সুরা আদ দুহার ফজিলত আমল ৭টি পাওয়ারফুল ওজিফা। surah ad duha কঠিন সমস্যা সমাধানের আমল।
আজ সুরা দোহার ফজিলত ও আমল ওজিফা সম্পর্কে আলোচনা করব। ইদানিং অসংখ্য লোক ডিপ্রেশনে ভুগছেন, আমাদের কাছে অনেক ভাই বোন বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করেন কারো কর্মচারীর ইস্যু, কারো সন্তানের ইস্যু, কারো স্ত্রীর ইস্যু, কারো স্বামীর ইস্যু, কারো বিয়ে হচ্ছেনা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর সুখবর হল সুরা দোহাতে এসব সমস্যা বিশেষ করে ডিপ্রেশনের রুহানি চিকিৎসা আছে যারা খুব কঠিন সময় পার করছেন তাদের উচিত সুরা দোহা পাঠ করা।এছাড়া সুরা দোহার মধ্যে ৯টি ক্বাফ আছে এই ৯টি ক্বাফের মাধ্যে ১টি ওজিফা আছে যা করলে সকল জায়েজ হাজত পুরণ হবে
তাছাড়া মুফতি মুনির আকন এর বয়ান থেকে সুরা দোহার ৬টি অত্যন্ত মূল্যবান ওজিফাও শেয়ার করব যা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনে প্রয়োজন হয় তাই অবশ্যই মনযোগ দিয়ে আলোচনাটি শোনার অনুরোধ রাখব
সুরা ওয়াদ দ্দোহা মক্কী সুরা এর মধ্যে ১টি রুকু ১১টি আয়াত ৪০টি কলমা এবং ১৭২টি হরফ আছে, এই সুরাকে ওয়াদ্দোহা বলার কারন হল – চাশতের সময়কে আরবীতে দোহা বলা হয়, আর এই সুরার প্রথম আয়াতে আল্লাহ তায়ালা চাশতের ওয়াক্তের কসম খেয়েছেন আর এই কারনে এই সুরার নামকরন করা হয়েছে সুরা ওয়াদ্দোহা। ওয়াদ্দোহা এর তরজুমা করতে গিয়ে ইমাম রাজি লিখেন যা খুবই চমৎকার তা হল ওয়াদ্দোহা-(হে নবী) কসম তোমার উজ্জ্বল চেহেরার, (ওয়াল্লাইলি ইজা সাজা) কসম তোমার কালো জুলফির। (সুবহানাল্লাহ)
(মা ওয়াদ্দায়াকা রাব্বুকা ওয়ামা কালা) আপনার রব আপনাকে ছেড়ে দেননি, আপনার উপর অসন্তুষ্টও হননি। মুলত কিছুদিন যাবৎ হুজুর (দ) এর কাছে অহি আসা বন্ধ ছিল, তখন মক্কার কোরাইশরা বলতে লাগল মুহাম্মদ এর রব মুহাম্মদকে ছেড়ে দিয়েছে এ কথা শুনে হুজুর (দ) খুবই মর্মাহত হলেন, একদিন আম্মা খদিজাও বলে ফেললেন এয়া রাসুলাল্লাহ আল্লাহ কি আপনাকে ছেড়ে দিয়েছেন?
খদিজা যখন বললেন তখন হুজুর (দ) বেশী চিন্তিত হয়ে গেলেন, তখন সাথে সাথে জিবরিল হাফাতে হাফাতে এসে বলতে লাগল মানুষ যেভাবে দৌঁড়ে এসে হাফাতে হাফাতে বলে সে স্টাইলে জিবরাইলও পড়তে লাগলেন (ওয়াদ্দোহা ওয়াল্লাইলি ইজা সাজা)
এটাই একমাত্র সুরা যা জিবরাইল নবীজির মনকে শান্ত করার জন্য নবীজির হতাশা দুশ্চিন্তা দুর করার জন্য খুব তাড়াহুড়া করে পাঠ করছিলেন এই সুরাতে আমাদের জন্য বড় বড় ওজিফা ও শিক্ষা আছে প্রথমত হুজুর (দ) এর জীবনেও কঠিন দুশ্চিন্ত হতাশার সময় এসেছে তেমনি প্রত্যেক মানুষের জীবনেও দুশ্চিন্তা হতাশা আসা স্বাভাবিক প্রত্যেক অন্ধকারের পর আলো আছে যা এই সুরার মধ্যে আমাদের জন্য ২য় শিক্ষা সে জন্য আল্লাহ তায়ালা চাশতের সময়টির কসম করেছেন যে কারো জীবনে খারাপ সময় আসতে পারে কিন্তু সে খারাপ সময় থাকবেনা তা চলে যাবে এবং সকালের সূর্য উদিত হয়ে অন্ধকার দুর হবে
এটাই মানুষের জীবনের একটি চিরাচরিত নিয়ম, যা এই সুরার প্রথম দু আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি এটাই মানুষের জীবনের একটি চিরাচরিত নিয়ম, যা এই সুরার প্রথম দু আয়াত দ্বারা আমরা বুঝতে পারি মুফতি মুনির আকন (মজিআ) সুরা দোহার অনেকগুলি ফায়দা বয়ান করেছেন সেগুলি এখন আপনাদেরকে শেয়ার করব
যেমন (১) যদি কারো কোন কিছু হারিয়ে যায়, কিংবা কোন কথা ভুলে যায়, তখন বেশী বেশী এই সুরা পড়তে হবে কিছুক্ষণ পড়তে থাকলে দেখবেন হারিয়ে যাওয়া বস্তু খুঁজে পাবেন, কোন কথা ভুলে গেলে তা মনে পরে যাবে।
(২) যদি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য থাকে বা ভাই বোনের মধ্যে মনোমালিন্য থাকে, বা সন্তান ও পিতা মাতার মধ্যে মনোমালিন্য থাকে তাহলে এশারের নামাজের পর এই সুরা ২১ বার পড়বেন তারপর শুয়ে যাবেন, তারপর ফজরের নামাজের পর ৭ বার দরুদ শরীফ পড়বেন, তারপর আবার ৭ বার সুরা দোহা পড়বেন এরপর আন্তরিকতার সাথে দোয়া করবেন আল্লাহর কাছে যেন সে দুজনের মধ্যে মিল মহব্বত হয়ে যায় এভাবে মাত্র ১১দিন আমলটি করতে হবে এর মধ্যেই দুজনের মধ্যে অতুলনীয় মিল মহব্বত তৈরী হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ
অনেক সময় যে দুজনের মধ্যে ঝগড়া চলছে তারা এ আমল করতে চাইবেনা তখন তাদের জন্য ৩য় একজন এই আমল করতে পারবে, এতেই সে দুজনের মধ্যে মিল হয়ে যাবে ৩য় ফায়দা হল যে সব বাচ্চা রাতে ভয় পায় তাদেরকে ৭ বার পড়ে ফুক দিলে সে বাচ্চা আর ভয় পাবেনা, শান্তিতে ঘুমাবে ৪থ ফায়দা হল যাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চলছে না তারা ৩১৩ বার এই সুরা পাড়বেন এবং প্রতিদিন ৩ জন গরিবকে খানা খাওয়াবেন এভাবে ২১ দিন করলে আপনার ব্যবসা ইনশা আল্লাহ এত বেশী চালু হয়ে যাবে আপনি নিজেই হয়রান হয়ে যাবেন।
৫ম ফায়দা হল যদি ঘর থেকে কেহ রাগ করে চলে যায় তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ২০০০ বার এই সুরা পড়তে হবে আগে পরে ১১ বার দরুদ পড়তে হবে এভাবে ২১ দিন এই আমল জারি রাখতে হবে ইনশা আল্লাহসে লোক যতই রাগ করুন ২১ দিনের মধ্যে ঘরে ফিরে আসবে।
৬ষ্ঠ ফায়দা হল যদি আপনার কোন মূল্যবান জিনিষ চুরি হয়ে যায়, তাহলে সুরা দোহা ৪১ বার পড়তে হবে সুরাটি পড়ার পর শাহাদাত আঙ্গুলের উপর ফুক মারবেন তারপর সে শাহাদাত আঙ্গুল নিজের মাথার উপর ঘুরাতে হবে, তারপর ১টি দোয়া পড়বেন দোয়াটি হল-
আর কেহ যদি এই সুরাটি স্বপ্নে দেখে তাহলে সে গরীব মিসকিনদের প্রতি দয়াবান হবেন, এবং আল্লাহ তায়ালা তার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণের দরজা খুলে দিবেন
এর আরেকটি অথ হল যেহেতু এই সুরাতে একটি আয়াত আছে (ওয়ালাল আখেরাতু খাইরুল্লাকা মিনাল উলা) অর্থ্যাৎ আপনার আখেরাত আপনার জন্য উত্তম সুতরাং আপনি আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করুন
এই সুরার মধ্যে ৯টি কাফ আছে এই ৯টি কাফের একটি ওজিফা আছে যা করলে আপনার সকল জায়েজ হাজত পুরণ হবে ইনশা আল্লাহ ওজিফার নিয়ম হল প্রথমে ৩ বার দরুদ শরীফ পড়বেন তারপর বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে সুরা দোহা ১ বার পড়বেন তারপর আবার ৩ বার দরুদ শরীফ পড়বেন, এই সুরার ৯টি স্থানে ক্বাফ অক্ষর আছে সে কাফ অক্ষরে যখন যাবেন তখন সেখানে থেমে ৯ বার (এ পড়বেন এয়া কারিমু) এই আমল সকালে সন্ধ্যায় প্রতিদিন ২ বার করবেন এভাবে মোট ৯ দিন করবেন ৯ দিনের মধ্যে ইনশা আল্লাহ সকল জায়েজ হাজত পুরণ হয়ে যাবে
وَلَلْآخِرَةُ خَيْرٌ لَّكَ مِنَ الْأُولَى
আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষাশ্রেয়।
وَلَسَوْفَ يُعْطِيكَ رَبُّكَ فَتَرْضَى
আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সুরা দোহার ফয়ুজ ও বরকত হাছিল করার তৌফিক দান করুন আমিন
কোন মন্তব্য নেই