প্রতি রাতে ১ বার আলহামদুল্লিাহ পড়লে টেনশন দুঃখ বিপদ রোগ অভাব পালাবে। জীবন খুশিতে ভরে যাবে

 

প্রতি রাতে ১ বার আলহামদুল্লিাহ পড়লে টেনশন দুঃখ বিপদ রোগ অভাব পালাবে। জীবন খুশিতে ভরে যাবে



আপনি যদি প্রতিদিন রাতে এই ওজিফাটি করেন আপনার জীবন খুশিতে ভরে যাবে, আল্লাহ তায়ালার নেয়ামত এত বেশী আসবে আপনি সামলাতে পারবেন না। আলহামদুলিল্লাহর ছোট ওজিফাটি কিভাবে করবেন কখন করবেন কিভাবে করলে আপনার মনের আশা পুরন হবে, সব অভাব দুর হবে আজ বিস্তারিত জানাব একদিন হযরত মুসা (আঃ) কোথাও যাচ্ছিলেন পথে এক লোকের সাথে দেখা সে লোক বলল হযরত আপনি এবার যখন আল্লাহর সাথে কালাম করবেন তখন আমার একটা বিষয় আল্লাহর কাছে জেনে নিবেন, সেটি হল আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত বেশী সম্পদ দিয়েছেন তা এখন আমার পক্ষে সামলানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে এখন একটু জেনে আসবেন আমি কিভাবে সম্পদের এই জোয়ার থামাব?

এরপর অন্য একজন লোকের সাথে হযরত মুসা (আঃ) এর দেখা যে মরুভুমিতে বালির স্তুপ বানিয়ে তার ভিতর বসে আছে হযরত মুসাকে দেখে সে বলল হে মুসা আপনি আল্লাহকে আমার একটি কথা বলবেন, তা হল আল্লাহ তায়ালা আমাকে আর কতদিন এমন গরীবি হালতে রাখবেন?

পরে যখন হযরত মুসা (আঃ) আল্লাহর সাথে কালাম করছিলেন প্রথমে সে ধনী লোকের কথাটি আল্লাহর কাছে বললেন এরপর গরীব লোকটির কথাটিও আল্লাহর কাছে বললেন, আল্লাহ তায়ালা হযরত মুসা (আঃ) কে সব কিছু বুঝিয়ে দিলেন

হযরত মুসা (আঃ) যখন ফিরে আসলেন তখন ধনী লোকটির সাথে দেখা হল, তাকে বলল  আমি তোমার বিষয়টি আল্লাহর কাছে পেশ করেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন তুমি আল্লাহর যে নেয়ামত পাও সে নেয়ামতের শোকর আদায় কর তাই আল্লাহ তার নেয়ামত বাড়িয়ে দেন, এখন থেকে তুমি নেয়ামতের শোকর ছেড়ে দাও আল্লাহও তোমাকে নেয়ামত দেয়া বন্ধ করে দিবেন

তখন ধনী বলল হে মুসা আপনি এটা কি বলেন? আমি এক সময় কিছুই ছিলাম না তবুও আল্লাহর শোকর করতাম এখন অনেক কিছু আছে এখনও আমি শোকর করি, আল্লাহ যদি আমার সব কিছু আবার ছিনিয়ে নেন তবুও আমি আল্লাহর শোকর আদায় করা ছাড়তে পারব না

এরপর যখন মুসা (আঃ) এর সাথে সে গরীব লোকটির দেখা হল তাকে হযরত মুসা (আঃ) বললেন আপনার বিষয়টি আমি আল্লাহর সমিপে পেশ করেছি, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আপনি যেন আল্লাহর শোকর করেন তাহলে আল্লাহ আপনার প্রতি নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন, তখন গরীব লোকটি অত্যন্ত বিরক্ত প্রকাশ করে বলল হে মুসা আল্লাহ আমাকে কিই বা দিয়েছে যে আমি শোকর আদায় করব?

কি নিয়ে আমি শোকরগুজার হব? আমার এক টুকরা কাপড় পর্যন্ত নাই, তাই বালির স্তুপ বানিয়ে তার ভিতর বসে আছি, কথা বলার দেরী হঠাৎ এক বাতাসের ঝটকা এসে সে লোকের পাশ থেকে সব বালি উড়িয়ে নিয়ে গেল

তাই যা আছে তাতেই যদি আমরা আল্লাহর শোকর গুজার হই তাহলে আল্লাহ অবশ্যই আমাদের শান্তিদান করবেন, নেয়ামত বাড়িয়ে দিবেন আর যা আছে তাতে যদি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করি তাহলে আল্লাহ যে টুকু আছে সেটাও ছিনিয়ে নিবেন

এক লোক মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখে তার জুতা চুরি হয়ে গেছে, এখন সে খালি পায়ে বড়ই পেরেশান মনে ঘরে চলে যাচ্ছে, কিন্তু সে যখন কিছুদুর গিয়ে এক লোক পাছায় ভর দিয়ে চলতে দেখল যার ২টি পাই নাই তখন সে চিন্তা করল আমার ২টি জুতা নাই তাতে আমি এত পেরেশান, অথচ এই লোকের ২টি পাই নাই, এভাবে যখন সে চিন্তা করল তখন তার সব টেনশন দুর হয়ে গেল সব পেরেশানী দুর হয়ে গেল

অনেক লোক তালা ঘর বানিয়ে পাশের ১৫ তলার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হা হুতাশ করে কিন্তু সে যদি অন্য পাশের টিনশিড ঘরের দিকে তাকায় তখন তার শোকর এসে যাবে অনেক লোক সন্তান সন্ততি না হলে পেরেশান হয়ে যায়, তখন সে যদি চিন্তা করে অনেকে সন্তান জন্ম দিতে গিয়েই মারা যায় আর সে সন্তানগুলি এতিম খানায় বড় অযন্তে অবহেলায় লালিত পালিত হয় অথবা সন্তান হল কিন্তু প্রতিবন্ধী হল, তাই আল্লাহ যে আপনাকে সন্তান দিচ্ছে না নিশ্চয়ই তার পিছনে কোন হেকমত আছে, তাই আল্লাহর ফয়সালাতে রাজি থাকাই হল বান্দার কাজ

অনেকে টাকা পয়সার অভাবের কারনে পেরেশান, তারা চিন্তা করা উচিত অভাবে আছি জেল খানায়তো নাই, অনেক লোক অভাবে স্বভাব নষ্ট করে দুর্নিতি বা চুরি করে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে পালিয়ে থাকে আপনাকেতো পালিয়ে থাকতে হচ্ছে না সেটা চিন্তা করে  শোকর করুন  আল্লাহ তায়ালা বলেন #লাইন শাকারতুম লা আজিদান্নাকুমযদি তোমরা শোকর কর আমি নেয়ামত বাড়িয়ে দিব (সুরা ইবরাহিম )

আল মুজামুল আউছাত ৪৬৭৬ নং হাদীস- হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (দঃ) এরশাদ করেন পরিবার, সম্পদ, সন্তান এর যে নেয়ামত আল্লাহ দান করেছেন আর বান্দা সে নেয়ামত পেয়ে বলে (মা শা আল্লাহ, ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ) অথ্যাৎ এসব নেয়ামত সবই আল্লাহর দয়া ইচ্ছায় আর আল্লাহ ছাড়া কারো শক্তি নাই তাহলে সে বান্দা তার সে নেয়ামত (পরিবার, সম্পদ, সন্তান) এর মধ্যে মৃত্যু আসার আগ পর্যন্ত আর কোন বিপদ আপদ ধ্বংস ক্ষতি দেখতে পাবে না

অনেক সময় আমরা কোন বিপদগ্রস্থ, মসিবত গ্রস্থ, রোগাক্রান্ত, লোককে দেখে শিউড়ে উঠি এবং বলি আল্লাহ এই রোগ আমার দুষমনকেও যেন না দেয়, কিন্তু সে ক্ষেত্রে আমাদের প্রিয় নবী এমন একটি দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন যে দোয়াটি পড়লে আপনি মৃত্যুর আগ পযন্ত এমন বিপদে, এমন রোগে পতিত হবেন না গেরান্টি বিশেষ করে এই সময়ে আপনার ঘরে যদি কেহ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয় তাঁকে দেখেই এই দোয়াটি পাঠ করে ফেলুন ইনশাল্লাহ আল্লাহ আপনাকে হেফাজত করবেন আপনি একদম টেনশন ফ্রি হয়ে যেতে পারবেন

দোয়াটি হলঃ
اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِوَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا
আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আফানি মিম্মানিবতালাকা বিহি; ওয়া ফাদ্দালানি আলা কাছিরিম মিম্মান খালাকা তাফদিলা

দুনিয়ার বিপদের তুলনায় পরকালের বিপদের কথা স্মরণ করুন দুনিয়ার বিপদ-আপদ আপনার জন্য পরকালের বিপদ থেকে রেহাই পাওয়ার কারণ হতে পারে

আর পরকালের বিভীষিকাময় পরিস্থিতির তুলনায় দুনিয়ার বিপদ-আপদ খুবই নগণ্য

মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন,
كَأَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَهَا لَمْ يَلْبَثُوا إِلَّا عَشِيَّةً أَوْ ضُحَاهَا

যেদিন তারা তা প্রত্যক্ষ করবে, সেদিন তাদের মনে হবে, যেন তারা পৃথিবীতে মাত্র এক সন্ধ্যা অথবা এক প্রভাত অবস্থান করেছে’ (সুরা : নাজিআত, আয়াত : ৪৬)

মনে রাখবেন আপনি কত টাকা কামাই করবেন তাও নির্ধারীত, কতদিন বাঁচবেন তাও নির্ধারিত। কতজন সন্তান হবে তাও নির্ধারিত, কতটুকু পাশ করবেন তাও নির্ধারিত, কতবড় চাকরী পাবেন তাও নির্ধারিত, ব্যবসায় কতটুকু সফল হবেন তাও নির্ধারিত, আপনার সন্তান কত গ্রেডে পাশ করবে তাও নির্ধারিত তাহলে আপনার এতো টেনশন কেন?

আপনার জন্য আল্লাহ যা নির্ধারন করে রেখেছেন তা যদি পৃথিবীর সব মানুষ একত্র হয়ে বন্ধ করে রাখতে চায় বন্ধ করে রাখতে পারবে না। এখন সন্তান জিপিএ পাইনি তাতেও টেনশন, ব্যবসায় লাভ হয়নি তাতেও টেনশন, তালা ১০ তালা বানাতে পারিনি তাতেও টেনশন, কারন আমরা আল্লাহর বিধান জানি না, আল্লাহর বিধানে বিশ্বাস রাখি না। আজ থেকে যদি আমরা এই বিশ্সাস করি আল্লাহ তায়ালা আমার জন্য যা রেখেছেন তাই আমার জন্য ভালো উত্তম বলে শোকর করি তাহলে নিমিষেই সব টেনশন দুর হয়ে যাবে।

কুরআনের এই একটি আয়াতই (কাদ জায়ালাল্লাহু লিকুল্লি শায়্যিন কাদরা)  একজন মানুষের জন্য টেনশন মুক্ত হওয়ার জন্য যতেষ্ট কারন আল্লাহ বলেই দিয়েছেন আল্লাহ সব কিছুর জন্য একটি পরিমাণ নির্ধারণ করে রেখেছেন বিশ্বাস করুন যে কষ্টের পর স্বাচ্ছন্দ্য আসে কঠিন অবস্থার পর সচ্ছলতা আসে সুরা ইনশিরাহে আল্লাহর ওয়াদা  
فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا
নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।

শুয়েবুল ইমাম- ৪৪৮৩ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করিম (দঃ) এরশাদ করেন, সবার আগে সব লোককে জান্নাতে ডাকা হবে যারা দুঃখ কষ্টের সময় আল্লাহর প্রসংশা করে

হাদীস- শোয়েবুল ইমান ৪৪১৯ হযরত নুমান বিন বশির (রাঃ) বয়ান করেন নবী করিম (দঃ) ফরমান- নেয়ামতের বর্ননা করাই হল শোকর, বয়ান না করা হল অকৃতজ্ঞতা, আর যে ব্যক্তি অল্প নেয়ামতের শোকর আদায় করে না সে বেশী নেয়ামতেরও শোকর আদায় করে না

তাই সদা সর্বদা, আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা, দুঃখ কষ্টেও আল্লাহর শোকর আদায় করা, সুখে শান্তিতেও শোকর আদায় করাই বুদ্ধিমান ঈমানদারের কাজএই শোকর কারীরা আল্লাহর আযাবেও পতিত হবেনা যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন
مَّا يَفْعَلُ اللّهُ بِعَذَابِكُمْ إِن شَكَرْتُمْ وَآمَنتُمْ وَكَانَ اللّهُ شَاكِرًا عَلِيمًا

তোমাদের আযাব দিয়ে আল্লাহ কি করবেন যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক! আর আল্লাহ হচ্ছেন সমুচিত মূল্যদানকারী সর্বজ্ঞ।সুরা নিসা :১৪৭ ]

তাই প্রতিটি মুহুর্তে প্রতিটি অবস্থায় শুধু একটি শব্দের ওজিফা করুন আলহামদুলিল্লাহ একদম অন্তরের অন্তস্থল থেকে বলুন সকল প্রসংশা আল্লাহর জন্যআমার আল্লাহ আমাকে যে অবস্থায় রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি তাতে সন্তুষ্ট। তারপর দেখবেন আল্লাহর নেয়ামত কিভাবে চতুর্দিক থেকে আসতে থাকে।

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.