মুয়াজ বিন জাবাল (রা) কে মহানবীর (দ) দেয়া ১১টি শ্রেষ্ঠ ওজিফা
প্রিয় বন্ধুরা আজকে হযরত
মুয়াজ বিন জাবালকে দেয়া প্রিয় নবীজির ১১টি আমল ও ওজিফা আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যে
আমলগুলি করলে জান্নাত লাভ হয় জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করা যায়, যে আমল গুলির দ্বারা অফুরন্ত বরকত লাভ হয়, হায়াতে রিজিকে টাকা পয়সায়, আয় রোজগারে বরকত হবে, এক কথায় দুনিয়া ও আখেরাতের যত কল্যাণ ও বরকতের দরজা
আছে সব দরজা সমুহ আল্লাহ তায়ালা তার জন্য খুলে দিবেন।
যারা বিপদ থেকে মুক্তি চান, ঋণ থেকে মুক্তি চান, কঠিন সমস্যায় আল্লাহর সাহায্য চান, সব কাজে বরকত চান, আল্লাহর সরাসরি সাহায্য লাভ করতে চান, দুনিয়াতেও বরকত আখেরাতে মুক্তি চান তাদের জন্য আজকের
এই মুয়াজ বিন জাবাল এর ওজিফাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূণ ও কার্যকরী।
কারন সবগুলি আমল
স্বয়ং আল্লাহর প্রিয় হাবিব (দ) দিয়েছেন তিরমিজি শরীফের ২৬১৬ নং হাদিস মু’আয ইবনু জাবাল (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কোন এক ভ্রমণে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর সাথে ছিলাম। একদিন যেতে যেতে আমি তার নিকটবর্তী হলাম।
আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন
একটি কাজ সম্পর্কে আমাকে জানিয়ে দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং
জাহান্নাম হতে দূরে রাখবে। তিনি বললেনঃ তুমি তো আমাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে
প্রশ্ন করেছো। তবে সেই ব্যক্তির জন্য এ ব্যাপারটা অতি সহজ যে ব্যক্তির জন্য আল্লাহ
তা’আলা তা সহজ করে দেন। (হে
মুয়াজ) তুমি আল্লাহ তা’আলার ইবাদাত করবে, কোন কিছুকে তার সাথে শরীক করবে না, নামায প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত দিবে, রামাযানের রোযা রাখবে এবং বাইতুল্লাহর হাজ্জ করবে।
নবীজি আরো বললেনঃ আমি কি তোমাকে কল্যাণের দরজাসমূহ সম্পর্কে বলে দিব না?
(১) রোযা হলো ঢালস্বরূপ,
(২) দান-খাইরাত গুনাহসমূহ বিলীন করে দেয়, যেমনিভাবে পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয় এবং (৩) কোন
ব্যক্তির মধ্যরাতের নামায আদায় করা। (অর্থ্যাৎ কেহ যদি সব ধরনের বরকতের সব ধরনের কল্যাণের দরজা খুলতে চায়, আল্লাহর রহমত লাভ করতে চায়, বরকত পেতে চায় তার জন্য ৩টি আমল আর তা হল রোজা, দান সদকা ও তাহাজ্জুদ নামাজ) তারপর তিনি এই আয়াতটি
তিলাওয়াত করেনঃ
তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে
আলাদা থাকে। তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং আমি তাদেরকে যে রিযিক
দিয়েছি, তা থেকে ব্যয় করে। [সুরা
সাজদা - ৩২:১৬]
কেউ জানে না তার জন্যে
কৃতকর্মের কি কি চোখ জুড়ানোপ্রতিদান লুক্কায়িত আছে। [সুরা সাজদা - ৩২:১৭]
এরপর প্রিয় নবীজি (দ) আরো
বলেন- আমি কি সমস্ত কাজের মূল, স্তম্ভ ও সর্বোচ্চ শিখর সম্পর্কে তোমাকে অবহিত করবো না? আমি বললাম, হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন নবীজি ফরমালেন সকল কাজের মূল
হলো ইসলাম, স্তম্ভ হলো নামায এবং
সর্বোচ্চ শিখর হলো জিহাদ।
এরপর প্রিয় নবীজি (দ) আরো
বলেন- আমি কি এসব কিছুর সবচেয়ে মুল সবচেয়ে আসল বিষয়টি সম্পর্কে তোমাকে বলব না? আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তখন নবী করিম (দ)তার জিহ্বা ধরে
বললেনঃ এটা সংযত রাখ। আমি প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহর নবী! আমরা যে কথাবার্তা বলি এগুলো
সম্পর্কেও কি পাকড়াও করা হবে? নবীজি ফরমালেন হে মু’আয! তোমার মা তোমাকে হারিয়ে ফেলুক! মানুষকে শুধুমাত্র জিহ্বারকারণেই অধঃমুখে
জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
সুতরাং সার কথা হল জাহান্নাম থেকে বেঁচে জান্নাতে
যাওয়ার জন্য প্রথমে ৬টি আমলের কথা নবীজি এরশাদ করেছেন তা হল (১) ইবাদত করা (২)
শিরিক না করা (৩) নামাজ পড়া, (৪) যাকাত দেয়া (৫) রোজা রাখা ও (৬) হজ্ব করা।এগুলি ছিল ফরয
এরপর সব ধরনের বরকত ও
কল্যাণ লাভের জন্য ৩টি অতিরিক্ত আমল দিলেন তা হলরোজা, দান সদকা এবং তাহাজ্জুদ নামাজ এরপর এসবের মধ্যে সেরা
আমল নামাজ ও জেহাদকে ঘোষনা দিলেন তারপর সবগুলি আমলকে রক্ষা করার জন্য জিহ্বাকে
সংযত করার নির্দেশ দিলেন। এই জিহ্বার কারনেই অধিকাংশ গুনাহ হয়ে থাকে যেমন গীবত হয়, চুগলখুরি হয়, মিথ্যা হয়, অপবাদ হয়, ধোকা হয়, মানুষের মনে কষ্ট দেয়া হয় যার প্রত্যেকটি বড় বড় গুনাহ
ও জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত কাজ। তাই জিহ্বাকে সংযত রাখার জন্য নবী করিম (দ)
সবচেয়ে বেশী তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই হাদীস শরীফে যে ১১টি বিষয়
আল্লাহর প্রিয় হাবিব (দ) হযরত মুয়াজ বিন জাবালকে শিক্ষা দিয়েছেন সে সব আমল
যথাযথভাবে পালন করার তৌফিক দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই