ইফতারের সময় ৬টি দোয়া ও বরকতময় আমল
ইফতারের সময় ৬টি দোয়া ও বরকতময় আমল
প্রিয় বন্ধুরা আসসালামু
আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ
রমজান মাসে
ইফতারের সময় এত সুন্দর সুন্দর কিছু সুন্নত বরকতময় আমল ও
দোয়া আছে, যা আমরা অনেকেই জানিনা, অথচ এই আমলগুলি করলে আমাদের ঘরে, হায়াতে, রিজিকে অফুরন্ত বরকত হবে
১নং আমল হল
রোজাদারকে ইফতার করানো, হযরত সালমান ফারসি (রা) থেকে বর্ণিত নবী করিম (দ) এরশাদ করেন, হালাল খাদ্য
দ্বারা কোন রোজাদারকে ইফতার করালে ফেরেশতারা আপনার গুনাহ মাফ চাইবে আর জিবরাইল (আ) শবে কদরের
রাতে করমদন করবেন, তার প্রমাণ হল তখন আপনার দুচোখ অশ্রুশিক্ত হয়ে যাবে
২য় আমল হল দোয়া পড়া আবূ দাউদ ২৩৫৬ নং হাদিসের বর্ণনা আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার
করতেন,
তখন এই দো‘আ বলতেন, «ذَهَبَ الظَّمَأُ وَابْتَلَّتِ الْعُرُوقُ وَثَبَتَ الأَجْرُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ»
“যাহাবায যামা-উ অবতাল্লাতিল উরুক্বু অষাবাতাল আজরু ইন শা-আল্লাহ।” অর্থাৎ
পিপাসা দূরীভূত হল, শিরা-উপশিরা সতেজ হল এবং ইন শাআল্লাহ সওয়াব সাব্যস্ত হল।
ইফতারের
সময় ৩য় আমল হল পেটভরে না খাওয়া, যেমন তিরমজির হাদিস রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃযে ব্যক্তি পেট ভরে
খাবার খায় তার ঐ পেট (আল্লাহর
কাছে) একটি
নিকৃষ্ট পাত্র। সুন্নাত হল পাকস্থলির তিন
ভাগের একভাগ খাবার খাবে, আর তিনভাগের একভাগ পানি পান করবে। বাকী এক তৃতীয়াংশ শ্বাস
প্রশ্বাসের জন্য খালী রেখে দিবে। [তিরমিযী]
৪থ আমল হল ইফতারের সময় মেহমান
আসলে খুশি মনে মেহমানদারী করা
কারন
তিরমিজির হাদিস রোজাদারকে ইফতার করালে রোজাদারের সমান নেকি লাভ করা যায় তাছাড়া একজন লোক ইফতার করে শক্তি অর্জন করে যখন এবাদত করবেন
তার এবাদতের সাওয়াবও আপনি পাবেন মনে রাখবেন মেহমান দুঃখ-কষ্ট নয়, মেহমান আল্লাহর অনুগ্রহ এবং কল্যাণ ও প্রাচুর্যের উপকরণ। আল্লাহ
যাকে মেহমান হিসেবে আপনার নিকট প্রেরণ করেন তার রিযিকও পাঠিয়ে দেন। সে আপনার
ভাগ্যের অংশ খায় না বরং তার ভাগ্যের অংশই সে খায়। মেহমান আপনার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ হয়।
হজরত
সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে
জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে, পানিমিশ্রিত এক কাপ দুধ বা একটি শুকনো খেজুর অথবা এক
ঢোক পানি দিয়েও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়,
তাতেও
আল্লাহ তাকে সেই পরিমাণ সওয়াব দান করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহ
তাআলা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে
না।
তাহলে রোজাদারকে
ইফতার করালে ৪টি লাভ
(১) গুনাহ মাফ হবে (২) জাহান্নাম থেকে মুক্তি হবে
(৩) রোজাদারের সমান নেকি পাবেন
(৪)পেটভরে খাওয়ালে হাউজে কাউসারের পানি পান করতে পারবেন।
৫ম আমল হল তাড়াতাড়ি ইফতার করা
কারন দেরী করে ইফতার করা হুদীদের আমল বুখারী শরীফের ১৯৫৭ নং হাদিসের বণনা নবী করিম (দ) এরশাদ
করেন
لاَ يَزَالُ النَّاسُ بِخَيْرٍ مَا عَجَّلُوا الْفِطْرَ
"লোকেরা
ততক্ষন মঙ্গলে থাকবে, যতক্ষণ তারা
(সূর্য ডোবার পর নামাজের আগে) ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করবে।" তিনি আরও
বলেনঃ "দ্বীন
ততকাল বিজয়ী থাকবে, যতকাল
লোকেরা ইফতার তাড়াতাড়ি করবে। কারন ইহুদী ও খ্রিষ্টানরা দেরি করে ইফতার করে। (আবু দাউদ, ইফতারের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমলটি হল দোয়া করা কারন এ
সময় দোয়া কবুল
হয় সে জন্য হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) প্রতিদিন ইফতারের সময় পরিবারের সকলকে নিয়ে দোয়া করতেন সে সময় ইফতার সামনে নিয়ে যে দোয়া করবেন সেটাই কবুল হবে ইনশা আল্লাহ তাই প্রতি রোজার ইফতারে দোয়া করতে ভুল করবেন না।
কোন মন্তব্য নেই