল্লাহ বলেন
وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا
يَحْتَسِبُ
এবং
তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন।
[সুরা তালাক - ৬৫:৩]
৬) সকল কাজ সহজ করে দিবেন
যদি আমরা তাকওয়া অজন করতে পারি তাহলে আমাদের সকল কাজ আল্লাহ সহজ করে দিবেন যেমন
#চাকরী সহজ করে দিবেন #ব্যবসা সহজ করে দিবেন #মামলা মোকাদ্দামা থাকলে মুক্তি সহজ করে দিবেন # বিয়ে শাদি সহজ করে দিবেন #সন্তান সন্ততি সহজ করে দিবেন # রুজি রোজগারের পথ সহজ করে দিবেন মোট কথা যে কাজই করবেন সহজ হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ
যেমন আল্লাহ তায়ালা সুরা তালাকের ৪ নং আয়াতে
وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ
مِنْ أَمْرِهِ يُسْرًا
যে
আল্লাহকে ভয় করে,
আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
৭) তাকওয়া অবলম্বনকারীর সকল গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দিবেন
সুরা আনফানের ২৯ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
يِا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إَن
تَتَّقُواْ اللّهَ يَجْعَل لَّكُمْ فُرْقَاناً وَيُكَفِّرْ عَنكُمْ سَيِّئَاتِكُمْ
وَيَغْفِرْ لَكُمْ
হে
ঈমানদারগণ তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় করতে থাক, তবে তোমাদের মধ্যে হক
বাতিলের ফয়সালা করা সহজ করে দেবেন এবং তোমাদের থেকে তোমাদের পাপকে সরিয়ে দেবেন
এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। [সুরা আনফাল - ৮:২৯]
আল্লাহ পাক
আমাদেরকে রমজান মাস ব্যাপী সিয়াম সাধনা ও তাকওয়া তথা পরহেযগারী অর্জন করার তৌফিক
দান করুন আমিন
কোন মন্তব্য নেই