৭টি আমলের কথা বলব যে সব আমল করলে আল্লাহ তায়ালা খুশিতে হাসেন

 

৭টি আমলের কথা বলব যে সব আমল করলে আল্লাহ তায়ালা খুশিতে হাসেন

আজকে হাদীস শরীফ থেকে এমন ৭টি আমলের কথা বলব যে সব আমল করলে আল্লাহ তায়ালা খুশিতে হাসেন

১ম আমল হল যখন বান্দা তাহাজ্জুদের নামাজে দাঁড়ায় তখন আল্লাহ সে বান্দাকে দেখে হাসেন

যার ঘরে সুন্দরী স্ত্রী ও নরম আরামদায়ক বিছানা থাকা সত্ত্বেও সে তাহাজ্জুদের সালাতে দাঁড়ায়

তখন আল্লাহ তায়ালা (ফেরেশতাদের) বলেন দেখো, এই লোকটি তার প্রবৃত্তিকে ত্যাগ করে আমার জিকিরে মশগুল হয়ে আছে

অথচ সে চাইলে শুয়ে আরাম করতে পারত। সুতরাং আমাদেরও উচিত আল্লাহকে ‍খুশি করার জন্য তাহাজ্জুদে দাঁড়ানো

তাহাজ্জুদের সময়ে প্রতিটি রাতেই আল্লাহ তাআলা প্রথম আসমানে এসে বান্দাদের আরজি ও আবেদন-নিবেদন শোনেন।

তাই এই সময় যে সকল বান্দা বিছানা ছেড়ে জায়নামাজে দাঁড়ায় তাদের দেখে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন এবং হাসেন

২য় আমল হল নামাজের জামায়াতে কাতারবন্ধ হয়ে দাঁড়ানো। যখন বান্দা নামাজের কাতারে দাঁড়ায় অর্থ্যাৎ জামায়াতে নামাজ পড়ে

তখন এসব জামায়াতে নামাজ আদায়কারীদের দেখে দেখে আল্লাহ খুশি হন এবং হাসেন।  তাছাড়া জামায়াতে নামাজ পড়লে ২৭ গুন সাওয়াব বেশী হয়

যারা মসজিদে জামায়াতে নামাজের জন্য গমন করে তাদের প্রতি কদমে কদমে গুনাহ মাফ হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।

তাছাড়া নবীজি এরশাদ করেন জামায়াতে নামাজ এর ফজিলত কি তা যদি মানুষ জানত তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও মসজিদে জামাতে আসত

বিশেষ করে ফজর ও এশারের জামাত এর গুরুত্ব বেশী, যারা এশা ও ফজরের নামাজ জামাতে পড়বে তারা সারারাত নফল নামাজ পড়ার ছাওয়াব পাবেন

অতএব জামায়াতে নামাজ পড়ার জন্য কাতার সোজা করা এমন এক আমল যা দেখে আল্লাহ খুশি হন এবং হাসেন। আল্লাহ আমাদেরকে ৫ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতে পড়ার তৌফিক দান করুন

৩য় আমল হল যখন কিছু লোক জিহাদের জন্য কাতার বদ্ধ হয়ে দাঁড়ায় তখন তাদেরকে দেখে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন হাসেন।

৪র্থ আমল হল সফরে থাকলেও তাহাজ্জুদ আদায় করা। সফরে মানুষ সাধারণত ক্লান্ত থাকে ফরয নামাজও কসর পড়ার হকুম আছে

কিন্তু নবীজি বলেন যে সব লোক সফরের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজে দাঁড়ায় তার এই আমল দেখে আল্লাহ খুশি হয় এবং হাসেন

৫ম আমল হল নিজে না খেয়ে মেহমানকে খাওয়ানো এ ব্যপারে প্রসিদ্ধ ঘটনা হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে এক লোক মহানবী (সাঃ) এর নিকট মেহমান হয়ে আসলো।

অতঃপর তাকে মেহমানদারীর জন্য রাসূল (সাঃ) তার স্ত্রীদের কাছে কিছু খাবার দাবারের জন্য কাউকে পাঠালেন।

খবর আসলো যে, ঘরে পানি ছাড়া খাবার মত কিছুই নেই। তখন আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বললেন, এমন কে আছ যে

এই লোককে মেহমানদারী করাতে পারবে..? তখন আবু তালহা নামে একজন আনসারী সাহাবী বললেন, আমি তাকে মেহমানদারী করাবো হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ)।

তখন তিনি লোকটিকে নিয়ে তার ঘরে গেলেন। তার স্ত্রীকে বললেন মহানবী (সাঃ) এর মেহমানকে সম্মানজনক মেহমানদারীর ব্যবস্থা কর।

তখন তার স্ত্রী বললেন বাচ্চাদের খাবার দাবার ছাড়া ঘরে আর কিছু নেই।

তখন সাহাবী তার স্ত্রীকে বললেন এক কাজ কর, খাবার দাবার প্রস্তুত কর, বাচ্চাদের খাবার দাবারের জন্য কান্নাকাটি করলে

বাতি নিভিয়ে তাদেরকে ভুলিয়ে ভালিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দাও। তার স্ত্রী তাই করলেন। মেহমানকে মেহমানদারী করালেন।

আর তারা দুজন এমন একটা ভাব করলেন যেন তারা খাবার খেয়েছেন, অথচ তারা অভুক্ত থেকেই রাত কাটালেন।

এরপর যখন সকাল হল, উভয়ে মহানবী (সাঃ) এর কাছে গেলেন। মহানবী (সাঃ) বললেনঃ গতকাল রাতে আল্লাহ তায়ালা

তোমাদের কর্মকান্ডে আশ্চর্য হয়ে হেসেছেন এবং এই প্রসঙ্গে সূরা হাশরের ৯ নং আয়াতটি নাযিল করেনঃ

 وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَن يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

অর্থাৎ তারা নিজেরা অভাবগ্রস্থ হলেও অন্যদেরকে নিজেদের ওপর অগ্রাধিকার দেয়। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত তারাই সফলকাম

তাছাড়া জান্নাতের সর্বশেষ প্রবেশকারী ব্যক্তির কান্ড দেখেও আল্লাহ তায়ালা হাসবেন

যুদ্ধে শহিদ লোক ও তাকে যে কাফের হত্যা করেছে তাদের ২জনকে জান্নাতে দেখেও আল্লাহ তায়ালা হাসবেন।

তখন সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, এটা কিভাবে সম্ভব হে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) তখন তিনি বললেনঃ

একজন আল্লাহ রাস্তায় যুদ্ধে শহীদ হবে, এরপর হত্যাকারী ব্যক্তি মুসলিম হয়ে যাবে অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে দেবেন।

এরপর সে আল্লাহর রাস্তায় লড়াই করে শহীদ হয়ে যাবে। এভাবে পরস্পর লড়াই করা একজন মুসলিম ও একজন কাফিরের দুজনেই জান্নাতে প্রবেশের সৌভাগ্য লাভ করবে। ( বুখারীঃ ২৮২৬;

প্রিয় বন্ধুরা আজকের আলোচনা থেকে আমরা জানতে পারলাম এমন ৭টি আমলের কথা যে সব আমল করলে আল্লাহ এত খুশি হন যে তিনি হাসেন

আল্লাহ আপনাকে আমাকে এমন  আমলসমুহ করার সৌভাগ্য নসিব করুন আমিন

কোন মন্তব্য নেই

sbayram থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.