ইসমে আজম থেকে শক্তিশালী দোয়া কবুলের আমল। যা চাইবেন তাই পাবেন। সব আশা পূরণ হবে। সব সমস্যা সমাধান হবে।

 ইসমে আজম থেকে শক্তিশালী দোয়া কবুলের আমল। যা চাইবেন তাই পাবেন। সব আশা পূরণ হবে। সব সমস্যা সমাধান হবে।

যারা বলেন দোয়া কবুল হয়না তারাও যদি এই আমলটি করেন তারপর যাই দোয়া করবেন তাই কবুল হবে ইনশা আল্লাহ

আমলটি বুঝানোর জন্য কয়েকটি ঘটনা বলব, আর ঘটনার মাধ্যমে আমল শিখলে তা চিরদিন মনে থাকে, সহজে ভুলেনা। তাই আশা করব খুব মনযোগ দিয়ে আলোচনাটি শেষ পর্যন্ত শুনবেন

একদিন বাদশাহ হারুন রশিদ শরাব খানায় সঙ্গী সাথীদের নিয়ে শারাব পানে মত্ত, এমন সময় বাহলুল দানা সেখানে উপস্থিত,

খলিফা বাহলুলকে দেখেই  প্রশ্ন করল বাহলুল আমার ১টি প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে? বাহলুল বলল জরুর, আপনি প্রশ্ন করুন,

হারুন প্রশ্ন করল আচ্ছা বল আঙ্গুর খাওয়া কি হারাম? বাহলুল জবাব দিল না, হারুন আবার প্রশ্ন করল আচ্ছা এবার আঙ্গুর খেয়ে পানি পান করা কি হারাম?

বাহলুল জবাব দিল না। হারুন আবার প্রশ্ন করল আঙ্গুর ও পানি পান করে মানুষ যদি রোদে বসে থাকে তা কি হারাম?

বাহলুল জবাব দিল বিলকুল হারাম নয়। সে যতক্ষন ইচ্ছা ততক্ষন রোদে বসে থাকতে পারবে।

হারুন এবার প্রশ্ন করল আচ্ছা তাহলে এই আঙ্গুর এর সাথে পানি মিক্স করে সেটাকে কিছুদিন রোদে রাখলে তা খাওয়া কেন হারাম হবে?

বাহলুল মুচকি হেসে বলল জাহাপনা আপনার এই প্রশ্নের জবাবে আমি আপনাকে উল্টা প্রশ্ন করব তার সঠিক জবাব দিতে পারলে তার মধ্যেই আপনি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাবেন।

বাদশা বলল ঠিক হ্যায় বল- বাহলুল বলল একজন মানুষের মাথায় যদি কেহ সামান্য মাটি দেয় তাতে কি মানু্ষের মাথার ক্ষতি হবে?

বাদশা বলল না, বাহলুল আবার প্রশ্ন করল এবার সে মাটির উপর সামান্য পানি দিলে কি মানু্ষের মাথার ক্ষতি হবে? বাহলুল বলল না,

এবার বাহলুল প্রশ্ন করল যদি সে মাটি ও পানি সহ সে মানুষকে রোদে শুকাতে দিলে কি ক্ষতি হবে? বাদশা বলল না,

বাহলুল বলল তাহলে বলুন এই মাটি পানিকে মিক্স করে যদি রোদে শুকানো হয় তা শক্ত ইটে পরিনত হবে এই ইট দিয়ে যদি মানুষের মাথায় আঘাত করি তাতে কি ক্ষতি হবে? বাদশা বলল কি বল বাহলুল কেন ক্ষতি হবে না? এই ইটের আঘাতে সে লোকের মাথা ফেটে যাবেতখন বাহলুল বলল বাদশাজি, যদি তাই হয় তাহলে আঙ্গুর, পানির মিশ্রন যখন রোদ শুকিয়ে নেশাদ্রব্য হয়ে যায় তাও মানুষের ভিতর প্রবেশ করলে মানুষের দেমাগকে নষ্ট করে দিবে।

অনেক মুসলমান ভালো কাজ করে, নেক আমল করে; কিন্তু উপার্জনের ক্ষেত্রে হালাল-হারাম বিচার করে না। সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতির কোনো ধার ধারে না।

রাসুল (সা.) বলেছেন, একটা সময় আসবে, যখন মানুষ ধন-সম্পদ হালালভাবে উপার্জন করল না হারামভাবে, তার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ করবে না।

রাসুলের সেই ভবিষ্যদ্বাণী অনেকটাই এখন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে। হারাম উপার্জনকারী ব্যক্তি দুনিয়াও হারায়, আখেরাতও হারায় তার কোনো আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হয় না। তার দোয়া কবুল হয় না। কোনো বরকত থাকে না তার সম্পদে।

হালাল খাদ্য গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন
يَا أَيُّهَا النَّاسُ كُلُواْ مِمَّا فِي الأَرْضِ حَلاَلاً طَيِّباً وَلاَ تَتَّبِعُواْ خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ

হে মানব মন্ডলী, পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু-সামগ্ রী ভক্ষন কর। আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে নিঃসন্দেহে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। [ সুরা বাকারা ২:১৬৮ ]

আদম (আ.) ছিলেন একজন কৃষক। তিনি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ইদরিস (আ.)-এর পেশা ছিল কাপড় সেলাই করা।

নুহ (আ.) ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। আল্লাহ তাআলা তাঁকে নৌকা তৈরির কলাকৌশল শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং আল্লাহর নির্দেশে তিনি নৌকা তৈরি করেছিলেন।

হুদ (আ.)-এর জীবনী পাঠান্তে জানা যায় যে তাঁর পেশা ছিল ব্যবসা ও পশু পালন। সালেহ (আ.)-এর পেশাও ছিল ব্যবসা ও পশু পালন।

ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনী পাঠান্তে জানা যায় যে তিনি জীবিকা নির্বাহের জন্য কখনো ব্যবসা, আবার কখনো পশু পালন করতেন।

মহানবী (সা.) ছিলেন একজন সফল ও সৎ ব্যবসায়ী। তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘সৎ ও আমানতদার ব্যবসায়ীদের হাশর হবে নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘সর্বোত্তম উপার্জন কোনটি? জবাবে তিনি বলেন ব্যক্তির নিজস্ব শ্রমলব্দ উপার্জন ও সততার ভিত্তিতে ক্রয়-বিক্রয়।’ (মুসনাদে আহমদ : ৪/১৪১)।

ইন্ডিয়ার এক বুযুর্গ উনার নাম মাওলানা শাকের নুরী (দা. বা. ) উনি বয়ান করেন আমার কাছে বাংলাদেশের এক গ্রামের লোকদের হাদিয়া এখনও মওজুদ আছে আমি তা আমার কাফনের কাপড় কিনার জন্য রেখেছিতিনি বয়ান করেন আমি একবার বাংলাদেশে দাওয়াতি কাজে গিয়েছিলাম এমন অজো পাড়াগাঁ যেখানে বিজলি নাই জেনারেটরের ব্যবস্থায় আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে কয়েকশ লোকের সমাগম হল,

ওয়াজ নসিহতের পর এই পাড়া গাঁয়ের লোকেরা রুমাল দিয়ে আমাকে খুশী করার জন্য টাকা তুলল কেহ ১ টাকা কেহ ২ টাকা কেহ ৫টাকা সে রুমালে দিল,

আর এন্তেজামিয়ার লোকজন সে টাকা গুনে দেখে ১২শত টাকা হয়েছে তারা আমাকে সে টাকা হাদিয়া হিসেবে দিল,

আমি আজ ২০ বছর যাবৎ সে টাকা রেখে দিয়েছি কারন আমি দেখেছি সেখানকার প্রত্যেক মানুষ ক্ষেত খামার করে,

দিন মজুরী করে রাত দিন পরিশ্রম করে টাকা রোজগার করে, তাদের সে কামাই আমার কাছে শহরের লোকদের টাকার চাইতে খাঁটি ভেজালমুক্ত ও হালাল মনে হয়েছে তাই আমি তা আজো হেফাজত করে রেখেছি যেন তা আমার কাফনে ব্যবহৃত হয় হালাল উপার্জন না করার পরিণাম সম্পর্কে হাদিসে কঠোর শাস্তির কথা বলা হয়েছে। হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনযে দেহের গোশত হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত, তা বেহেশতে প্রবেশ করবে না।

হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত দেহের জন্য জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’ (মেশকাত : ২৬৩৪)।

উপার্জন হালাল না হলে বান্দার ইবাদত ও দোয়া কোনো কিছুই কবুল হবে না। হাদিসে এসেছেরাসুলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করে বলেনযে ব্যক্তি দীর্ঘ সফর করেছে, যার চুলগুলো এলোমেলো, শরীর ধুলামলিন যে আসমানের দিকে হাত তুলে ইয়া রব! ইয়া রব! বলছে

অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক হারাম, তার জীবিকা হারাম। এতদসত্ত্বেও কীভাবে তার দোয়া কবুল হতে পারে?’ (মুসলিম : ২৩৯৩)।

অধিকাংশ আহবাব, দোস্ত ও সাথীরা প্রশ্ন করে খুবই গুরুত্বপূণ প্রশ্ন তা হল আমি চাই আমি মুসতাজাবুত দাওয়াত হব,

অর্থ্যাৎ আমি এখন দোয়া করব এখনই আমার দোয়া কবুল হয়ে যাবে,
 প্রিয় সাথী ও বন্ধুরা আজ আপনাদের এই প্রশ্নের জবাব

সৈয়্যদুল আউল্যালিন ওয়া আখিরিন জবাব দিচ্ছেন এমন এক আমল শুধু একটি আমল করুন আপনার সকল দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন,

যেমন নবী করিম (দঃ) সাহাবাগনের প্রশ্নের জবাবে বলেন (ইজতানিবিল হারামা তাছতাজিব দাওয়াতুকা)

তোমরা হারাম থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে নাও আল্লাহ তোমাদের দোয়াসমুহকে কবুল করবেন

বৈধভাবে উপার্জনের নির্দেশ প্রত্যেক নবীর জন্য প্রযোজ্য ছিল। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ

হে রসূলগণ, পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন। আপনারা যা করেন সে বিষয়ে আমি পরিজ্ঞাত। [ সুরা মুমিনুন ২৩:৫১ ]

নবী রসুলগন হারাম থেকে বেঁচে থাকতেন বলেই তাদের সব দোয়া কবুল হত, আমরাও যদি হারাম থেকে বাঁচতে পারে তাহলে আমাদের সব দোয়াও কবুল হবে।

আর যার দোয়া কবুল হয় তার আর কিসের অভাব? তার আর কিসের রোগ? তার আর কিসের সমস্যা? ফলে সে হবে চিন্তা মুক্ত সমস্যা মুক্ত, রোগ মুক্ত অভাব মুক্ত সুখি মানুষ আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হালাল উপার্জন করার তৌফিক দান করুন, হালাল খাওয়ার তৌফিক দান করুন, হারাম থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন আমিন

এবং আমাকে ও আপনাকে মুস্তাজাবুত দাওয়াত হিসেবে কবুল করুন আমিন। 

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.