আল্লাহর ওয়াদা কল্পনাতিত রিজিকের আমল। অভাব দূর করার ওজিফা। ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া
আল্লাহর
ওয়াদা কল্পনাতিত রিজিকের আমল। অভাব দূর করার ওজিফা। ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া
প্রিয় বন্ধুরা আজকে যে ওজিফাটি নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি, সে ওজিফাটির জন্য দুনিয়ার সকলেই পাগল যারা রিজিক বৃদ্ধির কথা বলেন, যারা চাকরী লাভের কথা বলেন, যারা অভাব দূর হওয়ার কথা বলেন, যারা বরকতের কথা বলেন প্রত্যেকের সমস্যার সমাধান আছে এই ওজিফাটিতে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনেও এই আমলটি করলে ধারনাতীত জায়গা থেকে রিজিক দিবেন বলে ওয়াদা করেছেন
এ ওজিফাটি হযরত ওমর (রা) এর যুগে একজন কৃষক কিভাবে করেছেন সে ঘটনাটি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আর ওজিফাটির ব্যাপারে কোরআনের কোন আয়াতে আল্লাহ তায়ালা গায়েবী রিজিক দেয়ার ঘোষনা দিয়ছেন সে আয়াতটিও বলব
বর্তমান যুগে যারা আর্থিক সমস্যার কথা বলেন প্রত্যেকের জন্যই এই ওজিফাটি আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় নেয়ামত হযরত ওমর (রা) মরুভুমি দিয়ে কোন এক জায়গা যাচ্ছিলেন, পতিমধ্যে তার খাবার পানি শেষ হয়ে গেল,
এদিকে ওমরের প্রচন্ড ক্ষিদেও পে’ল, দেখলেন মরুভুমিতে একটা রাখাল ছেলে এক পাল ছাগলের রাখালি করছেন, খলিফা উমর বললেন ভাই তোমার ছাগল থেকে দুধ দোহন করে আমাকে একটু পান করতে দাও, রাখাল ছেলে ইনি যে খলিফা উমর তা আগের থেকে জানেনা। সাধারণ মুসাফির মনে করেছে, আর বললেন ভাই মুসাফির এই ছাগলের চড়ানোর দায়িত্ব আমার এর দুধ দোহন করা দুধ কাউকে দেয়ার মালিক আমি নই।
সে জন্য আমি মালিকের অনুমতি ছাড়া তোমাকে এক ফোটা দুধও দিতে পারবনা। হযরত ওমর (রা) মনে মনে খুশি হলেন এই ভেবে যে আমার দেশের একজন রাখাল ছেলে এত বড় আমানতদার।
এরপর হযরত ওমর সে রাখালকে আরো একটু পরীক্ষা করার জন্য বললেন আচ্ছা তুমি আমার কাছে ১টি ছাগল বিক্রী করে দাও তাতে তোমারও লাভ আমারও লাভ, রাখাল বলল আমার মালিক ছাগল গননা করে যদি ধরে ফেলে তখন কি জবাব দিব?
ওমর (রা) বলেন তুমি মালিককে বলবে ১টি ছাগল বাঘে খেয়ে ফেলছে, তখন সে রাখাল খুবই রাগান্বিত হয়ে ওমরকে বলেন হে মুসাফির আপনি বলেন আমি মিথ্যা বলে আমার মালিককে বুঝ দিব কিন্ত হাশরের ময়দানে যখন আল্লাহ আমাকে প্রশ্ন করবেন তখন কি জবাব দিব?
একটা ছাগল বিক্রী করে টাকা আত্মসাৎ থেকে রাখাল ছেলে কিভাবে বাঁচল? শেষ বিচারের ভয়, আর এটার নামই হল খওফে খোদা। আর এই কারনে খলিফা ওমর (রা) সে রাখাল যুবককে পরবর্তীতে এমন পদ ও পবদী দান করেছেন সে রাখাল কোনদিন তা কল্পনাও করেনি।
(খাওফে) আল্লাহর শাস্তির ভয়ের অভাবে মানুষ গুনাহ করে। আল্লাহর শাস্তির ভয় যার অন্তরে নাই সে গুনাহ করতে ভয় করেনা, আর আল্লাহর শাস্তির ভয় যার অন্তরে আছে সে গুনাহ করতে ভয় পায়। অপরাধ করতে ভয় পায়, তাকে চেক দিতে সিসিটিভিও লাগেনা, সিকেউরিটি গার্ডও লাগেনা যাদের মনে আল্লাহর ভয় আছে তারা কখনো বেগানা নারীর সাথে একাকি নির্জনে বেহায়াপনায় গুনাহে লিপ্ত হতে পারেনা, দুর্ণিতি করতে পারেনা
এক নববধু বিয়ের রাতে ঝরের কবলে পড়ে এক নেককার যুবকের ঘরে আশ্রয় নিলেন সে ঘরে যুবক ছাড়া আর কেহ ছিলনা,যুবক চেরাগ জ্বালিয়ে কুরআন পড়ছিল আর বার বার চেরাগে নিজের আঙ্গুল জ্বালাচ্ছিল,সকালে নববধুটি নিজের পিতার কাছে ফিরে গেল, সে ঝড়েই সে নারীর স্বামী মারা গিয়েছিল, তাই নিজের মেয়েকে পুনরায় যখন বিয়ের কথা বলল তখন সে নারী তার পিতাকে বলল আগে সে যুবককে আমাদের ঘরে দাওয়াত দিন আর তাকে জিজ্ঞেস করুন সে রাতে সে কেন কুরআন পড়ার মাঝে মাঝে বার বার তার হাত চেরাগে জ্বালাচ্ছিল সে যুবককে ডাকা হল প্রশ্ন করা হলে সে জবাব দিল, সে রাতে আপনার মেয়েটি আমার ঘরে আশ্রয় নিল আর শয়তান আমাকে বারবার প্ররোচিত করছিল,
তার দিকে তাকাতে কিন্তু আমি সাথে সাথে আগুনে হাত দিতাম আর চিন্তা করতাম দুনিয়ার আগুন এত গরম জাহান্নামের আগুন তো আরো ৭০ গুন বেশী গরমযদি বেগানা নারীকে একাকি পেয়ে তার দিকে তাকাই জাহান্নামের আগুন কিভাবে সহ্য করব? এভাবে আমি সারা রাত নিজের নফসের সাথে জিহাদ করেছি, শয়তানের ওয়াসওয়াসার সাথে যুদ্ধ করেছি এবং গুনাহ থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি। এই কথা শুনে সে নেককার যুবককে সে মেয়ের সাথে বিয়ে দিলেন।
সে নেককার যুবককে নিজের একমাত্র মেয়ের জামাতা হিসেবে কবুল করলেন এবং নিজের সমস্ত সহায় সম্পদ তার নামে লিখে দিলেন।
দেখুন কিছুক্ষণ আগেও যে যুবকের ঘর ছিলনা, টাকা ছিলনা, বাড়ী ছিলনা, ঘরে বউ ছিলনা, এই তাকওয়ার ওজিফার কারনে আল্লাহ তায়ালা তাকে এমন সম্পদ শালী করে দিয়েছেন, বিনা খরচে বিয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং ধারনাতিত জায়গা থেকে রিজিক ধন সম্পদের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
সে জন্য আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে এরশাদ করেন
وَمَن
يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا
আর যে আল্লাহকে ভয় করে,
আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন।
وَيَرْزُقْهُ
مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ
إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا
এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট। আল্লাহ তার কাজ পূর্ণ করবেন। আল্লাহ সবকিছুর জন্যে একটি পরিমাণ স্থির করে রেখেছেন। [সুরা তালাক ২-৩]
হযরত ওমরের যুগের সে রাখাল যুবকের যে ওজিফা ছিল একই ওজিফা ছিল এই নেককার যুবকের সে রাখাল যুবককে ওমর (রা) পরবর্তীতে কল্পনাতিত সম্মানজনক পদে আসিন করেছেনআর যে যুবক বেগানা নারীর প্রতি আল্লাহর ভয়ে তাকান নি তাকে আল্লাহ তায়ালা কল্পনাতিত জায়গা থেকে রিজিক ধন দৌলত ও স্ত্রীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এই তাকওয়ার জীন্দেগী যাপন করার তৌফিক দান করুন, সারাজীবন তাকওয়ার ওজিফাকে লালন করার তৌফিক দান করুন, আমিন।
কোন মন্তব্য নেই