আমলটি না করলে পসতাবেন। দুঃখ বিপদ অভাব লাঞ্চনা লেগেই থাকবে

 

বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিম



প্রিয় মুসলমান ভাই বোনেরা আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ, আজকে যে আমলটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটি প্রত্যেক মুমিন মুসলমানকে অবশ্যই অবশ্যই করতে হবে আমলটি অবহেলা করলে সব দিক থেকেই ব্যর্থ হয়ে যাবেন আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবেন জীবনে উন্নতি করতে পারবেন না, আপনার সকল কাজে বরকত থাকবেনা, বিপদ আসলে তা সহজে দুর হবেনা , অভাব অনটন সহসা দুর হবেনা
রোগ হলে সুস্থতা আসবেনা , সবখানে অপমান অপদস্থ হতে হবে, কোন কাজে সফলতা আসবেনা, দুনিয়াতেও লাঞ্চনা আর আখেরাতেও থাকবে কঠিন আযাব

আসুন আজকে আমরা সে আমলটি কি তা কোরআনের আলোকে জেনে নিই আমলটি খুবই জরুরী তাই মনযোগ দিয়ে ভিডিওটি দেখে আমলটি শিখে রাখুন নিজেও প্রেকটিস করুন, নিজের পরিচিতজন দেরকেও আমলটির ব্যপারে জানিয়ে রাখুন আমলটি বুঝার জন্য মদীনার ছোট ছোট কয়েকটি ঘটনা আপনাকে শুনতে হবে

ঘটনা -১। আবদুল্লাহ ইবনে উবাই সে জুমার  দিন নবীজির খুতবার আগে দাড়ায়ে লোকদেরকে উদ্দেশ্যে বলতেন হে আমার ভয়েরা এখন আপনাদের সামনে যিনি খুতবা দিবেন তিনি হলেন  আল্লাহর রাসুল, তিনি তোমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বার্তাবাহক, তোমরা তার কথা শুনবে, মানবে

আবদুল্লাহ বিন উবায় যখন উহুদের যুদ্ধ থেকে গাদ্দারি করে এক দলকে নিয়ে যুদ্ধের ময়দান থেকে চলে আসল, এরপর থেকে মুসলমানরা আর তার কথা শুনেনা তাকে পছন্দ করেনা উহুদের যুদ্ধের ঘটনার পর রাসুল যখন জুমার খুতবা দিতে মিম্বরে উঠে তখন নিয়ম অনুযায়ী  আবদুল্লাহ বিন উবায় চাপাবাজি করতে দাঁড়ায়, তখন আশে পাশের লোকজন তার কাপড়ে টান দিয়ে বসিয়ে দেয়,   তাকে চাপাবাজি করতে দেয়না, তখন সে মসজিদ থেকে মানুষের কাঁধের উপর দিয়ে ডিঙ্গিয়ে মসজিদে থেকে বের হয়ে যাচ্চিল আর বলতে লাগল, আজ তোমরা আমাকে অপমান করলে আমি কি খারাপ কিছু বলি?” আসলে সে রাসুলের ব্যপারে যে বক্তব্য দেয় তা তার দিলের কথা নয়, মুখের কথা

এরপর কয়েকজন মুসলমান আবদুল্লাহ বিন উবায়কে বলে আপনি উহুদের ময়দান থেকেও বের হয়ে আসলেন মসজিদে থেকেও বের হযে আসলেন তা ঠিক হয়নি, চলুন আপনি আপনার সাথীদের নিয়ে রাসুলের দরবারে যাই তিনি আপনাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবেন দোয়া করবেন

কথা শুনে আবদুল্লাহ বিন উবাই ঘৃণাভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, আর সে কথাটাই আল্লাহ বলেন

وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ تَعَالَوْا يَسْتَغْفِرْ لَكُمْ رَسُولُ اللَّهِ لَوَّوْا رُؤُوسَهُمْ وَرَأَيْتَهُمْ يَصُدُّونَ وَهُم مُّسْتَكْبِرُونَ

যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা এস, আল্লাহর রসূল তোমাদের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করবেন,

তখন তারা মাথা ঘুরিয়ে নেয় এবং আপনি তাদেরকে দেখেন যে, তারা অহংকার করে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

আফসুসের বিষয় আবদুল্লাহ বিন উবাই নবীজির সাথে শত্রুতামি করল, উহুদ যুদ্ধে গাদ্দারি করে চলে এলো তবুও নবীজি তার জন্য দোয়া করার জন্য আহ্বান করলেন কিন্তু সে ঘৃণাভরে মুখ ফিরিয়ে নিল তখন আল্লাহ তায়ালা

এরশাদ করলেন  اِسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ اَوۡ لَا تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ ؕ اِنۡ تَسۡتَغۡفِرۡ لَهُمۡ سَبۡعِیۡنَ مَرَّۃً فَلَنۡ یَّغۡفِرَ اللّٰهُ لَهُمۡ

তুমি এদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর বা না কর, এমনকি তুমি যদি সত্তর বারও তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, তবুও আল্লাহ তাআলা তাদের কখনো ক্ষমা করবেন না। (সুরা তাওবা ৮০)

দেখুন কত কঠোর ধমক আল্লাহ এই মুনাফিকের ব্যপারে বলে দিয়েছেন, এর পর আল্লাহ তায়ালা নবীকে মুনাফিকের জানাজা পড়তে, তাদের জন্য দোয়া করতে তাদের কবরে দাঁড়াতেও নিষেধ করে দেন  কেন আল্লাহ মুনাফিকদের ব্যপারে এত কঠোর? কারন যুগে যুগে ইসলামের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করেছে এরা  আজো সারা বিশ্বের মুসলমানরা মার খাচ্ছে কিছু মুনাফিকের কারনে, তাই তাদের প্রতি আল্লাহর এমন  কঠিন শাস্তির ঘোষনা। এই মুনাফিকের ব্যপারে আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন সুরা বাকারার -১৯ নং আয়াতে

) মুনাফিকরা হয় দ্বিমুখি () প্রতারক () তাদের অন্তর হয় অসুস্থ () মুনাফিকরা হল ফিতনাবাজ  () তারা অন্যদেরকে বোকা ভাবে আসলে তারা নিজেরাই বোকা () তারা হল ঠাট্টাবিদ্রোপকারী  () মুনাফিকরা হেদায়েতের আলো থেকে বঞ্চিত () তারা চোখ থাকিতেও অন্ধ, কান থাকিতে বধির, বোবা

সুরা মুনাফিকে বলেছেন মুনাফিকরা নিজেদের মিথ্যা শপথ কে ঢালরূপে ব্যবহার করে তাছাড়া কোন শোরগোল শুনলেই তারা ভীত হয়ে যায় মনে করে এই শোরগোল তাদের বিরুদ্ধে   মদিনায় এক মুনাফিক ইহুদীর বিবাদ হয় আর তার বিচার নবীর কাছে নিয়ে আসে নবীজি হক বিচার করলে  তা ইহুদীর পক্ষে যায় নামের মুসলমানের বিপক্ষে রায় যায়, তখন সে নামের মুসলমান ওমরের কাছে আবার সে  বিচার নিয়ে যায়, ইহুদী বলে এই বিচারটি আপনাদের নবী করেছেন আর তিনি আমার পক্ষে রায় দিয়েছেন  তখন ওমর (রা) সে নামের মুসলমানকে হত্যা করলেন তখন নামের মুসলমানের পরিবারের লোকেরা ওমরের বিরুদ্ধে নবীর কাছে বিচার দিলেন নবীজি বললেন ওমর কখনো কোন মুসলমানকে হত্যা করতে পারেনা ওমর যাকে হত্যা করেছে সে মুলত মুরতাদ আর ইসলামে মুরতাদের শাস্তি হল মৃতুদন্ড। এরপর সুরা তাওবার

৬৫ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন

فَلاَ وَرَبِّكَ لاَ يُؤْمِنُونَ حَتَّىَ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لاَ يَجِدُواْ فِي أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُواْ تَسْلِيمًا

অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে। [সুরা নিসা - :৬৫]

যারা মুনাফিক তাদের আরো বৈশিষ্ট হল তাদের জন্য ফজর এশারের নামাজ কষ্টকর হবে  তারা কথা বললে মিথ্যা বলবে, ওয়াদা খেলাফ করবে, আমানতের খিয়ানত করবে, ঝগড়ায় গালাগালি করবে  তারা নামাজে দাঁড়াবে খুব অমনোযোগি হয়ে, তারা কৃপণ হবে এবং অন্যকে দান করতে নিরুৎসাহিত করবে মুনাফিকরা হযরত আলী (রা) কে ভালবাসতে পারবেনা আর নারী মুনাফিকরা স্বামীর কাছে তালাক চাইবে

তাছাড়া আল্লাহ বলেন মুনাফিকরা হল

مُّذَبۡذَبِیۡنَ بَیۡنَ ذٰلِکَ ٭ۖ لَاۤ اِلٰی هٰۤؤُلَآءِ وَ لَاۤ اِلٰی هٰۤؤُلَآءِ

তারা দোটানায় মধ্যে দোদুল্যমান, না এদের দিকে আর না ওদের দিকে। অর্থ্যাৎ তারা কোন দিকে যাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা, মোটামোটি মুনাফিকের এমন এমন চরিত্র আল্লাহ বয়ান করেছেন, যে সব চরিত্র থাকলে মানুষের জন্য রয়েছে সব জায়গায় লাঞ্চনা।

আমারা যারা মুসলমান আমাদের জন্য এই সব চরিত্র মুনাফিকি বৈশিস্ট্য যা বর্ণিত হয়েছে তা থেকে বেঁচে থাকতে হবে, মুনাফিকি থেকে বাঁচার জন্য সব সময় চেষ্টা করতে হবে, দোয়া করতে হবে যতই কষ্ট হউক এশা ফজরের নামাজ জামায়াতে পড়তে হবে, আর যারা হজ্ব ওমরা পালন করতে যান তারা এই জঘন্য চরিত্র থেকে বাঁচার জন্য মদিনা শরীফে মসজিদে নববীতে ৪০ ওয়াক্ত নামাজ ইমামের সাথে তকবিরে উলার সাথে আদায় করতে হবে, তাহলে এই মুনাফিকি থেকে আল্লাহ হেফাজত করবেন।

জঘন্য চরিত্র থেকে যদি মুসলমান বাঁচতে না পারে তাহলে তার স্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিন্মস্তরে

 اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِی الدَّرۡکِ الۡاَسۡفَلِ مِنَ النَّارِ ۚ وَ لَنۡ تَجِدَ لَهُمۡ نَصِیۡرًا ﴿۱۴۵﴾ۙ

মুনাফিকরা তো জাহান্নামের নিম্নতমস্তরে থাকবে এবং তাদের জন্য আপনি কখনো কোন সহায় পাবেন না তাছাড়া দুনিয়ার লাঞ্চনা গঞ্জনা, ভয় এসবতো আছেই মনের শান্তি দুর হয়ে যাবে মুনাফিকির কারনে তাই এই নিফাকি থেকে বাঁচতে হবে বাঁচর আমল দোয়া গুলি নিয়মিত করতে হবে, তবেই শান্তি মুক্তি মুনাফিকি চরিত্র মিথ্যা, ধোকাবাজি, ওয়াদাখেলাফি, নামাজে অলসতা, ফজর এশার নামাজে অবহেলা দুমুখো স্বভাব, নবীর প্রতি বিদ্বেষ ভাব থেকে বেঁচে থাকতে হবে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে বুঝার আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.