বন্যার সময় এটাই শ্রেষ্ঠ আমল
বন্যার সময় এটাই শ্রেষ্ঠ আমল
বাংলাদেশে বন্যার আযাব চলছে, আর এমন সময় বন্যাকবলীত
মানুষদের জন্য ত্রাণ দেয়া, বন্যার্থদের জন্য টাকা পয়সা দিয়ে খানা
পিনা দিয়ে সাহায্য করা কতটা ফজিলতের তা বুখারী শরীফের হাদিস থেকে আমরা অনুমান করতে
পারি, যারা বন্যায় আক্রান্ত তারা কি দোয়া করবেন তাও আজ আলোচনা
করব আবু দাউদের ১৪৭৯ নং হাদিসের বণনা:
عَنِ
النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم قَالَ "
الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ
নু’মান ইবনু বাশীর (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ দু’আও একটি ’ইবাদাত। **এখন
আমরা দোয়া করিনা, আল্লাহকে ডাকিনা, অথচ আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي
أَسْتَجِبْ لَكُمْ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ
جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদত
(দোয়া) করতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে। [সুরা মু’মিন - ৪০:৬০]
অসুখ হলে অনেকে চিন্তা করে আমার কাছে টাকার অভাব নাই আমি বিদেশে নিয়ে
চিকিৎসা করাব, তবুও সুস্থতার জন্য দোয়া করবনা। এরকম
নানা ভাবে যারা আল্লাহর কাছে দোয়া করতে অহংকার করে তাদের জন্য বড় দুঃসংবাদ।
সুরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন:
হাদিসে আয়েশা রা. বলেন, যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝোড়ো বাতাস বইত—তখন রাসুল (সা.) এর চেহারায় চিন্তার রেখা ফুটে উঠত। এই অবস্থা দেখে তিনি এদিক-সেদিক পায়চারি করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তেন—
اللهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا، وَخَيْرَ مَا فِيهَا، وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا، وَشَرِّ مَا فِيهَا، وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ
আল্লাহুম্মা ইন্নি আছআলুকা খাইরাহা, ওয়া খাইরা মা ফিহা, ওয়া খাইরা মা উরছিলাত বিহি, ওয়া আউজুবিকা মিন শাররিহা, ওয়া শাররি মা ফিহা, ওয়া শাররি মা উরছিলাত বিহি।
অর্থ : হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ বৃষ্টির কল্যাণগুলো কামনা করছি, এই বৃষ্টিতে যেসব কল্যাণ রয়েছে সেগুলো কামনা করছি এবং এই বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আর আর এ বৃষ্টি ও বৃষ্টির মাধ্যমে প্রেরিত সব রকম অকল্যাণ ও বিপদাপদ থেকে পরিত্রাণ চাই।’ (বুখারি, হাদিস : ৩২০৬; মুসলিম, হাদিস : ৮৯৯; তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৪৯)
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي
فَإِنِّي قَرِيبٌ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ فَلْيَسْتَجِيبُواْ لِي
আর আমার
বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে বস্তুতঃ আমি রয়েছি সন্নিকটে।
যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা (আমি সাথে সাথে) কবুল করে
নেই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই (তোমরাও) আমার ডাকে সাড়া দাও [সুরা বাকারা - ২:১৮৬]
আমরা আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ সাথে সাথে সাড়া দেন, আর আল্লাহ যখন প্রতিদিন মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে আমাদেরকে ডাকেন আমাদেরও আল্লাহর
সে ডাকে সাড়া দিতে হবে। সেটাই
হল বান্দার কাজ। কি সুন্দর কথা- হে হাবিব যেহেতু আমি তাদের ডাকে সাড়াদিই তাদেরকে বলেন তারাও যেন আমার ডাকে
সাড়া দেয়। কিন্তু আফসুস আমরা সপ্তাহে মাত্র ১ দিন
তাও ১ ওয়াক্ত তার ডাকে সাড়া দিতে পারি।
এবার আসুন
অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য সংগ্রহ করা কতটা ফজিলতের তা বুখারী শরীফের ৫৩৫৩ নং
হাদিসের মাধ্যমে ধারনা নিই,
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
السَّاعِي
عَلٰى الأَرْمَلَةِ وَالْمِسْكِينِ كَالْمُجَاهِدِ فِي سَبِيلِ اللهِ أَوِ
الْقَائِمِ اللَّيْلَ الصَّائِمِ النَّهَارَ.
বিধবা ও
মিসকীন-এর জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মত
অথবা রাতে সালাতে দন্ডয়মান ও দিনে সিয়ামকারীর মত।
**তাহলে
আপনি যদি বিধবার জন্য, এতিমের জন্য, অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য জোগাড় করেন তাহলে
আপনি মুলত আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের সাওয়াব পাবেন, সারা রাত নামাজ আদায় কারীর মত
সাওয়াব পাবেন, সারাদিন রোজাদারের মত সাওয়াব পাবেন।
আসুন আমরা সবাই বন্যার্থদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিই, যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা যেন তাদের এই কাজে খলুছিয়াত দান করেন, কোন ধরনের বাহবা কুড়ানোর মানসিকতায় নয় বরং আল্লাহর জন্য এ কাজ করার তৌফিক সকলকে দান করুন আমিন।
কোন মন্তব্য নেই