২ রাকাত নামাজ পড়ে ১টি দোয়া পড়লে আল্লাহ ফেরেশতা পাঠিয়ে গায়েবী সাহায্য করেন।

 ২ রাকাত নামাজ পড়ে ১টি দোয়া পড়লে আল্লাহ ফেরেশতা পাঠিয়ে গায়েবী সাহায্য করেন। 

আপনি যত কঠিন বিপদে আক্রান্ত হউন না কেন আল্লাহ বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন, আপনার জন্য আসমান জমিনের বরকতের দরজা সমুহ আল্লাহ তায়ালা খুলে দিবেন, সে নামাজ কিসের নামাজ, সে দোয়াটি কি এবং সে আমলটি কি? আল্লাহর এত বড় বড় নিয়ামত লাভের জন্য ৩টি উপায় আছে সে উপায় গুলি কি আজকে আমি বিস্তারিত আলোচনা করব। প্রত্যেক নর নারী ছোট বড় সকলের জন্য আজকের আমলটি খুবই জরুরী। প্রিয় বন্ধুরা আপনি যেখানেরই হউননা কেন, চাই বান্দা কালো হউক চাই সাদা, চাই আরবী হউক চাই অনারবি। আপনার জন্য আসমানের বরকতের দরজাসমুহ খুলে দিবেন। হযরত যায়েদ বিন আস (রা) একজন সাহাবি ছিলেন, তিনি একবার মক্কা মুকাররামা থেকে মদিনা যাচ্ছিলেন, তিনি বলেন আমি একলা ছিলাম এবং ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তখন একজন খচ্চরওয়ালাকে দেখে তাকে বললাম আমাকে আমার গন্তব্যে পৌঁছে দিন। খচ্চরওয়ালা ভাড়ার বিনিময়ে তাকে গন্তেব্যে পৌঁছে দিতে রাজি হল। আমি খচ্চরে বসে গেলাম, আমি রাস্তা চিনতাম না,  সে আমাকে নিতে নিতে এমন স্থানে নিয়ে গেল, যেখানে অনেক গুলি লোকের লাশ ও কংকাল পরে ছিল।  আমি এসব দেখে ভীত হয়ে গেলাম, সে সময় সে খঞ্জর বের করল, আর বলল তোমার কাছে যা যা আছে সব আমাকে দিয়ে দাও, আমি একজন ডাকাত আর আমি এভাবে মানুষকে লুট করি আর শেষে তাকে হত্যা করে এখানে ফেলে রাখি। আমি ডাকাতকে প্রশ্ন করলাম তুমি আমার সব মাল নিয়ে নাও কিন্তু হত্যা কেন করবে? সে বলল আমি এসব লোককে যদি হত্যা না করতাম তাহলে তারা আমার এই কাজে এক সময় বাঁধার কারন হবে তাই আমি কাউকে বাঁচিয়ে রাখিনা। তখন সাহাবী বলেন আচ্ছা যদি তুমি একান্তই আমাকে হত্যা করতে চাও তার আগে আমাকে ২ রাকাত নামাজ পড়ার সুযোগ দাও। ডাকাত বলল ঠিক আছে পড় তবে মনে রাখবে তোমার আগে যাদেরকে হত্যা করেছি এখানে যাদের কংকাল পরে আছে তারাও ২ রাকাত নামাজ পড়ার খাহেশ করেছে নামাজও পড়েছে কিন্তু তাদের সে নামাজ তাদেরকে রক্ষা করতে পারেনি।  হযরত জায়েদ বিন আস নামাজের জন্য দাঁড়ালেন আর ডাকাত পিছনে খঞ্জর নিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। যখন নামাজ শেষ হল ডাকাত তার খঞ্জর নিয়ে যখন সাহাবীকে হত্যা করতে উদ্ব্যত হল তখন গায়েবী আওয়াজ ভেসে আসল খবরদার তাকে হত্যা করবেনা, এই নির্জন এলাকায় এমন আওয়াজ শুনে ডাকাত ভীত হয়ে গেল, কিন্তু পরক্ষনেই সে আমার যখন হত্যা করতে উদ্বত্য হল তখন আবার আরো ভয়ংকর ভাবে আওয়াজ ভেসে আসল (লা তাকতুলু) খবরদার তাকে হত্যা করবেনা। এবারও সে চারদিকে দেখতে লাগল কাউকে না দেখে যখন খঞ্জর দিয়ে হত্যা করবে তখন হঠাৎ একজন ঘোর সওয়াল গায়েব থেকে সেখানে হাজির হয়ে গেল আর এমনভাবে ডাকাতকে বল্লম মারল সাথে সাথে সে ডাকাত সেখানে নিহত হল। হযরত জায়েদ (রা) মাহফুজ হয়ে গেলেন আর তিনি সে ঘোড়সওয়ারকে প্রশ্ন করলেন আপনি কে? এই নির্জন স্থানে আমাকে এই ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা করলেন? তখন তিনি জবাব দিলেন আমি আল্লাহর সৃষ্টি এক ফেরেশতা, আর আপনি নামাজের পর এয়া আরহামার রাহিমিন বলে আল্লাহ ডাক দিয়েছেন, আর যারা এয়া আরহামার রাহিমিন বলে আল্লাহকে ডাক দেন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে সাহায্য করার জন্য আমাকে নিয়োজিত করেন।  আপনি যখন প্রথমবার বলেছেন (এয়া আরহামুর রাহীমিন) তখন আমি আসমানে ছিলাম তখন হকুম হল যাও আমার বান্দাকে হেফাজত কর, যখন ২য় বার (এয়া আরহামুর রাহীমিন ) বলেছেন তখন আমি দুনিয়ার আসমানে চলে আসলাম, সে জন্য বেশী জোরে সে আমার আওয়াজ শুনেছে,  আর যখন ৩য় বার এয়া আরহামুর রাহিমিন বলে ডাক দিলেন তখন আমি এখানে পৌঁছে সে ডাকাতকে হত্যা করে আপনাকে হেফাজত করলাম। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা আপন বান্দাদেরকে হেফাজত করেন যারা মুত্তাকি হন। চাই সাদা হউক, কালো হউক, আরবী হউক অনারবি হউক, বাংলাদেশী হউক বা অন্য কোন দেশের বাসিন্দা হউক ফরমায়েছেন (মান কানু আইশু কানু) যেই হউক যেখানের বাসিন্দা হউক আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন

وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُواْ وَاتَّقَواْ لَفَتَحْنَا عَلَيْهِم بَرَكَاتٍ مِّنَ السَّمَاء وَالأَرْضِ

আর যদি সে জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং পরহেযগারী অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের প্রতি আসমানী ও পার্থিব নেয়ামত সমূহ উম্মুক্ত করে দিতাম। [সুরা আরাফ - ৭:৯৬]

এখন আপনি এই বরকত লাভ করার জন্য কি করবেন? সলফে সালিহিন বলেছেন এই বরকত লাভের জন্য তাকওয়া অজন করতে হবে আর তাকওয়া লাভ করার জন্য ৩টি আসবাব আছে যেমন () বেশী বেশী রোজা রাখার দ্বারা তাকওয়া অর্জন হয় যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে (লাআল্লাকুম তাত্তাকুন) যাতে তোমরা তাকওয়া অজন করতে পার।  () যারা সত্যবাদী নেক ও আল্লাহওয়ালাদের ছোহবতে থাকবে আল্লাহ তাকে তাকওযা এখতেয়ার করার তৌফিক দান করেন। (এয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানুত্তাকুল্লাহা ওয়াকুনু মায়াস সোয়াদিকিন) হে ঈমানদারগন তাকওয়া অবলম্বন কর ও সত্যবাদীদের ছোহবত এখতিয়ার কর আর সত্যবাদীদের সাথে থাকলে তাকওয়া অর্জীত হবে। নবী করিম () এরশাদ করেন (লিকুল্লি শায়্যিন মায়াদিনুন) প্রত্যেক জিনিষের একটি কান হয়ে থাকে, (ওয়া মায়াদিনিত তাকওয়া কুলুবুল আরিফিন) আর তাকওয়ার কান হল আরিফিনদের দিল।  সেজন্য যারা এসব আরেফ বিল্লাহ আল্লাহওয়ালাদের ছোহবতে থাকে তারাও সে তাকওয়ার নিয়ামত লাভ করতে পারে। () আল্লাহর কাছে তাকওয়া লাভের দোয়া করা।  নবী করিম () দোয়া শিখিয়েছেন (আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা ওয়াত্তুকা ওয়াল আফাফা ওয়াল গিনা) মনে রাখবেন মুত্তাকি বান্দার সাথে আল্লাহর সাহায্য থাকে। ফেরাউন এমন একজন জালেম বাদশা ছিল যে বনি ইসরাইলের হাজারো বাচ্চাকে কতল করিয়েছে, এমন জালেম বাদশাও যখন একবার ফেসে গেলো, নীল নদের পানি শুকিয়ে গেল, যখন লোকজন বাদশার কাছে এসে বলল, আপনি নিজেকে খোদা দাবী করেন এখন আমরা পানির জন্য মারা যাচ্ছি, আপনি আমাদের জন্য পানির ব্যবস্থা করুন, ফেরাউন তাদেরকে বলে দিল ৭ দিনের মধ্যে পানি চলে আসবে, এভাবে যখন ৫ দিন চলে গেল তখন ফেরাউন টেনশনে পরে গেল কারন যদি পানি না আসে তাহলে তার খোদাই দাবীর মুখোশ খুলে যাবে, নিরুপায় হয়ে ফেরউন রাতের আধারে সম্পূণ একাকি নীল নদ এর নিকট চলে আসল, সে দোয়া করতে লাগল হে আল্লাহ আমি মানুষের কাছে নিজেকে খোদা দাবী করি কিন্তু আমি মন থেকে স্বিকার করি আসল খোদা একমাত্র তুমি। হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে ফরিয়াদ করছি আমার ইজ্জত বাঁচান আর আমাদের নীল দরিয়ার এই সমস্যা দুর করে দাও। সে নিজের দোয়া করা শেষ করার আগেই নীল দরিয়ায় পানি আসা শুরু হয়ে গেল। এবার চিন্তা করুন ফেরাউনের মত একজন জালেম এর দোয়া যদি আল্লাহ কবুল করেন, তেমনি শয়তান যে আল্লাহর দুষমন সেও আল্লাহর কাছে দোয়া করেছে (রব্বি আনজিরনি ইলা এয়াউমি ইউবআছুন) হে আল্লাহ আমাকে কিয়ামত পযন্ত হায়াত দাও, আল্লাহ তার সে ফরিয়াদও কবুল করে নিলেন।  যে দয়াল প্রভু ফেরাউনের মত জালেম এর দোয়া শয়তানের মত মরদুদের দোয়া কবুল করেন তাহলে আমারা যারা কলমা পড়ি আমরা যারা আস্তিক আমরা যদি আল্লাহর কাছে দোয়া করি তাহলে আল্লাহ কেন আমাদের দোয়া কবুল করবেন না? যিনি শত্রুকেও বঞ্চিত করেন না সে মহান দয়ালু আল্লাহ বন্ধুকে কিভাবে বঞ্চিত করবেন? আসুন আমরাও আল্লাহ কাছে দীল থেকে দোয়া করি আল্লাহর কাছে কোন কিছু দিল থেকে চাই আল্লাহ অবশ্যই দিবেন। ২ রাকাত নামাজ সালাতুল হাজত পড়ে চাওয়া যায়, বিপদে পরে এয়া আরহামার রাহিমিন বলে চাওয়া যায় ইনশা আল্লাহ আল্লাহর গায়েবী সাহায্য নেমে আসবে।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.