তাকদির পরিবর্তন হওয়ার আমল। ভাগ্য পরিবর্তনের দোয়া। Dua tutorial All bangla dua
তাকদির
পরিবর্তন হওয়ার আমল। ভাগ্য পরিবর্তনের দোয়া। Dua tutorial All bangla dua
সর্বনাশ-
আমরা যদি গুনাহ করে ফেলি? তাহলে জাহান্নামে যেতে হবে। নবী
করিম (দ) বাণী বুখারীর শরীফের ৭৫৭১ নং হাদিসের বর্ণনা
" كُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ "
যাকে যে কাজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেওয়া হয়।
তবে
সুখবর হল এমন ছোট ছোট কিছু আমল আছে যা আপনার ভাগ্যকে পরিবর্তন করে দিবে- তা থেকে
আজ অতি সহজ ৫টি আমল বলে দিব হাদীস শরীফের রেফারেন্স সহ আলী
রাদিয়াল্লাহু ’আনহু বলেন, আমরা
এক জানাযার সাথে বাক্বীউল গারক্বাদ (কবর স্থানে) ছিলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এসে বসলেন এবং
আমরাও তাঁর আশপাশে বসে গেলাম। তাঁর সাথে একটি ছড়ি ছিল, তিনি
মাথা নীচু করে তা দিয়ে (চিন্তাগ্রস্থের মত) মাটিতে আঁক কাটতে লাগলেন।
তারপর তিনি বললেন, ’’তোমাদের প্রত্যেকের জাহান্নামে ও জান্নাতে ঠিকানা লিখে দেওয়া হয়েছে।’’ সাহাবীরা বললেন, ’হে আল্লাহর রাসূল! তাহলে আমরা কি আমাদের (ভাগ্য) লিপির উপর ভরসা করব না?’ তিনি বললেন, ’’(না, বরং) তোমরা আমল করতে থাক। কেননা, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সে কাজ সহজ হয়, যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে।’’ (বুখারী মুসলিম)
যদি কোন কারনে আপনি বিপথে চলে যান আল্লাহ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শেষ পর্যন্ত আপনার জন্য জান্নাতের আমল করা সহজ করে দিবেন
লা
তাকনাতু মির রাহমাতিল্লাহ ইন্নাল্লাহা
এয়াগফিরুজ জুনুবা জামিআ (আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না) আর
যদি আপনাকে জাহান্নামের জন্য তৈরী করেন, তাহলে আপনি নেক আমল
করবেন কিন্তু শেষ মুহুর্তে ঈমানহারা হয়ে মৃত্যু বরণ করবেন আল্লাহ পাক আমাদেরকে
হেফাজত করুন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আল্লাহ যেন জাহান্নামে নিয়ে না যান সেটার জন্য নফল আমল
করতে হবে আর এই নফল আমলের দ্বারা আপনার তকদির বদলে যাবে। আপনার অসংখ্য নফল নামাজ,
নফল এবাদত, তাহাজ্জুদ, কুরআন
তেলাওয়াত এসব দেখে আল্লাহ খুশি হয়ে যাবেন। ৭০ বছর কুফুরি কারী শেষ মুহুর্তে একবার
কলমা পড়ার ফলে আল্লাহ সে কাফেরকে যদি জান্নাত দিতে পারেন যে কলমা পড়ার আধা ঘন্টা
পর মারা গেল, জীবনে এক ওয়াক্ত নামাজও পড়লনা, আল্লাহ বলবেন দাখালাল জান্নাহ। অথচ সে সারাজীবন যেনা চুরি ডাকাতি সব করল এক
ওয়াক্ত নামাজও পড়লনা সে জান্নাতে যাচ্ছে। আর এই লোক নেক আমলও করত আবার গুনাহও করত,
আবার তওবাও করতআল্লাহ সে বান্দাকে তার নফলের কারনে মাফ করে দিবেন,
যদিও সে গুনাহগার, যদিও তাকে জাহান্নামের জন্য
তৈরী করা হয়েছে কিন্তু তার নফলের কারনে আল্লাহ তার প্রতি এত খুশি হয়ে যান তার তকদির
বদলে দিয়ে তাকে জাহান্নাম থেকে জান্নাতে দিয়ে দেন সে জন্য বেশী বেশী নফল করে জমা
করে রাখবেন, তওবা করা এটাও নফল, তাহাজ্জুদ
পড়ুন সেটাও নফল, অজুর পর ২ রাকাত তাহিয়্যাতুল অজু পড়ুন তাও
নফল মা বাবার চেহেরার দিকে মহব্বতের নজরে তাকানো নফল, কবর
জেয়ারত নফল, রোগী দেখতে যাওয়া নফল, আত্মিয়দের
খোজ খবর নেয়া নফল মসজিদ মাদরাসায় দান করা নফল, এতিমের মাথায়
হাত বুলিয়ে দেয়া নফল, সৃষ্টিজীবের প্রতি দয়া করা নফল,
নামাজের পর জিকির করা নফল, হাটতে বসতে জিকির
করলেন নফল, সুরা এখলাস পড়লেন নফল, সালাম
দিলেন নফল, যদি
এভাবে নফলে নফলে আমলনামা ভরিয়ে তুলেন তবে একটা কাজের কাজ হবে বিশেষ করে অন্তত একজন
এতিমের লালন পালন করুন কারন বুখারীর ৫৩০৪ নং হাদিসের বর্ণনা রাসুল
(সা.) বলেন, ‘আমি ও এতিমের লালনপালনকারী জান্নাতে
একসঙ্গে এমনভাবে থাকব’
দ্বিতীয়ত:
মুখ ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করতে হবে যেমন রাসুল
(সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উভয় ঠোঁটের মধ্যভাগ
(জিহ্বা) ও দুই রানের মধ্যভাগ (লজ্জা স্থান)
হেফাজতের
দায়িত্ব গ্রহণ করে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি।’ (বুখারি, হাদিস
: ৬৪৭৪)
তৃতীয়ত:
মা বাবার খেদমত করা যেমন রাসুল (সা.) বলেন, ‘ওই
ব্যক্তি ধ্বংস হোক, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক’, তিনি
আবারও বললেন, ‘ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক।
কেউ
জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! কে সে জন?’ রাসুল
(সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতা উভয়কে বার্ধক্য
অবস্থায় পেল অথবা যেকোনো একজনকে বার্ধক্য অবস্থায় পেল,
তবুও জান্নাত অর্জন করতে পারল না, সে ধ্বংস
হোক।’ (মুসলিম, হাদিস
: ২৫৫১)
চতুর্থত; তাহিয়্যাতুল অজুর নামাজ পড়া যেমন রাসুল
(সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে এবং
একাগ্রচিত্তে তনুমনে দুই রাকাত
নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাত অবধারিত।’ (আবু
দাউদ : ১৬৯)
পঞ্চমত:
আল্লাহর ৯৯ নাম মুখস্থ করে ফেলা যেমন আবু
হুরায়রা (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুল
(সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলার ৯৯টি নাম আছে,
যে
ব্যক্তি তা আয়ত্ত করবে, আল্লাহ
তাকে জান্নাত দান করবেন। ’ (বুখারি, হাদিস
: ২৭৩৬)
তাহলে
আশা করা যায় আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন, আল্লাহ জাহান্নাম থেকে
ঠিকানা পরিবর্তন করে দিবেন যেমন সুরা হুদের ১১৪ নং আয়াতে বলেন
اِنَّ الۡحَسَنٰتِ یُذۡهِبۡنَ السَّیِّاٰتِ
ذٰلِکَ ذِکۡرٰی لِلذّٰکِرِیۡن
নিঃসন্দেহে সৎ
কার্যসমূহ অসৎ কার্যসমূহকে মিটিয়ে দেয়; এটা তাদের
জন্য উপদেশ যারা উপদেশ গ্রহণ করে।
আবার
সুরা নিসার ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন
اِنۡ تَجۡتَنِبُوۡا کَبَآئِرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُکَفِّرۡ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ نُدۡخِلۡکُمۡ مُّدۡخَلًا کَرِیۡمًا
অর্থ্যাৎ
তোমরা যদি সেই বড় বড় পাপসমূহ হতে বিরত হও যা তোমাদেরকে
নিষেধ করা হয়েছে,
তাহলেই
আমি তোমাদের ক্রটি বিচ্যুতিগুলি ক্ষমা করে দিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে
প্রবিষ্ট করাব।
তাহলে
বুঝা যাচ্ছে যদি কোন গুনাহ হয়ে যায়, কোন ভুল হয়ে যায় তাহলে
তওবা করে ফেল, ক্ষমা চেয়ে নাও। আর তওবার তৌফিক কে দিবেন?
তাও আল্লাহ দিবেন। আর তৌফিক লাভের জন্য কি পড়বেন (ওয়ামা তাওফিকি
ইল্লা বিল্লাহ)
তিরমিজির
৩৩৭৫ নং হাদিসের বর্ণনা আবদুল্লাহ ইবনু বুসর (রাযিঃ) হতে
বর্ণিত আছে, এক লোক অতিরিক্ত বলল, হে
আল্লাহর রাসুল!
আমার জন্য ইসলামের শারী’আতের
বিষয়াদি অতিরিক্ত হয়ে গেছে। সুতরাং আমাকে এমন একটি বিষয় জানান, যা
আমি শক্তভাবে আঁকড়ে থাকতে পারি। তিনি বললেনঃ সর্বদা তোমার জিহ্বা যেন আল্লাহ তা’আলার
যিকরের দ্বারা সিক্ত থাকে।
আল্লাহ
আমাদেরকে যখন নেক আমলের তৌফিক দেন ফরয ওয়াজিবের পাশাপাশি বেশী বেশী নফল আমলসমুহ
করার তৌফিক দান করুন
আল্লাহ
আমাদের কারো যদি কোন গুনাহ হয়ে যায় তওবা করার তৌফিক নসিব করুন, আল্লাহ আমাদের নসিবে যদি জাহান্নাম লিখা থাকে তাহলে আমাদের ভাগ্যের সে লেখা
পরিবর্তন করে
আমাদেরকে
জান্নাতের বাসিন্দাদের অন্তর্ভূক্ত করুন আমিন
কোন মন্তব্য নেই