বিনা হিসাবে জান্নাত লাভের দোয়া ও আমল

 

বিনা হিসাবে জান্নাত লাভের দোয়া ও আমল



হাশরে ৪ প্রকার হিশাব গ্রহণ করা হবে আপনি মিলিয়ে দেখুন আপনি কোন দলে এবং কি দোয়া ও আমল করলে আমদের হিসাব সহজ হবে কি আমল করলে আমরা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারব- সে ৪ প্রকারের হিসাবের বিস্তারিত বিবরণ হল-

) বিনা হিসাবে জান্নাত- মিশকাত শরীফের হাদিস হযরত আবু উমামা (রা) থেকে বণিত, রাসুলুল্লাহ () বলেন আমার প্রতিপালক আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তোমার উম্মতের মধ্যে সত্তর হাজার উম্মত বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে- প্রতি হাজারের সাথে আরো ৭০ হাজার থাকবে।  তাহলে মোট হবে ৪৯৭০০০ (চার লক্ষ সাতানব্বই হাজার) এছাড়া আল্লাহর কুদরতি ৩ মুষ্টি লোক বিনা হিসাবে জান্নাতে দিবেন। আল্লাহ আমাদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করুন আমিন।

শোয়াবুল ঈমানের হাদিস হাশরের মাঠে একজন ঘোষনাকারী বলবে সেসব লোকেরা কোথায় যাদের পিঠ বিছানা থেকে পৃথক থাকত? এ ঘোষনা শুনে খুব অল্প সংখ্যক লোক দাঁড়াবে, তাদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

) যাদেরকে বিনা হিসাবে জাহান্নামে দিবে তারা হল যারা কাফের, মুরতাদ, মুশরিক, যাদের আমলনামায় কোন নেকি থাকবেনা। তাদেরকে বিনা হিসাবে জাহান্নামে দেয়া হবে

) যাদের হিসাব সহজ হবে, আমাদের নবীজি সহজ হিসাব এর জন্য দোয়া করতেন (আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবান এয়াসিরা) হে আল্লাহ আমার হিসাব অতি সহজ করুন।

আয়শা (রা) প্রশ্ন করেন এয়া রাসুলাল্লাহ সহজ হিসাব কি? তিনি বলেন আমালনামা শুধু একবার দেখে যাচাই বাছাই না করে ক্ষমা করে দেয়া। #বুখারী ও মুসলিমের হাদিস- অতি গোপনে বান্দাকে আল্লাহ প্রশ্ন করবেন তুমিকি এই এই গুনাহ করেছ? তখন বান্দা তা স্বীকার করবে আর মনে মনে ভাববে হায় আমি ধ্বংস হয়ে গেছি, কিন্তু আল্লাহ সে মুমিনকে বলবে আমি দুনিয়াতেও তোমার গুনাহসমুহ গোপন রেখেছি আজও গোপন রাখব এবং তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। অতপর নেকির আমলনামা তাকে দেয়া হবে।

তিরমিজি শরীফের হাদিস  আনাস (রা) হতে বর্ণিত, কিয়ামতে প্রতিটি মানুষের ৩টি দফতর থাকবে, ১টি নেকীর, ১টি গুনাহের, ১টি নেয়ামতের। ছোট নিয়ামতটিকে আল্লাহ বলবেন তোমার মূল্য এই বান্দার নেক আমল থেকে নিয়ে নাও। তখন ছোট নেয়ামতটি তার মূল্য হিসেবে বান্দার সব নেক আমল নিয়ে নিবে এর পরে বলবে হে আল্লাহ আপনার ইজ্জতের কসম এখনো আমি আমার পুরোপুরি মূল্য নিতে পারিনি। এরপর থেকে যাবে গুনাহের দপ্তর। আর সেসব নেয়ামতের মূল্য এখনো আদায় হয়নি। নেক আমল তো সব ছোট নেয়ামতের মূল্যের বিনিময়েই শেষ হয়েছে। এখন আল্লাহ যদি কোন বান্দাকে দয়া করে জান্নাত দিতে চান তখন সে বান্দাকে বলবেন, হে আমার বান্দা আমি তোমার নেকি বৃদ্ধি করে দিলাম এবং তোমার গুনাহসমুহ মাফ করে দিলাম।

(আল্লাহুম্মা হাসিবনি হিসাবান এয়াসিরা) আল্লাহ আমাদের হিসাব সহজ করুন আল্লাহ আমাদেরকে ৩য় প্রকারের দলের অন্তর্ভূক্ত করুন আমিন

) যাদের হিসাব কঠিন হবে- যাদেরকে প্রশ্ন করা হলে তারা বলবে আমি এসব গুনাহ করি নাই, তখন তার বিরুদ্ধে সে যে স্থানে অপরাধ করেছিল সে স্থান, তার সাথে থাকা ফেরেশতা কেরামান কাতিবিন, তার হাত, তার পা, তার বিরুদ্ধে সাক্ষি দিবে। এরপর সে বাটপারি করে বলবে হে আল্লাহ আপনি যে প্রমাণ করেছেন তাও ঠিক আর আমি যে বলেছি তাও ঠিক? কারন এসব গুনাহ আমি নিজে করিনি বরং আমার গুরু, আমার পন্ডিত, আমার পুরোহীত, আমার নেতা আমাকে বলেছে তাই করেছি। সুতরাং তাদেরকেও আমার আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করুন

তখন জালেমরা কাফের মুশরিকরা একে অপরকে দোষারোপ করবে সে চিত্র আল্লাহ সুরা সাবা ৩১-৩৩ নং আয়াতে ফুটে উঠেছে

সবশেষে আল্লাহ ফেরেশতা দেরকে নির্দেশ দিবেন

خُذُوهُ فَغُلُّوهُ

ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, [সুরা হাক্বকাহ - ৬৯:৩০]

ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ

অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। [সুরা হাক্বকাহ - ৬৯:৩১]

ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ

অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে। [সুরা হাক্বকাহ - ৬৯:৩২]

অতএব আল্লাহ তায়ালার কাছে আমাদের দোয়া করা উচিত আল্লাহ যেন আমাদেরকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করেন অথবা আমাদের হিসাব যেন সহজ করেন। সে জন্য নবীজির শিখানো দোয়া পড়া দরকার, ধোকাবাজ দুনিয়াদার কাফের মুশরিক নেতাদের ধোকা থেকে বেঁচে থাকা দরকার এবং বিশেষ করে রাতে উঠে নফল এবাদতে মশগুল হওয়া দরকার।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.