দুশ্চিন্তা ও ঋণ থেকে মুক্তির আমল। আবু সাঈদ খুদুরীর ওজিফা।

 

সীমাহীন দুশ্চিন্তা ও বিশাল ঋণ দূর করার ওজিফা,



প্রিয় বন্ধুরা আজকে হযরত আবু সাঈদ খুদুরি (রা) এর মুখে সীমাহিন দুশ্চিন্তা পেরেশানি ও কোটি টাকার ঋণও যদি থাকে তা সহজে দুর করার ওজিফাটি শুনব, যে ওজিফাটি স্বয়ং রাসুলে করিম () দিয়েছেন মনে রাখবেন আমাদের উচিত সব সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং দোয়া কবুল হওয়ার আশায় থাকা- যেমন তিরমিজি শরীফের ৩৫৭১ নং হাদিস- আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ্ তাআলার নিকটে তার দয়া প্রার্থনা কর। কেননা আল্লাহ তাআলা তার নিকট কিছু পাওয়ার প্রার্থনাকে ভালোবাসেন। আর সর্বোত্তম ইবাদাত হল দুআ কুবুল হওয়ার অপেক্ষায় থাকা। কারন নবীজি বলেন দোয়ার দ্বারাই আমাদের ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে যেমন ইবনে মাজা শরীফের ৪০২২ নং হাদিস সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎকর্ম ব্যতীত অন্য কিছু আয়ুস্কাল বাড়াতে পারে না এবং দোয়া ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর রদ হয় না। মানুষ তার পাপকাজের দরুন তার প্রাপ্য রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়। তাছাড়া মুসলিম শরীফের ২৭৩২ নং হাদিসে আরো সুন্দর একটি পন্থা সহজ একটি পন্থা আমাদের জন্য আছে যা দ্বারা আমরা অনাগত সকল বিপদ সকল মসিবত সকল দুঃখ থেকে বাঁচতে পারব যেমন আবূ দারদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম বান্দা তার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার জন্য দুআ করলে একজন ফেরেশতা তার জবাবে বলে "আর তোমার জন্যও অনুরূপ"। অর্থ্যাৎ আপনার একজন ভাই বিদেশে আছে এখন আপনি আপনার সে ভায়ের জন্য দোয়া করেন হে আল্লাহ আমার অমুক ভাই বিদেশে আছে তাকে তুমি সব ধরনের বিপদ থেকে হেফাজত কর, তখন একজন ফেরেশতা বলে হে আল্লাহ যে দোয়া করছে তাকেও তুমি হেফাজত কর। এভাবে আপনি আপনার অনুপস্থিত ভায়ের জন্য যতগুলি দোয়া করবেন সব ধরনের দোয়াই একজন ফেরেশতা আপনার হকে করবেন এবং ফেরেশতার দোয়া নিশ্চিত কবুল হবে। সুবহানাল্লাহ। সুতরাং আপনার যত মসিবত যত দুশ্চিন্তাই থাকনা কেন দোয়া করে যেতে হবে। নিজের জন্যও করবেন নিজের অনুপস্থিত ভাই এর জন্যও দোয়া করবেন। দোয়া করা বাদ দেয়া যাবেনা। যেমন এক সাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) এর অত্যন্ত চমৎকার একটি ঘটনা আবু দাউদ শরীফের ১৫৫৫ নং হাদিসের বণনা আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে আবূ উমামাহ নামক এক আনসারী সাহাবীকে দেখতে পেয়ে তাকে বললেনঃ হে আবূ উমামাহ! কি ব্যাপার! আমি তোমাকে সালাতের ওয়াক্ত ছাড়া মসজিদে বসে থাকতে দেখছি? তিনি বললেন, সীমাহীন দুশ্চিন্তা ও ঋণের বোঝার কারণে হে আল্লাহর রসুল! তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দিবো না, তুমি তা বললে আল্লাহ তোমার দুশ্চিন্তা দুর করবেন এবং তোমার ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও করে দিবেন? তিনি বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি বললেনঃ তুমি সকাল-সন্ধ্যায় বলবেঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ غَلَبَةِ الدَّيْنِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ ‏"

 আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজান, ওয়া আউজুবিকা মিনাল আজজি ওয়াল কাসাল, ওযা আউজুবিকাল মিনাল জুবনি ওয়াল বুখল, ওয়া আউজুবিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।

’’হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আশ্রয় চাই অক্ষমতা ও অলসতা হতে, আপনার কাছে আশ্রয় চাই ভীরুতা ও কার্পন্য হতে, আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই ঋণের বোঝা ও মানুষের রোষানল হতে’’আবূ উমামাহ (রাঃ) বলেন, আমি তাই করলাম। ফলে মহান আল্লাহ আমার দুশ্চিন্তা দূর করলেন এবং আমার ঋণ পরিশোধের ব্যাবস্থাও করে দিলেন

 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.